পাঠ ১৩
ধর্মগুলো কীভাবে লোকদের ঈশ্বরের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে?
ঈশ্বর যদি আমাদের ভালোবাসতে শেখান, তা হলে ধর্মের নামে কেন এত খারাপ কাজ হয়? আসলে, বেশিরভাগ ধর্ম বলে থাকে, তারা ঈশ্বর সম্বন্ধে শিক্ষা দিচ্ছে, কিন্তু বাস্তবে তারা লোকদের ঈশ্বরের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে। কীভাবে তারা লোকদের ঈশ্বরের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে? এটা দেখে ঈশ্বরের কেমন লাগে? আর তিনি এই বিষয়ে কী করবেন? আসুন দেখি।
১. ধর্মগুলো লোকদের এমন কী শিখিয়েছে, যে-কারণে তারা ঈশ্বরের কাছ থেকে দূরে সরে গিয়েছে?
অনেক ধর্ম “ঈশ্বরের সত্যের পরিবর্তে মিথ্যায় বিশ্বাস করেছে” এবং তা লোকদের শিখিয়েছে। (রোমীয় ১:২৫) উদাহরণস্বরূপ, অনেক ধর্ম এটা শেখায় না যে, ঈশ্বরের নাম হল যিহোবা। কিন্তু, বাইবেল বলে, আমাদের অবশ্যই যিহোবাকে তাঁর নাম ধরে ডাকতে হবে। (রোমীয় ১০:১৩, ১৪) আরও একটা বিষয় লক্ষ করুন। কোনো খারাপ ঘটনা ঘটলে কিছু ধর্মগুরু বলে থাকে, “এটাই ঈশ্বরের ইচ্ছা ছিল।” আসলে, এই কথাগুলো মিথ্যা, কারণ ঈশ্বর কখনো কারো প্রতি খারাপ কিছু করেন না। (পড়ুন, যাকোব ১:১৩.) দুঃখের বিষয় হল, এই ধরনের মিথ্যা বিষয় শেখানোর মাধ্যমে ধর্মগুলো লোকদের ঈশ্বরের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে।
২. ধর্মগুলো এমন কোন কাজগুলো করেছে, যে-কারণে লোকেরা ঈশ্বরের কাছ থেকে দূরে সরে গিয়েছে?
যিহোবা যেভাবে চান, ধর্মগুলো সেভাবে লোকদের সঙ্গে আচরণ করেনি। বাইবেল বলে, তাদের “পাপ অসংখ্য হয়ে আকাশ পর্যন্ত উঁচু হয়েছে।” (প্রকাশিত বাক্য ১৮:৫) বহু বছর ধরে, ধর্মগুলো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত রয়েছে। এ ছাড়া, তারা যুদ্ধগুলোকে সমর্থন করেছে এবং দাঙ্গা লাগিয়েছে আর এর ফলে অসংখ্য নিরীহ লোক প্রাণ হারিয়েছে। কিছু ধর্মগুরু আবার তাদের ভক্তদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে এবং সেই টাকায় বিলাসী জীবনযাপন করে। তাদের এই কাজগুলো থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় যে, তারা ঈশ্বরকে একেবারেই জানে না। তাই, তারা যদি ঈশ্বরকে না জানে, তা হলে কীভাবে তারা তাঁর সম্বন্ধে সত্য শিক্ষা দিতে পারে?—পড়ুন, ১ যোহন ৪:৮.
৩. ধর্মগুলোর মিথ্যা শিক্ষা এবং খারাপ কাজগুলো দেখে ঈশ্বরের কেমন লাগে?
ধর্মের নামে করা খারাপ কাজগুলো দেখে আপনি যদি রেগে যান, তা হলে চিন্তা করুন, এগুলো দেখে যিহোবার কেমন লাগে? যিহোবা লোকদের খুব ভালোবাসেন। কিন্তু, তিনি সেই ধর্মগুরুদের প্রতি একদম খুশি নন, যারা তাঁর সম্বন্ধে মিথ্যা শিক্ষা দেয় এবং লোকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। ঈশ্বর প্রতিজ্ঞা করেছেন যে, তিনি এই ধর্মগুলোকে ধ্বংস করে দেবেন এবং সেগুলো “আর কখনো খুঁজে পাওয়া যাবে না।” (প্রকাশিত বাক্য ১৮:২১) খুব শীঘ্রই, ঈশ্বর তা করতে চলেছেন।—প্রকাশিত বাক্য ১৮:৮.
গভীরভাবে গবেষণা করুন
যে-ধর্মগুলো কেবল দাবি করে যে, তারা ঈশ্বরের উপাসনা করছে, তাদের সম্বন্ধে ঈশ্বর কী মনে করেন? এই ধর্মগুলো কী করেছে? কেন তারপরও আপনার যিহোবা ঈশ্বর সম্বন্ধে শেখা বন্ধ করা উচিত নয়? আসুন, এই বিষয়ে আরও জানি।
৪. সমস্ত ধর্ম কি ঈশ্বরকে খুশি করে?
অনেক লোক বিশ্বাস করে, ধর্মগুলো হল আলাদা আলাদা রাস্তার মতো আর তারা যে-রাস্তা দিয়েই যাক না কেন, ঈশ্বরের কাছে গিয়ে পৌঁছাবে। কিন্তু, এটা কি সত্য? মথি ৭:১৩, ১৪ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন:
বাইবেল জীবনে যাওয়ার রাস্তা সম্বন্ধে কী বলে?
ভিডিওটা দেখুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন।
সমস্ত ধর্ম কি ঈশ্বরকে খুশি করে? বাইবেল এই বিষয়ে কী বলে?
