পাঠ ২
তথ্যবহুল বিষয়বস্তু, স্পষ্টভাবে উপস্থাপন করা
১-৩. একজনের বক্তৃতাকে তথ্যবহুল করার জন্য কেন নির্দিষ্ট বিষয়বস্তুর প্রয়োজন?
১ গঠনমূলক বক্তৃতাগুলোর জন্য অধ্যবসায়ী প্রস্তুতির প্রয়োজন আর তাই সময় ও প্রচেষ্টা অপরিহার্য। কিন্তু, তা কতই না পরিতৃপ্তিদায়ক! আপনি আপনার সঠিক জ্ঞানের ভাণ্ডারকে বৃদ্ধি করে থাকেন ও শ্রোতাদের কাছে বলার জন্য আপনার প্রকৃতই উপকারজনক কিছু থাকে। অনির্দিষ্টভাবে কথা বলার পরিবর্তে, আপনার কাছে বলার মতো জ্ঞানালোকদায়ক বিস্তারিত বিষয় রয়েছে আর আপনি জানেন যে আপনি যা বলছেন, তা সঠিক। এটা ঈশ্বরের বাক্যের প্রতি শ্রোতাদের উপলব্ধি গড়ে তোলে আর এর ফলে যিহোবার সম্মান নিয়ে আসে। আমরা যে-তথ্যবহুল বিষয়বস্তু সম্বন্ধে আলোচনা করছি, সেটার সঙ্গে বিশেষভাবে আপনি আপনার বক্তৃতায় যা বলেন, তা জড়িত। বিষয়বস্তুর বিভিন্ন দিক সংক্ষেপে বিবেচনা করুন। এটাই হচ্ছে স্পিচ কাউন্সেল স্লিপ এর প্রথম বিষয়।
২ নির্দিষ্ট বিষয়বস্তু। অনির্দিষ্টভাবে দেওয়া একটি বক্তৃতার গুরুত্ব হালকা হয়ে যায় ও নির্ভরযোগ্যতার অভাব থাকে। এটি অস্পষ্ট হয়। শ্রোতাদের তা অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দেয়। কিন্তু ধারণাগুলোকে যদি মনে রাখতে হয়, তাহলে সেগুলোকে অবশ্যই নির্দিষ্ট, যথার্থ হতে হবে। আর এটা সেই বিষয়ের ওপর গবেষণা ও জ্ঞানের প্রমাণ দেবে।
৩ যখন প্রস্তুতি নেওয়া হয়, তখন কেন? কখন? কোথায়? এবং এইরকম অন্যান্য প্রশ্ন জিজ্ঞেস করার মাধ্যমে এই গুণটি অর্জন করা যেতে পারে। কিছু ঘটেছে, সাধারণত তা বলাই যথেষ্ট নয়। এর সঙ্গে জায়গার নাম, তারিখ ও সম্ভবত কারণগুলোও বলুন। কেবল নিশ্চিত সত্যগুলো বলাই যথেষ্ট নয়। দেখান যে, কেন সেগুলো সত্য; দেখান যে, কেন সেগুলো জানা মূল্যবান। নির্দেশনা দেওয়ার সময় ব্যাখ্যা করুন যে, কীভাবে একটা বিষয় করা যায়। এভাবে কতটুকু সম্প্রসারণ করা প্রয়োজন, তা একজন শ্রোতা ইতিমধ্যেই কতখানি জানেন, সেটার দ্বারা নির্ধারিত হবে। তাই, বিস্তারিত কতটুকু বর্ণনার প্রয়োজন হতে পারে, তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য শ্রোতাদের কথা বিবেচনা করুন।
৪-৬. নির্দিষ্ট শ্রোতার কাছে আপনার বক্তৃতা তথ্যবহুল হতে হলে কোন বিষয়গুলো মনে রাখতে হবে?
