প্রচ্ছদ বিষয় | কেন আমাদের সৃষ্টিকর্তাকে প্রয়োজন?
যে-কারণে আমাদের সৃষ্টিকর্তাকে প্রয়োজন
মানসিক-স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলে যে, সত্যিকারের সুখী হওয়ার জন্য লোকেদের শারীরিক চাহিদা মেটানোর চেয়ে আরও বেশি কিছু প্রয়োজন। লোকেরা যে উদ্দেশ্যপূর্ণ কিছু করতে চায় অথবা নিজের চেয়ে মহান কোনো ব্যক্তির সেবা করতে চায় কিংবা মহৎ কিছু নিয়ে ব্যস্ত থাকতে চায়, তা থেকে আমরা এই সত্যটা বুঝতে পারি। সেই চাহিদা মেটানোর জন্য কেউ কেউ তাদের অবসর সময়টা প্রকৃতি, আঁকা-আঁকি, সংগীত ও এইরকম বিষয়ের পিছনে ব্যয় করে থাকে। কিন্তু, এই ধরনের বিষয়ের পিছনে যারা ছোটে, তাদের মধ্যে অধিকাংশ ব্যক্তিই কোনো গভীর বা স্থায়ী পরিতৃপ্তি খুঁজে পায় না।
ঈশ্বর চান যেন মানুষ এখন এবং চিরকাল সুখে থাকে
জন্ম থেকেই মানুষের মধ্যে ঈশ্বরের সঙ্গে সম্পর্কস্থাপনের আকাঙ্ক্ষা রয়েছে আর বাইবেল পাঠকদের কাছে এটা অবাক হওয়ার মতো কোনো বিষয় নয়। কারণ আদিপুস্তকের প্রথম অধ্যায় থেকে বোঝা যায়, ঈশ্বর প্রথম মানবদম্পতিকে সৃষ্টি করার পর, তাদের সঙ্গে নিয়মিতভাবে কথা বলতেন। আর এভাবে ঈশ্বর তাদেরকে তাঁর সঙ্গে এক সম্পর্ক গড়ে তোলার সুযোগ দিয়েছিলেন। (আদিপুস্তক ৩:৮-১০) ঈশ্বর মানুষকে এমনভাবে তৈরি করেননি যে, তারা তাঁর কাছ থেকে স্বাধীন হয়ে বেঁচে থাকতে পারবে; তাদের মধ্যে তাদের নির্মাতার সঙ্গে যোগাযোগ করার এক চাহিদা রয়েছে। বাইবেলে এই চাহিদা সম্বন্ধে একাধিক বার বলা হয়েছে।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, যিশু বলেছিলেন: “যারা মনে-প্রাণে ঈশ্বরের ইচ্ছামত চলতে চায় তারা ধন্য” বা সুখী। (মথি ৫:৬, বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারশন) ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করে সুখী হওয়ার জন্য একজন ব্যক্তিকে অবশ্যই ঈশ্বর সম্বন্ধে জানতে হবে। তাই আমরা বলতে পারি, সুখী ও পরিতৃপ্তিদায়ক জীবনের জন্য মূল উপাদান হচ্ছে, ঈশ্বর সম্বন্ধে জানার জন্মগত আকাঙ্ক্ষা পূরণ করা। কীভাবে আমরা সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে পারি? যিশু এই প্রশ্নের উত্তরই দিয়েছিলেন, যখন তিনি এই কথা বলেছিলেন: “মনুষ্য কেবল রুটীতে বাঁচিবে না, কিন্তু ঈশ্বরের মুখ হইতে যে প্রত্যেক বাক্য নির্গত হয়, তাহাতেই বাঁচিবে।” (মথি ৪:৪) কোন কোন দিক দিয়ে ঈশ্বরের মুখের বাক্য অর্থাৎ বাইবেল থেকে পাওয়া ঈশ্বরের চিন্তাভাবনা এবং নির্দেশনা, আমাদের জন্য এক সুখী ও অর্থপূর্ণ জীবন এনে দিতে পারে? আসুন আমরা তিনটে গুরুত্বপূর্ণ দিক সম্বন্ধে বিবেচনা করি।
আমাদের প্রয়োজন উত্তম নির্দেশনা
বর্তমানে অসংখ্য বিশেষজ্ঞ, মানবসম্পর্ক, প্রেমভালোবাসা, পারিবারিক জীবন, দ্বন্দ্ব নিরসন, সুখ আর এমনকী জীবনের অর্থ সম্বন্ধে উপদেশ দেওয়ার জন্য সদাপ্রস্তুত। তবে, এই ক্ষেত্রগুলোতে যিহোবা ঈশ্বর ছাড়া আর কেউই সবচেয়ে উপকারী ও ভারসাম্যপূর্ণ নির্দেশনা দিতে পারে না। কেন তা বলা যায়?
