দুর্দশার সময়ে যিহোবার ওপর পুরোপুরি নির্ভর করুন
“ঈশ্বর আমাদের পক্ষে আশ্রয় ও বল। তিনি সঙ্কটকালে অতি সুপ্রাপ্য সহায়।” —গীতসংহিতা ৪৬:১.
১, ২. (ক) কোন উদাহরণ দেখায় যে, শুধুমাত্র এই দাবি করাই যথেষ্ট নয় যে আমরা ঈশ্বরের উপর নির্ভর করি? (খ) আমরা যিহোবার ওপর নির্ভর করি, কেবল এই কথা বলার চেয়ে কেন আমাদের আরও বেশি কিছু করতে হবে?
আমরা ঈশ্বরের ওপর নির্ভর করি, এটা দাবি করা এক বিষয়। আর আমাদের কাজে সেটা দেখানো হল সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়। উদাহরণস্বরূপ, “আমরা ঈশ্বরের উপর নির্ভর করি,” এই বাক্যাংশটি দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের কাগজীমুদ্রা এবং মুদ্রার মধ্যে রয়েছে।a ১৯৫৬ সালে ইউ.এস. কংগ্রেস একটি আইন পাস করায়, যেখানে এই অভিব্যক্তিটিকে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নীতিবাক্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়। অথচ অনেক লোক—শুধু সেই দেশেই নয় কিন্তু পৃথিবীব্যাপী—ঈশ্বরের ওপর যতটা না করে, সেটার চেয়ে টাকাপয়সা এবং বস্তুগত সম্পদের ওপর আরও বেশি নির্ভর করে।—লূক ১২:১৬-২১.
২ সত্য খ্রিস্টান হিসেবে, আমরা যিহোবার ওপর নির্ভর করি, শুধু এই কথা বলার চেয়ে আমাদের আরও বেশি কিছু করতে হবে। ঠিক যেমন ‘কর্ম্মবিহীন বিশ্বাস মৃত,’ তেমনই আমরা ঈশ্বরের ওপর নির্ভর করি, এইরকম যেকোনো দাবিই অর্থহীন হয়ে পড়ে যদি না তা আমরা আমাদের কাজের মাধ্যমে দেখাই। (যাকোব ২:২৬) আগের প্রবন্ধে আমরা শিখেছি যে, যিহোবার ওপর আমাদের নির্ভরতা তখন প্রকাশ পায় যখন আমরা প্রার্থনায় তাঁর কাছে আসি, তাঁর বাক্য থেকে নির্দেশনা খুঁজি এবং পরিচালনার জন্য তাঁর সংগঠনের ওপর নির্ভর করি। এখন আসুন আমরা বিবেচনা করি যে, দুর্দশার সময় কীভাবে আমরা এই তিনটে পদক্ষেপ নিতে পারি।
যখন চাকরি চলে যায় বা আয় স্বল্প থাকে
৩. এই ‘বিষম সময়ে’ যিহোবার দাসেরা কোন কোন অর্থনৈতিক চাপের মুখোমুখি হয় এবং আর কীভাবে আমরা জানি যে, ঈশ্বর আমাদেরকে সাহায্য করতে ইচ্ছুক?
৩ এই ‘বিষম সময়ে’ খ্রিস্টান হিসেবে আমরাও অন্য লোকেদের মতো একই অর্থনৈতিক চাপের মুখোমুখি হই। (২ তীমথিয় ৩:১) তাই, হঠাৎ করেই আমরা হয়তো চাকরি হারাতে পারি। অথবা স্বল্প আয়ের জন্য দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করা ছাড়া আমাদের হয়তো আর কোনো উপায় থাকে না। এইরকম পরিস্থিতিতে ‘নিজ পরিজনগণের জন্য চিন্তা’ করা আমাদের জন্য হয়তো কঠিন বলে মনে হতে পারে। (১ তীমথিয় ৫:৮) সর্বোচ্চ ঈশ্বর কি এইরকম সময়গুলোতে আমাদের সাহায্য করতে ইচ্ছুক? অবশ্যই! অবশ্য, এই বিধিব্যবস্থার মধ্যে জীবনের সমস্ত কষ্ট থেকে যিহোবা আমাদের রক্ষা করেন না। কিন্তু, আমরা যদি তাঁর ওপর নির্ভর করি, তা হলে গীতসংহিতা ৪৬:১ পদ আমাদের ক্ষেত্রে সত্য প্রমাণিত হবে: “ঈশ্বর আমাদের পক্ষে আশ্রয় ও বল। তিনি সঙ্কটকালে অতি সুপ্রাপ্য সহায়।” কিন্তু, কীভাবে আমরা দেখাতে পারি যে, আর্থিক সংকট বা দুর্দশার সময়ে আমরা যিহোবার ওপর পুরোপুরি নির্ভর করি?
৪. আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হলে আমরা কীসের জন্য প্রার্থনা করতে পারি এবং কীভাবে যিহোবা এই ধরনের প্রার্থনার উত্তর দেন?
