পাঠ ৪৭
বাপ্তিস্ম নেওয়ার জন্য আপনি কি প্রস্তুত?
বাইবেল অধ্যয়ন করার মাধ্যমে আপনি এই পর্যন্ত যিহোবা সম্বন্ধে অনেক কিছু শিখেছেন। আর আপনি যা-কিছু শিখেছেন, সেই অনুযায়ী হয়তো কিছু পরিবর্তনও করেছেন। কিন্তু, তারপরও এমন কোনো বিষয় হয়তো রয়েছে, যেটা আপনাকে যিহোবার কাছে নিজের জীবন উৎসর্গ করতে এবং বাপ্তিস্ম নিতে বাধা দিচ্ছে। এই পাঠে আমরা এমন কিছু বাধা নিয়ে আলোচনা করব, যেগুলো সচরাচর এসে থাকে, আর সেইসঙ্গে এটাও দেখব যে, কীভাবে আপনি এগুলো কাটিয়ে উঠতে পারেন।
১. বাপ্তিস্ম নেওয়ার জন্য বাইবেলের কতটা জ্ঞান থাকা প্রয়োজন?
বাপ্তিস্ম নেওয়ার জন্য “সত্য সম্বন্ধে সঠিক জ্ঞান” থাকা প্রয়োজন। (১ তীমথিয় ২:৪) তবে, এর অর্থ এই নয় যে, আপনাকে বাইবেলের প্রতিটা প্রশ্নের উত্তর জানতে হবে। আসলে, যে-খ্রিস্টানেরা বহু বছর আগে বাপ্তিস্ম নিয়েছিলেন, তারা এখনও বাইবেল থেকে নতুন নতুন বিষয় শিখছেন। (কলসীয় ১:৯, ১০) কিন্তু এটা ঠিক যে, বাপ্তিস্ম নেওয়ার জন্য আপনাকে বাইবেলের মৌলিক শিক্ষাগুলো অবশ্যই জানতে হবে। আপনি কি সেই মৌলিক শিক্ষাগুলো লাভ করেছেন? তা জানার জন্য আপনি মণ্ডলীর প্রাচীনদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন।
২. বাপ্তিস্ম নেওয়ার আগে কোন কোন পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন?
বাপ্তিস্ম নেওয়ার আগে কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। বাইবেল বলে, “অনুতাপ করো এবং ঈশ্বরের প্রতি ফেরো।” (পড়ুন, প্রেরিত ৩:১৯.) এর অর্থ হল, একজন ব্যক্তি তার পাপের জন্য হৃদয় থেকে অনুতাপ করবে এবং যিহোবার কাছে ক্ষমা চাইবে। আর সেইসঙ্গে তিনি এই বিষয়ে দৃঢ় হবেন যে, তিনি এখন থেকে আর কোনো খারাপ কাজ করবেন না এবং এমনভাবে জীবনযাপন করবেন, যা যিহোবাকে খুশি করে। এ ছাড়া, মণ্ডলীর সভাগুলোতে যাওয়া এবং অবাপ্তাইজিত প্রকাশক হওয়ারও প্রয়োজন রয়েছে।
৩. বাপ্তিস্ম নেওয়ার জন্য কেন আপনার ভয় পাওয়া উচিত নয়?
কিছু লোক এটা ভেবে ভয় পায় যে, তারা যদি যিহোবাকে সেবা করার প্রতিজ্ঞা করে, তা হলে তারা সেই প্রতিজ্ঞা রক্ষা করতে পারবে না। এটা ঠিক যে, আপনার ভুল হবে। বাইবেলে বলা বিশ্বস্ত ব্যক্তিদেরও ভুল হয়েছিল। যিহোবা এটা আশা করেন না যে, আপনি কখনো ভুল করবেন না। (পড়ুন, গীতসংহিতা ১০৩:১৩, ১৪.) কিন্তু, আপনি যখন তাঁর মান অনুযায়ী জীবনযাপন করার জন্য কঠোর প্রচেষ্টা করেন, তখন তিনি খুশি হন। আর তিনি এটা করার জন্য আপনাকে সাহায্য করবেন। শুধু তা-ই নয়, যিহোবা আমাদের আশ্বস্ত করেন যে, কোনো কিছুই “[তাঁর] প্রেম থেকে আমাদের আলাদা করতে পারবে না।”—পড়ুন, রোমীয় ৮:৩৮, ৩৯.
গভীরভাবে গবেষণা করুন
যিহোবাকে ভালোভাবে জানার এবং তাঁর কাছ থেকে সাহায্য নেওয়ার মাধ্যমে কীভাবে আপনি যেকোনো বাধা কাটিয়ে উঠতে পারেন? আসুন তা জানি।
৪. যিহোবাকে আরও ভালোভাবে জানুন
বাপ্তিস্ম নেওয়ার জন্য যিহোবা সম্বন্ধে আপনাকে কতটা জানতে হবে? আপনাকে যিহোবা সম্বন্ধে এমনভাবে জানতে হবে, যাতে আপনি তাঁকে ভালোবাসতে এবং খুশি করতে পারেন। সারা পৃথিবীতে সাক্ষিদের কাছ থেকে যারা বাইবেল সম্বন্ধে শেখে, তারা এটাই করেছে। ভিডিওটা দেখুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন।
বাপ্তিস্ম নেওয়ার ক্ষেত্রে যোগ্য হওয়ার জন্য কিছু লোক কী করেছে?
রোমীয় ১২:২ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন:
বাইবেলের শিক্ষাগুলোর বিষয়ে আপনার মনে কি কোনো সন্দেহ রয়েছে? আপনার কি মনে হয় যে, যিহোবার সাক্ষিরা সত্য শেখায়?
