অগ্রগামী পরিচর্যার আশীর্বাদগুলো
১ “আমি জানি যে অন্য কোন কাজ আমার জন্য এতখানি পরিতৃপ্তি নিয়ে আসতে পারত না যা অন্যদের সাথে সত্য বন্টন করে নেওয়ার দ্বারা এসেছে,” একজন অগ্রগামী ভাই বলেছিলেন। আরেকজন অগ্রগামী বোন বলেছিলেন: “প্রত্যেকটি দিনের শেষে আমার সুখনিদ্রা হয় আর আমার হৃদয় আনন্দে পূর্ণ থাকে।” এই অগ্রগামীরা সব জায়গার ভাইবোনেদের প্রতিনিধিত্ব করে, যারা অগ্রগামী পরিচর্যার আশীর্বাদগুলো উপভোগ করেছে।—হিতো. ১০:২২.
২ ঈশ্বরের বাক্যের জীবনরক্ষাকারী জ্ঞান অর্জন করার জন্য অন্যদের সাহায্য করা সত্যিকারের পরিতৃপ্তি নিয়ে আসে। (প্রেরিত ২০:৩৫; ১ থিষল. ২:১৯, ২০) দীর্ঘদিনের একজন অগ্রগামী লিখেছিলেন, “তাদের জীবনে পরিবর্তন নিয়ে আসতে লোকেদের অনুপ্রাণিত করার ক্ষেত্রে ঈশ্বরের বাক্য কতখানি ক্ষমতাশালী তা দেখা সত্যই রোমাঞ্চকর এবং বিশ্বাস দৃঢ়কারী।” হ্যাঁ, লোকেদের সাহায্য করার ও বাইবেল অধ্যয়ন পরিচালনা করার জন্য নিজেদের প্রাপ্তিসাধ্য করে অগ্রগামীরা এইরকম আশীর্বাদগুলো উপভোগ করবে।
৩ যিহোবার ওপর নির্ভর করা: অগ্রগামীরা তাদের পরিচর্যা চালিয়ে যাওয়ার সময় প্রতিদিন ঈশ্বরের আত্মার ওপর নির্ভর করলে তা তাদেরকে “আত্মার ফল” গড়ে তুলতে সাহায্য করে এবং তাদের জন্য এক সুরক্ষা হিসেবে কাজ করে। (গালা. ৫:১৬, ২২, ২৩) এ ছাড়া, যেহেতু তারা সবসময় ঈশ্বরের বাক্য ব্যবহার করে, তাই সত্যকে সমর্থন ও অন্যদের শক্তিশালী করার জন্য শাস্ত্র ব্যবহার করার ব্যাপারে অগ্রগামীরা প্রায়ই দক্ষ হয়। (২ তীম. ২:১৫) বেশ কয়েক দশক ধরে অগ্রগামীর কাজ করেছেন এমন একজন ভাই বলেছিলেন: “অগ্রগামীর কাজ আমাকে বাইবেল সম্বন্ধে এক গভীর জ্ঞান অর্জন করতে সাহায্য করেছে, এমন এক জ্ঞান যেটিকে আমি যিহোবা ও তাঁর উদ্দেশ্যগুলি জানতে অনেক লোকেদের সাহায্য করার জন্য ব্যবহার করেছি।” কতই না পুরস্কারজনক!
৪ এ ছাড়া, নিয়মিত অগ্রগামীদের অবশ্যই আরও অনেক উপায়ে যিহোবার ওপর নির্ভর করতে হবে। তাদের বিশ্বাস শক্তিশালী হয়, যখন তারা দেখে যে, তাদের বস্তুগত প্রয়োজনগুলো জোগাতে তিনি কীভাবে তাদের প্রচেষ্টাগুলোতে আশীর্বাদ করছেন। ৭২ বছর বয়সী একজন ভাই, যিনি ৫৫ বছর ধরে অগ্রগামীর কাজ করেছেন তিনি বলেছিলেন: “যিহোবা আমাকে কখনও নিরাশ হতে দেননি।” এ ছাড়া, অগ্রগামীরা তাদের জীবনকে সাধাসিধে রেখে নিজেদেরকে জীবনের অনেক উদ্বিগ্নতা থেকে রক্ষা করে। এটা কি আপনার কাছে কোনো আবেদন রাখে?—মথি ৬:২২; ইব্রীয় ১৩:৫, ৬.
৫ ঈশ্বরের নিকটবর্তী হওয়া: যিহোবার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক সবচেয়ে বেশি মূল্যবান এক সম্পদ। (গীত. ৬৩:৩) যিহোবার প্রতি ভালবাসার কারণে আমরা যখন পরিচর্যায় পুরোপুরি অংশ নিই, তখন সেই সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হয়। (যাকোব ৪:৮) ১৮ বছরেরও বেশি সময় অগ্রগামীর কাজ করেছেন এমন একজন ভাই বলেছিলেন: “অগ্রগামীর কাজ আমাদের ‘সদাপ্রভু মঙ্গলময়’ এটি ‘আস্বাদন করিয়া দেখার’ ও দিনের পর দিন আমাদের সৃষ্টিকর্তার সাথে এক চিরকালীন শক্তিশালী সম্বন্ধ গড়ে তোলার জন্য সুযোগ দেয়।”—গীত. ৩৪:৮.
৬ প্রয়োজনীয় পরিস্থিতিগুলো থাকা ছাড়াও, অগ্রগামীদের অবশ্যই দৃঢ় বিশ্বাস, ঈশ্বর ও প্রতিবেশীর প্রতি সত্যিকারের ভালবাসা এবং বিভিন্ন ত্যাগস্বীকার করার এক ইচ্ছুক মনোভাব থাকতে হবে। (মথি ১৬:২৪; ১৭:২০; ২২:৩৭-৩৯) কিন্তু, সর্বত্র অগ্রগামীদের উজ্জ্বল মুখগুলো সাক্ষ্য দেয় যে, অগ্রগামী পরিচর্যার আশীর্বাদগুলো অপরিমেয়। (মালাখি ৩:১০) এই আশীর্বাদগুলো কেবল অগ্রগামীদের মধ্যেই সীমিত নয় কিন্তু অগ্রগামীরা যে-উত্তম মনোভাব দেখায়, সেটা থেকে তাদের পরিবার ও মণ্ডলীও প্রচুররূপে উপকৃত হয়।—ফিলি. ৪:২৩.
[অধ্যয়ন প্রশ্নাবলি]
১, ২. অগ্রগামী পরিচর্যার সঙ্গে কোন কোন আশীর্বাদ ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত এবং কেন?
৩, ৪. কীভাবে অগ্রগামীর কাজ একজনকে যিহোবার ওপর নির্ভর করতে শেখায় এবং এটা কীভাবে একজনকে আধ্যাত্মিকভাবে বৃদ্ধি পেতে সাহায্য করে?
৫. কীভাবে অগ্রগামীর কাজ একজনকে যিহোবার নিকটবর্তী হতে সাহায্য করে?
৬. অগ্রগামীদের অবশ্যই কী থাকতে হবে এবং অগ্রগামীদের সঙ্গে আর কারা উপকৃত হয়?