দ্বিতীয় বিবরণ
২৮ “আজ আমি তোমাকে তোমার ঈশ্বর যিহোবার যে-সমস্ত আজ্ঞা শোনাচ্ছি, তুমি যদি সেগুলো ভালো করে পালন কর এবং এভাবে তাঁর কথা শোন, তা হলে তোমার ঈশ্বর যিহোবা তোমাকে পৃথিবীর সমস্ত জাতির চেয়ে উচ্চে তুলে ধরবেন। ২ তুমি যদি তোমার ঈশ্বর যিহোবার কথা সবসময় শোন, তা হলে তিনি তোমার উপর এই সমস্ত আশীর্বাদ বর্ষণ করবেন:
৩ “তুমি নগরে থাক কিংবা গ্রামে, তোমার উপর সবসময় ঈশ্বরের আশীর্বাদ থাকবে।
৪ “তোমার সন্তানদের* উপর, তোমার খেতের ফসলের উপর এবং তোমার বাছুর ও মেষশাবকদের উপর ঈশ্বরের আশীর্বাদ থাকবে।
৫ “তোমার ঝুড়ি এবং আটা মাখার পাত্রের উপর ঈশ্বরের আশীর্বাদ থাকবে।
৬ “তুমি যে-কাজেই হাত দাও না কেন, তোমার উপর আশীর্বাদ থাকবে।
৭ “যখন তোমার শত্রুরা তোমার বিরুদ্ধে উঠে দাঁড়াবে, তখন যিহোবা তাদের পরাজিত করবেন। তারা এক দিক দিয়ে তোমাকে আক্রমণ করতে আসবে, কিন্তু তোমার কাছে হেরে তারা সাত দিক দিয়ে পালাবে। ৮ তোমার ফসলের গোলাঘরের উপর এবং তুমি যে-কাজেই হাত দাও না কেন, সেটার উপর যিহোবা আশীর্বাদ করবেন। হ্যাঁ, তোমার ঈশ্বর যিহোবা তোমাকে যে-দেশ দিচ্ছেন, সেখানে তিনি তোমাকে অবশ্যই আশীর্বাদ করবেন। ৯ তুমি যদি তোমার ঈশ্বর যিহোবার আজ্ঞাগুলো পালন করতে থাক এবং তাঁর পথে চলতে থাক, তা হলে যিহোবা তোমাকে তাঁর পবিত্র লোক করে তুলবেন, ঠিক যেমনটা তিনি দিব্য করে তোমাকে বলেছেন। ১০ তখন পৃথিবীর সমস্ত লোক স্পষ্টভাবে দেখতে পাবে যে, তুমি যিহোবার নামে পরিচিত আর তারা তোমাকে ভয় পাবে।
১১ “যিহোবা তোমার পূর্বপুরুষদের যে-দেশ দেওয়ার প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, সেখানে যিহোবা তোমাকে অনেক সন্তান দেবেন, তোমার পশুপালকে অনেক বৃদ্ধি করবেন এবং তোমার জমিতে অনেক ফসল দেবেন। ১২ ঠিক যেমন একজন ব্যক্তি তার বিশাল গোলাঘর খোলে, তেমনই যিহোবা আকাশমণ্ডল খুলবেন এবং ঠিক সময় তোমার দেশকে বৃষ্টি দেবেন এবং তোমার সমস্ত কাজে আশীর্বাদ করবেন। তোমার কাছে সব কিছু এত বেশি পরিমাণে থাকবে যে, তুমি অনেক জাতিকে ঋণ দিতে পারবে। কিন্তু, তোমাকে কখনো তাদের কাছ থেকে ঋণ নিতে হবে না। ১৩ যিহোবা তোমাকে অন্য জাতিগুলোর আগে রাখবেন, পিছনে নয়। তুমি সবসময় উপরে থাকবে, নীচে নয়। এটা একমাত্র তখনই হবে, যখন তুমি তোমার ঈশ্বর যিহোবার আজ্ঞা পালন করবে, যেগুলো আজ আমি তোমাদের দিচ্ছি। ১৪ আজ আমি তোমাদের যে-সমস্ত আজ্ঞা দিচ্ছি, তুমি সেগুলো অমান্য করবে না* এবং তুমি অন্য দেবতাদের অনুসরণ করে তাদের সেবা করবে না।
১৫ “কিন্তু, আজ আমি তোমাকে তোমার ঈশ্বর যিহোবার যে-সমস্ত আজ্ঞা ও নিয়ম দিচ্ছি, তুমি যদি সেই সমস্ত আজ্ঞা ও নিয়ম ভালোভাবে পালন না কর এবং এভাবে তাঁর কথা না শোন, তা হলে এই সমস্ত অভিশাপ তোমার উপর আসবে:
