জীবন ও পরিচর্যা সভার জন্য অধ্যয়ন পুস্তিকা-র রেফারেন্স
জানুয়ারি ৪-১০
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | লেবীয় পুস্তক ১৮-১৯
“নৈতিক শুদ্ধতা বজায় রাখুন”
যেভাবে শয়তানের একটা ফাঁদ থেকে নিজেদের সুরক্ষিত রাখা যায়
যিহোবা ইস্রায়েলীয়দের চারপাশে থাকা জাতির লোকেদের অনৈতিক কাজের বিষয়ে উল্লেখ করেছিলেন এবং ইস্রায়েলীয়দের বলেছিলেন: “যে কনান দেশে আমি তোমাদিগকে লইয়া যাইতেছি, তথাকারও আচারানুযায়ী আচরণ করিও না,” ‘দেশ অশুচি হইয়াছে; অতএব আমি উহার অপরাধ উহাকে ভোগ করাইব।’ ইস্রায়েলের পবিত্র ঈশ্বরের দৃষ্টিতে কনানীয়দের জীবনযাত্রার মান এতটাই জঘন্য ও অনৈতিক হয়ে গিয়েছিল যে, তিনি তাদের দেশকে অশুচি ও কলুষিত হিসেবে দেখেছিলেন।—লেবীয়. ১৮:৩, ২৪, ২৫.
যিহোবা তাঁর লোকেদের নেতৃত্ব দেন
১৩ অন্যান্য জাতির নেতারা সীমিত মানবপ্রজ্ঞা দ্বারা নির্দেশিত হতো। উদাহরণ স্বরূপ, কনানীয় নেতারা ও তাদের লোকেরা বিভিন্ন জঘন্য কাজ করত, যার মধ্যে ছিল অজাচার বা ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের সঙ্গে ব্যভিচার, সমকামিতা, পশুগমন বা পশুর সঙ্গে ব্যভিচার, শিশুবলি ও প্রতিমাপূজা। (লেবীয়. ১৮:৬, ২১-২৫) এ ছাড়া, শুচিতা সম্বন্ধে ঈশ্বরের লোকেদের যে-সমস্ত নিয়ম ছিল, বাবিলীয় ও মিশরীয় নেতারা সেইসমস্ত নিয়ম পালন করত না। (গণনা. ১৯:১৩) কিন্তু, ঈশ্বরের লোকেরা দেখতে পেয়েছিল, কীভাবে তাদের বিশ্বস্ত নেতারা তাদের উপাসনাকে বিশুদ্ধ রাখতে, শারীরিকভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে ও যৌনতা সংক্রান্ত অশুচিতা এড়িয়ে চলতে উৎসাহিত করেন। স্পষ্টতই, যিহোবা তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন।
প্রহরীদুর্গ ১৪ অক্টোবর-ডিসেম্বর ৭ অনু. ২
মন্দতা শেষ করার জন্য ঈশ্বর যা করবেন
সেই ব্যক্তিদের সম্বন্ধে কী বলা যায়, যারা একগুঁয়েভাবে তাদের পথ পরিবর্তন করতে প্রত্যাখ্যান করে এবং মন্দ কাজ করেই চলে? এই স্পষ্ট প্রতিজ্ঞা নিয়ে চিন্তা করুন: “সরলগণ দেশে বাস করিবে, সিদ্ধেরা তথায় অবশিষ্ট থাকিবে। কিন্তু দুষ্টগণ দেশ হইতে উচ্ছিন্ন হইবে, বিশ্বাসঘাতকেরা তথা হইতে উন্মূলিত হইবে।” (হিতোপদেশ ২:২১, ২২) দুষ্ট মানুষের প্রভাব আর থাকবে না। এই ধরনের শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বাধ্য মানবজাতিকে ধীরে ধীরে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া অসিদ্ধতা থেকে মুক্ত করা হবে।—রোমীয় ৬:১৭, ১৮; ৮:২১.
আধ্যাত্মিক রত্ন
প্রহরীদুর্গ ০৬ ৬/১৫ ২২ অনু. ১১
“আমি তোমার ব্যবস্থা কেমন ভালবাসি!”
১১ মোশির ব্যবস্থার দ্বিতীয় যে-দিকটা তাঁর লোকেদের মঙ্গলের প্রতি ঈশ্বরের চিন্তাকে প্রতিফলিত করেছিল সেটা হল, পতিত শস্য কুড়ানোর অধিকার। যিহোবা আদেশ দিয়েছিলেন যে, একজন ইস্রায়েলীয় কৃষক যখন তার জমির শস্য কাটবেন, তখন শস্যছেদকরা যেগুলো ফেলে রেখে যাবে, সেগুলো অভাবী ব্যক্তিদের সংগ্রহ করতে দিতে হবে। কৃষকরা তাদের জমির কিনারার শস্য নিঃশেষে কাটতে অথবা অবশিষ্ট দ্রাক্ষাফল বা জিতবৃক্ষের ফল সংগ্রহ করতে পারবে না। জমিতে অনিচ্ছাকৃতভাবে ফেলে আসা শস্যের আঁটি তুলে নেওয়া যাবে না। দরিদ্র, বিদেশি, অনাথ ও বিধবাদের জন্য এটা ছিল এক প্রেমময় ব্যবস্থা। এটা ঠিক যে, তাদের জন্য পতিত শস্য কুড়ানো অনেক পরিশ্রমের কাজ ছিল কিন্তু এর মাধ্যমে তারা ভিক্ষা করা এড়াতে পারত।—লেবীয় পুস্তক ১৯:৯, ১০; দ্বিতীয় বিবরণ ২৪:১৯-২২; গীতসংহিতা ৩৭:২৫.
জানুয়ারি ১১-১৭
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | লেবীয় পুস্তক ২০-২১
“যিহোবা তাঁর লোকদের জগৎ থেকে পৃথক করেন”
প্রহরীদুর্গ ০৪ ১০/১৫ ১১ অনু. ১২
পরমদেশ—আপনার জন্য?
