এক অপূর্ব দ্বীপে সতেজতাদায়ক বৃদ্ধি
তাইওয়ানে আসা পর্যটকরা এর দ্বীপ জুড়ে ক্রান্তীয় সবুজ গাছপালার বৃদ্ধি দেখে অভিভূত না হয়ে পারে না। কচি ধান গাছগুলোর অপূর্ব সবুজ রং ফসল কাটার সময় পেকে সোনালি রং হয়ে যায়। পাহাড়ের কোল ঘেঁষে সুবিস্তৃত গভীর বনজঙ্গল রয়েছে। ঘনবসতিপূর্ণ শহরগুলোর বৈসাদৃশ্যে, মাঠের পর মাঠ জুড়ে ও পাহাড়গুলোতে সবুজ গাছপালার বৃদ্ধি সত্যিই সতেজতাদায়ক। বস্তুতপক্ষে, পশ্চিম দেশ থেকে আসা প্রথম পর্যটক, যিনি এই দ্বীপটা দেখেছিলেন, তিনি এটাকে ইল্হা ফরমোসা বা “অপূর্ব দ্বীপ” এই নামটি দিতে পরিচালিত হয়েছিলেন।
হ্যাঁ, তাইওয়ান এক অপূর্ব কিন্তু ছোট্ট দ্বীপ, যেটার দৈর্ঘ্য মাত্র ৩৯০ কিলোমিটার আর প্রস্থ প্রায় ১৬০ কিলোমিটার। এই দ্বীপের বেশির ভাগ অঞ্চল জুড়ে উঁচু পর্বতমালা রয়েছে। ইউ শান পর্বত, জাপানের ফুজি পর্বত অথবা নিউজিল্যান্ডের কুক পর্বতের চেয়েও উঁচু। দেশের মধ্যভাগ পর্বতমালা দ্বারা পরিবেষ্টিত ও সমুদ্রের দিকে নেমে আসা নিচু অঞ্চলে সংকীর্ণ উপকূলবর্তী সমভূমি তাইওয়ানের কর্মব্যস্ত জনসংখ্যার দ্বারা পরিপূর্ণ, যা এখন ২ কোটি ২০ লক্ষেরও বেশিতে পৌঁছেছে।
এক নতুন ধরনের বৃদ্ধি
কিন্তু, তাইওয়ানে আরেক ধরনের বৃদ্ধি—আত্মিক বৃদ্ধি—স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হয়ে উঠছে। এটা যুবক-বৃদ্ধ লোকেদের উদ্যোগের দ্বারা প্রতিফলিত হয়, যারা সত্য ঈশ্বর যিহোবাকে জানার পর প্রদর্শন করে থাকে। সেই লোকেদের এই বৃদ্ধিরত সংখ্যাকে দেখা সত্যিই অভিভূত হওয়ার মতো, যারা উদ্যোগের সঙ্গে অন্যদেরকে যিহোবা ও তাঁর উদ্দেশ্য সম্বন্ধে শেখানোর কাজ করে চলেছে।
বৃদ্ধির দরুন সম্প্রসারণ করা অত্যাবশ্যক হয়ে পড়ে। ১৯৯০ সালের ডিসেম্বর মাসে যিহোবার সাক্ষিদের বিস্তৃত শাখা অফিসের জন্য জায়গা কেনা হয়েছিল। তাইপেইতে স্থাপিত আগের শাখা অফিসটি ১,৭৭৭ জন রাজ্য প্রকাশকের কাজ দেখাশোনা করার জন্য খুবই ছোট হয়ে পড়েছিল। বেশ কয়েক বছর ধরে সব বয়সের আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের পরিশ্রমের ফলে, সিনউতে ১৯৯৪ সালের আগস্ট মাসে নতুন শাখা অফিসটি ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত হয়েছিল। সেইসময় ২,৫১৫ জন ঈশ্বরের বাক্য বাইবেল থেকে সুসমাচার প্রচারের কাজে অংশ নিচ্ছিল। এখন দশ বছরেরও বেশি সময় পরে সেই সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি হয়ে ৫,৫০০ জন হয়েছে এবং প্রতি মাসে প্রায় এর এক চতুর্থাংশ পূর্ণসময়ের সুসমাচার প্রচার কাজে অংশ নিচ্ছে। বিশেষভাবে লক্ষণীয় বিষয়টা হচ্ছে, এই যুবক-যুবতীরা সকালের সতেজতাদায়ক “শিশিরতুল্য।”—গীতসংহিতা ১১০:৩.
