পাঠ ৪৫
নিরপেক্ষ থাকার অর্থ কী?
যিশু তাঁর শিষ্যদের বলেছিলেন, “তোমরা . . . জগতের অংশ নও।” (যোহন ১৫:১৯) জগৎ থেকে নিজেদের আলাদা রাখার একটা উপায় হল, নিরপেক্ষ থাকা। এর অর্থ হল, আমরা জগতের রাজনীতি এবং যুদ্ধে কারো পক্ষ নিই না। কিন্তু, এটা করা সবসময় সহজ হয় না। আর তাই লোকেরা হয়তো আমাদের নিয়ে ঠাট্টাতামাশা করতে পারে এবং আমাদের সম্বন্ধে খারাপ কথা বলতে পারে। তা সত্ত্বেও, আমরা কীভাবে নিরপেক্ষ থাকতে পারি এবং যিহোবার প্রতি অনুগত থাকতে পারি? আসুন তা জানি।
১. সত্য খ্রিস্টানেরা মানব সরকারগুলোকে কোন দৃষ্টিতে দেখে?
সত্য খ্রিস্টান হিসেবে আমরা সরকারের প্রতি সম্মান দেখাই। আমরা যিশুর বলা এই কথাগুলো মেনে চলি, “কৈসরের যা, তা কৈসরকে দাও।” (মার্ক ১২:১৭) এর অর্থ হল, আমরা দেশের আইনকানুন মেনে চলি, যেমন, আমরা কর বা ট্যাক্স দিয়ে থাকি। বাইবেল জানায়, সরকারগুলো এইজন্যই শাসন করছে, কারণ ঈশ্বর তাদের থাকতে দিয়েছেন। (রোমীয় ১৩:১) এর থেকে আমরা বুঝতে পারি, এই সরকারগুলোর কাছে যে-ক্ষমতা রয়েছে, তা যিহোবার ক্ষমতার কাছে কিছুই নয়। একমাত্র যিহোবা এবং তাঁর রাজ্যই মানুষের সমস্ত সমস্যা দূর করতে পারবে।
২. কীভাবে আমরা নিরপেক্ষ থাকতে পারি?
আমরা রাজনীতিতে অংশ নিই না, ঠিক যেমন যিশুও নেননি। একবার লোকেরা যিশুর অলৌকিক কাজ দেখে তাঁকে রাজা করার জন্য এসেছিল। কিন্তু, তিনি রাজি হননি আর সেখান থেকে চলে গিয়েছিলেন। (যোহন ৬:১৫) পরে তিনি বলেছিলেন, “আমার রাজ্য এই জগতের অংশ নয়।” (যোহন ১৮:৩৬) আমরাও বিভিন্নভাবে দেখাই যে, আমরা নিরপেক্ষ রয়েছি, যেমন, আমরা যুদ্ধে অংশ নিই না। (পড়ুন, মীখা ৪:৩.) আমরা পতাকার মতো জাতীয় প্রতীকগুলোর উপাসনা করি না, তবে এগুলোকে আমরা অসম্মানও করি না। (১ যোহন ৫:২১) আমরা কখনো কোনো রাজনৈতিক দলের অথবা প্রার্থীর পক্ষ নিই না, আর এমনকি তাদের বিপক্ষেও কিছু বলি না। এইরকম অনেক ক্ষেত্র রয়েছে, যেগুলোতে নিরপেক্ষ থাকার মাধ্যমে আমরা দেখাতে পারি যে, আমরা ঈশ্বরের রাজ্য অথবা সরকারকে সমর্থন করি।
গভীরভাবে গবেষণা করুন
কোন কোন পরিস্থিতিতে নিরপেক্ষ থাকা সহজ হয় না? আর এইরকম পরিস্থিতিতে কীভাবে আমরা সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারি, যাতে যিহোবা খুশি হন? আসুন তা জানি।
৩. সত্য খ্রিস্টানেরা নিরপেক্ষ থাকে
যিশু এবং তাঁর শিষ্যদের কাছ থেকে আমরা নিরপেক্ষ থাকার বিষয়ে অনেক কিছু শিখতে পারি। রোমীয় ১৩:১, ৫-৭ এবং ১ পিতর ২:১৩, ১৪ পদ পড়ুন। ভিডিওটা দেখুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন।
কেন আমাদের সরকারগুলোর প্রতি সম্মান দেখানো উচিত?
কোন কোন উপায়ে আমরা দেখাতে পারি যে, আমরা সরকারগুলোর প্রতি বশীভূত রয়েছি?