১২ এখনও, এমন একটা বিষয় রয়েছে যা আমরা উপেক্ষা করব না। ঈশ্বর ইস্রায়েলীয়দের বলেছিলেন: “অদ্য আমি তোমাদিগকে যে সকল আজ্ঞা দিতেছি, সেই সমস্ত আজ্ঞা পালন করিও, যেন তোমরা বলবান্ হও, এবং যে দেশ অধিকার করিবার জন্য পার হইয়া যাইতেছ, সেই দেশে প্রবেশ করিয়া তাহা অধিকার কর।” (দ্বিতীয় বিবরণ ১১:৮) লেবীয় পুস্তক ২০:২২, ২৪ পদে সেই একই দেশের বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছিল: “তোমরা আমার সমস্ত বিধি ও আমার সমস্ত শাসন মান্য করিও, পালন করিও; যেন আমি তোমাদের বাসার্থে তোমাদিগকে যে দেশে লইয়া যাইতেছি, সেই দেশ তোমাদিগকে উদ্গীরণ না করে। কিন্তু আমি তোমাদিগকে বলিয়াছি, তোমরাই তাহাদের দেশ অধিকার করিবে, আমি তোমাদিগকে অধিকারার্থে সেই দুগ্ধমধুপ্রবাহী দেশ দিব।” হ্যাঁ, প্রতিজ্ঞাত দেশের অধিকারী হওয়া, যিহোবা ঈশ্বরের সঙ্গে উত্তম সম্পর্কের ওপর নির্ভর করত। ইস্রায়েলীয়রা তাঁর বাধ্য থাকতে ব্যর্থ হয়েছিল বলেই, ঈশ্বর বাবিলীয়দের তাদেরকে পরাজিত করতে এবং তাদের আবাসস্থান থেকে দূর করতে অনুমতি দিয়েছিলেন।
অন্তর্দৃষ্টি-১ ১১৯৯, ইংরেজি
উত্তরাধিকার
একজন ব্যক্তির মৃত্যুর পর তার পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে লাভ করা যেকোনো বিষয়সম্পত্তি তার উত্তরাধিকারী কিংবা অন্য কোনো অধিকারপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে দেওয়া হত, সেটাকে উত্তরাধিকার বলা হয়। এটা বাবা-মায়ের কাছ থেকে লাভ করা বিষয়সম্পত্তিও হতে পারে। ইব্রীয় ভাষায় উত্তরাধিকারের জন্য বিশেষভাবে যে-ক্রিয়া ব্যবহার করা হয়, তা হল নাশাল (বা নাম পদ, নাশালা)। এর অর্থ হল, কোনো বিষয় পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে লাভ করা কিংবা তা কোনো উত্তরাধিকারীকে দেওয়া। (গণনা ২৬:৫৫; যিহি ৪৬:১৮) ইব্রীয় ভাষায় উত্তরাধিকারের জন্য আরেকটা ক্রিয়া ব্যবহার করা হয় আর তা হল ইয়ারাশ। কিছু শাস্ত্রপদে এই ক্রিয়ার অর্থ, ‘উত্তরাধিকারী হওয়া’ কিন্তু বেশিরভাগ পদে এর অর্থ হল, যেকোনো বিষয়সম্পত্তির উপর ‘অধিকার করা।’ (আদি ১৫:৩; লেবীয় ২০:২৪) এই ক্রিয়ার আরেকটা অর্থ হল, যুদ্ধ করে কোনো এলাকা দখল করা আর সেখানকার লোকদের “অধিকারচ্যুত” করা। (দ্বিতীয় ২:১২; ৩১:৩) গ্রিক ভাষায় আবার উত্তরাধিকারের জন্য ক্লেরোস শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। এর আদি অর্থ ছিল, “ঘুঁটি” কিন্তু পরে এর অর্থ হয়, “অংশ” আর শেষে “উত্তরাধিকার।”—মথি ২৭:৩৫; প্রেরিত ১:১৭; ২৬:১৮.
অন্তর্দৃষ্টি-১ ৩১৭ অনু. ২, ইংরেজি
পাখি
জলপ্লাবনের পর নোহ পশু ও সেইসঙ্গে ‘শুচি পক্ষীও’ হোমবলি হিসেবে উৎসর্গ করেছিলেন। (আদি ৮:১৮-২০) এরপর থেকে ঈশ্বর মানুষদের পাখির মাংস খাওয়ার অনুমতি দেন, কিন্তু তারা সেটার রক্ত খেতে পারত না। (আদি ৯:১-৪; তুলনা করুন, লেবীয় ৭:২৬; ১৭:১৩) ‘শুচি’ শব্দটা ব্যবহার করে ঈশ্বর সম্ভবত এটা বোঝাতে চেয়েছিলেন যে, তিনি নির্দিষ্ট কয়েকটা পাখির বলি গ্রহণ করবেন। বাইবেল থেকে জানা যায়, মোশির ব্যবস্থা শুরু না হওয়া পর্যন্ত হয়তো কোনো পাখিকে খাওয়ার ব্যাপারে “অশুচি” বলে গণ্য করা হত না। পরবর্তী সময় মোশির ব্যবস্থায় কিছু পাখিকে অশুচি বলে উল্লেখ করা হয়েছিল, যেগুলো খাওয়ার অনুমতি ছিল না। (লেবীয় ১১:১৩-১৯, ৪৬, ৪৭; ২০:২৫; দ্বিতীয় ১৪:১১-২০) বাইবেলে এটা স্পষ্টভাবে বলা হয়নি যে, কোন কারণে কিছু পাখিকে রীতিগতভাবে “অশুচি” বলা হয়েছিল। সেগুলোর মধ্যে বেশিরভাগ শিকারি পাখি ছিল। তবে, এই কারণে সেগুলোকে অশুচি বলা হয়েছিল এমনটা নয়। আর সেইসঙ্গে এমন কিছু পাখিকে অশুচি বলা হয়েছিল, যেগুলো শিকার করত না। নতুন চুক্তি শুরু হওয়ার পর অশুচি পাখির মাংস খেতে পারবে না এই নিয়মটা বাতিল হয়ে যায়। আর এই বিষয়টা ঈশ্বর একটা দর্শনে পিতরকে জানিয়েছিলেন।—প্রেরিত ১০:৯-১৫.
আধ্যাত্মিক রত্ন
দ্বিতীয় বিবরণ বইয়ের প্রধান বিষয়গুলো
১৪:১. নিজের অঙ্গহানি করা হল মানব
শরীরের প্রতি অসম্মান দেখানো, হয়তো মিথ্যা ধর্মের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত আর এইরকম করা অবশ্যই এড়াতে হবে। (১ রাজাবলি ১৮:২৫-২৮) পুনরুত্থানের উপর আমাদের আশা থাকার ফলে, মৃত ব্যক্তির জন্য শোক করার ক্ষেত্রে এই ধরনের চরম অভিব্যক্তি প্রকাশ করা অনুপযোগী।
জানুয়ারি ১৮-২৪
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | লেবীয় পুস্তক ২২-২৩
“ইজরায়েলীয়দের উৎসব থেকে আমরা যা শিখতে পারি”
অন্তর্দৃষ্টি-১ ৮২৬-৮২৭, ইংরেজি
তাড়িশূন্য রুটির উৎসব
তাড়িশূন্য রুটির উৎসবের প্রথম দিনে একটা বিশেষ সভা এবং বিশ্রামবার একই দিনে পালন করা হত। এই উৎসবের দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ ১৬ নিশান কাটা যবের অগ্রিমাংশের এক আঁটি নিয়ে এসে যাজককে দিতে হত। ইজরায়েল দেশে যব শস্যই বছরের সবচেয়ে প্রথম শস্য ছিল। ইজরায়েলীয়রা এই উৎসবের আগে নতুন শস্যের তাজা শিষ, রুটি কিংবা ভাজা শস্য খেতে পারত না। যখন যাজককে যবের আঁটি দেওয়া হত, তখন তিনি সেটাকে যিহোবার সামনে দোলাতেন। এমনটা করা যিহোবার উদ্দেশে সেই আঁটিটা উৎসর্গ করার মতো ছিল। এ ছাড়া, এক বছরের একটি পুং মেষশাবক হোমবলি হিসেবে, তেল মিশ্রিত ভক্ষ্য নৈবেদ্য এবং পেয় নৈবেদ্যও উৎসর্গ করা হত। (লেবীয় ২৩:৬-১৪) পরে যাজকরা শস্য বা ময়দা উৎসর্গ করতে শুরু করেছিলেন, কিন্তু এমনটা করার কোনো আজ্ঞা দেওয়া হয়নি। যাজক যে-আঁটি এবং বলি উৎসর্গ করতেন, সেগুলো পুরো জাতির হয়ে করতেন। শুধু তা-ই নয়, এমন প্রত্যেক পরিবার এবং ব্যক্তিকেও ধন্যবাদ বলি উৎসর্গ করতে হত, যাদের ইজরায়েলে উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া জমি ছিল।—যাত্রা ২৩:১৯; দ্বিতীয় ২৬:১, ২.