অল্পবয়সিদের মধ্যে আধ্যাত্মিক বৃদ্ধি
সুসমাচারের অনেক উদ্যোগী প্রকাশক বেশ অল্পবয়সি। কেউ কেউ স্কুলে পড়ছে। উদাহরণস্বরূপ, উত্তর তাইওয়ানের একটা শহরে এক বিবাহিত দম্পতিকে প্রথমবারের জন্য ঐশিক পরিচর্যা বিদ্যালয়ে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়, যেখানে যিহোবার সাক্ষিরা শেখে যে কীভাবে বাইবেলের সত্য অন্যদের শিক্ষা দিতে হয়। সেই দম্পতি ওয়েজুন নামে একটা ছোট ছেলেকে প্ল্যাটফর্ম থেকে অনেক প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির চেয়েও আরও দক্ষতার সঙ্গে বাইবেল পড়তে দেখে অত্যন্ত অবাক হয়ে যায়। তারপর অন্য যে-সভাগুলোতে তারা যোগ দিয়েছিল, সেখানেও তারা এখনও স্কুলে যায় না এমন বাচ্চাদের বুদ্ধিদীপ্ত উত্তর দিতে দেখে খুবই অভিভূত হয়ে যায়। এই দম্পতি কিংডম হলে ছোট বাচ্চাদের সুন্দর আচরণের জন্য প্রশংসা করেছিল।
কেন এই অল্পবয়সি ছেলেমেয়েরা বৌদ্ধ ও তাও ধর্মাবলম্বী দেশে বাইবেল শিক্ষার প্রতি এতখানি মনোযোগী? এর কারণ হল, তাদের খ্রিস্টান বাবামায়েরা বাইবেলের নীতিগুলো প্রয়োগ করেছে এবং যিহোবার সঙ্গে সম্পর্কের ওপর কেন্দ্র করে এক সুখী পরিবারিক জীবন গড়ে তুলেছে। ওয়েজুনের বাবামা পারিবারিক বাইবেল অধ্যয়ন এবং ক্ষেত্রের পরিচর্যাকে উপভোগ্য করে তুলতে যথাসাধ্য চেষ্টা করায় এই ছোট্ট ছেলেটির দাদা ও দিদি ইতিমধ্যেই বাপ্তাইজিত সাক্ষি। সম্প্রতি ওয়েজুনকে যখন প্রচার কাজে অংশ নিতে বলা হয়েছিল, তার মা বলেছিলেন, সেই মাসে পরিবারের বাকি সদস্যরা মিলে মোট যতগুলো পত্রিকা অর্পণ করেছে ইতিমধ্যেই সে তার চেয়েও বেশি পত্রিকা অর্পণ করে ফেলেছে। সে সত্য সম্বন্ধে কথা বলতে, সভাগুলোতে মন্তব্য করতে এবং সে যা শিখেছে তা অন্যদেরকে বলতে পছন্দ করে।
তারা যখন বড় হতে থাকে
এই অল্পবয়সিরা বড় হয়ে কী করে থাকে? তাদের মধ্যে বেশির ভাগই ক্রমাগত যিহোবা ও পরিচর্যার প্রতি প্রকৃত ভালবাসা দেখিয়ে চলে। উদাহরণস্বরূপ, হুয়েপিন একজন ছাত্রী। একদিন তার শিক্ষক উল্লেখ করেন যে, কোনো একটা ধর্মের লোকেরা রক্ত গ্রহণ করে না কিন্তু তারা কোন ধর্মের তা তিনি জানেন না। ক্লাস শেষ হওয়ার পর, এই যুবতী খ্রিস্টান তার শিক্ষককে ব্যাখ্যা করে যে তারা হল যিহোবার সাক্ষি এবং কেন তারা এইরকম এক পদক্ষেপ গ্রহণ করে থাকে।
আরেকজন শিক্ষিকা যৌন সংক্রামিত রোগের ওপর একটা ভিডিও দেখান। সেই ভিডিওটা ১ করিন্থীয় ৬:৯ পদ উল্লেখ করে কিন্তু তার শিক্ষিকা দাবি করেন যে, বাইবেল সমকামিতাকে নিন্দা করে না। আবারও হুয়েপিন তার শিক্ষিকাকে ওই বিষয়ে ঈশ্বরের দৃষ্টিভঙ্গি দেখাতে সক্ষম হয়েছিল।
তার সহপাঠী শুশা যখন ঘরোয়া যুদ্ধের ওপর একটা রিপোর্ট তৈরি করছিল, তখন হুয়েপিন তাকে “নির্যাতিত নারীদের জন্য সাহায্য” এই শিরোনামের ২০০২ সালের জানুয়ারি - মার্চ সচেতন থাক! পত্রিকাটি দেয় এবং বলে যে এই বিষয়ের ওপর এই পত্রিকাটিতে অনেক বাইবেল ভিত্তিক তথ্য রয়েছে। পরবর্তীকালে শুশা একজন অবাপ্তাইজিত প্রকাশক হয়। সে এবং হুয়েপিন এখন অন্যদের কাছেও সুসমাচার প্রচার করে থাকে।