৪ যিহোবার ওপর আমাদের নির্ভরতা দেখানোর একটা উপায় হল, প্রার্থনায় তাঁর শরণাপন্ন হওয়া। কিন্তু, কীসের জন্য আমরা প্রার্থনা করতে পারি? আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হলে আমাদের হয়তো আগের চেয়ে আরও বেশি ব্যবহারিক প্রজ্ঞার দরকার হতে পারে। তাই, এর জন্য অবশ্যই প্রার্থনা করুন! যিহোবার বাক্য আমাদের আশ্বাস দেয়: “যদি তোমাদের কাহারও জ্ঞানের [“প্রজ্ঞার,” NW] অভাব হয়, তবে সে ঈশ্বরের কাছে যাচ্ঞা করুক; তিনি সকলকে অকাতরে দিয়া থাকেন, তিরস্কার করেন না; তাহাকে দত্ত হইবে।” (যাকোব ১:৫) হ্যাঁ, প্রজ্ঞা, যেটা হল জ্ঞান, বোধগম্যতা এবং বিচক্ষণতাকে ভালভাবে কাজে লাগানোর ক্ষমতা, সেটার জন্য যিহোবার কাছে যাচ্ঞা করুন, যাতে বিজ্ঞ সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় এবং সঠিক বাছাই করা যায়। আমাদের প্রেমময় স্বর্গীয় পিতা আমাদেরকে আশ্বাস দেন যে, তিনি এই ধরনের প্রার্থনা শুনবেন। তিনি সেই সমস্ত ব্যক্তিদের পথ সরল করতে সর্বদা ইচ্ছুক, যারা পূর্ণ-হৃদয়ে তাঁর ওপর নির্ভর করে।—গীতসংহিতা ৬৫:২; হিতোপদেশ ৩:৫, NW, ৬.
৫, ৬. (ক) অর্থনৈতিক চাপগুলোর সঙ্গে মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে সাহায্য পাওয়ার জন্য কেন আমরা ঈশ্বরের বাক্যের ওপর নির্ভর করতে পারি? (খ) চাকরি চলে গেলে চিন্তা কমানোর জন্য আমরা কী করতে পারি?
৫ আমরা যে যিহোবার ওপর নির্ভর করি, সেটা দেখানোর আরেকটা উপায় হল, নির্দেশনার জন্য ঈশ্বরের বাক্যের ওপর নির্ভর করা। বাইবেলে পাওয়া তাঁর বিজ্ঞ সাক্ষ্যগুলো “অতি বিশ্বাসযোগ্য [“নির্ভরযোগ্য,” NW]” হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। (গীতসংহিতা ৯৩:৫) যদিও, ১৯০০ বছর আগে এই অনুপ্রাণিত বই লেখা সম্পূর্ণ হয়েছে, তবুও এটির মধ্যে যে-নির্ভরযোগ্য উপদেশ এবং গভীর অন্তর্দৃষ্টি রয়েছে, তা অর্থনৈতিক চাপগুলোর সঙ্গে আরও ভালভাবে মোকাবিলা করার জন্য আমাদেরকে সাহায্য করতে পারে। বাইবেলের প্রজ্ঞার কিছু উদাহরণ বিবেচনা করুন।
৬ বিজ্ঞ রাজা শলোমন অনেক আগেই বলেছিলেন: “শ্রমজীবী অধিক বা অল্প আহার করুক, নিদ্রা তাহার মিষ্ট লাগে; কিন্তু ধনবানের পূর্ণতা তাহাকে নিদ্রা যাইতে দেয় না।” (উপদেশক ৫:১২) আমাদের বস্তুগত বিষয়সম্পত্তি মেরামত ও পরিষ্কার করার এবং সেগুলোর যত্ন নেওয়ার ও রক্ষা করার জন্য যথেষ্ট সময় এবং টাকাপয়সার প্রয়োজন। তাই, চাকরি চলে গেলে আমরা হয়তো আমাদের জীবনধারা পুনরায় পরীক্ষা করে দেখার সুযোগ করে নিতে পারি এবং অপ্রয়োজনীয় বিষয়গুলো থেকে চাহিদাগুলোকে পৃথক করার চেষ্টা করতে পারি। চিন্তা কমানোর জন্য কিছু রদবদল করা বিজ্ঞের কাজ হতে পারে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আমাদের জীবনকে কি সাধাসিধে করা সম্ভব, হতে পারে অপেক্ষাকৃত ছোটখাটো কোনো বাড়িতে গিয়ে অথবা অপ্রয়োজনীয় বস্তুগত বিষয়সম্পত্তি বাদ দিয়ে?—মথি ৬:২২.
৭, ৮. (ক) কীভাবে যিশু দেখিয়েছিলেন যে, অসিদ্ধ মানুষের বস্তুগত বিষয়গুলোর বিষয়ে অত্যধিক উদ্বিগ্ন হওয়ার প্রবণতা রয়েছে, সেই বিষয়ে তিনি অবগত আছেন? (সেইসঙ্গে পাদটীকা দেখুন।) (খ) কীভাবে অযথা চিন্তা এড়ানো যায়, সেই বিষয়ে যিশু কোন বিজ্ঞ উপদেশ দিয়েছেন?