উৎসব পালন করার কারণ। ইজরায়েলীয়দের এই উৎসবের সময় তাড়িশূন্য রুটি খেতে হত, কারণ যিহোবা মোশির মাধ্যমে তাদের কড়া আজ্ঞা দিয়েছিলেন, যেটা যাত্রাপুস্তক ১২:১৪-২০ পদে উল্লেখ করা হয়েছে। ১৯ পদ বলে, “সাত দিন তোমাদের গৃহে যেন তাড়ীর লেশ না থাকে।” দ্বিতীয় বিবরণ ১৬:৩ পদে তাড়িশূন্য রুটিকে “দুঃখাবস্থার রুটী” বলা হয়েছে। প্রতি বছর যখন যিহুদিরা এই রুটি খেত, তখন তাদের মনে থাকত যে, তারা তাড়াহুড়ো করে মিশর দেশ ত্যাগ করেছিল। সেই পরিস্থিতিতে তাদের কাছে ময়দার তালে তাড়ি মেশানোর সময়ও ছিল না। (যাত্রা ১২:৩৪) তাদের এও মনে থাকত, মিশরে দাসত্বে থাকার সময় তাদের কতটা কষ্ট ভোগ করতে হয়েছিল। যিহোবা তাদের বলেছিলেন, কেন তাদের এই উৎসব পালন করতে হত। তিনি বলেছিলেন, “যেন মিসর দেশ হইতে তোমার নির্গমনের দিন যাবজ্জীবন তোমার স্মরণে থাকে।” ইজরায়েলীয়রা যখন প্রতিজ্ঞাত দেশে যেত, তখন তারা এক স্বাধীন জাতি হয়ে উঠত। তাদের এটা স্মরণে রাখতে হত, একমাত্র যিহোবাই তাদের প্রতি বার মুক্তি প্রদান করেছিলেন। এই বিষয়টা মাথায় রেখে তারা তাড়িশূন্য রুটির উৎসব পালন করত, যেটা তিনটে বার্ষিক উৎসবের মধ্যে প্রথম উৎসব ছিল।—দ্বিতীয় ১৬:১৬.
অন্তর্দৃষ্টি-২ ৫৯৮ অনু. ২, ইংরেজি
পঞ্চাশত্তমী
পঞ্চাশত্তমীর দিনে গমের অগ্রিমাংশ যিহোবাকে উৎসর্গ করা হত। এটাকে উৎসর্গ করার পদ্ধতি যবের অগ্রিমাংশ উৎসর্গ করার চেয়ে আলাদা ছিল। এক ঐফার দুই দশমাংশ (৪.৪ লিটার; ৪ ড্রাই কোয়ার্ট) ময়দায় তাড়ি দিয়ে দুটো রুটি তৈরি করা হত এবং তা উনুনে সেঁকা হত। ইজরায়েলীয়দের “আপন আপন নিবাস হইতে” সেগুলো নিয়ে এসে উৎসর্গ করতে হত। এর অর্থ ছিল, তারা প্রতিদিন নিজেদের জন্য যেভাবে রুটি তৈরি করত, ঠিক সেভাবেই তৈরি করে নিয়ে আসতে হত। এগুলো কোনো পবিত্র উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত রুটি নয় বরং সাধারণ রুটি ছিল। (লেবীয় ২৩:১৭) তাদের রুটির পাশাপাশি হোমবলি, একটা পাপার্থক বলি এবং দু-টি পুং মেষশাবকের মঙ্গলার্থক বলি উৎসর্গ করতে হত। যাজক সেই উৎসর্গীকৃত রুটি এবং মাংসের টুকরোর নীচে হাত রাখতেন এবং যিহোবার সামনে সেগুলো দোলাতেন। যিহোবার কাছে এগুলো অর্পণ করার পর, যাজক তা মঙ্গলার্থক বলির মাংস হিসেবে খেতে পারতেন।
প্রহরীদুর্গ ১৪ ৫/১৫ ২৮ অনু. ১১
আপনি কি যিহোবার সংগঠনের সঙ্গে এগিয়ে চলছেন?
১১ যিহোবার সংগঠন সেই সময় আমাদের সর্বোত্তম মঙ্গলের জন্য কাজ করে, যখন এটা আমাদের প্রেরিত পৌলের এই পরামর্শে মনোযোগ দেওয়ার জোরালো পরামর্শ দেয়: “আইস, আমরা পরস্পর মনোযোগ করি, যেন প্রেম ও সৎক্রিয়ার সম্বন্ধে পরস্পরকে উদ্দীপিত করিয়া তুলিতে পারি; এবং আপনারা সমাজে সভাস্থ হওয়া পরিত্যাগ না করি—যেমন কাহারও কাহারও অভ্যাস—বরং পরস্পরকে চেতনা দিই; আর তোমরা সেই দিন যত অধিক সন্নিকট হইতে দেখিতেছ, ততই যেন অধিক এ বিষয়ে তৎপর হই।” (ইব্রীয় ১০:২৪, ২৫) বার্ষিক উৎসব এবং উপাসনার অন্যান্য সমাবেশ ইস্রায়েলীয়দের আধ্যাত্মিকভাবে গড়ে তুলেছিল। এ ছাড়া, এই উপলক্ষ্যগুলোতে আনন্দ করা হতো, যেমন নহিমিয়ের দিনে কুটীরোৎসবের সময় করা হয়েছিল। (যাত্রা. ২৩:১৫, ১৬; নহি. ৮:৯-১৮) আমাদের সভা এবং সম্মেলনগুলো থেকেও আমরা একই উপকার লাভ করি। আসুন আমরা আমাদের আধ্যাত্মিক স্বাস্থ্য এবং সুখের জন্য এই ব্যবস্থাগুলো থেকে পূর্ণ উপকার লাভ করি।—তীত ২:২.
আধ্যাত্মিক রত্ন
আপনার বিশ্বস্ততা বজায় রাখুন!
