“যে জন পাঠ করে, সে বুঝুক”
“যখন দেখিবে, ধ্বংসের যে ঘৃণার্হ বস্তু . . . তাহা পবিত্র স্থানে দাঁড়াইয়া আছে, . . . তখন যাহারা যিহূদিয়াতে থাকে, তাহারা পাহাড় অঞ্চলে পলায়ন করুক।”—মথি ২৪:১৫, ১৬.
১. লূক ১৯:৪৩, ৪৪ পদে যীশুর সতর্কবাণীর ফলাফল কী হয়েছিল?
আসন্ন বিপদ দেখে সতর্ক হলে তবেই আমরা তা থেকে রক্ষা পেতে পারি। (হিতোপদেশ ২২:৩) এটা মনে রেখে, সা.কা. ৬৬ সালে রোমীয়দের আক্রমণের পরে যিরূশালেমের খ্রীষ্টানদের অবস্থাটা একটু কল্পনা করুন। যীশু সতর্ক করে দিয়েছিলেন যে ওই শহরকে ঘেরা হবে ও ধ্বংস করা হবে। (লূক ১৯:৪৩, ৪৪) বেশিরভাগ যিহূদীরাই তাঁর কথাকে অবজ্ঞা করেছিল। কিন্তু তাঁর শিষ্যেরা তাঁর সতর্কবাণীতে কান দিয়েছিলেন। ফলে, তারা সা.কা. ৭০ সালের ধ্বংস থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন।
২, ৩. মথি ২৪:১৫-২১ পদে লেখা যীশুর ভবিষ্যদ্বাণীর প্রতি কেন আমাদের আগ্রহী হওয়া উচিত?
২ এক ভবিষ্যদ্বাণীতে যা আমাদের দিনেও খাটে যীশু এক চিহ্ন সম্বন্ধে বলেছিলেন যার অনেকগুলো দিক ছিল যেমন যুদ্ধ, খাদ্যের অভাব, ভূমিকম্প, মহামারী এবং ঈশ্বরের রাজ্যের ঘোষণাকারী খ্রীষ্টানদের তাড়না। (মথি ২৪:৪-১৪; লূক ২১:১০-১৯) এছাড়াও, যীশু এমন এক সূত্র দিয়েছিলেন যা তাঁর শিষ্যদের জানতে সাহায্য করেছিল যে শেষ একেবারে কাছে—‘ধ্বংসের যে ঘৃণার্হ বস্তু তাহা পবিত্র স্থানে দাঁড়াইয়া আছে।’ (বাঁকা অক্ষরে মুদ্রণ আমাদের।) (মথি ২৪:১৫) এই অর্থপূর্ণ কথাগুলো কীভাবে আজকে ও ভবিষ্যতে আমাদের জীবনকে প্রভাবিত করে তা জেনে নেওয়ার জন্য আসুন আমরা এগুলো আবারও পরীক্ষা করে দেখি।
৩ চিহ্ন দেওয়ার পর যীশু বলেছিলেন: “যখন দেখিবে, ধ্বংসের যে ঘৃণার্হ বস্তু দানিয়েল ভাববাদী দ্বারা উক্ত হইয়াছে, তাহা পবিত্র স্থানে দাঁড়াইয়া আছে,—যে জন পাঠ করে, সে বুঝুক,—তখন যাহারা যিহূদিয়াতে থাকে, তাহারা পাহাড় অঞ্চলে পলায়ন করুক; যে কেহ ছাদের উপরে থাকে, সে গৃহ হইতে জিনিষপত্র লইবার জন্য নীচে না নামুক; আর যে কেহ ক্ষেত্রে থাকে, সে আপন বস্ত্র লইবার নিমিত্ত পশ্চাতে ফিরিয়া না আসুক। হায়, সেই সময়ে গর্ব্ভবতী এবং স্তন্যদাত্রীদিগের সন্তাপ হইবে! আর প্রর্থনা কর, যেন তোমাদের পলায়ন শীতকালে কিম্বা বিশ্রামবারে না ঘটে। কেননা তৎকালে এরূপ ‘মহাক্লেশ উপস্থিত হইবে, যেরূপ জগতের আরম্ভ অবধি এ পর্য্যন্ত কখনও হয় নাই, কখনও হইবেও না।’”—মথি ২৪:১৫-২১.
৪. কী ইঙ্গিত করে যে মথি ২৪:১৫ পদ প্রথম শতাব্দীতে একবার পরিপূর্ণ হয়েছিল?