৪ আপনার শ্রোতাদের জন্য তথ্যবহুল। একটা বিষয় একদল শ্রোতাকে যা জানায়, তা হয়তো অন্য আরেকটা দলের কাছে কোনো অর্থই রাখে না অথবা এটা হয়তো তাদেরকে সম্পূর্ণরূপে অন্ধকারে রাখতে পারে। তাই এটা স্পষ্ট যে, বিষয়বস্তু এক নির্দিষ্ট শ্রেণীর শ্রোতাদের উপযোগী হতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, আমাদের কাজ কীভাবে পরিচালিত হয়, সেই বিষয়ে একটি বক্তৃতায় আলোচিত বিষয়বস্তু, যিহোবার কাছে নিজেকে উৎসর্গ করার জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন এমন একজন ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলার বা কোনো একটা জাগতিক দলের উদ্দেশে বক্তৃতা দেওয়ার সময় যেমন হবে, সেটার চেয়ে একটা পরিচর্যা সভায় দেওয়া বক্তৃতায় তা সম্পূর্ণরূপে ভিন্ন হবে।
৫ এই বিষয়গুলো ঐশিক পরিচর্যা বিদ্যালয় এর বিভিন্ন কার্যভারের ক্ষেত্রেও বিবেচনা করতে হবে। যেকোনো নির্ধারিত বক্তৃতায় যে-বিষয়বস্তু উপস্থাপন করা হয়, তাতে শ্রোতা, সেটিং ও বক্তৃতার উদ্দেশ্য বিবেচনা করে করা উচিত। এই বিষয়গুলো বক্তৃতার ধরন ও বক্তা যে-সেটিং সাজিয়েছেন, সেটার দ্বারা নির্ধারিত হবে। অবশ্য, নির্দেশনামূলক বক্তৃতা মণ্ডলীর উদ্দেশে দেওয়া হবে। অন্য বক্তৃতাগুলো হয়তো শ্রোতা ও উদ্দেশ্য সেটিংয়ের দ্বারা চিহ্নিত হওয়ায় ভিন্ন হতে পারে। সমস্ত ক্ষেত্রেই, ছাত্র-ছাত্রী ও পরামর্শদাতা উভয়ই নিজেদের জিজ্ঞেস করতে পারে, বিষয়বস্তু কি উপস্থাপনায় জড়িত নির্দিষ্ট শ্রোতার জন্য উপযোগী? শ্রোতাদের কি বিষয়বস্তুর মাধ্যমে তথ্য জানানো যাবে ও নির্দেশনা দেওয়া যাবে?
৬ প্রস্তুতি নেওয়ার সময় নিজেকে জিজ্ঞেস করুন, এই বক্তৃতায় আমি কী সম্পাদন করতে চাই? আমি যা বলতে চাই, সেই বিষয়ে এই ব্যক্তি বা দল ইতিমধ্যেই কতখানি জানে? এই বিষয়গুলো স্পষ্ট করার আগে আমাকে কোন ভিত্তি স্থাপন করতে হবে? কীভাবে আমি সম্পূর্ণ ভিন্ন এক দলের কাছে এটা আরেকটু ভিন্নভাবে বলব? তুলনাগুলো প্রায়ই আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিগুলোকে স্পষ্ট করে। শ্রোতাদের পরিপ্রেক্ষিতে এবং আপনি যে-নির্দিষ্ট শ্রোতার উদ্দেশে বক্তৃতা দিতে যাচ্ছেন, তাদের কাছে বিষয়বস্তুকে তথ্যবহুল করে তোলার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র পার্থক্যটা অনুভব করার জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার সময়, ভিন্ন ভিন্ন দলের কাছে ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতিতে বলার চেষ্টা করুন।
৭, ৮. কীভাবে আমরা আমাদের বক্তৃতাগুলোকে ব্যবহারিক করে তুলতে পারি?
৭ ব্যবহারিক মূল্য রয়েছে এমন বিষয়বস্তু। অনেক কিছুই শেখার আছে কিন্তু সবই ব্যবহারিক নয়। আমাদের কাছে তথ্যবহুল বিষয়বস্তুর সঙ্গে সেই বিষয়গুলো জড়িত, যেগুলো আমাদের খ্রিস্টীয় জীবনযাপন ও আমাদের পরিচর্যার জন্য জানতে হবে। আমরা জানতে চাই যে, আমরা যে-তথ্য অর্জন করেছি, তা কীভাবে ব্যবহার করা যায়।
৮ ছাত্র বা ছাত্রী প্রস্তুতি নেওয়ার সময় এবং বিদ্যালয় অধ্যক্ষ পরামর্শ দেওয়ার সময় এই বিষয়টা হয়তো এমন প্রশ্ন জিজ্ঞেস করার দ্বারা বিবেচনা করতে পারেন: বক্তৃতায় কোন পরিচালনাকারী নীতিগুলো পাওয়া যাবে? সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে কি বিষয়বস্তুকে ব্যবহার করা যেতে পারে? উপস্থাপিত তথ্য কি ক্ষেত্রের পরিচর্যার জন্য উপযোগী করা যেতে পারে? এটা কি ঈশ্বরের বাক্যকে মহিমান্বিত করে এবং তাঁর উদ্দেশ্যের প্রতি নির্দেশ করে? অল্প কিছু বক্তৃতায় এই সমস্ত তথ্য থাকতে পারে কিন্তু ব্যবহারিক হতে হলে উপস্থাপিত বিষয়বস্তু কোনো না কোনো দিক দিয়ে শ্রোতাদের ব্যবহারোপযোগী হওয়া উচিত।
৯-১১. কেন বিবৃতির যথার্থতা এত গুরুত্বপূর্ণ?