৫. ধর্মগুলো তাদের কাজের মাধ্যমে ঈশ্বরের প্রেমকে প্রকাশ করেনি
ধর্মগুলো বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে ঈশ্বরের উপর নিন্দা নিয়ে এসেছে। তাদের খারাপ কাজগুলোর কারণে তাদের মিথ্যা ধর্ম বলা হয়েছে। তাদের করা বিভিন্ন জঘন্য কাজের মধ্যে একটা হল, তারা যুদ্ধগুলোকে সমর্থন করেছে। উদাহরণ লক্ষ করার জন্য ভিডিওটা দেখুন। এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বিভিন্ন গির্জা কী করেছিল?
গির্জাগুলো যা করেছিল, সেই বিষয়ে আপনি কী মনে করেন?
যোহন ১৩:৩৪, ৩৫ এবং ১৭:১৬ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন:
ধর্মগুলো যখন যুদ্ধকে সমর্থন করে, তখন তা দেখে যিহোবার কেমন লাগে বলে আপনার মনে হয়?
মিথ্যা ধর্মগুলো আরও অনেক কাজ করেছে, যেগুলো থেকে স্পষ্টভাবে বোঝা যায়, লোকদের প্রেম করার যে-আজ্ঞা রয়েছে, তা তারা কোনোভাবেই পালন করেনি। আপনি এই ধরনের কোন খারাপ কাজগুলো দেখেছেন?
৬. ঈশ্বর লোকদের মিথ্যা শিক্ষাগুলো থেকে মুক্ত করতে চান
প্রকাশিত বাক্য ১৮:৪a পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন:
ঈশ্বর সেই সমস্ত ব্যক্তিকে মুক্ত করতে চান, যারা মিথ্যা ধর্মের জালে আটকে রয়েছে। এটা জেনে আপনার কেমন লাগছে?
৭. সত্য ঈশ্বর সম্বন্ধে শিখতে থাকুন
মিথ্যা ধর্মগুলো অনেক খারাপ কাজ করেছে। এগুলোর কারণে কি আপনি ঈশ্বরের উপর বিশ্বাস করা ছেড়ে দেবেন? একটা ছেলের কথা চিন্তা করুন, যে তার বাবার কোনো কথা শোনে না। একদিন সে বাড়ি ছেড়ে চলে যায় আর খুব খারাপ খারাপ কাজ করতে থাকে। বাবা ছেলের কাজগুলো দেখে একদমই খুশি হন না। তা হলে, ছেলে যে-কাজগুলো করছে, সেগুলোর জন্য কি তার বাবাকে দোষ দেওয়া ঠিক হবে?
মিথ্যা ধর্মের কাজগুলোর জন্য কি যিহোবাকে দোষ দেওয়া ঠিক হবে? আর এই কাজগুলো দেখে আপনার কি যিহোবা সম্বন্ধে শেখা বন্ধ করে দেওয়া উচিত?
কেউ কেউ বলে থাকে: “সব ধর্মই ভালো বিষয় শিক্ষা দেয়।”
আপনারও কি তা-ই মনে হয়?
সব ধর্মই যদি ভালো বিষয় শিক্ষা দেয়, তা হলে কেন যিহোবা তাদের প্রতি খুশি নন?
সারাংশ
ধর্মগুলো বিভিন্ন মিথ্যা শিক্ষা দেওয়ার এবং খারাপ কাজ করার মাধ্যমে লোকদের যিহোবার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে। ঈশ্বর সমস্ত মিথ্যা ধর্মকে ধ্বংস করে দেবেন।
পুনরালোচনা
ধর্মগুলোর মিথ্যা শিক্ষা এবং খারাপ কাজগুলো দেখে আপনার কেমন লাগে?
মিথ্যা ধর্মের কাজগুলো দেখে যিহোবার কেমন লাগে?
মিথ্যা ধর্মগুলোকে ঈশ্বর কী করবেন?
আরও জানুন
ঈশ্বর বিভিন্ন ধর্মকে কীভাবে দেখেন?
“সমস্ত ধর্মই কি এক? সেগুলো সবই কি লোকদের ঈশ্বরের নিকটবর্তী হতে সাহায্য করে?” (অনলাইন প্রবন্ধ)
কেন যিহোবা চান যেন আমরা তাঁর লোকদের সঙ্গে মিলিত হয়ে তাঁর উপাসনা করি?
“কোনো ধর্মীয় সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকা কি জরুরি?” (অনলাইন প্রবন্ধ)
একজন পাদরি নিজের ধর্মের কিছু বিষয় নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। তবে, তিনি ঈশ্বরের উপর বিশ্বাস করা ছেড়ে দেননি বরং সত্য খুঁজতে থাকেন।
“কেন একজন পাদরি তার ধর্ম ত্যাগ করেছিলেন?” (সচেতন থাক!, ফেব্রুয়ারি ২০১৫, ইংরেজি)
বছরের পর বছর ধরে, ধর্মগুলো ঈশ্বর সম্বন্ধে মিথ্যা কথা বলে এসেছে। আর এই কারণে লোকেরা মনে করে, ঈশ্বর হলেন নিষ্ঠুর এবং তিনি আমাদের জন্য চিন্তা করেন না। এই ধরনের তিনটে মিথ্যা সম্বন্ধে জানুন।
“যে-মিথ্যাগুলো ঈশ্বরকে একজন নিষ্ঠুর ব্যক্তি হিসেবে তুলে ধরে” (প্রহরীদুর্গ, নভেম্বর ১, ২০১৩, ইংরেজি)