৩ ঈশ্বরের দাসেরা কীভাবে বিশ্বস্ততা দেখায়? তারা যিহোবার প্রতি সম্পূর্ণ হৃদয় দিয়ে অটল প্রেম দেখানোর মাধ্যমে বিশ্বস্ততা দেখায়। আর এর ফলে তারা সবসময় এমন কাজগুলো করে, যেগুলো তাঁকে খুশি করে। বাইবেলে যেভাবে বিশ্বস্ততা শব্দটা ব্যবহার করা হয়েছে, সেগুলোর কয়েকটা উদাহরণ বিবেচনা করুন। “বিশ্বস্ততা”-র জন্য বাইবেলে ব্যবহৃত শব্দের একটা মৌলিক অর্থ হল: সম্পূর্ণ বা নিখুঁত। উদাহরণ স্বরূপ, ইস্রায়েলীয়রা যিহোবার উদ্দেশে পশু বলি উৎসর্গ করত এবং ব্যবস্থা অনুযায়ী সেই পশুগুলোকে নির্দোষ বা নিখুঁত হতে হতো। (লেবীয়. ২২:২১, ২২) ঈশ্বরের লোকেদের কোনো খোঁড়া, বধির অথবা অন্ধ পশু উৎসর্গ করার অনুমতি ছিল না; আর তারা কোনো অসুস্থ পশুও উৎসর্গ করতে পারত না। যিহোবার কাছে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল যেন সেই পশু সম্পূর্ণ বা নিখুঁত হয়। (মালাখি ১:৬-৯) আমরা এটা বুঝতে পারি যে, কেন যিহোবা নিখুঁত অবস্থা বা সম্পূর্ণতাকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখেন। আমরা যখন কোনো কিছু কিনি, হতে পারে কোনো ফল, বই অথবা কোনো সরঞ্জাম, তখন আমরা চাই না যে, সেটাতে কোনো খুঁত থাকুক অথবা সেটার কোনো অংশ অসম্পূর্ণ থাকুক। আমরা এমন কিছু কিনতে চাই, যেটা সম্পূর্ণ বা নিখুঁত। যিহোবার প্রতি আমাদের প্রেম ও আনুগত্যের বিষয়টা যখন আসে, তখন যিহোবা একইরকম বোধ করেন। সেটাকে অবশ্যই সম্পূর্ণ বা নিখুঁত হতে হবে।
জানুয়ারি ২৫-৩১
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | লেবীয় পুস্তক ২৪-২৫
“যোবেল বছর এবং ভবিষ্যতে চিরস্থায়ী স্বাধীনতা”
৩ ঈশ্বর তাঁর লোকেদের জন্য শত শত বছর আগে যে-যোবেল বছরের ব্যবস্থা করেছিলেন, আমরা যদি সেটা নিয়ে প্রথমে আলোচনা করি, তা হলে আমাদের পক্ষে এটা বোঝা সহজ হয়ে যাবে যে, যিশু যখন স্বাধীনতার বিষয়ে বলেছিলেন, তখন তিনি কী বোঝাতে চেয়েছিলেন। যিহোবা ইস্রায়েলীয়দের বলেছিলেন: “তোমরা পঞ্চাশত্তম বৎসরকে পবিত্র করিবে, এবং সমস্ত দেশে তথাকার সমস্ত নিবাসীর কাছে মুক্তি ঘোষণা করিবে; উহা তোমাদের জন্য যোবেল [তূরীধ্বনির মহোৎসব] হইবে; এবং তোমরা প্রতিজন আপন আপন অধিকারে ফিরিয়া যাইবে, ও প্রতিজন আপন আপন গোষ্ঠীর নিকটে ফিরিয়া যাইবে।” (পড়ুন, লেবীয় পুস্তক ২৫:৮-১২.) আগের প্রবন্ধে আমরা বিবেচনা করেছি যে, কীভাবে ইস্রায়েলীয়রা সাপ্তাহিক বিশ্রামবার থেকে উপকৃত হয়েছিল। তবে, কীভাবে ইস্রায়েলীয়রা যোবেল বছর থেকে উপকৃত হয়েছিল? উদাহরণ স্বরূপ, কল্পনা করুন, একজন ইস্রায়েলীয় ঋণের বোঝায় ডুবে গিয়েছেন আর এর ফলে ঋণ শোধ করার জন্য তাকে বাধ্য হয়ে নিজের জমি বিক্রি করতে হয়েছে। যোবেল বছর চলাকালীন তিনি তার জমি ফিরে পেতেন। তাই, সেই ব্যক্তি “আপন অধিকারে ফিরিয়া” যেতে পারতেন এবং পরে তার সন্তানরা উত্তরাধিকার সূত্রে সেই জমি লাভ করত। আরেকটা ক্ষেত্রে, কঠিন পরিস্থিতিতে থাকা একজন ব্যক্তিকে হয়তো বাধ্য হয়ে তার কোনো সন্তানকে অথবা এমনকী নিজেকে দাসত্বে বিক্রি করে দিতে হতো, যাতে তিনি ঋণ শোধ করতে পারেন। যোবেল বছর চলাকালীন সেই দাস “আপন গোষ্ঠীর নিকটে ফিরিয়া” যেতে পারতেন। তাই, কোনো ব্যক্তিকেই কোনোরকম আশা ছাড়াই সারা জীবন ধরে দাসত্বে থাকতে হতো না! এই ব্যবস্থা দেখায় যে, যিহোবা সত্যিই তাঁর লোকেদের জন্য চিন্তা করেন!
অন্তর্দৃষ্টি-১ ১২০০ অনু. ২, ইংরেজি
উত্তরাধিকার
ইজরায়েলে প্রত্যেক পরিবারের কাছে যে-জমি থাকত, তা তারা উত্তরাধিকার সূত্রে পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে লাভ করত। তাই, কাউকে সেই জমি পুরোপুরিভাবে বিক্রি করার অধিকার তাদের ছিল না। একজন ইজরায়েলীয় যদি তার জমি বিক্রি করতে চাইতেন, তা হলে তাকে তা শুধুমাত্র ইজারা দিতে হত অর্থাৎ সেই জমিটা শুধু কিছু সময়ের জন্য ক্রেতার কাছে থাকত। তার জমিতে যোবেল বছর পর্যন্ত উৎপাদিত শস্যের মূল্যের উপর ভিত্তি করে তিনি কাউকে নিজের জমি ইজারা দিতে পারতেন। যে-সমস্ত ইজরায়েলীয় জমি বিক্রি করেছিল, যোবেল বছরে তাদের তা ফিরিয়ে দেওয়া হত। আর যদি একজন ইজরায়েলীয়র ক্ষমতা থাকত, তা হলে তিনি যোবেল বছর আসার আগেই তার জমি নিজেই ক্রয় করতে পারতেন। (লেবীয় ২৫:১৩, ১৫, ২৩, ২৪) এ ছাড়া, যাদের ঘর প্রাচীরহীন গ্রামে বা খোলা মাঠে থাকত আর তারা যদি নিজেদের সেই ঘরও বিক্রি করত, তা হলে যোবেল বছরে তারা তা ফিরে পেত। এর কারণ, প্রাচীরহীন গ্রামে বা খোলা মাঠে থাকা ঘরগুলো জমিরই অংশ ছিল। আর যদি কেউ প্রাচীরবেষ্টিত নগরের মধ্যে থাকা নিজের ঘর বিক্রি করত, তবে তার কাছে এক বছরের মধ্যে তা ক্রয় করার অধিকার থাকত। কিন্তু, যদি এক বছরের মধ্য সে তার ঘর ক্রয় করতে না পারত, তা হলে সে যোবেল বছরেও তা ফিরে পেত না। এই ক্ষেত্রে লেবীয়দের জন্য একটা ভিন্ন নিয়ম ছিল। তাদের নগরে থাকা ঘর যদি তারা বিক্রি করত, তা হলে তারা তা যেকোনো সময় ক্রয় করে নিতে পারত। নিজেদের ঘর পুনরায় ক্রয় করার অধিকার তাদের কাছে সর্বদাই থাকত, কারণ ইজরায়েল দেশে উত্তরাধিকার সূত্রে তাদের কোনো জমি দেওয়া হয়নি।—লেবীয় ২৫:২৯-৩৪.