৪ মার্ক ও লূকের বিবরণে আরও বেশি কিছু বর্ণনা পাওয়া যায়। মথি যেখানে বলেন “পবিত্র স্থানে দাঁড়াইয়া আছে,” সেখানে মার্ক ১৩:১৪ পদ বলে “যেখানে দাঁড়াইবার নয়, সেইখানে দাঁড়াইয়া আছে।” আর লূক ২১:২০ পদে যীশুর এই কথাগুলোকে যোগ দেওয়া হয়: “যখন তোমরা যিরূশালেমকে সৈন্যসামন্ত দ্বারা বেষ্টিত দেখিবে, তখন জানিবে যে, তাহার ধ্বংস সন্নিকট।” এটা আমাদের বুঝতে সাহায্য করে যে এর প্রথম পরিপূর্ণতা শুরু হয়েছিল যখন যিরূশালেম ও এর মন্দির যা যিহূদীদের কাছে পবিত্র ছিল কিন্তু যিহোবার কাছে আর পবিত্র ছিল না, সা.কা. ৬৬ সালে রোমীয়রা আক্রমণ করেছিল। আর সেই শহর একেবারে উজাড় হয়ে গিয়েছিল যখন সা.কা. ৭০ সালে রোমীয়রা শহর ও মন্দির দুটোই পুরোপুরি ধ্বংস করে দেয়। তাহলে সেই সময়ে “ঘৃণার্হ বস্তু” কী ছিল? আর কীভাবে তা ‘পবিত্র স্থানে দাঁড়াইয়া ছিল’? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর আমাদের স্পষ্ট করে বলে দেবে যে আজকে তা কীভাবে পরিপূর্ণ হবে।
৫, ৬. (ক) দানিয়েল ৯ অধ্যায়ের পাঠকদের কেন বোঝার দরকার? (খ) “ঘৃণার্হ বস্তু” সম্পর্কে যীশুর ভবিষ্যদ্বাণী কীভাবে পরিপূর্ণ হয়েছিল?
৫ যীশু পাঠকদের বুঝবার জন্য পরামর্শ দেন। কীসের পাঠক? সম্ভবত, দানিয়েল ৯ অধ্যায়ের। সেখানে আমরা একটা ভবিষ্যদ্বাণী পাই যার মধ্যে মশীহ কখন আসবেন তার ইঙ্গিত পাওয়া যায় এবং এটা আরও বলে যে সাড়ে তিন বছর পর তিনি “উচ্ছিন্ন” হবেন। ভবিষ্যদ্বাণীটা বলে: “ঘৃণার্হ বস্তু সকলের পক্ষের উপরে ধ্বংসক আসিবে; এবং উচ্ছিন্নতা, নিরূপিত উচ্ছিন্নতা পর্য্যন্ত ধ্বংসকের উপরে [ক্রোধ] বর্ষিত হইবে।” (বাঁকা অক্ষরে মুদ্রণ আমাদের।)—দানিয়েল ৯:২৬, ২৭; আরও দেখুন দানিয়েল ১১:৩১; ১২:১১.
৬ যিহূদীরা ভেবেছিল যে এই কথা প্রায় ২০০ বছর আগে আন্টিওকাস ৪র্থ যখন মন্দিরকে অপবিত্র করেছিলেন সেটাকে বুঝিয়েছিল। কিন্তু যীশুর কথা থেকে অন্য কিছু জানা গিয়েছিল আর তাই তিনি তা বুঝবার জন্য পরামর্শ দিয়েছিলেন কারণ তখন পর্যন্ত “ঘৃণার্হ বস্তু” আসেনি কিংবা ‘পবিত্র স্থানে দাঁড়ায়নি।’ এর থেকে পরিষ্কার বোঝা যায় যে যীশু রোমীয় সৈন্যদের কথা বলছিলেন যারা সা.কা. ৬৬ সালে বিশেষ প্রতীক নিয়ে এসেছিল। এই প্রতীকগুলো অনেক দিন ধরে ব্যবহার করা হচ্ছিল যা একরকম মূর্তিই ছিল আর তা যিহূদীদের জন্য ঘৃণিত ছিল।a কিন্তু কখন তারা ‘পবিত্র স্থানে দাঁড়াইয়া ছিল’? যখন রোমীয় সৈন্যরা তাদের বিশেষ প্রতীক নিয়ে যিরূশালেম ও এর মন্দিরকে আক্রমণ করেছিল, যে জায়গাকে যিহূদীরা পবিত্র বলে মনে করত। রোমীয়রা এমনকি মন্দির এলাকার দেওয়ালের চারদিক দিয়ে গর্ত খুঁড়তে শুরু করেছিল। প্রকৃতপক্ষে যে বস্তুকে এত দিন ধরে ঘৃণার্হ হিসেবে দেখা হত তা সত্যিই তখন পবিত্র স্থানে দাঁড়িয়ে ছিল।—যিশাইয় ৫২:১; মথি ৪:৫; ২৭:৫৩; প্রেরিত ৬:১৩.
আধুনিক দিনের “ঘৃণার্হ বস্তু”
৭. আমাদের সময়ে যীশুর কোন্ ভবিষ্যদ্বাণী পরিপূর্ণ হচ্ছে?
৭ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকে আমরা মথি ২৪ অধ্যায়ে পাওয়া যীশুর দেওয়া চিহ্নগুলোকে বড় আকারে পূর্ণ হতে দেখছি। কিন্তু, তাঁর কথাগুলো আর একবার মনে করে দেখুন: “যখন দেখিবে, ধ্বংসের যে ঘৃণার্হ বস্তু . . . তাহা পবিত্র স্থানে দাঁড়াইয়া আছে, তখন যাহারা যিহূদিয়াতে থাকে, তাহারা পাহাড় অঞ্চলে পলায়ন করুক।” (মথি ২৪:১৫, ১৬) ভবিষ্যদ্বাণীর এই দিকটা নিশ্চয়ই আমাদের দিনেও পরিপূর্ণ হবে।
৮. আধুনিক দিনের “ঘৃণার্হ বস্তু”-কে বছরের পর বছর ধরে যিহোবার সাক্ষিরা কীভাবে চিনিয়ে আসছেন?