৯ বিবৃতির যথার্থতা। যিহোবার সাক্ষিরা হচ্ছে এক সত্য সংগঠন। আমাদের সত্য বলতে চাওয়া উচিত এবং সবসময় প্রতিটা পুঙ্খানুপুঙ্খ বিষয়ে একেবারে সঠিক হওয়া উচিত। এটা কেবলমাত্র মতবাদের ক্ষেত্রেই নয় কিন্তু আমরা যে-উদ্ধৃতিগুলো ব্যবহার করি, অন্যদের সম্বন্ধে আমরা যা বলি ও সেগুলো আমরা যেভাবে তুলে ধরি, সেই বিষয়গুলোতে এবং সেইসঙ্গে বৈজ্ঞানিক উপাত্ত বা খবরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত সমস্ত বিষয়েও সঠিক হওয়া উচিত।
১০ শ্রোতার সামনে উপস্থাপিত ভুল বিবৃতিগুলোর পুনরাবৃত্তি হতে পারে আর এর ফলে ভুলকে অতিরঞ্জিত করা হতে পারে। কোনো শ্রোতার দ্বারা শনাক্তিকৃত ভুলগুলো বক্তার বলা অন্যান্য বিষয়ের নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে, এমনকি হয়তো বার্তার সত্যতা নিয়েও সন্দেহ জাগিয়ে তুলতে পারে। একজন নতুন আগ্রহী ব্যক্তি, যদি এই ধরনের বিবৃতি শোনেন ও পরে অন্য কোনো সময়ে এক ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করতে শুনে থাকেন, তাহলে তিনি হয়তো এইরকম উপসংহারে পৌঁছাতে পারেন যে, যিহোবার সাক্ষিদের মধ্যে ধারণার অনৈক্য রয়েছে আর এর ফলে তিনি হয়তো তার কারণ প্রকাশ না করেই মেলামেশা বন্ধ করে দিতে পারেন।
১১ ছাত্র বা ছাত্রীর বলা প্রতিটা বিবৃতিকেই পরামর্শদাতার সমালোচনা করা উচিত নয়, বিশেষ করে ছাত্র বা ছাত্রী যদি সত্যে নতুন হয়ে থাকেন আর তাই ঈশ্বরের বাক্যের গভীর বিষয়গুলোর সঙ্গে পুরোপুরিভাবে পরিচিত না হয়ে থাকেন। পরিবর্তে, পরামর্শদাতা কৌশলে ছাত্র বা ছাত্রীর চিন্তাধারাকে গঠন করতে সাহায্য করবেন এবং তাকে দেখাবেন যে, আগে থেকে সতর্কভাবে প্রস্তুতি নেওয়ার দ্বারা তার বিবৃতির যথার্থতায় কীভাবে উন্নতি করা যায়।
১২, ১৩. স্পষ্ট করার জন্য অতিরিক্ত বিষয়বস্তুর কী মূল্য রয়েছে?