অন্তর্দৃষ্টি-২ ১২২-১২৩, ইংরেজি
যোবেল
ইজরায়েলীয়রা যখন যোবেল বছরের ব্যাপারে যিহোবার দেওয়া আইনের বাধ্য হয়েছিল, তখন পুরো জাতি তা থেকে উপকৃত হয়েছিল। আর তাই, কোনো ইজরায়েলীয়কে কোনো ধরনের অভাব ভোগ করতে হয়নি। বর্তমানে, লোকেরা হয় খুব ধনী আর না হয় খুব দরিদ্র অবস্থায় জীবনযাপন করছে, কিন্তু যোবেল বছরের আইনের বাধ্য হওয়ার ফলে ইজরায়েলীয়দের এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হত না। কেউই দরিদ্র থাকত না বা কারো কাজের অভাব হত না বরং সবার কাছে কাজ থাকত। তাদের পরিশ্রমের ফলে দেশের আর্থিক অবস্থাও ভালো থাকত। এ ছাড়া, যিহোবার আশীর্বাদের কারণে ফসল ভালো হত। শুধু তা-ই নয়, লোকদের ঈশ্বরের নিয়ম সম্বন্ধে শিক্ষা দেওয়া হত। আর যখন তারা তা পালন করত, তখন দেশে আনন্দ থাকত। ইজরায়েলে যখন যিহোবার ইচ্ছা অনুযায়ী সমস্ত কিছু করা হত, একমাত্র তখনই তা সুসংগঠিতভাবে হত এবং ইজরায়েলীয়রা উপকৃত হত।—যিশা ৩৩:২২.
আধ্যাত্মিক রত্ন
প্রহরীদুর্গ ১০ জানুয়ারি-মার্চ ১২ অনু. ৪
প্রতিশোধ নেওয়া কি সঠিক?
একজন ইস্রায়েলীয় যদি কোনো সহইস্রায়েলীয়কে আক্রমণ করে তার চোখ উপড়ে ফেলত, তা হলে ব্যবস্থা অনুযায়ী এর জন্য ন্যায্য শাস্তি ছিল। কিন্তু, যাকে আক্রমণ করা হয়েছে সেই ব্যক্তি নিজে, আক্রমণকারী ব্যক্তির বা তার পরিবারের কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিতে পারতেন না। ব্যবস্থায় বলা হয়েছিল যে, তার সেই বিষয়টাকে সঠিকভাবে মিটমাট করার জন্য প্রতিষ্ঠিত কর্তৃপক্ষের—নিযুক্ত বিচারকদের—কাছে যাওয়ার দরকার ছিল। কোনো একজনের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছায় করা অপরাধমূলক বা হিংস্র কাজের কারণে যে একইরকম শাস্তি দেওয়া হতে পারে, এই বিষয়টা জানা প্রতিশোধ নেওয়ার বিরুদ্ধে এক শক্তিশালী প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করেছিল। তবে, এর সঙ্গে আরও বেশি কিছু জড়িত।
ফেব্রুয়ারি ১-৭
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | লেবীয় পুস্তক ২৬-২৭
“যেভাবে যিহোবার আশীর্বাদ লাভ করা যায়”
‘অসার বিষয়গুলোকে’ অস্বীকার করুন
৮ কীভাবে “ধন” এক দেবতার মতো হয়ে উঠতে পারে? উদাহরণ হিসেবে, প্রাচীন ইস্রায়েলে মাঠে পড়ে থাকা একটা পাথরের কথা চিন্তা করুন। এই ধরনের একটা পাথর বাড়ি বা দেওয়াল নির্মাণের জন্য উপকারজনক হতে পারে। অন্যদিকে, এটাকে যদি একটা “স্তম্ভ” বা “ক্ষোদিত প্রস্তর” হিসেবে স্থাপন করা হতো, তাহলে এটা যিহোবার লোকেদের জন্য বিঘ্নজনক হয়ে উঠত। (লেবীয়. ২৬:১) অনুরূপভাবে, টাকাপয়সারও একটা নির্দিষ্ট স্থান রয়েছে। আমাদের কেবল ভরণপোষণের জন্য টাকাপয়সার প্রয়োজন রয়েছে আর আমরা যিহোবার সেবায় এটাকে উপকারজনক হিসেবে কাজে লাগাতে পারি। (উপ. ৭:১২; লূক ১৬:৯) কিন্তু, আমরা যদি টাকাপয়সার পিছনে ছোটাকে আমাদের খ্রিস্টীয় সেবার আগে রাখি, তাহলে টাকাপয়সা মূলত আমাদের কাছে এক দেবতা হয়ে ওঠে। (পড়ুন, ১ তীমথিয় ৬:৯, ১০.) এই জগতে, যেখানে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে লাভবান হওয়াটা লোকেদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, সেখানে আমাদের নিশ্চিত হতে হবে যে, এই ব্যাপারে আমরা যেন এক ভারসাম্যপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখি।—১ তীম. ৬:১৭-১৯.
অন্তর্দৃষ্টি-১ ২২৩ অনু. ৩, ইংরেজি
বিস্ময়
যিহোবা খুবই আশ্চর্যজনক উপায়ে মোশির সঙ্গে আচরণ করেছিলেন এবং তাকে অনেক বিশেষ কার্যভার দিয়েছিলেন। এই কারণে যিহোবার লোক মোশিকে গভীরভাবে সম্মান (ইব্রীয়, মোহরা) করত। (দ্বিতীয় ৩৪:১০, ১২; যাত্রা ১৯:৯) তারা মোশির বশীভূত থাকত, কারণ তাদের আস্থা ছিল যে, যিহোবা তাকে অধিকার দিয়েছিলেন। তারা জানত, তিনি মোশির মাধ্যমেই তাদের সঙ্গে কথা বলছেন। ইজরায়েলীয়দের বলা হয়েছিল, তাদের মনে যেন যিহোবার ধর্মধামের প্রতি গভীর সম্মান থাকে। (লেবীয় ১৯:৩০; ২৬:২) এর অর্থ ছিল যে, তাদের যিহোবার উপাসনা ঠিক সেভাবেই করতে হত, যেভাবে যিহোবা তাদের বলেছিলেন। এ ছাড়া, তারা ধর্মধামে এমন কোনো কাজ করতে পারত না, যেটা যিহোবার আজ্ঞার বিপরীত হত।
প্রহরীদুর্গ ৯২ ১/১ ২০ অনু. ১০
“ঈশ্বরের শান্তি” তোমার হৃদয়কে রক্ষা করুক
১০ যিহোবা সেই জাতিকে বলেন: “যদি তোমরা আমার বিধিপথে চল, আমার আজ্ঞা সকল মান ও সে সমস্ত পালন কর, তবে আমি যথাকালে তোমাদিগকে বৃষ্টি দান করিব; তাহাতে ভূমি শস্য উৎপন্ন করিবে, ও ক্ষেত্রের বৃক্ষ সকল স্ব স্ব ফল দিবে। আর আমি দেশে শান্তি প্রদান করিব; তোমরা শয়ন করিলে কেহ তোমাদিগকে ভয় দেখাইবে না; এবং আমি তোমাদের দেশ হইতে হিংস্র জন্তুদিগকে দূর করিয়া দিব; ও তোমাদের দেশে খড়গ ভ্রমণ করিবে না। আর আমি তোমাদের মধ্যে গমনাগমন করিব ও তোমাদের ঈশ্বর হইব, তোমরা আমার প্রজা হইবে।” (লেবীয়পুস্তক ২৬:৩, ৪, ৬, ১২) ইস্রায়েল যে-শান্তি উপভোগ করে তার অর্থ হচ্ছে যে, তারা শত্রুদের কাছ থেকে নিরাপত্তা পাবে, জাগতিক প্রাচুর্য্য, ও যিহোবার সাথে এক নিকট সম্বন্ধ। কিন্তু, এই সব নির্ভর করবে তারা যিহোবার আজ্ঞা পালন করবে কিনা তার উপরে।—গীতসংহিতা ১১৯:১৬৫.