৮ এই ভবিষ্যদ্বাণী পরিপূর্ণ হবেই সেই সম্পর্কে যিহোবার দাসেদের যে বিশ্বাস রয়েছে তা দেখিয়ে ১৯২১ সালের ১লা জানুয়ারির প্রহরীদুর্গ (ইংরেজি) এই ভবিষ্যদ্বাণীটা ব্যাখ্যা করে আর মধ্যপ্রাচ্যে ঘটে চলা ঘটনাগুলোর সঙ্গে তার সম্পর্ক দেখায়। এরপর ১৯২৯ সালের ১৫ই ডিসেম্বর সংখ্যার প্রহরীদুর্গ (ইংরেজি) ৩৭৪ পৃষ্ঠায় নিশ্চিত করে বলেছিল: “জাতিপুঞ্জের উদ্দেশ্য হল ঈশ্বর ও খ্রীষ্টের কাছ থেকে লোকেদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া আর তাই এটা একটা ঘৃণার্হ বস্তু, শয়তান হল এর উৎপাদক আর এটা ঈশ্বরের চোখে এক ঘৃণার্হ বস্তু।” অতএব, ১৯১৯ সালেই “ঘৃণার্হ বস্তু” দেখা দেয়। পরে, জাতিপুঞ্জের জায়গায় রাষ্ট্র সংঘ এসেছিল। এই মনুষ্য শান্তি সংগঠনগুলো যে ঈশ্বরের চোখে ঘৃণার্হ বস্তু তা যিহোবার সাক্ষীরা অনেক দিন ধরে জানিয়ে চলেছেন।
৯, ১০. মহাক্লেশ সম্পর্কে আমাদের আগের ধারণা থেকে “ঘৃণার্হ বস্তু” কখন পবিত্র স্থানে দাঁড়াবে বলে আমরা ধরে নিয়েছিলাম?
৯ আগের প্রবন্ধে মথি ২৪ ও ২৫ অধ্যায়ের অনেক বিষয় স্পষ্টভাবে আলোচনা করা হয়েছে। কিন্তু ‘ঘৃণার্হ বস্তু পবিত্র স্থানে দাঁড়াইয়া’ থাকা সম্পর্কে কি কিছু স্পষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োজন? অবশ্যই। যীশুর ভবিষ্যদ্বাণী ‘পবিত্র স্থানে দাঁড়াইয়া’ থাকার সঙ্গে “মহাক্লেশে”-র ভাববাণীর খুব নিবিড় সম্পর্ক আছে। তাই, ওই “ঘৃণার্হ বস্তু” যদিও অনেক দিন থেকেই দাঁড়িয়ে আছে কিন্তু তার ‘পবিত্র স্থানে দাঁড়ানো’ এবং মহাক্লেশের সঙ্গে যে এর যোগ রয়েছে তা নিয়ে আমাদের চিন্তা করা উচিত। কিন্তু কীভাবে?
১০ ঈশ্বরের লোকেরা একসময় মনে করতেন যে মহাক্লেশের প্রথম পর্যায় শুরু হয়েছিল ১৯১৪ সালে আর এর চূড়ান্ত পর্যায় হর্মাগিদোনের যুদ্ধের সময় হবে। (প্রকাশিত বাক্য ১৬:১৪, ১৬. এপ্রিল ১, ১৯৩৯ সালের প্রহরীদুর্গ (ইংরেজি) এর ১১০ পৃষ্ঠার সঙ্গে তুলনা করুন।) অতএব, আমরা এখন বুঝতে পারি যে কেন একসময় মনে করা হতো বর্তমান দিনের “ঘৃণার্হ বস্তু” প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরপরই পবিত্র স্থানে দাঁড়িয়ে থাকবে।
১১, ১২. ১৯৬৯ সালে মহাক্লেশ সম্পর্কে কোন্ নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরা হয়েছিল?