৭ পর্বতে দত্ত উপদেশে যিশু পরামর্শ দিয়েছিলেন: “‘কি ভোজন করিব, কি পান করিব’ বলিয়া প্রাণের বিষয়ে, কিম্বা ‘কি পরিব’ বলিয়া শরীরের বিষয়ে ভাবিত হইও না।”b (মথি ৬:২৫) যিশু জানতেন যে, অসিদ্ধ মানুষেরা স্বাভাবিকভাবেই মৌলিক চাহিদাগুলো লাভ করার ব্যাপারে চিন্তিত থাকে। কিন্তু, কীভাবে আমরা এই ধরনের বিষয়গুলোর জন্য ‘ভাবিত না হইতে’ পারি? ‘প্রথমে রাজ্যের বিষয়ে চেষ্টা কর,’ যিশু বলেছিলেন। আমরা যে-সমস্যাগুলোর মুখোমুখিই হই না কেন, আমাদের সবসময় যিহোবার উপাসনাকে জীবনে অগ্রাধিকার দিতে হবে। আমরা যদি তা করি, তা হলে আমাদের স্বর্গীয় পিতার মাধ্যমে আমাদের দৈনন্দিন সমস্ত চাহিদা “দেওয়া হইবে।” যেকোনোভাবেই হোক, তিনি আমাদের চাহিদাগুলো জুগিয়ে যাবেন।—মথি ৬:৩৩.
৮ যিশু আরও উপদেশ দিয়েছিলেন: “কল্যকার নিমিত্ত ভাবিত হইও না, কেননা কল্য আপনার বিষয় আপনি ভাবিত হইবে।” (মথি ৬:৩৪) আগামীকাল কী হতে পারে, সেটা নিয়ে অযথাই ভাবিত হওয়া বিজ্ঞের কাজ নয়। একজন পণ্ডিত ব্যক্তি মন্তব্য করেছিলেন: “ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে আমাদের ভয় কদাচিৎ বাস্তবের সঙ্গে মেলে।” আমাদের অগ্রাধিকারগুলোর ওপর মন কেন্দ্রীভূত করার এবং শুধু দিনের জন্যই চিন্তা করার বিষয়ে বাইবেলের উপদেশে নম্রভাবে মনোযোগ দেওয়া আমাদের অযথা চিন্তা এড়াতে সাহায্য করতে পারে।—১ পিতর ৫:৬, ৭.
৯. আর্থিক সংকটের মুখোমুখি হলে, ‘বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান্ দাসের’ দেওয়া প্রকাশনাদিতে আমরা কোন সাহায্য পেতে পারি?
৯ আর্থিক সংকটের মুখোমুখি হলেও আমরা সাহায্যের জন্য ‘বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান্ দাসের’ দেওয়া প্রকাশনাদির ওপর নির্ভর করে যিহোবার ওপর আমাদের নির্ভরতা দেখাতে পারি। (মথি ২৪:৪৫) মাঝে মাঝে সচেতন থাক! পত্রিকায় এমন সব প্রবন্ধ তুলে ধরা হয়েছে, যেখানে অর্থনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতাগুলোর সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য সাহায্যকারী উপদেশ এবং পরামর্শ রয়েছে। ১৯৯১ সালের ৮ই আগস্ট (ইংরেজি) পত্রিকার “চাকরি থেকে বরখাস্ত—এর সমাধানগুলো কী?” প্রবন্ধে আটটি বাস্তব নির্দেশাবলি তুলে ধরা হয়েছে, যা অনেককে বেকার থাকাকালীন আর্থিক দিক দিয়ে এবং আবেগগতভাবে স্থির থাকতে সাহায্য করেছে।c অবশ্য, এই ধরনের নির্দেশাবলি টাকাপয়সার প্রকৃত গুরুত্বের বিষয়ে সঠিক দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ হতে হবে। “টাকাপয়সার চেয়ে আরও গুরুত্বপূর্ণ কিছু,” নামক প্রবন্ধে এই বিষয়টা আলোচনা করা হয়েছে, যা একই সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল।—উপদেশক ৭:১২.
স্বাস্থ্যগত সমস্যাগুলোর কারণে যখন দুর্দশাগ্রস্ত
১০. রাজা দায়ূদের উদাহরণ কীভাবে দেখায় যে, গুরুতর অসুস্থ হলে যিহোবার ওপর নির্ভর করা বাস্তবসম্মত?
১০ গুরুতরভাবে অসুস্থ হলে যিহোবার ওপর নির্ভর করা কি বাস্তবসম্মত? অবশ্যই! যিহোবার লোকেদের মধ্যে যে-অসুস্থ ব্যক্তিরা রয়েছে, তাদের জন্য তাঁর সহমর্মিতা রয়েছে। এর চেয়ে বড় বিষয় হল যে, তিনি সাহায্য করতে ইচ্ছুক। উদাহরণস্বরূপ, রাজা দায়ূদের কথা বিবেচনা করুন। তিনি নিজেই হয়তো গুরুতর অসুস্থ ছিলেন, যখন তিনি একজন ন্যায়নিষ্ঠ অসুস্থ ব্যক্তির সঙ্গে ঈশ্বরের আচরণ সম্বন্ধে লিখেছিলেন। তিনি বলেছিলেন: “ব্যাধিশয্যাগত হইলে সদাপ্রভু তাহাকে ধরিয়া রাখিবেন; তাহার পীড়ার সময়ে তুমি তাহার সমস্ত শয্যা পরিবর্ত্তন করিয়াছ।” (গীতসংহিতা ৪১:১, ৩, ৭, ৮) ঈশ্বরের ওপর দায়ূদের নির্ভরতা দৃঢ় ছিল এবং অবশেষে রাজা তার অসুস্থতা থেকে আরোগ্য লাভ করেছিলেন। কিন্তু, আমরা যখন স্বাস্থ্যগত সমস্যাগুলোর কারণে দুর্দশাগ্রস্ত হই, তখন কীভাবে আমরা ঈশ্বরের ওপর নির্ভরতা দেখাতে পারি?