স্কুল পড়ুয়া অনেক খ্রিস্টান, অন্যদের কাছে নিজেদেরকে বাইবেলের নীতি মেনে চলে এমন ব্যক্তি হিসেবে পরিচয় দেওয়া কঠিন বলে মনে করে। বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছোট ছোট শহরগুলোতে এমনটা হয়ে থাকে। জিহায়ুকে তার বিশ্বাস ও প্রচার কাজের জন্য সহপাঠীদের চাপ সহ্য করতে হয়েছিল। সে বলে: “আমি এতটাই বিষণ্ণ বোধ করতাম যে, পরিচর্যার সময় সহপাঠীদের সঙ্গে না আবার দেখা হয়ে যায় এই নিয়ে আমি রীতিমতো ভয়ে ভয়ে থাকতাম। মাঝে মাঝে তারা প্রায় দশ জন মিলে আমাকে উপহাস করত!” একদিন জিহায়ুর শিক্ষক তাকে তার ধর্ম সম্বন্ধে ক্লাসে একটা বক্তৃতা দিতে বলেন। “আমি আমার বক্তৃতাটি আদিপুস্তক ১ অধ্যায় দিয়ে শুরু করার এবং এই ধরনের প্রশ্নগুলো জিজ্ঞেস করার সিদ্ধান্ত নিই: কে এই পৃথিবী ও এতে বিদ্যমান সমস্তকিছু সৃষ্ট করেছেন? আর মানুষ কীভাবে অস্তিত্বে এসেছে? আমি শাস্ত্রপদগুলো পড়তে শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে কয়েকজন আমাকে কুসংস্কারাচ্ছন্ন বলে হাসতে শুরু করে। তা সত্ত্বেও, আমি আমার আলোচনা চালিয়ে যাই ও উপস্থাপনাটি শেষ করি। পরে, আমি আমার কয়েকজন সহপাঠীর সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে আমাদের কাজ ও বিশ্বাস সম্পর্কে কথা বলার সুযোগ পাই। এখন তারা আর আমাকে প্রচার করতে দেখে হাসে না!”
জিহায়ু বলে চলে: “আমার বাবামা সাক্ষি হওয়ায়, প্রতিদিন সকালে আমরা শাস্ত্র পরীক্ষা করি। আমরা নিয়মিতভাবে বাইবেল অধ্যয়ন করি ও সভাগুলোতে যোগ দিই। সেইজন্য এমন যেকারোর মুখোমুখি হতে পারি, যে অন্যদেরকে বাইবেলের সতেজতাদায়ক সত্য জানানোর সময় এখনও আমাকে উপহাস করতে চায়।
টিংমে একটা গার্লস টেকনিক্যাল স্কুলের ছাত্রী। একবার তাকে একটা বনভোজনে আমন্ত্রণ জানানো হয়, যেখানে তার সহপাঠীদের সঙ্গে একটা ছেলেদের স্কুলের কিছু ছেলেও ছিল। সে এই ধরনের মেলামেশাতে যে-নৈতিক বিপদ রয়েছে তা বুঝতে পারে আর তাই সেখানে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এমনকি যুবক-যুবতীদের জিজ্ঞাস্য—যে-উত্তরগুলো কাজ করে (ইংরেজি)a বইটি থেকে চমৎকার বিষয়গুলো জানানোর পরেও তাকে অনেক বার আমন্ত্রণ করা হয়েছে। মেয়েরা তাকে সেকেলে বলে উপহাস করেছিল। কিন্তু, বাইবেলের নীতিগুলো অনুসরণ করা যে প্রজ্ঞার কাজ তা শীঘ্রই প্রমাণিত হয়, যখন মেয়েদের মধ্যে একজন গর্ভবতী হয়ে পড়ে এবং গর্ভপাত ঘটায়। টিংমে বলে: “যিহোবার নির্দেশনা অনুসারে চলা আমাকে এক শুদ্ধ বিবেক দান করেছে। ফলস্বরূপ, আমার মনে আনন্দ ও গভীর পরিতৃপ্তির অনুভূতি রয়েছে।”
বৃদ্ধির ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতাগুলো অতিক্রম করা