১১ কিন্তু, পরে আমাদের ধারণা বদলে গিয়েছে। ১৯৬৯ সালের ১০ই জুলাই ওয়াচ টাওয়ার বাইবেল অ্যান্ড ট্র্যাক্ট সোসাইটির তখনকার ভাইস প্রেসিডেন্ট এফ. ডব্লু. ফ্রাঞ্জ নিউ ইয়র্কে “পৃথিবীতে শান্তি” নামক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এক রোমাঞ্চকর বক্তৃতা দিয়েছিলেন। যীশুর ভবিষ্যদ্বাণীকে আগে যেভাবে বোঝা হয়েছিল তা পুনরালোচনা করার সময় ভাই ফ্রাঞ্জ বলেছিলেন: “আগে ব্যাখ্যা করা হয়েছিল যে ‘মহাক্লেশ’ ১৯১৪ সালে শুরু হয়ে গিয়েছে কিন্তু সেটাকে পুরোদমে চলতে দেওয়া হয়নি কারণ ঈশ্বর ১৯১৮ সালের নভেম্বর মাসেই প্রথম বিশ্বযুদ্ধকে থামিয়ে দিয়েছিলেন। তার পর থেকে ঈশ্বর কিছু সময় দিয়েছিলেন যাতে করে তাঁর মনোনীত অভিষিক্ত অবশিষ্টাংশরা তাদের কাজ করতে পারেন। এরপর হর্মাগিদোনের যুদ্ধে ‘মহাক্লেশের’ চূড়ান্ত পর্যায় শুরু হবে।”
১২ তারপর এক গুরুত্বপূর্ণ নতুন ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছিল: “প্রথম শতাব্দীর ঘটনাগুলোর সঙ্গে তুলনা করে বলা যায় যে . . . রূপক ‘মহাক্লেশ’ সা.কা. ১৯১৪ সালে শুরু হয়নি। বরং সেই সময়ে যিরূশালেমে যেমন ঘটেছিল তেমনই আমাদের দিনে ১৯১৪-১৯১৮ সালে ঘটেছে আর তা ছিল “যাতনার আরম্ভ মাত্র” . . . “মহাক্লেশ” যা আর কখনও হবে না তা এখনও ভবিষ্যতের বিষয়, কারণ তা (খ্রীষ্টীয়জগৎ সমেত) মিথ্যা ধর্মের বিশ্ব সাম্রাজ্যের ধ্বংসকে বোঝায়, যার পরে হর্মাগিদোনে ‘সর্ব্বশক্তিমান্ ঈশ্বরের সেই মহাদিনের যুদ্ধ’ হবে। তাই এটা বোঝায় যে মহাক্লেশ শুরু হতে এখনও পুরোপুরি বাকি আছে।
১৩. ভবিষ্যতে “ঘৃণার্হ বস্তু” ‘পবিত্র স্থানে দাঁড়াইবে’ তা বলা কেন যুক্তিসংগত?
১৩ “ঘৃণার্হ বস্তু” কখন সেই পবিত্র স্থানে দাঁড়ায় তা জানার জন্য একটা সোজা উপায় রয়েছে। প্রথম শতাব্দীতে কী হয়েছিল তা মনে করে দেখুন। রোমীয়রা সা.কা. ৬৬ সালে যিরূশালেম আক্রমণ করেছিল কিন্তু তারা হঠাৎ চলে যায় যা খ্রীষ্টান ‘প্রাণীদের’ রক্ষা পাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিল। (মথি ২৪:২২) একইভাবে, আমরা আশা করি যে মহাক্লেশ খুব তাড়াতাড়িই শুরু হবে কিন্তু ঈশ্বরের মনোনীত লোকেদের জন্য ওই দিনের সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হবে। এই মূল বিষয়টা লক্ষ্য করুন: সেই সময়ে, ‘ঘৃণার্হ বস্তু পবিত্র স্থানে দাঁড়ানোর’ বিষয়টা সা.কা. ৬৬ সালে ঘটেছিল যখন সেনাপতি গ্যালাসের অধীনে রোমীয় সৈন্যরা যিরূশালেম আক্রমণ করেছিল। আধুনিক দিনে ওই আক্রমণ হল—মহাক্লেশের শুরু—যা এখনও শুরু হয়নি কিন্তু সামনেই হবে। অতএব, “ধ্বংসের যে ঘৃণার্হ বস্তু” ১৯১৯ সাল থেকে দাঁড়িয়ে আছে তা এখনও পর্যন্ত পবিত্র স্থানে দাঁড়ায়নি।b এটা কীভাবে হবে? আর এটা আমাদের ওপরই বা কীভাবে প্রভাব ফেলবে?
ভবিষ্যৎ আক্রমণ
১৪, ১৫. প্রকাশিত বাক্য ১৭ অধ্যায় কীভাবে আমাদের হর্মাগিদোনের আগের ঘটনাগুলো বুঝতে সাহায্য করে?
১৪ প্রকাশিত বাক্য ভবিষ্যতে মিথ্যা ধর্মের ওপর এক ধ্বংসাত্মক আক্রমণের কথা বলে। ১৭ অধ্যায় “মহতী বাবিল, . . . বেশ্যাগণের . . . জননী” অর্থাৎ মিথ্যা ধর্মের বিশ্ব সাম্রাজ্যের ওপর ঈশ্বরের বিচারের বিষয় লেখা হয়েছে। এতে খ্রীষ্টীয়জগৎ এক মুখ্য জায়গায় আছে আর তারা দাবি করে যে তাদের সঙ্গে ঈশ্বর এক চুক্তি করেছেন। (যিরমিয় ৭:৪ পদের সঙ্গে তুলনা করুন।) খ্রীষ্টীয়জগৎ সমেত সমস্ত মিথ্যা ধর্মগুলোর ‘পৃথিবীর রাজগণের’ সঙ্গে অনেক দিনের অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে কিন্তু ওই ধর্মগুলোকে ধ্বংস করার সঙ্গে সঙ্গে তাদের সম্পর্কও শেষ হয়ে যাবে। (প্রকাশিত বাক্য ১৭:২, ৫) সেই ধ্বংস কার কাছ থেকে আসবে?