১১. অসুস্থতার কারণে দুর্দশাগ্রস্ত হলে আমাদের স্বর্গীয় পিতার কাছে আমরা কী যাচ্ঞা করতে পারি?
১১ অসুস্থতার কারণে দুর্দশাগ্রস্ত হলে, যিহোবার ওপর আমাদের নির্ভরতা দেখানোর একটা উপায় হল, সহ্য করার জন্য সাহায্য চেয়ে তাঁর কাছে প্রার্থনায় মিনতি করা। আমরা তাঁর কাছে যাচ্ঞা করতে পারি যেন তিনি আমাদের “সূক্ষ্ম বুদ্ধি [“ব্যবহারিক প্রজ্ঞা,” NW]” কাজে লাগানোর জন্য সাহায্য করেন, যাতে আমরা আমাদের পরিস্থিতি অনুযায়ী বাস্তবসম্মতভাবে যতটুকু সম্ভব ততটুকু স্বাস্থ্য লাভ করার চেষ্টা করতে পারি। (হিতোপদেশ ৩:২১) এ ছাড়া, অসুস্থতার সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য ধৈর্য এবং সহ্য অনুশীলন করতে আমাদেরকে সাহায্য করার জন্য আমরা তাঁর কাছে যাচ্ঞা করতে পারি। সর্বোপরি, আমরা যাচ্ঞা করব যেন যিহোবা আমাদের টিকিয়ে রাখেন, যা কিছুই ঘটুক না কেন, তাঁর প্রতি বিশ্বস্ত থাকতে এবং ভারসাম্য হারিয়ে না ফেলার মতো শক্তি দেন। (ফিলিপীয় ৪:১৩) আমাদের বর্তমান জীবনকে সংরক্ষণ করার চেয়ে ঈশ্বরের প্রতি আমাদের নীতিনিষ্ঠা বজায় রাখা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যদি আমাদের নীতিনিষ্ঠা বজায় রাখি, তা হলে মহান পুরস্কারদাতা আমাদের এক চিরকালীন সিদ্ধ জীবন এবং স্বাস্থ্য দেবেন।—ইব্রীয় ১১:৬.
১২. চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে কোন শাস্ত্রীয় নীতিগুলো আমাদের বিজ্ঞ সিদ্ধান্তগুলো নিতে সাহায্য করে?
১২ যিহোবার ওপর আমাদের নির্ভরতা আমাদেরকে বাস্তবসম্মত নির্দেশনার জন্য তাঁর বাক্য, বাইবেলের ওপর নির্ভর করতে প্রেরণা দেয়। শাস্ত্রে যে-নীতিগুলো পাওয়া যায়, তা আমাদেরকে চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে বিজ্ঞ সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, বাইবেল ‘কুহককে’ নিন্দা করে, তা জেনে আমরা যেকোনোরকমের রোগ-নির্ণায়ক বা আরোগ্যকর প্রক্রিয়া এড়িয়ে চলব, যা কুহক বা প্রেতচর্চার সঙ্গে যুক্ত। (গালাতীয় ৫:১৯-২১; দ্বিতীয় বিবরণ ১৮:১০-১২) বাইবেলের নির্ভরযোগ্য প্রজ্ঞার আরেকটা উদাহরণ হল: “যে অবোধ, সে সকল কথায় বিশ্বাস করে, কিন্তু সতর্ক লোক নিজ পাদক্ষেপের প্রতি লক্ষ্য রাখে।” (হিতোপদেশ ১৪:১৫) তাই, চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে চিন্তা করার সময় ‘সকল কথায় বিশ্বাস করিবার’ পরিবর্তে নির্ভরযোগ্য তথ্যের চেষ্টা করলে আমরা বিজ্ঞের কাজ করব। এই ধরনের “সংযত” হওয়া আমাদের মনোনয়নের বিষয়গুলো নিয়ে সবদিক বিবেচনা করতে এবং ভাল করে জেনেবুঝে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করতে পারে।—তীত ২:১২.
১৩, ১৪. (ক) স্বাস্থগত বিষয়ে প্রহরীদুর্গ এবং সচেতন থাক! পত্রিকায় কোন তথ্যমূলক প্রবন্ধগুলো প্রকাশিত হয়েছে? (১৭ পৃষ্ঠার বাক্স দেখুন।) (খ) ২০০১ সালের ২২শে জানুয়ারি সচেতন থাক! পত্রিকায় দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতার সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য কোন উপদেশগুলো তুলে ধরা হয়েছে?