টিংমের ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের মধ্যে একজন হল রেওয়েন। সে যখন ছোট ছিল, তখন রেওয়েনের কাছে সভায় যাওয়া এবং ক্ষেত্রের পরিচর্যায় অংশ নেওয়া একটা ক্লান্তিকর রুটিন বলে মনে হতো। কিন্তু, তার মণ্ডলীর সদস্যদের মধ্যে বিদ্যমান প্রকৃত ভালবাসা এবং স্কুলের সহপাঠীদের আন্তরিকতাহীন বন্ধুত্ব দেখে সে দৃঢ়প্রত্যয়ী হয় যে তার জীবনে কিছু পরিবর্তনের প্রয়োজন আছে। রেওয়েন তার স্কুলের সহপাঠীদের কাছে প্রচার করতে শুরু করে এবং শীঘ্রই আরও স্পষ্টরূপে বুঝতে পারে যে তার কী করা উচিত। সে সহায়ক অগ্রগামী হিসেবে কাজ করতে শুরু করে, মাসে ৫০ ঘন্টারও বেশি সময় পরিচর্যায় ব্যয় করে। এরপর সে নিয়মিত অগ্রগামী হিসেবে কাজ করতে শুরু করে, মাসে ৭০ ঘন্টারও বেশি সময় পরিচর্যায় ব্যয় করে। রেওয়েন বলে: “যিহোবার কাছে যে আমি কতটা কৃতজ্ঞ তা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। তিনি কখনো আমাকে পরিত্যাগ করেননি। এমনকি যদিও আমি তাঁকে অসন্তুষ্ট করে এমন কাজগুলো করেছি, তবুও তিনি আমাকে ভালবাসেন। আমার মা এবং মণ্ডলীর অন্যান্যরাও একই রকম প্রেমপূর্ণ মনোভাব দেখিয়েছে। আর এখন আমি পাঁচটা বাইবেল অধ্যয়ন পরিচালনা করছি বলে আমার মনে হয় যে আমি সবচেয়ে পরিতৃপ্তিদায়ক কাজে যুক্ত আছি।”
গ্রামের একটা হাইস্কুলে, লোকনৃত্যের এক প্রতিযোগিতায় স্কুলকে প্রতিনিধিত্ব করার জন্য দুজন অল্পবয়সি সাক্ষিকে নিযুক্ত করা হয়। তারা যখন সেই প্রতিযোগিতার ধরন সম্বন্ধে জানতে পারে, তখন তাদের কাছে মনে হয় যে সেখানে অংশ নেওয়া তাদের খ্রিস্টীয় বিবেকের বিরুদ্ধে কাজ করা হবে। তারা যখন তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ব্যাখ্যা করতে চেষ্টা করে ও সেখান থেকে তাদের বাদ দিতে বলে, তাদের সেই অনুরোধ বাতিল করা হয়। উপরন্তু তাদের শিক্ষকরা বলে যে, যেহেতু তাদের নিযুক্ত করা হয়েছে, তাই তাদের সেখানে যেতেই হবে। এই ব্যাপারে কোনোরকম আপোশ না করতে চাওয়ায়, সেই অল্পবয়সি সাক্ষিরা ইন্টারনেটে শিক্ষা বিভাগের ওয়েব সাইটে যোগাযোগ করে এবং তাদের সমস্যা বর্ণনা করে একটা চিঠি লেখে। যদিও তারা ব্যক্তিগতভাবে কোনো উত্তর পায়নি কিন্তু অল্পদিনের মধ্যেই স্কুল এই ধরনের প্রতিযোগিতায় কাউকে জোর না করার জন্য একটা নির্দেশ পায়। এই দুজন যুবক কত খুশিই না হয়েছিল যখন তারা দেখেছিল যে, বাইবেলের প্রশিক্ষণ শুধু তাদের বিবেককেই গড়ে তোলেনি কিন্তু সেইসঙ্গে যা সঠিক তার পক্ষে পদক্ষেপ নিতে তাদেরকে শক্তি প্রদানও করেছে!
এমনকি যাদের শারীরিক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, তারাও বাইবেলের সত্য অন্যদেরকে জানিয়ে প্রচুর আনন্দ পাচ্ছে। মিনিয়ু জন্ম থেকেই পক্ষাঘাতগ্রস্ত। তার দুহাত অবশ থাকায় সে জিভ দিয়ে বাইবেলের পাতা উলটায় এবং যে পদটা সে পড়তে চায়, তা বের করে। কিংডম হলে ঐশিক পরিচর্যা বিদ্যালয়ে তার বক্তৃতাগুলো দেওয়ার সময়, সে একটা নিচু আরামকেদারায় শোয় আর তার সহকারী একটা নিচু টুলে বসে তার জন্য মাইক্রোফোন ধরে রাখে। এই বক্তৃতাগুলো প্রস্তুত করতে মিনিয়ু যে-কঠোর প্রচেষ্টা করে থাকে, তা দেখা কতই না হৃদয়গ্রাহী!