উদাহরণ স্বরূপ: আপনি যখন কোনো নতুন যন্ত্র, যেমন, কোনো ক্যামেরা অথবা কম্পিউটার কেনেন, তখন আপনি আশা করেন, সেটার সঙ্গে একটা ম্যানুয়াল বা নির্দেশপুস্তিকা থাকবে। সেই ম্যানুয়ালে ব্যাখ্যা করা থাকবে যে, আপনি কীভাবে যন্ত্রটাকে সর্বোত্তম উপায়ে ব্যবহার করতে পারবেন এবং সেই সামগ্রী থেকে পুরোপুরি উপকার পাবেন। বাইবেলকে এইরকম একটা ম্যানুয়ালের সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে। রূপকভাবে বললে, এটা হচ্ছে মানুষের জন্য এক ম্যানুয়াল, যা মানবজীবনের প্রস্তুতকারক অর্থাৎ ঈশ্বর, জীবন ব্যবহারকারীদের জন্য বা আমাদের জন্য দিয়েছেন। সামগ্রী “ব্যবহারকারীদের ম্যানুয়াল” ব্যাখ্যা করে যে, সামগ্রীটা কোন উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে আর সর্বোত্তম উপকার লাভের জন্য কীভাবে সেটাকে ব্যবহার করতে হবে।
যেকোনো ভালো ম্যানুয়ালের মতো, বাইবেলও এটির পাঠকদেরকে এমন কাজগুলো না করার জন্য সাবধান করে, যা করা হলে সেই “সামগ্রী” অর্থাৎ আমাদের জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অন্যেরা যে-উপদেশ অথবা সহজ সমাধান দেয়, তা হয়তো আপনার মনের মতো আর এমনকী সুবিধাজনক বলেও মনে হতে পারে। কিন্তু, এভাবে চিন্তা করা কি যুক্তিসংগত হবে যে, নির্মাতার নির্দেশনা না মেনেও আমরা সর্বোত্তম উপকার লাভ করতে পারব এবং বিভিন্ন সমস্যা এড়াতে পারব?
“আমি তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু; তোমাদের উপকারের জন্য আমি তোমাদের শিক্ষা দিই। যে পথে তোমাদের চলতে হবে আমি সেই পথে তোমাদের চালাই। তোমরা যদি কেবল আমার আদেশের প্রতি মনোযোগ দিতে তাহলে তোমাদের শান্তি হত নদীর মত আর তোমাদের সততা হত সাগরের ঢেউয়ের মত।” —যিশাইয় ৪৮:১৭, ১৮
যিহোবা ঈশ্বর যদিও আমাদের বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছেন, কিন্তু তিনি সেগুলো মেনে চলার জন্য আমাদেরকে জোর করেন না। এর পরিবর্তে, একজন প্রেমময় দাতা হিসেবে তিনি আন্তরিকতার সঙ্গে আমাদেরকে এই আমন্ত্রণ জানান: “আমি তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু; তোমাদের উপকারের জন্য আমি তোমাদের শিক্ষা দিই। যে পথে তোমাদের চলতে হবে আমি সেই পথে তোমাদের চালাই। তোমরা যদি কেবল আমার আদেশের প্রতি মনোযোগ দিতে তাহলে তোমাদের শান্তি হত নদীর মত আর তোমাদের সততা হত সাগরের ঢেউয়ের মত।” (যিশাইয় ৪৮:১৭, ১৮, বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারশন) সংক্ষেপে বললে, আমরা যদি ঈশ্বরের নির্দেশনার প্রতি মনোযোগ দিই, তাহলে আমরা ভালোভাবে বেঁচে থাকতে পারব। আর এটাকে ঘুরিয়ে বললে এভাবে বলতে হবে, ভালোভাবে বেঁচে থাকার ও সুখী হওয়ার জন্য আমাদের ঈশ্বরকে প্রয়োজন।
আমাদের প্রয়োজন জীবনের সমস্যাগুলোর সমাধান