১৩ বিশ্বস্ত দাসের দেওয়া প্রকাশনাদি অনুসন্ধান করেও আমরা যিহোবার ওপর আমাদের নির্ভরতা দেখাতে পারি। প্রহরীদুর্গ এবং সচেতন থাক! পত্রিকাগুলোতে মাঝেমধ্যে নির্দিষ্ট স্বাস্থ্যগত সমস্যা এবং রোগব্যাধির ওপর এক বিস্তারিত তথ্যমূলক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।d কখনও কখনও এই পত্রিকাগুলোতে সেই সমস্ত ব্যক্তিদের কথা তুলে ধরা হয়েছে, যারা বিভিন্ন অস্বাভাবিকতা, দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা এবং অক্ষমতাগুলো সফলতার সঙ্গে কাটিয়ে উঠেছেন। এ ছাড়া, দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্যগত সমস্যাগুলো নিয়ে কীভাবে বেঁচে থাকা যায়, সেই সম্বন্ধে নির্দিষ্ট প্রবন্ধগুলোতে কিছু শাস্ত্রীয় পরামর্শ ও সেইসঙ্গে বাস্তব উপদেশ দেওয়া হয়েছে।
১৪ উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ২০০১ সালের ২২শে জানুয়ারি সচেতন থাক! (ইংরেজি) পত্রিকায় “অসুস্থদের জন্য সান্ত্বনা” নামক ধারাবাহিক প্রচ্ছদ প্রবন্ধ তুলে ধরা হয়েছে। প্রবন্ধগুলোতে বাইবেলের সাহায্যকারী নীতিগুলো এবং সেইসঙ্গে সেই সমস্ত অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার নিয়ে সরাসরি তথ্য তুলে ধরা হয়েছে, যারা বহু বছর ধরে গুরুতর অসুস্থতা নিয়ে বেঁচে আছে। “দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা নিয়েও সফলভাবে বেঁচে থাকা—কীভাবে?” নামক প্রবন্ধটি এই উপদেশ দেয়: আপনার অসুস্থতা সম্বন্ধে যথাসম্ভব যুক্তিসংগতভাবে জানুন। (হিতোপদেশ ২৪:৫) অন্যদের সাহায্য করার লক্ষ্য সহ ব্যবহারিক লক্ষ্যগুলো স্থাপন করুন কিন্তু মনে রাখবেন যে, আপনি হয়তো অন্যদের মতো একই লক্ষ্যগুলোতে না-ও পৌঁছাতে পারেন। (প্রেরিত ২০:৩৫; গালাতীয় ৬:৪) সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া এড়িয়ে চলুন। (হিতোপদেশ ১৮:১) অন্যেরা যখন আপনাকে দেখতে আসে, তখন তাদের জন্য সেটাকে আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতা করে তুলুন। (হিতোপদেশ ১৭:২২) সর্বোপরি, যিহোবা এবং মণ্ডলীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বন্ধন বজায় রাখুন। (নহূম ১:৭; রোমীয় ১:১১, ১২) যিহোবা তাঁর সংগঠনের মাধ্যমে আমাদের যে-নির্ভরযোগ্য নির্দেশনা জোগাচ্ছেন, সেটার জন্য আমরা কি কৃতজ্ঞ নই?
যখন কোনো মাংসিক দুর্বলতা থেকেই যায়
১৫. প্রেরিত পৌল তার অসিদ্ধ মাংসিক দুর্বলতাগুলোর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কীভাবে জয়ী হতে পেরেছিলেন এবং আমাদের কোন আশ্বাস রয়েছে?
১৫ প্রেরিত পৌল লিখেছিলেন, “আমার মাংসে, উত্তম কিছুই বাস করে না।” (রোমীয় ৭:১৮) পৌল নিজের অভিজ্ঞতা থেকে জানতেন যে, অসিদ্ধ মাংসের আকাঙ্ক্ষা এবং দুর্বলতাগুলোর সঙ্গে লড়াই করা কত কঠিন হতে পারে। কিন্তু, পৌলের এই আস্থাও ছিল যে তিনি জয়ী হতে পারবেন। (১ করিন্থীয় ৯:২৬, ২৭) কীভাবে? যিহোবার ওপর পুরোপুরি নির্ভর করে। এই কারণে পৌল বলতে পেরেছিলেন: “দুর্ভাগ্য মনুষ্য আমি! এই মৃত্যুর দেহ হইতে কে আমাকে নিস্তার করিবে? আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্ট দ্বারা আমি ঈশ্বরের ধন্যবাদ করি।” (রোমীয় ৭:২৪, ২৫) আমাদের সম্বন্ধে কী বলা যায়? আমাদেরও মাংসিক দুর্বলতাগুলোর সঙ্গে লড়াই করতে হয়। এই ধরনের দুর্বলতাগুলোর সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য লড়াই করতে গিয়ে, আমরা কখনোই সফল হতে পারব না, এইরকম দৃঢ়প্রত্যয়ী হয়ে আস্থা হারিয়ে ফেলা খুব সহজ। কিন্তু, যিহোবা আমাদের সাহায্য করবেন, যদি আমরা পৌলের মতো শুধু আমাদের নিজেদের শক্তির ওপর নয় কিন্তু সত্যিই তাঁর ওপর নির্ভর করি।
১৬. মাংসিক কোনো দুর্বলতা যদি থেকেই যায়, তা হলে আমাদের কীসের জন্য প্রার্থনা করা দরকার এবং আবারও যদি আমরা মাংসিক দুর্বলতার দ্বারা আক্রান্ত হই, তা হলে আমাদের কী করা উচিত?