১২ স্পষ্ট করার জন্য অতিরিক্ত বিষয়বস্তু। ধ্যান করার ফলে বা কোনো একটা বিষয় নিয়ে আরও গবেষণা করার ফলে যে-ধারণাগুলো সংগ্রহ করা যায়, সেগুলোর উপস্থাপন একটি বক্তৃতার ক্ষেত্রে অনেক অবদান রাখতে পারে এবং মাঝে মাঝে শ্রোতাদের কাছে পরিচিত এমন অশিক্ষণীয় বিষয়বস্তুর পুনরাবৃত্তি এড়াতে পারে। এটা উপস্থাপনার সতেজতাকে বৃদ্ধি করে, শ্রোতাদের আগ্রহকে জীবন্ত করে তোলে এবং খুবই পরিচিত এক বিষয়কে প্রকৃতই আনন্দদায়ক করে তুলতে পারে। এ ছাড়া, এটা বক্তাকেও আস্থা প্রদান করে থাকে। তার কাছে উপস্থাপন করার জন্য একটু ভিন্ন কিছু রয়েছে, এই বিষয়টা জানায় তিনি তার বক্তৃতাকে উদ্যমের সঙ্গে তুলে ধরেন।
১৩ যে-বিপদটাকে এড়িয়ে চলতে হবে তা হচ্ছে, ব্যক্তিগত অনুমান। যিহোবার সাক্ষিদের প্রকাশনাগুলো ব্যবহার করা এবং সেগুলোর ওপর নির্ভর করা উচিত। নিশ্চিত হোন যে, আপনি যা বলছেন তা স্পষ্ট, সেটাকে ভুলভাবে তুলে ধরা হচ্ছে না।
**********
১৪-১৬. বিষয়গুলোকে যেন সরলভাবে বলা যায়, সেইজন্য বক্তৃতা প্রস্তুত করার সময় কী করতে হবে?
১৪ আপনার বিষয়বস্তু প্রস্তুত করার সময় এই বিষয়ের প্রতিও সতর্ক মনোযোগ দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ যে, আপনি যা বলতে চাচ্ছেন, তা আপনি কীভাবে বলবেন। এই বিষয়টাকেই স্পিচ কাউন্সেল স্লিপ-এ “স্পষ্ট, বোধগম্য” হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এই বিষয়ের প্রতি পর্যাপ্ত মনোযোগ দিতে ব্যর্থ হওয়া আপনাকে আপনার শ্রোতাদের হৃদয়ে পৌঁছাতে বাধা দিতে পারে অথবা তারা যা শোনে, তা স্মরণে রাখাকে ব্যাহত করতে পারে। এই বিষয়ে বিবেচনার জন্য তিনটে গুরুত্বপূর্ণ দিক রয়েছে।
১৫ সরলভাবে বলা। এটা বলতে বোঝায় না যে, বাক্যগুলোকে আগে থেকেই চিন্তা করে ঠিক করে রাখতে হবে। কিন্তু, যে-ধারণাগুলোকে উপস্থাপন করা হবে, সেগুলো বিশ্লেষণ করতে হবে এবং বিশেষভাবে নির্দিষ্ট বিষয়গুলোকে বিবেচনা করতে হবে। এর ফলে সাধারণত এমন বক্তৃতা প্রদান করা হবে, যা অনাবশ্যক বাহুল্যবর্জিত এবং যেটার ধারণা সহজ ও সরল ভাষার অভিব্যক্তিপূর্ণ। যে-বিষয়টা বক্তার মনে রয়েছে, তা উপস্থাপনায়ও প্রকাশিত হবে।
১৬ শেষ মুহূর্তে প্রস্তুতি নেওয়া এড়িয়ে চলতে হবে। বক্তৃতার প্রত্যেকটা বিষয় বক্তার কাছে যতক্ষণ পর্যন্ত না সরল ও স্পষ্ট হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত সেটা নিয়ে ভাবতে হবে। বক্তৃতা দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার সময় এই বিষয়গুলো পুনরালোচনা করা তার মনে এগুলোকে এতটাই গেঁথে দেবে যে, প্রয়োজন হলে সঙ্গে সঙ্গে সেগুলো বেরিয়ে আসবে এবং বক্তার কাছে যেমন, তেমনই শ্রোতার কাছেও পুরোপুরি স্পষ্ট হবে।
১৭, ১৮. কেন অপরিচিত শব্দগুলোকে ব্যাখ্যা করতে হবে?