কেউ কেউ মনে করে যে, তাদের ঈশ্বরকে প্রয়োজন নেই। এর কারণ হচ্ছে, তারা জীবনে এমন অনেক বিভ্রান্তিকর প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছে, যেগুলো একজন প্রেমময় ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস করার ধারণার সঙ্গে মেলে না। উদাহরণ স্বরূপ, তারা হয়তো জিজ্ঞেস করে: ‘কেন ভালো লোকেরা কষ্ট ভোগ করে?’ ‘কেন কিছু নির্দোষ শিশু বিকলাঙ্গ হয়ে জন্মগ্রহণ করে?’ ‘কেন জীবন এত অন্যায়অবিচারে পূর্ণ?’ এই প্রশ্নগুলো আসলেই গুরুত্বের সঙ্গে চিন্তা করার মতো আর এগুলোর সন্তোষজনক উত্তর পাওয়া গেলে, তা আমাদের জীবনে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। তবে, এই ধরনের সমস্যার জন্য দ্রুত ঈশ্বরকে দায়ী করার পরিবর্তে, আসুন আমরা দেখি যে, কীভাবে ঈশ্বরের বাক্য বাইবেল এই বিষয়টা স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দেয়।
আদিপুস্তক বইয়ের তৃতীয় অধ্যায়ে আমরা শয়তান সম্বন্ধে বিবরণ দেখতে পাই, যেখানে শয়তান একটা সাপ ব্যবহার করে প্রথম মানবদম্পতির সামনে এসেছিল। সে তাদেরকে সদসদ্-জ্ঞানদায়ক বৃক্ষের ফল না খাওয়ার বিষয়ে যিহোবা ঈশ্বরের আজ্ঞার বিরুদ্ধে কাজ করানোর জন্য চেষ্টা করেছিল। শয়তান হবাকে বলেছিল: “কোন ক্রমে মরিবে না; কেননা ঈশ্বর জানেন, যে দিন তোমরা তাহা খাইবে, সেই দিন তোমাদের চক্ষু খুলিয়া যাইবে, তাহাতে তোমরা ঈশ্বরের সদৃশ হইয়া সদসদ্জ্ঞান প্রাপ্ত হইবে।”—আদিপুস্তক ২:১৬, ১৭; ৩:৪, ৫.
এই কথা বলার মাধ্যমে শয়তান কেবল জোর গলায় যিহোবাকে মিথ্যাবাদী বলেই দাবি করেনি কিন্তু সেইসঙ্গে এমন ইঙ্গিতও দিয়েছিল যে, ঈশ্বরের শাসন করার পদ্ধতি সঠিক নয়। সেইসঙ্গে দিয়াবল এই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিল, মানুষ যদি তার কথা শোনে, তাহলে তাদের জীবন আরও ভালো হবে। এই বিষয়গুলো কীভাবে মীমাংসা করা যেত? যিহোবা এর জন্য সময় দিয়েছিলেন, যাতে তাঁর বিরুদ্ধে আনা এসব অভিযোগ সত্য নাকি মিথ্যা, তা সবাই বুঝতে পারে। ঈশ্বর মূলত শয়তানকে ও শয়তানের পক্ষ নেওয়া ব্যক্তিদের সুযোগ দিয়েছিলেন যেন তারা ঈশ্বরকে ছাড়াই ভালোভাবে বেঁচে থাকতে পারে কি না, তা প্রমাণ করে।
শয়তানের এই দাবির উত্তরে আপনি কী বলবেন? মানুষ কি ঈশ্বরকে ছাড়াই ভালোভাবে বেঁচে থাকতে ও নিজেদের সফলভাবে পরিচালনা করতে পেরেছে? শত শত বছর ধরে, দুঃখকষ্ট, অবিচার, অসুস্থতা, মৃত্যু ও সেইসঙ্গে অপরাধ, নৈতিক অধঃপতন, যুদ্ধ, গণ-হত্যা এবং অন্যান্য নৃশংসতা ঘটে চলেছে। এগুলো অকাট্য প্রমাণ দেয় যে, ঈশ্বরের কাছ থেকে স্বাধীন হয়ে মানুষ নিজেদের পরিচালনা করার যে-প্রচেষ্টা করেছিল, তা একেবারেই ব্যর্থ হয়েছে। মানুষের দুর্দশার জন্য ঈশ্বরকে দায়ী করার পরিবর্তে, বাইবেল এইসমস্ত সমস্যার একটা মূল কারণ সম্বন্ধে জানায়: ‘মানুষ এক জন অন্যের উপরে তাহার অমঙ্গলার্থে কর্ত্তৃত্ব করে।’—উপদেশক ৮:৯.
এই বিষয়গুলো আলোচনা করার পর এটা স্পষ্ট, মানুষ যে-সমস্ত বিভ্রান্তিকর প্রশ্নের মুখোমুখি হয়, আমরা যদি সেগুলোর উত্তর জানতে চাই ও সেইসঙ্গে মানুষের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান পেতে চাই, তাহলে আমাদের ঈশ্বরের ওপর নির্ভর করতে হবে। এক্ষেত্রে ঈশ্বর কী করবেন?