১৬ যখন মাংসিক দুর্বলতাগুলো থেকেই যায়, তখন যিহোবার কাছে প্রার্থনায় মিনতি জানিয়ে আমরা তাঁর ওপর নির্ভরতা দেখাতে পারি। পবিত্র আত্মার সাহায্যের জন্য আমাদেরকে যিহোবার কাছে যাচ্ঞা করতে এমনকি সনির্বন্ধ অনুরোধ করতে হবে। (লূক ১১:৯-১৩) আমরা নির্দিষ্টভাবে ইন্দ্রিয়দমনের বিষয়ে যাচ্ঞা করতে পারি, যা ঈশ্বরের আত্মার ফলের একটা অংশ। (গালাতীয় ৫:২২, ২৩) তা সত্ত্বেও, আবারও যদি আমরা মাংসিক দুর্বলতার বশীভূত হই, তা হলে আমাদের কী করা উচিত? কোনোভাবেই আমাদের হাল ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়। আসুন আমরা যেন কখনও আমাদের করুণাময় ঈশ্বরের কাছে নম্রভাবে প্রার্থনা করতে গিয়ে এবং তাঁর ক্ষমা ও সাহায্যের জন্য যাচ্ঞা করতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে না পড়ি। যিহোবা কখনও দোষী বিবেকের কারণে ভারগ্রস্ত “ভগ্ন ও চূর্ণ” হৃয়কে পরিত্যাগ করবেন না। (গীতসংহিতা ৫১:১৭) আমরা যদি আন্তরিক, অনুতপ্ত হৃদয়ে যিহোবার কাছে বিনতি করি, তা হলে তিনি আমাদের প্রলোভনগুলোর সঙ্গে লড়াই করতে সাহায্য করবেন।—ফিলিপীয় ৪:৬, ৭.
১৭. (ক) আমরা যে-দুর্বলতার সঙ্গে লড়াই করছি, সেটার বিষয়ে যিহোবা কেমন বোধ করেন, তা গভীরভাবে চিন্তা করা কেন সাহায্যকারী? (খ) কোন শাস্ত্রপদগুলো আমরা মনে রাখার সংকল্প নিতে পারি, যদি আমরা সহজেই রেগে যাওয়াকে? নিজেদের জিহ্বাকে দমন করাকে? ক্ষতিকর আমোদপ্রমোদের দিকে ঝোঁকাকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য লড়াই করে থাকি?
১৭ এ ছাড়া, সাহায্যের জন্য যিহোবার বাক্যে অনুসন্ধান করেও আমরা দেখাতে পারি যে আমরা তাঁর ওপর নির্ভর করি। বাইবেল বর্ণানুক্রমিকসূচি বা ওয়াচটাওয়ার পাবলিকেশনস্ ইনডেক্স ব্যবহার করে আমরা এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পেতে পারি: ‘আমি যে-দুর্বলতার সঙ্গে লড়াই করছি, সেটার বিষয়ে যিহোবা কেমন বোধ করেন?’ যিহোবা বিষয়টার প্রতি কেমন বোধ করেন, তা গভীরভাবে চিন্তা করা তাঁকে খুশি করার জন্য আমাদের ইচ্ছাকে শক্তিশালী করতে পারে। এভাবে আমরা তাঁর মতো করে অনুভব করতে, তিনি যেটাকে ঘৃণা করেন সেটাকে ঘৃণা করতে পারি। (গীতসংহিতা ৯৭:১০) কেউ কেউ দেখেছে যে, বাইবেলের সেই সমস্ত পদ মনে রাখার সংকল্প করা সাহায্যকারী, যা তারা যে-দুর্বলতার সঙ্গে লড়াই করছে, নির্দিষ্টভাবে সেটার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়। আমরা কি সহজেই রেগে যাওয়াকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে লড়াই করছি? তা হলে আমরা হয়তো এই শাস্ত্রপদগুলো মনে করতে পারি, যেমন হিতোপদেশ ১৪:১৭ এবং ইফিষীয় ৪:৩১. নিজেদের জিহ্বাকে দমন করাকে আমরা কি কঠিন বলে মনে করি? তা হলে আমরা হয়তো এই ধরনের শাস্ত্রপদগুলো মনে করতে পারি, যেমন হিতোপদেশ ১২:১৮ এবং ইফিষীয় ৪:২৯. আমাদের কি ক্ষতিকর আমোদপ্রমোদের দিকে ঝোঁক রয়েছে? তা হলে আমরা হয়তো এই ধরনের পদগুলো মনে করার চেষ্টা করতে পারি, যেমন ইফিষীয় ৫:৩ এবং কলসীয় ৩:৫.
১৮. আমাদের দুর্বলতাগুলো কাটিয়ে ওঠার জন্য প্রাচীনদের কাছে সাহায্য চাইতে কেন আমাদের অস্বস্তি বোধ করা উচিত নয়?
১৮ মণ্ডলীতে আত্মায় নিযুক্ত প্রাচীনদের কাছ থেকে সাহায্য চাওয়া যিহোবার ওপর আমাদের নির্ভরতা দেখানোর আরেকটা উপায়। (প্রেরিত ২০:২৮) এ ছাড়া, এই ‘দানরূপ মানুষেরা’ (NW) হল যিহোবার মেষদের রক্ষা ও যত্ন নেওয়ার জন্য খ্রিস্টের মাধ্যমে তাঁর কাছ থেকে এক ব্যবস্থা। (ইফিষীয় ৪:৭, ৮, ১১-১৪) এটা ঠিক যে, কোনো দুর্বলতার সঙ্গে মোকাবিলা করার সময় সাহায্য চাওয়া সহজ না-ও হতে পারে। আমরা হয়তো এই ভয়ে অস্বস্তি বোধ করতে পারি যে, প্রাচীনরা আমাদের সম্বন্ধে খারাপ ভাববে। কিন্তু কোনো সন্দেহ নেই যে, আধ্যাত্মিক দিকে পরিপক্ব এই ব্যক্তিরা তাদের কাছে সাহায্য চেয়েছি বলে আমাদের সাহসের প্রতি সম্মান দেখাবে। এ ছাড়া, পালের সঙ্গে আচরণের সময় প্রাচীনরা যিহোবার গুণাগুলো প্রতিফলিত করার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করে। তাদের সান্ত্বনাদায়ক, ব্যবহারিক পরামর্শ এবং ঈশ্বরের বাক্য থেকে নির্দেশনা, আমাদের দুর্বলতাগুলো কাটিয়ে ওঠার বিষয়ে আমাদের সংকল্পকে শক্তিশালী করার জন্য আমাদের যা দরকার ঠিক তা-ই হতে পারে।—যাকোব ৫:১৪-১৬.