দুটো দেশের মধ্যে যখন যুদ্ধ চলে, তখন অন্য দেশগুলো বলতে পারে যে, তারা নিরপেক্ষ রয়েছে। কিন্তু, তারা কোনো-না-কোনোভাবে দুটো দেশেরই পক্ষ নিয়ে থাকে। তা হলে, প্রকৃত নিরপেক্ষ থাকার অর্থ কী? যোহন ১৭:১৬ পদ পড়ুন। ভিডিওটা দেখুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন।
নিরপেক্ষ থাকার অর্থ কী এবং কী নয়?
সরকারগুলো যখন আমাদের এমন কিছু করতে বলে, যেগুলো ঈশ্বরের আইনের বিরুদ্ধে, তখন আমরা কী করব? প্রেরিত ৫:২৮, ২৯ পদ পড়ুন। ভিডিওটা দেখুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন।
মানুষের কোনো আইন যদি ঈশ্বরের আইনের বিরুদ্ধে হয়, তা হলে আমাদের কার আইনের বাধ্য হওয়া উচিত?
আপনি কি এমন কোনো পরিস্থিতির বিষয়ে বলতে পারেন, যেখানে একজন খ্রিস্টান সরকারের আইনের বাধ্য হবে না?
৪. আপনার চিন্তাভাবনা ও কাজের মাধ্যমে নিরপেক্ষতা দেখান
১ যোহন ৫:২১ পদ পড়ুন। ভিডিওটা দেখুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন।
কেন ভাই আয়েঙ্গে কোনো রাজনৈতিক দলের অংশ হতে অথবা পতাকাকে সেলুট করতে চাননি ?
আপনার কি মনে হয়, ভাই বুদ্ধির সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন?
এমন আর কোন পরিস্থিতি হতে পারে, যেখানে আমরা কারো পক্ষ নেওয়া শুরু করতে পারি? ভিডিওটা দেখুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন।
দুটো দেশের মধ্যে যখন কোনো খেলা চলে, তখন আমরা কীভাবে নিরপেক্ষ থাকতে পারি?
রাজনৈতিক নেতারা যে-সিদ্ধান্ত নেয়, সেগুলো আমাদের জন্য উপকার কিংবা ক্ষতি নিয়ে আসতে পারে। কীভাবে আমরা এই পরিস্থিতিতেও নিরপেক্ষ থাকতে পারি?
আমরা যে-সমস্ত খবর শুনি এবং যাদের সঙ্গে মেলামেশা করি, তাদের কারণে আমরা কীভাবে কারো পক্ষ নেওয়া শুরু করতে পারি?
কেউ কেউ জিজ্ঞেস করতে পারে: “কেন আপনি পতাকা সেলুট করেন না এবং জাতীয় সংগীত গান না?”
উত্তরে আপনি কী বলবেন?
সারাংশ
খ্রিস্টানেরা রাজনৈতিক বিষয়গুলোতে নিরপেক্ষ থাকে। আর তারা তাদের চিন্তাভাবনা, কথা ও কাজের মাধ্যমে কারো পক্ষ না নেওয়ার জন্য পুরোপুরিভাবে প্রচেষ্টা করে থাকে।
পুনরালোচনা
কীভাবে আমরা মানব সরকারের প্রতি বাধ্যতা দেখাতে পারি?
কেন আমরা রাজনৈতিক বিষয়গুলোতে নিরপেক্ষ থাকি?
কোন পরিস্থিতিগুলোতে নিরপেক্ষ থাকা সহজ হয় না?
আরও জানুন
নিরপেক্ষ থাকার জন্য আমাদের কোন কোন ত্যাগস্বীকার করতে হতে পারে?
পরিবারের লোকেরা আগে থেকে কোন প্রস্তুতি নিতে পারে, যাতে পরিস্থিতি কঠিন হলে তারা নিরপেক্ষ থাকতে পারে?
একজন ব্যক্তি অনেক বড়ো অফিসার ছিলেন আর তার উপর দেশের সুরক্ষার ভার ছিল। কিন্তু, তিনি এর চেয়েও বড়ো সম্মান পেয়েছিলেন। সেটা কী? আসুন তা দেখি।
সত্য খ্রিস্টানেরা “এ জগতের অংশ নয়।” চাকরির ক্ষেত্রেও কি এই বিষয়টা সত্য? আসুন তা জানি।
“প্রত্যেক জন নিজ নিজ ভার বহন করিবে” (প্রহরীদুর্গ, মার্চ ১৫ ২০০৬)