আধ্যাত্মিক রত্ন
অন্তর্দৃষ্টি-২ ৬১৭, ইংরেজি
রোগ
ঈশ্বরের ব্যবস্থা লঙ্ঘন করার ফলে রোগের দ্বারা আক্রান্ত হওয়া। ইজরায়েল জাতিকে সতর্কবাণী দেওয়া হয়েছিল, তারা যদি ইচ্ছাকৃতভাবে ঈশ্বরের সঙ্গে করা চুক্তির বাধ্য না হয়, তা হলে তিনি ‘তাদের মধ্যে মহামারী পাঠাইবেন।’ (লেবীয় ২৬:১৪-১৬, ২৩-২৫; দ্বিতীয় ২৮:১৫, ২১, ২২) বাইবেলের বিভিন্ন পদ থেকে জানা যায়, তাদের স্বাস্থ্য এবং যিহোবার সঙ্গে তাদের ভালো সম্পর্ক তাঁর আশীর্বাদের দ্বারাই সম্ভব ছিল, (দ্বিতীয় ৭:১২, ১৫; গীত ১০৩:১-৩; হিতো ৩:১, ২, ৭, ৮; ৪:২১, ২২; প্রকা ২১:১-৪) তবে রোগের দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার কারণ ছিল মূলত পাপ ও অসিদ্ধতা। (যাত্রা ১৫:২৬; দ্বিতীয় ২৮:৫৮-৬১; যিশা ৫৩:৪, ৫; মথি ৯:২-৬, ১২; যোহন ৫:১৪) এটা সত্যি যে, আগে যখন কিছু লোক যিহোবার বিরুদ্ধে গিয়ে কাজ করেছিল, তখন তিনি সঙ্গেসঙ্গে তাদের রোগের দ্বারা আক্রান্ত করেছিলেন। উদাহরণ স্বরূপ, তিনি মরিয়ম, উষিয় ও গেহসিক কুষ্ঠরোগের দ্বারা আক্রান্ত করেছিলেন। (গণনা ১২:১০; ২বংশা ২৬:১৬-২১; ২রাজা ৫:২৫-২৭) কিন্তু, বেশিরভাগ সময় আবার দেখা গিয়েছে যে, যখন অনেক লোক কিংবা জাতির মধ্যে রোগ ছড়িয়ে পড়েছিল, তখন সেটা যিহোবার পক্ষ থেকে শাস্তি ছিল না। মন্দ কাজ করার কারণে তাদের মধ্যে রোগ ছড়িয়ে পড়েছিল অর্থাৎ তারা নিজেদের করা মন্দ কাজের পরিণতি ভোগ করেছিল। পাপ করার পর তাদের শরীরে খারাপ প্রভাব পড়ে। আর এভাবে তারা যা বুনেছিল, তা-ই কেটেছিল। (গালা ৬:৭, ৮) প্রেরিত পৌল বলেছিলেন, যে-লোকেরা জঘন্য অনৈতিক কাজ করেছিল, তাদের যিহোবা ‘এমন কাজগুলো করতে দিয়েছিলেন, যেগুলো শুচি নয় এবং যেগুলো তাদের দেহকে কলুষিত করে। তারা নিজেদের ভুল কাজের উচিতপরিণতি ভোগ করেছিল।’—রোমীয় ১:২৪-২৭.
ফেব্রুয়ারি ৮-১৪
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | গণনাপুস্তক ১-২
“যিহোবা তাঁর লোকদের সুসংগঠিত করেন”
প্রহরীদুর্গ ৯৪ ১২/১ ৯ অনু. ৪
আমাদের জীবনে যিহোবার উপাসনার সঠিক স্থান
৪ আপনার যদি উড়ন্ত পাখির মতো অনেক উঁচু থেকে এক নজরে প্রান্তরে বসবাসকারী ইস্রায়েলদেরকে দেখার শক্তি থাকত, তা হলে আপনি কী দেখতে পেতেন? উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব, পশ্চিমব্যাপী, তিনটি শ্রেণীতে ভাগ করা, সম্ভবত ৩০ লক্ষ বা তার চাইতেও বেশি সংখ্যক লোকেরা, বিস্তারিত অথচ সুসংগঠিত তাঁবুগুলির মধ্যে বসবাস করছে। আর একটু কাছের থেকে পর্যবেক্ষণ করলে, আপনি এও লক্ষ করতেন যে, তাঁবুগুলির মধ্যবর্তী স্থানে আর একটি দলভাগ রয়েছে। এই চারটি ছোট ছোট তাঁবুশ্রেণীর মধ্যে লেবীয় বংশের পরিবারগুলি থাকত। তাঁবুর ঠিক মাঝখানে একটি স্বতন্ত্র কাঠামো ছিল এবং এই স্থানটিকে কাপড়ের একটি আবরণ দিয়ে আলাদা করে রাখা হত। এটিই ছিল “সমাগম তাম্বু” বা আবাস, যা “বিজ্ঞমনা” ইস্রায়েলীয়রা যিহোবার পরিকল্পনা অনুসারে বানিয়েছিল।—গণনাপুস্তক ১:৫২, ৫৩; ২:৩, ১০, ১৭, ১৮, ২৫; যাত্রাপুস্তক ৩৫:১০.