১৫ প্রকাশিত বাক্য এক “সিন্দূরবর্ণ পশুর” কথা বলে যাকে কিছু সময়ের জন্য দেখা যায়, তারপর সে অদৃশ্য হয়ে যায় আর শেষে আবার ফিরে আসে। (প্রকাশিত বাক্য ১৭:৩, ৮) এই পশুকে জগতের সরকারগুলো সমর্থন করে। ভবিষ্যদ্বাণীতে যে বর্ণনা রয়েছে তা আমাদের এই রূপক পশুকে এক শান্তির সংগঠন হিসেবে চিনতে সাহায্য করে, যা জাতিপুঞ্জ (এক “ঘৃণার্হ বস্তু”) হিসেবে ১৯১৯ সালে এসেছিল আর যেটা রাষ্ট্র সংঘ হিসেবে এখনও রয়েছে। প্রকাশিত বাক্য ১৭:১৬, ১৭ পদ দেখায় যে ভবিষ্যতে ঈশ্বর এই “পশুর” উল্লেখযোগ্য অংশ, কিছু মানব শাসকদের হৃদয়ে প্রবৃত্তি দেবেন যেন তারা মিথ্যা ধর্মের বিশ্ব সাম্রাজ্যকে ধ্বংস করেন। এই আক্রমণই বোঝাবে যে মহাক্লেশ শুরু হয়ে গিয়েছে।
১৬. ধর্মের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত কোন্ লক্ষণীয় ঘটনাগুলো ঘটে চলেছে?
১৬ যেহেতু মহাক্লেশের শুরু এখনও ভবিষ্যতের বিষয়, তাই ‘পবিত্র স্থানে দাঁড়ানোর’ বিষয়টাও কি পরে হবে? অবশ্যই। যেহেতু এই শতাব্দীর শুরুতে “ঘৃণার্হ বস্তু” দেখা দিয়েছে আর তা বেশ কিছু বছর ধরে এখনও পর্যন্ত দাঁড়িয়ে আছে, তাই বলা যায় যে নিকট ভবিষ্যতে এক বিশেষ উপায়ে এটা “পবিত্র স্থানে” গিয়ে দাঁড়াবে। সেটা কীভাবে ‘পবিত্র স্থানে দাঁড়ায়’ তা দেখার জন্য প্রথম শতাব্দীর খ্রীষ্টানেরা যেমন অধীর হয়ে অপেক্ষা করেছিলেন, আজকের খ্রীষ্টানেরাও ঠিক সেইরকমভাবেই অপেক্ষা করে আছেন। তবে এটা মানতেই হবে যে, সমস্তকিছু ভাল মতো জানার জন্য আমাদেরকে যখন সত্যিকারে বিষয়গুলো ঘটবে সেই সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু, এটা লক্ষণীয় যে কিছু কিছু দেশে ইতিমধ্যেই ধর্মের প্রতি বিরোধিতা দেখা যাচ্ছে এবং দিনে দিনে তা বেড়ে চলেছে। কিছু রাজনৈতিক শক্তি, সত্য বিশ্বাস থেকে সরে যাওয়া খ্রীষ্টানদের সঙ্গে মিলে ধর্মগুলোর ও বিশেষ করে সত্য খ্রীষ্টানদের বিরোধিতা করে চলেছে। (গীতসংহিতা ৯৪:২০, ২১; ১ তীমথিয় ৬:২০, ২১) ফলে, রাজনৈতিক শক্তিগুলো এমনকি এখনই “মেষশাবকের সহিত যুদ্ধ” করছে আর প্রকাশিত বাক্য ১৭:১৪ পদ যেমন বলে যে এই যুদ্ধ আরও বাড়বে। তারা এখন সরাসরি ঈশ্বরের মেষশাবক যীশু খ্রীষ্টের ওপর আক্রমণ করতে পারে না কারণ তিনি এখন উচ্চীকৃত, মহিমান্বিত অবস্থায় আছেন, তাই তারা ঈশ্বরের সত্য উপাসকদের, বিশেষ করে “পবিত্রগণের” বিরোধিতা করবে। (দানিয়েল ৭:২৫. রোমীয় ৮:২৭; কলসীয় ১:১, ২ এবং প্রকাশিত বাক্য ১২:১৭ পদের সঙ্গে তুলনা করুন।) কিন্তু ঈশ্বর আমাদেরকে নিশ্চয়তা দিয়েছেন যে মেষশাবক এবং তাঁর সঙ্গে যারা আছেন তারা বিজয়ী হবেনই।—প্রকাশিত বাক্য ১৯:১১-২১.
১৭. “ঘৃণার্হ বস্তু” কীভাবে পবিত্র স্থানে দাঁড়াবে সেই ব্যাপারে গোঁড়া না হয়ে আমরা হয়ত কী বলতে পারি?