মিনিয়ু যখন রাজ্যের প্রকাশক হতে চেয়েছিল, তখন মণ্ডলীর কিছু বোন তাকে সাহায্য করার জন্য টেলিফোনে কী করে সাক্ষ্য দিতে হয় তা শিখেছিল। সে তার জিভের সাহায্যে ফোন ডায়াল করে আর বোনেরা তার ফোনকলের রেকর্ড রাখতে তাকে সাহায্য করে। সে এই কাজটাকে এতটাই ভালবাসে যে সে একজন সহায়ক অগ্রগামী হয়ে উঠেছে, প্রতি মাসে ফোনে অন্যদের সঙ্গে ঈশ্বরের রাজ্য সম্বন্ধে ৫০ থেকে ৬০ ঘন্টা কথা বলে থাকে। সে এমন কিছু ব্যক্তিকে পায়, যারা বাইবেল সাহিত্যাদি গ্রহণ করে এবং পুনর্সাক্ষাৎ করার অনুমতি দেয়। বর্তমানে এইভাবে পাওয়া তিনজন ব্যক্তির সঙ্গে সে বাইবেল অধ্যয়ন করছে।
হ্যাঁ, সতেজতাদায়ক শিশিরতুল্য অল্পবয়সিরা—তাইওয়ানে যিহোবার সাক্ষিদের ৭৮টি মণ্ডলীতে স্বেচ্ছায় ও উদ্যোগের সঙ্গে জীবন রক্ষাকারী রাজ্যের সুসমাচার ঘনবসতিপূর্ণ এই দ্বীপের লক্ষ লক্ষ লোকের মধ্যে ছড়িয়ে দিচ্ছে। এটা হচ্ছে পৃথিবীব্যাপী বাইবেলের এই ভবিষ্যদ্বাণীর পরিপূর্ণতার এক ক্ষুদ্র অংশ, যা বলে: “তোমার বিক্রম-দিনে তোমার প্রজাগণ স্বেচ্ছায় দত্ত উপহার হইবে; পবিত্র শোভায়, ঊষার গর্ব্ভ হইতে, তোমার যুবকেরা তোমার কাছে শিশিরতুল্য।” (গীতসংহিতা ১১০:৩) এই অল্পবয়সিরা তাদের বয়স্ক সহকর্মীদের জন্য কতই না উৎসাহের এক উৎস আর সর্বোপরি তারা তাদের স্বর্গীয় পিতা যিহোবা ঈশ্বরের কাছেও আনন্দের এক উৎস!—হিতোপদেশ ২৭:১১.
[পাদটীকা]
a যিহোবার সাক্ষিদের দ্বারা প্রকাশিত।
[১০ পৃষ্ঠার বাক্স/চিত্র]
আরও কিংডম হলের প্রয়োজন
তাইওয়ানে প্রকাশকদের সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে আরও কিংডম হলের প্রয়োজন এক প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেন? কারণ, কিছু গ্রাম্য এলাকা ছাড়া, কিংডম হল নির্মাণের জন্য উপযুক্ত জমি প্রায় নেই বললেই চলে। এ ছাড়া জমির দাম অত্যন্ত বেশি এবং ভূমি আইনগুলো কড়া। বড় শহরগুলোতে একমাত্র বিকল্প উপায় হল, অফিসের জন্য ব্যবহৃত রুম কিনে তা কিংডম হলে পরিবর্তিত করা। কিন্তু, অধিকাংশ অফিসের ছাদ খুবই নিচু, রক্ষণাবেক্ষণের খরচ অনেক বেশি, সংরক্ষিত প্রবেশাধিকার অথবা আরও অন্যান্য কারণের জন্য সেগুলো ব্যবহারের অযোগ্য।
তা সত্ত্বেও, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাইওয়ানের যিহোবার সাক্ষিরা বেশ কিছু সংখ্যক কিংডম হল পেতে সক্ষম হয়েছে। সাক্ষিরা অর্থনৈতিক দায়িত্ব বহন করতে ও সেইসঙ্গে নির্মাণ কার্যে দক্ষতা অর্জন করতে ইচ্ছুক হওয়ায় নতুন নতুন জায়গার সন্ধান করা হচ্ছে।