১৬ “তুমি নগরে থাক কিংবা গ্রামে, তুমি অভিশপ্ত হবে।
১৭ “তোমার ঝুড়ি এবং আটা মাখার পাত্র অভিশপ্ত হবে।
১৮ “তোমার সন্তানেরা,* তোমার জমির ফসল এবং তোমার বাছুর ও মেষশাবক অভিশপ্ত হবে।
১৯ “তুমি যে-কাজেই হাত দাও না কেন, তুমি অভিশপ্ত হবে।
২০ “তুমি যদি মন্দ কাজ করে চল এবং যিহোবাকে পরিত্যাগ কর, তা হলে তুমি যে-কাজেই হাত দাও না কেন, সেটার উপর তিনি অভিশাপ দেবেন। তিনি তাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবেন এবং সেই কাজ ব্যর্থ করে দেবেন আর তুমি দ্রুত বিনষ্ট হয়ে যাবে। ২১ যিহোবা তোমাদের উপর বিভিন্ন রোগ নিয়ে আসবেন আর সেগুলো ততক্ষণ পর্যন্ত তোমাদের সঙ্গে থাকবে, যতক্ষণ পর্যন্ত না তোমরা সেই দেশ থেকে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাও, যে-দেশ তোমরা দখল করতে চলেছ। ২২ যিহোবা তোমাকে যক্ষ্মা, প্রচণ্ড জ্বর, তীব্র জ্বালা, প্রচণ্ড উত্তাপ ও তলোয়ার দিয়ে আঘাত করবেন এবং তোমার ফসল প্রচণ্ড গরম বাতাস ও রোগের দ্বারা ধ্বংস করে দেবেন। এই সমস্যাগুলো ততদিন তোমার পিছু ছাড়বে না, যতদিন না তুমি ধ্বংস হয়ে যাও। ২৩ তোমার উপরের আকাশ তামার মতো হয়ে যাবে এবং তোমার নীচের ভূমি লোহার মতো হয়ে যাবে। ২৪ যিহোবা আকাশ থেকে তোমার দেশের উপর ততক্ষণ পর্যন্ত ধুলোবালি বর্ষণ করবেন, যতক্ষণ না তুমি ধ্বংস হয়ে যাও। ২৫ যিহোবা তোমার শত্রুদের সামনে তোমাকে পরাজিত করবেন। তোমরা এক দিক দিয়ে আক্রমণ করতে যাবে, কিন্তু তোমরা হেরে সাত দিক দিয়ে পালাবে। তোমার এমন পরিণতি হবে যে, পৃথিবীর সমস্ত জাতি তা দেখে ভয় পেয়ে যাবে। ২৬ তোমার মৃতদেহ আকাশের পাখি এবং পৃথিবীর পশুদের খাবার হয়ে উঠবে আর তাদের ভয় দেখিয়ে তাড়ানোর মতো কেউ থাকবে না।
২৭ “যিহোবা তোমাকে এমন ফোঁড়া দিয়ে আঘাত করবেন, যেটা মিশরে খুবই সাধারণ আর তিনি তোমাকে অর্শ এবং বিভিন্ন চর্মরোগ দিয়ে আঘাত করবেন আর তুমি কোনো দিনও সুস্থ হতে পারবে না। ২৮ যিহোবা তোমাকে পাগল, অন্ধ ও বিভ্রান্ত করে দেবেন। ২৯ ঠিক যেভাবে একজন অন্ধ ব্যক্তি তার অন্ধকারময় দুনিয়ায় হাঁতড়ে বেড়ায়, একইভাবে তুমিও ভরদুপুরে হাঁতড়ে বেড়াবে। তুমি কোনো কাজেই সফল হবে না। পদে পদে তোমাকে ঠকানো হবে এবং লুট করে নেওয়া হবে আর তোমাকে বাঁচানোর মতো কেউ থাকবে না। ৩০ তোমার বাগ্দান হবে ঠিকই, কিন্তু অন্য কোনো ব্যক্তি এসে তোমার বাগ্দত্তাকে ধর্ষণ করবে। তুমি বাড়ি বানাবে ঠিকই, কিন্তু সেখানে থাকতে পারবে না। তুমি খেতে আঙুর গাছ লাগাবে ঠিকই, কিন্তু সেটার ফল খেতে পারবে না। ৩১ তোমার চোখের সামনেই তোমার ষাঁড় কাটা হবে, কিন্তু তুমি সেটার মাংস খেতে পারবে না। তোমার চোখের সামনেই