অন্তর্দৃষ্টি-১ ৩৯৭ অনু. ৪, ইংরেজি
শিবির
ইজরায়েলীয়দের শিবির বিশাল বড়ো ছিল। সেনাবাহিনীতে যাদের নাম লেখানো হয়েছিল, তাদের মোট সংখ্যা ৬,০৩,৫৫০ ছিল। এ ছাড়া, ইজরায়েলীয়দের শিবিরে মহিলা, সন্তান, বয়স্ক ও অক্ষম ব্যক্তি, ২২,০০০ লেবীয় এবং ন-ইজরায়েলীয় ব্যক্তি-সহ একটা “মিশ্রিত লোকদের মহাজনতা” ছিল। (যাত্রা ১২:৩৮, ৪৪; গণনা ৩:২১-৩৪, ৩৯) এর অর্থ, শিবিরে সমস্ত লোকের মোট সংখ্যা ৩০,০০,০০০ বা এর চেয়েও বেশি ছিল। তবে, এটা নিশ্চিতভাবে বলা যায় না যে, তারা কত বড়ো এলাকায় শিবিরস্থাপন করত। বাইবেল বলে, যখন তারা যিরীহোর কাছে মোয়াবের তলভূমিতে পৌঁছায়, তখন তারা “বৈৎ-যিশীমোৎ অবধি আবেল-শিটীম পর্য্যন্ত” শিবিরস্থাপন করেছিল।—গণনা ৩৩:৪৯.
আধ্যাত্মিক রত্ন
অন্তর্দৃষ্টি-২ ৭৬৪, ইংরেজি
নাম লেখানো
লোকদের গোষ্ঠী এবং তাদের পরিবারের ভিত্তিতে তাদের নাম ও বংশাবলি লেখা হত। বাইবেলে যেখানে যেখানে ইজরায়েল দেশে নাম লেখানোর বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, সেখানে সেখানে শুধুমাত্র মোট লোকের সংখ্যা গণনা করার কথা বলা হয়নি। এর পরিবর্তে, কর আদায় করা, সেনাবাহিনীতে ভরতি হওয়া এবং লেবীয়দের পবিত্র স্থানে কার্যভার অর্পণ করার জন্য লোকদের নাম লেখানো হত।
ফেব্রুয়ারি ১৫-২১
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | গণনাপুস্তক ৩-৪
“লেবীয়দের কাজ”
অন্তর্দৃষ্টি-২ ৬৮৩ অনু. ৩, ইংরেজি
যাজক
ব্যবস্থা চুক্তির অধীনে। যিহোবা যখন দশম আঘাতের দ্বারা মিশরীয়দের প্রত্যেক প্রতমজাতকে মেরে ফেলেছিলেন, তখন তিনি বলেছিলেন যে, ইজরায়েলীয়দের প্রত্যেক প্রথমজাতকে তিনি নিজের জন্য আলাদা করেছেন। (যাত্রা ১২:২৯; গণনা ৩:১৩) এর অর্থ ছিল যে, ইজরায়েলীয়দের প্রত্যেক প্রথমজাতের উপর যিহোবার অধিকার থাকত আর বিশেষ সেবার জন্য তাদের বাছাই করতেন। ঈশ্বর যদি চাইতেন, তা হলে তিনি তাদের পবিত্র স্থানের দেখাশোনা করার এবং সেখানে যাজক হিসেবে সেবা করার কার্যভার অর্পণ করতে পারতেন। কিন্তু, তিনি তাদের পরিবর্তে লেবীয় গোষ্ঠীর সমস্ত পুরুষকে মনোনীত করেন। এই কারণেই ইজরায়েলের বাকি ১২ গোষ্ঠীর পুরুষদের পরিবর্তে লেবীয় গোষ্ঠীর পুরুষদের বাছাই করা হয়। (যোষেফের ছেলে ইফ্রয়িম ও মনঃশির সন্তানদের দুটো গোষ্ঠী হিসেবে গণ্য করা হত আর তাই লেবীয় ছাড়া ১২টা গোষ্ঠী ছিল।) গণনা করার পর এটা বোঝা যায় যে, লেবীয় গোষ্ঠীর পুরুষদের চেয়ে বাকি ১২ গোষ্ঠীতে ২৭৩ জন প্রথমজাত পুরুষ বেশি ছিল। তাই, যিহোবা বলেন যেন সেই ২৭৩ জন প্রথমজাত পুরুষদের মধ্যে প্রত্যেকের মুক্তির মূল্য হিসেবে পাঁচ শেকল (প্রায় ৮০০ টাকা) দেওয়া হয়। এই টাকা হারোণ এবং তার ছেলেদের কাছে দিতে হত। (গণনা ৩:১১-১৬, ৪০-৫১) যিহোবা এই ব্যবস্থার বিষয়ে উল্লেখ করার আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, তিনি ইতিমধ্যেই লেবীয় গোষ্ঠী থেকে হারোণের পরিবারের পুরুষ সদস্যদের যাজক হিসেবে কাজ করার জন্য মনোনীত করেছিলেন।—গণনা ১:১; ৩:৬-১০.
অন্তর্দৃষ্টি-২ ২৪১, ইংরেজি
লেবীয়
কাজ। লেবীয় গোষ্ঠী লেবির তিন ছেলের পরিবার থেকে এসেছিল। সেগুলো হল, গের্শোন (গের্শোম), কহাৎ ও মরারি। (আদি ৪৬:১১; ১বংশা ৬:১, ১৬) প্রান্তরে এই তিনটে গোষ্ঠীকে আবাসের কাছে শিবিরস্থাপন করার জন্য বলা হয়েছিল। কহাতের পরিবারের মধ্য থেকে হারোণের পরিবার আবাসের সামনে অর্থাৎ পূর্ব দিকে শিবিরস্থাপন করত। কহাতীয়দের বাকি সদস্যরা দক্ষিণ দিকে শিবিরস্থাপন করত। আর গের্শোনীয়রা পশ্চিম দিকে এবং মরারীয়রা উত্তর দিকে শিবিরস্থাপন করত। (গণনা ৩:২৩, ২৯, ৩৫, ৩৮) আবাসকে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়ার জন্য সেটার অংশগুলো খোলা, তা বয়ে নিয়ে যাওয়া আর আবারও নির্মাণ করা, এই সমস্ত কাজ লেবীয়দের ছিল। আবাসকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়ার সময় হারোণ এবং তার ছেলে পবিত্র স্থান ও অতি পবিত্র স্থানের মাঝখানে থাকা তিরস্করিণী খুলে দিতেন। এরপর, তারা নিয়ম সিন্দুক, বেদি এবং অন্যান্য পবিত্র দ্রব্য ও পাত্র ঢেকে দিতেন। আর তারপর, কহাতীয়রা সেই সমস্ত জিনিসপত্র বয়ে নিয়ে যেত। গের্শোনীয়রা আবাসের পর্দা, সমাগম-তাম্বুর আচ্ছাদনবস্ত্র, প্রাঙ্গণের পর্দা এবং সমাগম-তাম্বুর রজ্জু (এই রজ্জু অর্থাৎ দড়িগুলো সম্ভবত আবাসের ছিল) বয়ে নিয়ে যেত। মরারীয়রা আবাসের তক্তা ও সেগুলোর অর্গল, স্তম্ভ ও চুঙ্গি, গোঁজ এবং রজ্জু (আবাসের চারপাশে প্রাঙ্গণে থাকা দড়ি) বয়ে নিয়ে যেত।—গণনা ১:৫০, ৫১; ৩:২৫, ২৬, ৩০, ৩১, ৩৬, ৩৭; ৪:৪-৩৩; ৭:৫-৯.