১৭ আমরা জানি যে মিথ্যা ধর্মের জন্য ধ্বংস অপেক্ষা করছে। মহতী বাবিল “পবিত্রগণের রক্তে . . . মত্তা” আর নিজেকে রানি বলে মনে করে কিন্তু তার ধ্বংস অনিবার্য। সে এই পৃথিবীর রাজাদের ওপর যে নোংরা প্রভাব ফেলেছে তা নাটকীয়ভাবে বদলে যাবে, কারণ ওই ‘দশ শৃঙ্গ এবং পশুর’ সঙ্গে তার সম্পর্ক একেবারে খারাপ হয়ে যাবে আর সে তাকে প্রচণ্ড ঘৃণা করতে শুরু করবে। (প্রকাশিত বাক্য ১৭:৬, ১৬; ১৮:৭, ৮) ওই ‘সিন্দূরবর্ণ পশু’ যখন ধর্মীয় বেশ্যাকে আক্রমণ করবে তখন “ঘৃণার্হ বস্তু” খুবই ভয়াবহভাবে খ্রীষ্টীয়জগতের তথাকথিত পবিত্র স্থানে এসে দাঁড়াবে।c অতএব, বিশ্বাসহীন খ্রীষ্টীয়জগতের ওপর ধ্বংস শুরু হয়ে যাবে যারা নিজেদের পবিত্র বলে জাহির করে।
“পলায়ন”—কিন্তু কীভাবে?
১৮, ১৯. “পাহাড় অঞ্চলে পলায়ন” করার অর্থ যে ধর্ম পাল্টানো নয় সেই বিষয়ে কোন্ কোন্ যুক্তি দেখানো যেতে পারে?
১৮ ‘ঘৃণার্হ বস্তু পবিত্র স্থানে দাঁড়ানোর’ বিষয়ে ভাববাণী করার পর যীশু বুদ্ধিমান লোকেদের কাজ করতে বলেছিলেন। কিন্তু তিনি কি বুঝিয়েছিলেন সেই সময়—যখন “ঘৃণার্হ বস্তু . . . পবিত্র স্থানে দাঁড়াইয়া” থাকবে—তখন অনেকে মিথ্যা ধর্ম থেকে পালিয়ে এসে সত্য উপাসনায় যোগ দেবে? একেবারেই না। প্রথম পরিপূর্ণতার কথা ভেবে দেখুন। যীশু বলেছিলেন: “তখন যাহারা যিহূদিয়াতে থাকে, তাহারা পাহাড় অঞ্চলে পলায়ন করুক; এবং যে কেহ ছাদের উপরে থাকে, সে গৃহ হইতে জিনিষপত্র লইবার জন্য নীচে না নামুক ও তাহার মধ্যে প্রবেশ না করুক; এবং যে কেহ ক্ষেত্রে থাকে, সে আপন বস্ত্র লইবার নিমিত্ত পশ্চাতে ফিরিয়া না যাউক। হায়, সেই সময়ে গর্ব্ভবতী এবং স্তন্যদাত্রী নারীদের সন্তাপ! আর প্রার্থনা করিও, যেন ইহা শীতকালে না হয়।” (বাঁকা অক্ষরে মুদ্রণ আমাদের।)—মার্ক ১৩:১৪-১৮.
১৯ যীশু বলেননি যে কেবল যারা যিরূশালেমে ছিলেন তাদেরই পালানো দরকার কিন্তু তিনি বোঝাতে চেয়েছিলেন যে তাদের পুরোপুরি যিহূদী উপাসনার কেন্দ্রস্থল থেকে বেরিয়ে আসার দরকার ছিল; তাঁর সতর্কবাণীতে ধর্ম পাল্টানোর অর্থাৎ মিথ্যা ধর্ম থেকে পালিয়ে সত্য উপাসনায় যোগ দেওয়ার কথা ছিল না। যীশুর শিষ্যদের নিশ্চয়ই এক ধর্ম থেকে পালিয়ে অন্য ধর্মে যাওয়ার জন্য সতর্কবাণীর দরকার ছিল না; কারণ তারা ইতিমধ্যেই সত্য খ্রীষ্টান ছিলেন। আর সা.কা. ৬৬ সালের আক্রমণ যিরূশালেম এবং পুরো যিহূদিয়ার যিহূদীধর্মের লোকেদের তাদের ধর্ম ছেড়ে খ্রীষ্টধর্মে যোগ দেওয়ার জন্য পরিচালিতও করেনি। অধ্যাপক হেনরিক গ্রেটস বলেন যে যারা পালাতে থাকা রোমীয়দের ধাওয়া করেছিল তারা আবার ওই শহরে ফিরে এসেছিল: “যুদ্ধ জয়ের আনন্দে গান করতে করতে ধর্মান্ধ যিহূদীরা (৮ই অক্টোবর) যিরূশালেমে ফিরে এসেছিল, তাদের হৃদয় স্বাধীনতার আশায় ও মুক্তির আনন্দে দুলছিল। . . . ঈশ্বর তাদের পূর্বপুরুষদের যেভাবে করুণা দেখিয়ে সাহায্য করেছিলেন তেমনই তাদেরও কি সাহায্য করেননি? ভবিষ্যতে কী ঘটতে পারে সেই ব্যাপারে ধর্মান্ধ যিহূদীদের মনে কোন ভয়ই ছিল না।”
২০. পাহাড় অঞ্চলে পালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে যীশুর সতর্কবাণী শুনে প্রথম শতাব্দীর শিষ্যেরা কী করেছিলেন?