তোমার গাধা কেড়ে নেওয়া হবে আর তোমাকে কখনো সেটা ফিরিয়ে দেওয়া হবে না। তোমার শত্রুরা এসে তোমার মেষপাল তুলে নিয়ে যাবে আর সেগুলোকে উদ্ধার করার মতো কেউ থাকবে না। ৩২ অন্য জাতির লোকেরা এসে তোমার ছেলে-মেয়েদের তুলে নিয়ে যাবে আর তুমি ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকবে। তুমি সারাজীবন ধরে তাদের ফিরে আসার অপেক্ষায় পথ চেয়ে থাকবে, কিন্তু তুমি কিছুই করতে পারবে না। ৩৩ তোমার জমির সমস্ত ফসল ও খাবারদাবার এমন জাতির লোকেরা এসে খেয়ে যাবে, যাদের তুমি চেনও না। তোমাকে সবসময় ঠকানো হবে এবং তোমার উপর অত্যাচার করা হবে। ৩৪ তুমি নিজের চোখে এমন বিপর্যয় দেখবে যে, তুমি পাগল হয়ে যাবে।
৩৫ “যিহোবা তোমার দুই পা ও হাঁটুতে বেদনাদায়ক ফোঁড়া দিয়ে আঘাত করবেন, যেগুলো তোমার পায়ের পাতা থেকে শুরু করে মাথার তালু পর্যন্ত ছড়িয়ে যাবে আর সেগুলো সারিয়ে তোলা যাবে না। ৩৬ যিহোবা তোমাকে এবং তোমার মনোনীত রাজাকে এমন এক দেশে তাড়িয়ে নিয়ে যাবেন, যেটার বিষয়ে না তুমি জান, না তোমার পূর্বপুরুষেরা জানত। সেখানে তুমি অন্য দেবতাদের অর্থাৎ কাঠ ও পাথর দিয়ে তৈরি দেবতাদের সেবা করবে। ৩৭ যিহোবা যে-সমস্ত দেশে তোমাকে তাড়িয়ে নিয়ে যাবেন, সেখানকার সমস্ত লোক তোমার পরিণতি দেখে ভয় পেয়ে যাবে। তুমি হাসির পাত্রে* পরিণত হবে আর তোমার বিপর্যয় দেখে সবাই ঠাট্টাতামাশা করবে।
৩৮ “তুমি তোমার খেতে অনেক বীজ বুনবে, কিন্তু খুব কম ফসলই সংগ্রহ করবে কারণ পঙ্গপাল এসে সেগুলো খেয়ে নেবে। ৩৯ তুমি খেতে আঙুর গাছ লাগাবে এবং সেগুলোর যত্ন নেওয়ার জন্য অনেক পরিশ্রম করবে, কিন্তু তুমি খাওয়ার জন্য দ্রাক্ষারস* কিংবা আঙুর, কিছুই পাবে না কারণ আঙুর পোকায় খেয়ে নেবে। ৪০ তোমার দেশের সমস্ত জায়গায় জলপাই গাছ হবে, কিন্তু তুমি সেটার তেল গায়ে মাখতে পারবে না কারণ জলপাইগুলো ঝরে পড়ে যাবে। ৪১ তুমি ছেলে-মেয়ের জন্ম দেবে, কিন্তু তারা আর তোমার থাকবে না কারণ তাদের বন্দি করে নিয়ে যাওয়া হবে। ৪২ তোমার সমস্ত গাছ ও ফসলে ঝাঁকে ঝাঁকে পোকা এসে আক্রমণ করবে। ৪৩ তোমার মাঝে বসবাসরত বিদেশি আরও শক্তিশালী হতে থাকবে, কিন্তু তুমি আরও দুর্বল হতে থাকবে। ৪৪ সে তোমাকে ঋণ দেবে, কিন্তু তুমি তাকে ঋণ দিতে পারবে না। সে তোমার চেয়ে এগিয়ে যাবে, কিন্তু তুমি পিছনে পড়ে থাকবে।