১৭ অপরিচিত শব্দগুলো ব্যাখ্যা করা। শাস্ত্র এবং যিহোবার সাক্ষিদের প্রকাশনাগুলো অধ্যয়ন করা আমাদের এমন বিভিন্ন শব্দের এক ভাণ্ডার প্রদান করেছে, যেগুলো সেই ব্যক্তিদের কাছে খুবই অস্বাভাবিক, যারা আমাদের কাজের সঙ্গে পরিচিত নয়। আমাদের যদি এই ধরনের শব্দ ব্যবহার করে কিছু শ্রোতার কাছে বাইবেলের সত্যগুলো ব্যাখ্যা করতে হয়, তাহলে আমরা যা বলি, হয় অধিকাংশ কথাই কোনো অর্থ রাখবে না নতুবা আমাদের কথা পুরোপুরি দুর্বোধ্য হবে।
১৮ আপনার শ্রোতাদের কথা বিবেচনা করুন। তাদের বোঝার ক্ষমতা কীরকম? আমাদের কাজ সম্বন্ধে তারা কতখানি জানে? এই কথাগুলোর মধ্যে কয়টা তারা সহজেই বুঝতে পারবে, যেমনটা বক্তা বুঝে থাকেন? “ঈশতন্ত্র,” “অবশিষ্টাংশ,” “আরও মেষ” ও এমনকি “হর্মাগিদোন” ও ‘রাজ্যের’ মতো শব্দগুলো হয় শ্রোতার মনে সম্পূর্ণ ভিন্ন এক ধারণা দিতে পারে নতুবা কোনো অর্থই রাখবে না। শ্রোতা যদি আমাদের কাজের সঙ্গে পরিচিত না থাকেন, তাহলে এমনকি “প্রাণ,” “নরক” ও ‘অমরত্বের’ মতো শব্দগুলোকেও ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন হতে পারে। কিন্তু, বক্তৃতা যদি মণ্ডলীর উদ্দেশে দেওয়া হয়, তাহলে এই ধরনের শব্দ ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন নেই। তাই, সেটিং বিবেচনা করা উচিত।
১৯, ২০. কীভাবে আমরা খুব বেশি বিষয়বস্তু নেওয়া এড়াতে পারি?
১৯ খুব বেশি বিষয়বস্তু নয়। একটি বক্তৃতায় হয়তো এত বেশি তথ্য থাকতে পারে যে, প্রচুর বিষয়বস্তু শ্রোতাদের হতবুদ্ধি করে ফেলতে পারে আর এতে বোধগম্যতা অস্পষ্ট হয়ে পড়তে পারে বা কোনো অর্থই রাখবে না। কোনো একটি বক্তৃতার উদ্দেশ্য সম্পাদন করার জন্য নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যতখানি বিষয়বস্তুকে সম্প্রসারিত করা যেতে পারে, তার চেয়ে বেশি বিষয়বস্তুর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া উচিত নয়। শ্রোতা যুক্তিযুক্তভাবে যতখানি গ্রহণ করে নিতে পারে, তার চেয়ে বেশি প্রকাশ করাও উচিত নয়। অধিকন্তু, একজন অপরিচিত ব্যক্তি বা নতুন আগ্রহী ব্যক্তির কাছে উপস্থাপিত বিষয়বস্তু, একই বিষয়ের ওপর মণ্ডলীতে উপস্থাপন করার সময় যে-বিষয়বস্তু ব্যবহার করা হয়, তার তুলনায় বেশ সহজ-সরল হতে হবে। এই ক্ষেত্রেও পরামর্শদাতাকে বক্তা যে-শ্রোতার উদ্দেশে বক্তৃতা দিচ্ছেন, সেই শ্রোতার কথা বিবেচনা করতে হবে।
২০ ছাত্র বা ছাত্রী কীভাবে জানবেন যে, একটি বক্তৃতায় কতখানি বিষয়বস্তু রাখতে হবে? প্রস্তুতি নেওয়ার সময় তুলনা করা উপকারজনক হবে। আপনাকে কী উপস্থাপন করতে হবে, তা বিশ্লেষণ করুন। এই বিষয়গুলোর মধ্যে কয়টা, অন্তত আংশিকভাবে হলেও ইতিমধ্যেই আপনার শ্রোতারা জানতে পারে? কয়টা বিষয় সম্পূর্ণরূপে নতুন? ইতিমধ্যেই বিদ্যমান জ্ঞানের ভিত্তি যত বিস্তৃত হবে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এটার ওপর তত বেশি কথা বলা যাবে। কিন্তু, যে-বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করা হবে, সেই সম্বন্ধে যদি একেবারে কিছুই জানা না থাকে, তাহলে কতখানি বলতে হবে ও শ্রোতাদের পুরোপুরিভাবে বোঝানোর জন্য এই বিষয়গুলো ব্যাখ্যা করতে কতটা সময় লাগবে, সেই ব্যাপারে অনেক যত্ন নিতে হবে।