১৯. (ক) কোন উপায়ে শয়তান এই বিধিব্যবস্থায় জীবনের অসারতাকে ব্যবহার করার চেষ্টা করে? (খ) নির্ভরতার সঙ্গে কী জড়িত এবং আমাদের দৃঢ়সংকল্প কী হওয়া উচিত?
১৯ ভুলে যাবেন না যে, শয়তান জানে যে তার কাল সংক্ষিপ্ত। (প্রকাশিত বাক্য ১২:১২) আমাদের নিরুৎসাহিত করার এবং আমরা যাতে হাল ছেড়ে দিই, সেইজন্য শয়তান এই জগতে জীবনের অসারতাকে ব্যবহার করতে চায়। রোমীয় ৮:৩৫-৩৯ পদে যা বলা আছে, তাতে যেন আমরা পূর্ণ আস্থা রাখি: “খ্রীষ্টের প্রেম হইতে কে আমাদিগকে পৃথক্ করিবে? কি ক্লেশ? কি সঙ্কট? কি তাড়না? কি দুর্ভিক্ষ? কি উলঙ্গতা? কি প্রাণ-সংশয়? কি খড়্গ? . . . কিন্তু যিনি আমাদিগকে প্রেম করিয়াছেন, তাঁহারই দ্বারা আমরা এই সকল বিষয়ে বিজয়ী অপেক্ষাও অধিক বিজয়ী হই। কেননা আমি নিশ্চয় জানি, কি মৃত্যু, কি জীবন, কি দূতগণ, কি আধিপত্য সকল, কি উপস্থিত বিষয় সকল, কি ভাবী বিষয় সকল, কি পরাক্রম সকল, কি ঊর্দ্ধ্ব স্থান, কি গভীর স্থান, কি অন্য কোন সৃষ্ট বস্তু কিছুই আমাদের প্রভু খ্রীষ্ট যীশুতে অবস্থিত ঈশ্বরের প্রেম হইতে আমাদিগকে পৃথক্ করিতে পারিবে না।” যিহোবার ওপর নির্ভর করার জন্য কী এক বিবৃতি! কিন্তু, এই ধরনের আস্থা নিছক এক অনুভূতির চেয়ে আরও বেশি কিছু। পরিবর্তে, এটা এমন এক নির্ভরতা, যেটার সঙ্গে আমরা রোজকার জীবনে যে-যুক্তিযুক্ত সিদ্ধান্তগুলো নিই, সেগুলো জড়িত। তাই, আসুন দুর্দশার সময়ে যিহোবার ওপর পুরোপুরি নির্ভর করার দৃঢ়সংকল্প নিই।
[পাদটীকাগুলো]
a ১৮৬১ সালের ২০শে নভেম্বর, যুক্তরাষ্ট্রের টাঁকশালের উদ্দেশে লেখা এক চিঠিতে রাজকোষের সচিব স্যামন পি. চেস লিখেছিলেন: “কোনো জাতিই ঈশ্বরের শক্তি ব্যতিরেকে বলবান হতে পারে না বা তাঁর প্রতিরক্ষা ছাড়া সুরক্ষিত হতে পারে না। ঈশ্বরের ওপর আমাদের লোকেদের নির্ভরতা আমাদের জাতীয় মুদ্রাগুলোর মধ্যে দিয়ে ঘোষিত হওয়া উচিত।” এর ফলে “আমরা ঈশ্বরের উপর নির্ভর করি,” এই নীতিবাক্যটি ১৮৬৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচলিত মুদ্রার মধ্যে প্রথম দেখা যায়।
b এখানে বর্ণিত ভাবনা বা চিন্তাকে বলা হয়ে থাকে এক “উদ্বেগপূর্ণ ভয়, যা জীবনের সমস্ত আনন্দ কেড়ে নেয়।” “ভাবিত হইও না” বা “উদ্বিগ্ন হইও না,” এই ধরনের অনুবাদগুলো দিয়ে বোঝায় যে আমাদের চিন্তিত বা উদ্বিগ্ন হতে শুরু করা উচিত নয়। একটি তথ্যগ্রন্থ বলে: “গ্রিক ক্রিয়াপদের কাল হল বর্তমান অনুজ্ঞাসূচক, যা দিয়ে এমন কোনো কাজ বন্ধ করার এক আদেশকে বোঝায়, যা ইতিমধ্যেই অগ্রগতির মুখে।”
c এই আটটি বিষয় হল এইরকম: (১) আতঙ্কিত হবেন না; (২) ইতিবাচক উপায়ে চিন্তা করুন; (৩) নতুন ধরনের কাজ করার ক্ষেত্রে নমনীয় হোন; (৪) অন্যের নয় কিন্তু নিজের আয় বুঝে ব্যয় করুন; (৫) বাকিতে কেনার বিষয়ে সতর্ক থাকুন; (৬) পরিবারকে একতাবদ্ধ রাখুন; (৭) আপনার আত্মসম্মান বজায় রাখুন; এবং (৮) একটা বাজেট নির্ধারণ করুন।
d বাইবেল ভিত্তিক এই পত্রিকাগুলো নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসার বিষয়ে সুপারিশ করে না বা তুলে ধরে না বরং স্বীকার করে যে, এটা হল ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের ব্যাপার। এর পরিবর্তে, যে-প্রবন্ধগুলো নির্দিষ্ট কোনো অসুস্থতা বা অস্বাভাবিকতা নিয়ে আলোচনা করে, সেগুলোর উদ্দেশ্য হল পাঠকদের চলতি সময়ে জানা তথ্যগুলো জানানো।
আপনি কি মনে করতে পারেন?