৪৫ “তুমি যদি তোমার ঈশ্বর যিহোবার আজ্ঞা ও নিয়ম পালন না কর এবং এভাবে তাঁর কথা না শোন, তা হলে এই সমস্ত অভিশাপ তোমার উপর আসবে আর সেগুলো ততক্ষণ পর্যন্ত তোমার পিছু ছাড়বে না, যতক্ষণ না তুমি একেবারে বিনষ্ট হয়ে যাও। ৪৬ এই অভিশাপগুলো তোমার উপর এবং তোমার বংশধরদের উপর আসবে আর এগুলো এক স্থায়ী চিহ্ন ও সতর্কবাণী হয়ে থাকবে ৪৭ কারণ সব কিছু প্রচুর পরিমাণে থাকা সত্ত্বেও, তুমি আনন্দের সঙ্গে এবং খুশিমনে তোমার ঈশ্বর যিহোবার সেবা করনি। ৪৮ যিহোবা তোমার বিরুদ্ধে তোমার শত্রুদের পাঠাবেন আর তুমি ক্ষুধায় ও তৃষ্ণায়, ছেঁড়া পোশাক পরে এবং প্রচণ্ড দরিদ্রতার মধ্যে তাদের সেবা করবে। ঈশ্বর ততক্ষণ পর্যন্ত তোমার ঘাড়ে লোহার জোয়াল রাখবেন, যতক্ষণ না তিনি তোমাকে একেবারে বিনষ্ট করে দেন।
৪৯ “যিহোবা অনেক দূর থেকে, পৃথিবীর প্রান্ত থেকে তোমাদের বিরুদ্ধে এক জাতিকে পাঠাবেন। ঈগল পাখি যেমন তার শিকারকে হঠাৎ আক্রমণ করে, তেমনই সেই জাতি তোমাদের আক্রমণ করবে। সেটা এমন এক জাতি, যার ভাষা তুমি বুঝবে না ৫০ আর সেই জাতি খুবই হিংস্র হবে এবং বয়স্কদের প্রতি কোনো সম্মান কিংবা বাচ্চাদের প্রতি কোনো দয়ামায়া দেখাবে না। ৫১ সেই জাতির লোকেরা এসে তোমার পশুপাল থেকে বাছুর ও মেষশাবক এবং তোমার জমির সমস্ত ফসল খেয়ে নেবে আর তারা ততক্ষণ পর্যন্ত এমনটা করবে, যতক্ষণ না তুমি একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাও। তারা তোমার জন্য একটুও শস্য, নতুন দ্রাক্ষারস* বা তেল কিংবা একটাও বাছুর কিংবা মেষশাবক ছাড়বে না আর তারা তোমাকে একেবারে বিনষ্ট করেই ছাড়বে। ৫২ তারা তোমার সমস্ত নগর অবরোধ করবে আর তুমি নিজের নগরেই* বন্দি হয়ে যাবে। তারা ততক্ষণ পর্যন্ত অবরোধ করে রাখবে, যতক্ষণ পর্যন্ত না তোমার নগরের সেই দৃঢ় ও উঁচু প্রাচীরগুলো পড়ে যায়, যেগুলোর উপর তুমি নির্ভর করেছিলে। হ্যাঁ, তোমার ঈশ্বর যিহোবা তোমাকে যে-দেশ দিতে চলেছেন, সেই দেশের সমস্ত নগর তারা অবরোধ করবে। ৫৩ নগর অবরোধ এতটাই কঠোর হবে এবং তোমার শত্রুরা তোমাকে এতটাই কষ্ট দেবে যে, তোমাকে নিজের সন্তানদেরই* খেতে হবে। তোমার ঈশ্বর যিহোবা তোমাকে যে-সমস্ত ছেলে-মেয়ে দিয়েছেন, তুমি তাদেরই মাংস খাবে।
৫৪ “তোমার মাঝে বসবাসরত যে-পুরুষ খুবই কোমল স্বভাবের এবং আরাম-আয়েশে জীবনযাপন করে থাকে, সেও তার ভাইয়ের প্রতি দয়া দেখাবে না। সে তার প্রিয় স্ত্রীর প্রতি কিংবা অবশিষ্ট সন্তানদের প্রতি, কারো প্রতিই দয়া দেখাবে না। ৫৫ সে নিজেই তার সন্তানদের মাংস খেয়ে নেবে আর তাদের মধ্যে কাউকেই সেটার ভাগ দেবে না কারণ নগর অবরোধ এতটাই কঠোর হবে এবং তোমার শত্রুরা তোমার নগর এমনভাবে ধ্বংস করে দেবে যে, তার কাছে খাওয়ার জন্য আর কিছুই থাকবে না। ৫৬ আর তোমার মাঝে বসবাসরত যে-মহিলা খুবই কোমল স্বভাবের এবং আরাম-আয়েশে জীবনযাপন করে থাকে, সেও তার স্বামী কিংবা ছেলে-মেয়ে, কারো প্রতিই দয়া দেখাবে না। ৫৭ সে তার নবজাত শিশুর প্রতি কিংবা সন্তান জন্ম দেওয়ার সময় তার গর্ভ থেকে যা-কিছু বের হয়, কোনো কিছুর প্রতিই দয়া দেখাবে না। সে চুপি চুপি এই সমস্ত কিছু খাবে কারণ নগর অবরোধ খুবই কঠোর হবে এবং তোমার শত্রুরা তোমার নগরগুলোকে ধ্বংস করে দেবে।