অন্তর্দৃষ্টি-২ ২৪১, ইংরেজি
লেবীয়
মোশির দিনে ৩০ বছর বয়সে একজন লেবীয় আবাসের কাজ শুরু করে দিতেন। যেমন, আবাসের কিছু অংশ এবং এর জিনিসগুলো এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় বয়ে নিয়ে যাওয়া। (গণনা ৪:৪৬-৪৯) আবাসের কিছু কাজ তারা ২৫ বছর বয়সেও শুরু করতে পারত। কিন্তু, তারা হয়তো এই বয়সে আবাস খুলে অন্য জায়গায় বয়ে নিয়ে যাওয়ার মতো ভারী কাজ করতে পারত না। (গণনা ৮:২৪) রাজা দায়ূদের সময় কাজ শুরু করার জন্য বয়সের চাহিদা কমিয়ে ২০ বছর করে দেওয়া হয়। দায়ূদ বয়স কমানোর পিছনে এই কারণ তুলে ধরেন যে, এখন থেকে আবাস অন্য জায়গায় বয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। খুব শীঘ্র সেই স্থানে মন্দির নির্মাণ করা হবে। লেবীয়দের ৫০ বছর বয়স পর্যন্ত সেবা করতে হত। (গণনা ৮:২৫,২৬; ১বংশা ২৩:২৪-২৬) তারপরও কেউ চাইলে স্বেচ্ছায় সেবা করতে পারত। লেবীয়দের ব্যবস্থা সম্বন্ধে ভালোভাবে অবগত থাকতে হত। তাদের প্রায়ই লোকদের সামনে ব্যবস্থা পাঠ করে শোনানোর আর সেই বিষয়ে শেখানোর কাজও দেওয়া হত।—১বংশা ১৫:২৭; ২বংশা ৫:১২; ১৭:৭-৯; নহি ৮:৭-৯.
আধ্যাত্মিক রত্ন
বিজ্ঞ হোন—ঈশ্বরকে ভয় করুন!
১৩ দুর্দশার সময় যিহোবার সাহায্য সম্বন্ধে অভিজ্ঞতা লাভ করা, ঈশ্বরের প্রতি দায়ূদের ভয়কে গভীর করেছিল এবং তাঁর প্রতি তার আস্থাকে শক্তিশালী করেছিল। (গীতসংহিতা ৩১:২২-২৪) কিন্তু, তিনটে উল্লেখযোগ্য সময়ে ঈশ্বরের প্রতি দায়ূদের ভয় হ্রাস পেয়েছিল, যা মারাত্মক পরিণতিগুলোর দিকে পরিচালিত করেছিল। প্রথমটা, ঈশ্বরের ব্যবস্থায় যেমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল, সেই অনুযায়ী যিহোবার নিয়ম-সিন্দুক লেবীয়দের কাঁধে করে আনার পরিবর্তে শকটে করে যিরূশালেমে নিয়ে আসার বিষয়ে তার ব্যবস্থাদির সঙ্গে যুক্ত। উষ, যিনি সেই শকট পরিচালনা করছিলেন, তিনি যখন সেই সিন্দুক নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ধরেছিলেন, তখন তার ‘হঠকারিতার’ জন্য সঙ্গে সঙ্গে সেখানে মারা গিয়েছিলেন। হ্যাঁ, উষ গুরুতর পাপ করেছিলেন কিন্তু মূলত ঈশ্বরের ব্যবস্থার প্রতি সঠিক সম্মান বজায় রাখার ক্ষেত্রে দায়ূদের ব্যর্থতাই এই দুঃখজনক পরিণতি নিয়ে এসেছিল। ঈশ্বরকে ভয় করার অর্থ হল, তিনি যেভাবে কাজ করে থাকেন সেই অনুযায়ী কাজ করা।—২ শমূয়েল ৬:২-৯; গণনাপুস্তক ৪:১৫; ৭:৯.
ফেব্রুয়ারি ২২-২৮
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | গণনাপুস্তক ৫-৬
“কীভাবে আপনি নাসরীয়দের অনুকরণ করতে পারেন?”
গণনাপুস্তকের প্রধান বিষয়গুলো
৬:১-৭. নাসরীয়দের দ্রাক্ষাফল বা আঙুরের তৈরি খাবার এবং সব ধরনের মদ্য জাতীয় পানীয়কে পরিহার করতে হতো, অর্থাৎ আত্মত্যাগের প্রয়োজন ছিল। তাদের চুল লম্বা রাখতে হতো—যা যিহোবার প্রতি বশীভূত হওয়ার এক চিহ্ন ছিল, ঠিক যেমন স্ত্রীদের তাদের স্বামী অথবা বাবার বশীভূত হওয়ার দরকার ছিল। নাসরীয়দের যেকোনো শব, এমনকী নিকটাত্মীয়ের শব থেকে দূরে থেকে শুদ্ধ থাকতে হতো। বর্তমানে, পূর্ণসময়ের সেবকরা আত্মত্যাগ করার এবং যিহোবার ও তাঁর ব্যবস্থার প্রতি বশীভূত থাকার ব্যাপারে আত্মোৎসর্গমূলক মনোভাব দেখায়। কিছু কার্যভারের অন্তর্ভুক্ত হতে পারে দূর দেশে যাওয়া, যার ফলে এমনকী নিজের পরিবারের নিকট সদস্যের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দেওয়ার জন্য দেশে ফিরে আসা হয়তো কঠিন অথবা অসম্ভব হয়ে উঠতে পারে।
আধ্যাত্মিক রত্ন
পাঠক-পাঠিকাদের থেকে প্রশ্নসকল
কিন্তু শিম্শোন ভিন্ন অর্থে একজন নাসরীয় ছিলেন। শিম্শোনের জন্মের পূর্বে, যিহোবার দূত তার মাকে বলেছিলেন: “দেখ, তুমি গর্ব্ভধারণ করিয়া পুত্ত্র প্রসব করিবে; আর তাহার মস্তকে ক্ষুর উঠিবে না, কেননা সেই বালক গর্ব্ভহইতেই ঈশ্বরের উদ্দেশে নাসরীয় হইবে, এবং সে পলেষ্টীয়দের হস্ত হইতে ইস্রায়েলকে নিস্তার করিতে আরম্ভ করিবে।” (বিচারকর্ত্তৃগণের বিবরণ ১৩:৫) শিম্শোন পৃথকস্থিতির কোনো মানত করেননি। তিনি ঈশ্বরের দ্বারা নিযুক্তকৃত একজন নাসরীয় ছিলেন আর তার পৃথকস্থিতি যাবজ্জীবন ধরে ছিল। মৃতদেহ স্পর্শ করার বিষয়ে দেওয়া বিধিনিষেধটি তার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হতে পারত না। যদি তা হতো আর তিনি হঠাৎ করে কোনো মৃতদেহ স্পর্শ করতেন, তা হলে কেমন করে তিনি যাবজ্জীবন পৃথকস্থিতি শুরু করতে পারতেন, যেটা তার জন্মের সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছিল? তাই স্পষ্টতই, যাবজ্জীবন নাসরীয়দের জন্য চাহিদাগুলো কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাকৃত নাসরীয়দের থেকে ভিন্ন ছিল।