২০ তাহলে, তুলনামূলকভাবে এক অল্প সংখ্যক মনোনীত ব্যক্তিরা কী করে যীশুর উপদেশ মতো কাজ করেছিলেন? যিহূদিয়া ছেড়ে জর্দনের ওপারে পার্বত্য এলাকায় পালিয়ে গিয়ে তারা দেখিয়েছিলেন যে তারা রাজনৈতিক কিংবা ধর্মীয় কোন দিক দিয়েই যিহূদী ব্যবস্থার অংশ ছিলেন না। তারা তাদের ক্ষেত খামার ও বাড়িঘর ছেড়ে চলে যান, এমনকি তাদের ঘর থেকে কোন জিনিসও তারা নিয়ে যাননি। যিহোবার সুরক্ষা ও সাহায্যের ওপর পুরোপুরি বিশ্বাস দেখিয়ে তারা খুবই দরকারি যে কোন কিছুর আগে যিহোবার উপাসনাকে রেখেছিলেন।—মার্ক ১০:২৯, ৩০; লূক ৯:৫৭-৬২.
২১. “ঘৃণার্হ বস্তু” যখন আক্রমণ করবে তখন আমরা কী আশা করব না?
২১ এখন বড় আকারের পরিপূর্ণতার বিষয়ে দেখুন। আমরা বেশ অনেক দশক ধরে লোকেদের মিথ্যা ধর্ম থেকে বেরিয়ে আসার এবং সত্য ধর্মে যোগ দেওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়ে চলেছি। (প্রকাশিত বাক্য ১৮:৪, ৫) লক্ষ লক্ষ লোকেরা তা মেনেও নিয়েছেন। যীশুর ভবিষ্যদ্বাণী কোন ইঙ্গিতই দেয় না যে মহাক্লেশ শুরু হওয়ার পর দলে দলে লোকেরা বিশুদ্ধ উপাসনায় যোগ দেবেন; ঠিক যেমন সা.কা. ৬৬ সালে দলে দলে যিহূদীরা ধর্ম পাল্টায়নি। তবুও, সত্য খ্রীষ্টানদের যীশুর সতর্কবাণী কাজে লাগানোর ও পালানোর জন্য প্রবল উৎসাহ থাকবে।
২২. পাহাড় অঞ্চলে পালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে যীশুর উপদেশ কাজে লাগাতে গিয়ে আমাদের হয়ত কী করতে হতে পারে?
২২ আমরা এখনই মহাক্লেশ সম্পর্কে পুরোপুরি জানতে পারি না কিন্তু যুক্তিযুক্তভাবে আমরা ধরে নিতে পারি, যীশু যে পালানোর কথা বলেছিলেন তা আমাদের জন্য কোন এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পালানো নয়। ঈশ্বরের লোকেরা ইতিমধ্যেই সারা পৃথিবীতে, পৃথিবীর প্রায় সব প্রান্তে ছড়িয়ে আছেন। তাই আমরা এটা বুঝতে পারি যে যখন পালানোর দরকার হবে তখন খ্রীষ্টানদের মিথ্যা ধর্মীয় সংগঠন থেকে তারা যে একেবারে পৃথক তা স্পষ্টভাবে দেখাতে হবে। আরেকটা বিষয়ও মনে রাখা দরকার যে যীশু তাদের ঘরের ভিতরে গিয়ে কাপড় বা অন্য কোন জিনিস আনতে নিষেধ করেছিলেন। (মথি ২৪:১৭, ১৮) অতএব, আমাদেরও হয়ত এমন পরীক্ষা আসতে পারে যে বস্তুগত জিনিসকে আমরা কীভাবে দেখি; আমাদের জন্য সেগুলো কি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ নাকি ঈশ্বরের কাছ থেকে যে পরিত্রাণ আসবে সেটা বেশি জরুরি? হ্যাঁ, আমাদের জন্য পালানোর মানে হয়ত হতে পারে কিছু কষ্ট ভোগ করা বা কিছু ত্যাগ করা। যাই করতে হোক না কেন, আমাদের তা করার জন্য তৈরি থাকতে হবে, ঠিক যেমন আমাদের প্রথম শতাব্দীর খ্রীষ্টান ভাইবোনেরা যিহূদিয়া থেকে জর্দনের ওপারে পিরিয়া অঞ্চলে পালিয়ে যাওয়ার জন্য তৈরি ছিলেন।
২৩, ২৪. (ক) আমরা একমাত্র কোথায় সুরক্ষা খুঁজে পাব? (খ) ‘ঘৃণার্হ বস্তু পবিত্র স্থানে দাঁড়াইয়া’ থাকার বিষয়ে যীশুর সতর্কবাণী আমাদেরকে কীভাবে প্রভাবিত করা উচিত?