৫৮ “তুমি যদি ব্যবস্থার এই পুস্তকে লেখা সমস্ত আজ্ঞা ভালোভাবে পালন না কর এবং তোমার ঈশ্বর যিহোবার গৌরবময় ও বিস্ময়কর নামকে ভয় না কর, ৫৯ তা হলে যিহোবা তোমার উপর এবং তোমার সন্তানদের উপর খুবই ভয়ংকর আঘাত নিয়ে আসবেন। তিনি তোমার উপর এমন বড়ো বড়ো আঘাত এবং যন্ত্রণাদায়ক রোগ নিয়ে আসবেন যে, তুমি বছরের পর বছর ধরে কষ্ট ভোগ করবে। ৬০ ঈশ্বর তোমার উপর মিশরের সেই সমস্ত রোগ নিয়ে আসবেন, যেগুলোকে তুমি খুবই ভয় পেতে আর সেই রোগগুলো তোমার পিছু ছাড়বে না। ৬১ শুধু তা-ই নয়, যিহোবা তোমার উপর এমন সমস্ত রোগ ও আঘাত নিয়ে আসবেন, যেগুলোর বিষয়ে ব্যবস্থার এই পুস্তকে উল্লেখ করা নেই আর তিনি ততক্ষণ পর্যন্ত এমনটা করবেন, যতক্ষণ পর্যন্ত না তুমি একেবারে বিনষ্ট হয়ে যাও। ৬২ যদিও আজ তোমরা আকাশের তারার মতো অসংখ্য হয়ে উঠেছ, তবুও তোমরা তোমাদের ঈশ্বর যিহোবার কথা শোননি বলে তোমাদের মধ্যে মাত্র গুটি কয়েক লোকই অবশিষ্ট থাকবে।
৬৩ “ঠিক যেভাবে যিহোবা একসময় আনন্দের সঙ্গে তোমাদের জনসংখ্যা বৃদ্ধি করেছিলেন এবং তোমাদের সমৃদ্ধিশালী করে তুলেছিলেন, ঠিক সেভাবেই তোমাকে বিনষ্ট করে এবং নিশ্চিহ্ন করে যিহোবা আনন্দিত হবেন। আর তোমাদের সেই দেশ থেকে উপড়ে ফেলা হবে, যেটা তোমরা দখল করতে চলেছ।
৬৪ “যিহোবা তোমাকে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত সমস্ত জাতির মধ্যে ছিন্নভিন্ন করে দেবেন। সেখানে তোমাকে কাঠ ও পাথরের তৈরি এমন দেবতাদের সেবা করতে হবে, যাদের না তুমি জান, না তোমার পূর্বপুরুষেরা জানত। ৬৫ সেই জাতিগুলোর মাঝে বাস করার সময় তুমি* শান্তিতে থাকবে না কিংবা বিশ্রাম নেওয়ার জন্য কোনো জায়গাও পাবে না। যিহোবা তোমার এমন অবস্থা করবেন যে, তুমি সবসময় উদ্বিগ্ন হয়ে থাকবে। উদ্ধারের অপেক্ষা করতে করতে তোমার চোখ ক্লান্ত হয়ে পড়বে আর তুমি একেবারে ভেঙে পড়বে। ৬৬ সবসময় তোমার প্রাণের ঝুঁকি থাকবে, তুমি দিন-রাত আতঙ্কে থাকবে। তোমার মনে সবসময় এই চিন্তাই ঘুরপাক খাবে যে, তুমি পরের দিন দেখতে পাবে কি না। ৬৭ তোমার মনে এমন ভয় ঢুকে যাবে এবং তোমার চোখের সামনে এমন ঘটনাগুলো ঘটবে যে, সকাল হলে তুমি বলবে, ‘বিকেল কখন হবে?’ আর বিকেল হলে তুমি বলবে, ‘সকাল কখন হবে?’ ৬৮ আর যিহোবা তোমাকে জাহাজে করে সেই পথ ধরেই মিশরে ফিরিয়ে নিয়ে যাবেন, যেটার বিষয়ে আমি তোমাকে বলেছিলাম, ‘তুমি এই পথ ধরে আর কখনো যাবে না।’ মিশরে তোমরা অসহায় হয়ে শত্রুদের কাছে নিজেদের বিক্রি করতে চাইবে এবং তাদের দাস-দাসী হতে চাইবে, কিন্তু তোমাদের কেনার মতো কেউ থাকবে না।”