হিতোপদেশ
৮ দেখো, প্রজ্ঞা ডাকছে,
বিচক্ষণতা জোরে জোরে ডাকছে।
২ সে পথের ধারে উঁচু জায়গাগুলোতে
এবং চৌরাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে,
৩ নগরের দরজার কাছে,
নগরে প্রবেশ করার জায়গাগুলোতে দাঁড়িয়ে
চিৎকার করে বলে:
৪ “হে লোকেরা, আমার কথা শোনো,
আমি তোমাদের সবাইকে বলছি।
৫ হে অনভিজ্ঞেরা, বিচারবুদ্ধি ব্যবহার করে কাজ করতে শেখো।
হে মূর্খেরা, বোঝার ক্ষমতা রয়েছে এমন হৃদয় অর্জন করো।
৬ আমার কথা শোনো কারণ আমি যা বলি, তা গুরুত্বপূর্ণ,
আমি যা বলি, তা সঠিক।
৭ আমি নীচুস্বরে সত্য কথা বলি,
আমার ঠোঁট মন্দ বিষয়কে ঘৃণা করে।
৮ আমার বলা সমস্ত কথা ন্যায্য,
সেগুলোর মধ্যে কোনোটাই ছলনাপূর্ণ কিংবা উলটোপালটা কথা নয়।
৯ বিচক্ষণ ব্যক্তিরা এই কথাগুলো স্পষ্ট বুঝতে পারে,
যারা জ্ঞান খুঁজে পেয়েছে, তাদের কাছে এগুলো সঠিক বলে মনে হয়।
১০ রুপো নয় বরং আমার শাসন গ্রহণ করো,
সবচেয়ে উচ্চমানের সোনা নয় বরং জ্ঞান গ্রহণ করো
১১ কারণ প্রজ্ঞা প্রবালের* চেয়েও ভালো,
অন্য সমস্ত মূল্যবান জিনিসের সঙ্গেও এর তুলনা হয় না।
১২ আমি প্রজ্ঞা, আমি বিচারবুদ্ধির সঙ্গে বাস করি,
আমি জ্ঞান এবং চিন্তা করার ক্ষমতা খুঁজে পেয়েছি।
১৩ যিহোবাকে ভয় করার অর্থ মন্দতাকে ঘৃণা করা।
আমি বড়াই করা, গর্ব করা, মন্দ পথ এবং আজেবাজে কথাকে ঘৃণা করি।
১৪ আমার কাছে ভালো পরামর্শ এবং উপকারজনক প্রজ্ঞা রয়েছে,
বোঝার ক্ষমতা এবং শক্তি আমারই।
১৬ আমার সাহায্যে অধ্যক্ষেরা শাসন করতে থাকে,
উচ্চপদস্থ ব্যক্তিরা ন্যায্যভাবে বিচার করে।
১৭ যারা আমাকে ভালোবাসে, আমি তাদের ভালোবাসি,
যারা আমাকে খোঁজে, তারা আমাকে পাবে।
১৮ আমার কাছে ধন ও গৌরব,
চিরস্থায়ী সম্পদ এবং ন্যায়বিচার রয়েছে।
১৯ আমি যা দিই, সেটা সোনার, এমনকী পরিশোধিত সোনার চেয়েও বেশি ভালো
আর আমি যা উৎপন্ন করি, সেটা সবচেয়ে উচ্চমানের রুপোর চেয়েও বেশি ভালো।
২০ আমি যা সঠিক, সেটার দ্বারা নির্দেশিত হই
আর আমি সবসময় ন্যায্যভাবে বিচার করি।
২৩ অনেক আগে, পৃথিবী তৈরি হওয়ারও আগে,
শুরুতে আমাকে স্থাপন করা হয়েছিল।
২৪ যখন আমার জন্ম হয়েছিল,* তখন কোনো গভীর জলাশয় ছিল না
কিংবা উপচে পড়া জলের কোনো ঝরনাও ছিল না।
২৫ পর্বতগুলোকে নিজেদের জায়গায় স্থাপন করার আগে,
পাহাড়গুলোরও আগে আমার জন্ম হয়েছিল।
২৬ তখনও তিনি পৃথিবী এবং এর মাঠগুলো
কিংবা মাটির প্রথম ডেলা তৈরি করেননি।
২৭ তিনি যখন আকাশ প্রস্তুত করলেন,
যখন জলের উপর সীমারেখা টেনে দিলেন, তখন আমি সেখানেই ছিলাম।
২৮ তিনি যখন উপরে মেঘ স্থাপন* করলেন,
গভীর জলাশয়ের ঝরনা স্থাপন করলেন,
২৯ তিনি যখন সমুদ্রের জন্য নিয়ম স্থির করলেন যে,
সেটার জল যেন তিনি যে-সীমা নির্ধারণ করেছেন, সেটা পার না করে,
তিনি যখন পৃথিবীর ভিত্তি স্থাপন করলেন,
৩০ তখন আমি একজন দক্ষ কর্মীর মতো তাঁর পাশে ছিলাম।
তিনি প্রতিদিন আমার কারণে খুব আনন্দিত হতেন
আর আমি সবসময় তাঁর সামনে উল্লাস করতাম।
৩১ আমি যখন মানুষের বাসস্থান পৃথিবীকে দেখেছিলাম,
তখন আমি উল্লসিত হয়েছিলাম
আর মানুষের প্রতি আমার গভীর ভালোবাসা ছিল।
৩২ তাই, হে আমার ছেলেরা, আমার কথা শোনো!
কারণ যারা আমার পথে চলে, তারা সুখী।
৩৩ শাসনের প্রতি কান দাও আর বিজ্ঞ হও,
কখনো সেটা উপেক্ষা কোরো না।
৩৪ সুখী সেই ব্যক্তি, যে আমার কথা শোনো,
যে প্রতিদিন সকাল সকাল আমার দরজায় আসে,
আমার চৌকাঠের পাশে অপেক্ষা করে।
৩৫ কারণ যে আমাকে খুঁজে পায়, সে জীবন খুঁজে পায়
আর সে যিহোবার অনুমোদন লাভ করে।
৩৬ কিন্তু, যে আমাকে উপেক্ষা করে, সে নিজেরই ক্ষতি করে
আর যারা আমাকে ঘৃণা করে, তারা মৃত্যুকে ভালোবাসে।”