আপনার মনে যদি এমন কোনো সন্দেহ থেকে থাকে, তা হলে আপনি কী করতে পারেন?
৫. যেকোনো বাধাই আসুক না কেন, তা কাটিয়ে উঠুন
আমরা প্রত্যেকে যখন নিজেদের জীবন উৎসর্গ করার এবং বাপ্তিস্ম নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই, তখন আমাদের প্রত্যেকের সামনে বিভিন্ন বাধা আসে। একজন মহিলার সামনে কোন কোন বাধা এসেছিল, আসুন তা দেখি। ভিডিওটা দেখুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন।
যিহোবার সেবা করার জন্য নারেনগেরেলের সামনে কোন কোন বাধা এসেছিল?
যিহোবার প্রতি ভালোবাসা থাকার কারণে তিনি কীভাবে সেই বাধাগুলো কাটিয়ে উঠতে পেরেছিলেন?
হিতোপদেশ ২৯:২৫ এবং ২ তীমথিয় ১:৭ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন:
বাধাগুলো কাটিয়ে ওঠার জন্য কোন বিষয়টা আমাদের সাহস জোগাতে পারে?
৬. নিশ্চিত থাকুন, যিহোবা অবশ্যই আপনাকে সাহায্য করবেন
যিহোবা যেকোনো পরিস্থিতিতে আপনাকে সাহায্য করবেন। ভিডিওটা দেখুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন।
এই বাইবেল ছাত্র কেন বাপ্তিস্ম নিতে চাইছিলেন না?
যিহোবা সম্বন্ধে তিনি এমন কী জেনেছিলেন, যেটা যিহোবার উপর তার নির্ভরতা বৃদ্ধি করেছিল?
যিশাইয় ৪১:১০, ১৩ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন:
আপনি কেন নিশ্চিত থাকতে পারেন যে, উৎসর্গ করার সময় আপনি যে-প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, তা রক্ষা করতে পারবেন?
৭. যিহোবার ভালোবাসার প্রতি আপনার উপলব্ধি বৃদ্ধি করুন
আপনি যতবেশি চিন্তা করবেন যে, যিহোবা আপনাকে কতটা ভালোবাসেন, ততবেশি তাঁর প্রতি আপনার কৃতজ্ঞতাবোধ বৃদ্ধি পাবে। আর আপনার মধ্যে তাঁকে চিরকাল সেবা করার আকাঙ্ক্ষা বৃদ্ধি পাবে। গীতসংহিতা ৪০:৫ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন:
আপনি বিশেষ করে কোন আশীর্বাদের জন্য যিহোবার প্রতি কৃতজ্ঞ?
ভাববাদী যিরমিয়, যিহোবা এবং তাঁর বাক্যকে খুব ভালোবাসতেন। তিনি যিহোবার নামের সেবক হওয়ার যে-বিশেষ সুযোগ লাভ করেছিলেন, সেটার প্রতি গভীর উপলব্ধি দেখিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “তোমার বাক্য সকল আমার আমোদ ও চিত্তের হর্ষজনক ছিল; কেননা হে সদাপ্রভু . . . আমার উপরে তোমার নাম কীর্ত্তিত।” (যিরমিয় ১৫:১৬) কীভাবে আপনি নীচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দেবেন?
যিহোবার সাক্ষি হওয়া কেন এক বিশেষ সুযোগ?
বাপ্তিস্ম নিয়ে আপনি কি একজন যিহোবার সাক্ষি হতে চান?
এমন কোনো বিষয় কি রয়েছে, যা আপনাকে এটা করতে বাধা দিচ্ছে?
আপনার কী মনে হয়, বাপ্তিস্ম নেওয়ার লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য আপনাকে কী করতে হবে?
কেউ কেউ বলে থাকে: “বাপ্তিস্ম নেওয়ার পর আমি যদি যিহোবার মান অনুযায়ী চলতে না পারি।”
আপনিও কি এমনটা মনে করেন?
সারাংশ
বাপ্তিস্ম নেওয়ার জন্য আপনার সামনে যেকোনো বাধাই আসুক না কেন, যিহোবার সাহায্যে আপনি সেগুলো কাটিয়ে উঠতে পারবেন।
পুনরালোচনা
বাপ্তিস্ম নেওয়ার জন্য বাইবেলের কতটা জ্ঞান থাকা প্রয়োজন?
বাপ্তিস্ম নেওয়ার জন্য আপনাকে কোন কোন পরিবর্তন করতে হতে পারে?
বাপ্তিস্ম নেওয়ার জন্য কেন আপনার ভয় পাওয়া উচিত নয়?
আরও জানুন
বাপ্তিস্ম নেওয়ার কয়েকটা কারণ কী? আসুন তা জানি।
“আপনি কি বাপ্তিস্ম নেওয়ার জন্য প্রস্তুত?” (প্রহরীদুর্গ, মার্চ ২০২০)
বাপ্তিস্ম নেওয়ার ক্ষেত্রে আপনার সামনে যে-বাধাগুলো রয়েছে, সেগুলো আপনি কীভাবে কাটিয়ে উঠতে পারেন? আসুন তা জানি।
“কী আমাকে বাপ্তিস্ম নিতে বাধা দিচ্ছে?” (প্রহরীদুর্গ, মার্চ ২০১৯)
বাপ্তিস্ম নেওয়ার জন্য একজন ব্যক্তি কীভাবে বড়ো বড়ো বাধা কাটিয়ে উঠেছিলেন? আসুন তা দেখি।
আতা নামে একজন ব্যক্তি বাপ্তিস্ম নিতে ইতস্তত বোধ করছিলেন। কোন বিষয়টা থেকে তিনি নিশ্চিত হয়েছিলেন যে, তার এই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া উচিত? আসুন তা দেখি।