• অর্থনৈতিক সমস্যার মুখোমুখি হলে, কোন কোন উপায়ে আমরা দেখাতে পারি যে আমরা যিহোবার ওপর নির্ভর করি?
• স্বাস্থ্যগত সমস্যাগুলোর কারণে আমরা যখন দুর্দশাগ্রস্ত হই, তখন কীভাবে আমরা ঈশ্বরের ওপর নির্ভরতা দেখাতে পারি?
• যখন কোনো মাংসিক দুর্বলতা থেকেই যায়, তখন কীভাবে আমরা দেখাতে পারি যে আমরা সত্যিই যিহোবার ওপর নির্ভর করি?
[১৭ পৃষ্ঠার বাক্স]
এই প্রবন্ধগুলোর কথা কি আপনার মনে আছে?
আমরা যখন স্বাস্থ্যগত প্রতিদ্বন্দ্বিতাগুলোর কারণে দুর্দশাগ্রস্ত হই, তখন সেই সমস্ত ব্যক্তিদের সম্বন্ধে পড়া উৎসাহজনক, যারা স্বাস্থ্যগত অস্বাভাবিকতা, দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা বা অক্ষমতাকে সফলভাবে কাটিয়ে উঠেছে। নিচের কিছু প্রবন্ধ প্রহরীদুর্গ এবং সচেতন থাক! পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল।
“আমার দুর্বলতাগুলোর সঙ্গে মোকাবিলা করা,” প্রবন্ধে নেতিবাচক চিন্তাধারা এবং হতাশার ওপর কেন্দ্র করে আলোচনা করা হয়েছিল।—প্রহরীদুর্গ (ইংরেজি), মে ১, ১৯৯০.
“এমনকি এক কৃত্রিম ফুসফুসও তার প্রচারকে বন্ধ করতে পারেনি।”—সচেতন থাক! (ইংরেজি), জানুয়ারি ২২, ১৯৯৩.
“একটা বুলেট আমার জীবনকে বদলে দিয়েছিল” প্রবন্ধ পক্ষাঘাতের সঙ্গে মোকাবিলা করার বিষয়টা আলোচনা করেছিল।—সচেতন থাক! (ইংরেজি), অক্টোবর ২২, ১৯৯৫.
“তোমরা ত কল্যকার তত্ত্ব জান না; তোমাদের জীবন কি প্রকার?” প্রবন্ধে বাইপোলার মুড ডিসঅর্ডারের সঙ্গে মোকাবিলা করার বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছিল।—প্রহরীদুর্গ, ডিসেম্বর ১, ২০০০.
“লয়িডার নিঃশব্দ যাত্রা” প্রবন্ধে মস্তিস্কের পক্ষাঘাতের সঙ্গে মোকাবিলা করার বিষয়ে তুলে ধরা হয়েছিল।—সচেতন থাক! (ইংরেজি), মে ৮, ২০০০.
“অন্তর্জরায়ু প্রদাহের সঙ্গে আমার লড়াই।”—সচেতন থাক! (ইংরেজি), জুলাই ২২, ২০০০.
“স্ক্লেরোডার্মার সঙ্গে আমার লড়াই।”—সচেতন থাক! (ইংরেজি), আগস্ট ৮, ২০০১.
“প্রসবোত্তর হতাশার সঙ্গে লড়াইয়ে আমি জয়ী হয়েছি।”—সচেতন থাক! (ইংরেজি), জুলাই ২২, ২০০২.
[১৫ পৃষ্ঠার চিত্র]
চাকরি চলে গেলে, আমাদের জীবনধারা পুনরায় পরীক্ষা করে দেখা বিজ্ঞের কাজ হতে পারে
[১৬ পৃষ্ঠার চিত্র]
লয়িডার কাহিনী দেখায় যে, কীভাবে যিহোবার ওপর নির্ভরতা একজন ব্যক্তিকে সহ্য করতে সাহায্য করে। (১৭ পৃষ্ঠার বাক্স দেখুন)
[১৮ পৃষ্ঠার চিত্র]
আমাদের দুর্বলতাগুলো কাটিয়ে ওঠার জন্য সাহায্য চাওয়ার সময় আমাদের অস্বস্তি বোধ করার দরকার নেই