২৩ আমাদের পুরোপুরি বিশ্বাস থাকা দরকার যে আমাদের আশ্রয় হলেন যিহোবা এবং তাঁর পর্বততুল্য সংগঠন। (২ শমূয়েল ২২:২, ৩; গীতসংহিতা ১৮:২; দানিয়েল ২:৩৫, ৪৪) সেখানেই আমরা আমাদের সুরক্ষা খুঁজব! আমরা সেই লোকেদের মতো হব না যারা দলে দলে “গুহাতে ও পর্ব্বতীয় শৈলে” আশ্রয় নেবে। এই গুহা ও পর্ব্বতীয় শৈল হল সেই মানব সংগঠন ও সংস্থা যা মহতী বাবিল ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর অল্প কিছু সময়ের জন্য থাকবে। (প্রকাশিত বাক্য ৬:১৫; ১৮:৯-১১) এটা ঠিক যে, দিনের পর দিন সময় আরও কঠিন হয়ে উঠবে—যেমন সা.কা. ৬৬ সালে গর্ভবতী নারীদের যিহূদায় পালিয়ে যাওয়ার সময় হয়েছিল কিংবা যাদেরকে ঠাণ্ডা ও বর্ষার মধ্যে যেতে হয়েছিল। কিন্তু আমরা নিশ্চিত থাকতে পারি যে ঈশ্বর পরিত্রাণের ব্যবস্থা করবেন। তাই আসুন আমরা এখনই যিহোবা ও তাঁর পুত্র যিনি এখন রাজ্যের রাজা হিসেবে রাজত্ব করছেন তাঁর ওপর আমাদের নির্ভরতাকে আরও শক্তিশালী করি।
২৪ সামনে কী হতে যাচ্ছে তা ভেবে আমাদের ভয়ে ভয়ে থাকার কোন কারণ নেই। আগেও যীশু চাননি যে তাঁর শিষ্যেরা ভয় পাক আর আজও তিনি চান না যে এখন কিংবা যে দিন আসতে যাচ্ছে তার কথা ভেবে আমরা ভয় পাই। তিনি আমাদের সতর্ক করে দিয়েছেন যাতে আমরা আমাদের হৃদয় ও মনকে তৈরি করতে পারি। তাই মিথ্যা ধর্ম ও দুষ্ট বিধিব্যবস্থার ওপর যখন ধ্বংস আসবে তখন বাধ্য খ্রীষ্টানেরা শাস্তি পাবেন না। তারা বুঝবেন এবং ‘ঘৃণার্হ বস্তু পবিত্র স্থানে দাঁড়ানোর’ সতর্কবাণীতে কান দেবেন। আর তারা তাদের অটল বিশ্বাস বজায় রেখে কাজ করবেন। যীশু যে বিষয়ে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন তা যেন আমরা কখনই ভুলে না যাই: “যে কেহ শেষ পর্য্যন্ত স্থির থাকিবে, সেই পরিত্রাণ পাইবে।”—মার্ক ১৩:১৩.
[পাদটীকাগুলো]
a “রোমের মন্দিরে রোমীয় প্রতীকগুলোকে ধর্মীয় বস্তু হিসেবে মর্যাদা দিয়ে সুরক্ষিতভাবে রাখা হতো; আর যখনই অন্য জাতির সঙ্গে যুদ্ধগুলোয় তারা জয়ী হতো এই প্রতীকগুলোর জন্য লোকেদের শ্রদ্ধা আরও বেড়ে যেত। [সৈনিকদের কাছে এটা] পৃথিবীর সবচেয়ে পবিত্র বস্তু ছিল। রোমীয় সৈন্যরা তাদের প্রতীকের নামে শপথ করত।”—দি এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা, ১১তম সংস্করণ।
b যদিও ৬৬-৭০ সালে যীশুর বাক্যগুলোর যে পরিপূর্ণতা ঘটেছিল তা আমাদের আজকের দিনে মহাক্লেশের সময়ে কীভাবে এই ভবিষ্যদ্বাণী পরিপূর্ণ হবে তা বুঝতে সাহায্য করে কিন্তু তবুও দুটো পরিপূর্ণতা পুরোপুরি একরকম হতে পারে না কারণ দুটো ঘটনার পটভূমি আলাদা।
c ডিসেম্বর ১৫, ১৯৭৫ প্রহরীদুর্গ (ইংরেজি) এর ৭৪১-৪ পৃষ্ঠা দেখুন।
আপনি কি মনে করতে পারেন?
◻ “ধ্বংসের . . . ঘৃণার্হ বস্তু” কীভাবে প্রথম শতাব্দীতে দেখা গিয়েছিল?
◻ “ঘৃণার্হ বস্তু” ভবিষ্যতেও পবিত্র স্থানে দাঁড়াবে তা চিন্তা করা কেন যুক্তিযুক্ত?
◻ প্রকাশিত বাক্যে “ঘৃণার্হ বস্তু”-র কোন্ আক্রমণের কথা ভাববাণী করা আছে?
◻ আমাদের হয়ত কীভাবে “পলায়ন” করতে হবে?
[১৬ পৃষ্ঠার চিত্র]
মহতী বাবিলকে “বেশ্যাগণের . . . জননী” বলা হয়
[১৭ পৃষ্ঠার চিত্র]
প্রকাশিত বাক্য ১৭ অধ্যায়ের সিন্দূরবর্ণ বন্য পশুই হল যীশুর বলা “ঘৃণার্হ বস্তু”
[১৮ পৃষ্ঠার চিত্র]
সিন্দূরবর্ণ বন্য পশু ধর্মকে ধ্বংসাত্মকভাবে আক্রমণ করবে