আমাদের প্রয়োজন ঈশ্বরের সাহায্য
যুগ যুগ ধরে লোকেরা অসুস্থতা, বার্ধক্য ও মৃত্যুর কাছ থেকে স্বাধীন হওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে আছে। এর জন্য তারা বিপুল পরিমাণ সময়, শক্তি ও সম্পদ ব্যয় করেছে, তবে সেই প্রচেষ্টা একেবারেই নিষ্ফল হয়েছে। কেউ কেউ আশা করেছে, সর্বরোগের ওষুধ সেবন করার ও অমৃতসুধা পান করার মাধ্যমে আর অতি সম্প্রতি, বিজ্ঞানের মাধ্যমে তারা সেই স্বাধীনতা লাভ করতে পারবে। এই সমস্ত স্বপ্নই মানুষকে শুধু হতাশ করেছে।
ঈশ্বর চান যেন মানুষ ভালোভাবে বেঁচে থাকে এবং সুখী হয়। মানুষকে সৃষ্টির পিছনে এটাই ছিল তাঁর আদি উদ্দেশ্য আর তিনি সেটা ভুলে যাননি। (আদিপুস্তক ১:২৭, ২৮; যিশাইয় ৪৫:১৮) যিহোবা ঈশ্বর আমাদের এই নিশ্চয়তা দিয়েছেন, তাঁর উদ্দেশ্য তিনি পরিপূর্ণ করবেনই করবেন। (যিশাইয় ৫৫:১০, ১১) প্রথম মানবদম্পতি পরমদেশের মতো যে-পরিস্থিতি হারিয়েছিল, তা পুনরায় নিয়ে আসার বিষয়ে আমরা বাইবেল থেকে ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞা সম্বন্ধে জানতে পারি। বাইবেলের শেষ বইয়ে আমরা এই কথাগুলো দেখতে পাই: “তিনি [যিহোবা ঈশ্বর] তাহাদের সমস্ত নেত্রজল মুছাইয়া দিবেন; এবং মৃত্যু আর হইবে না; শোক বা আর্ত্তনাদ বা ব্যথাও আর হইবে না; কারণ প্রথম বিষয় সকল লুপ্ত হইল।” (প্রকাশিত বাক্য ২১:৪) কীভাবে ঈশ্বর এই চমৎকার পরিস্থিতি নিয়ে আসবেন? আর আমরা কীভাবে এই প্রতিজ্ঞা থেকে উপকৃত হতে পারি?
ঈশ্বরের পুত্র যিশু খ্রিস্ট তাঁর অনুসারীদের শিক্ষা দিয়েছিলেন যেন তারা পৃথিবীতে ঈশ্বরের ইচ্ছা পরিপূর্ণ হওয়ার জন্য প্রার্থনা করে। অনেক লোক সেই প্রার্থনা সম্বন্ধে জানে অথবা বার বার সেই প্রার্থনা করে থাকে। কেউ কেউ এটাকে প্রভুর প্রার্থনা বলে থাকে। সেই প্রার্থনা এভাবে শুরু হয়: “হে আমাদের স্বর্গস্থ পিতঃ, তোমার নাম পবিত্র বলিয়া মান্য হউক, তোমার রাজ্য আইসুক, তোমার ইচ্ছা সিদ্ধ হউক, যেমন স্বর্গে তেমনি পৃথিবীতেও হউক।” (মথি ৬:৯, ১০) হ্যাঁ, ঈশ্বরের রাজ্যের মাধ্যমেই যিহোবা ঈশ্বর মানবশাসনের দুঃখজনক পরিণতি দূর করবেন এবং তিনি যে-ধার্মিক নতুন জগতের প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, তা নিয়ে আসবেন।a (দানিয়েল ২:৪৪; ২ পিতর ৩:১৩) ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞা থেকে উপকার লাভ করার জন্য আমাদের কী করতে হবে?
যিশু খ্রিস্ট একটা সহজ পদক্ষেপ সম্বন্ধে বলেছিলেন, যা আমাদের নিতে হবে: “ইহাই অনন্ত জীবন যে, তাহারা তোমাকে, একমাত্র সত্যময় ঈশ্বরকে, এবং তুমি যাঁহাকে পাঠাইয়াছ, তাঁহাকে, যীশু খ্রীষ্টকে, জানিতে পায়।” (যোহন ১৭:৩) হ্যাঁ, ঈশ্বরের সাহায্যে সেই প্রতিজ্ঞাত নতুন জগতে চিরকাল বেঁচে থাকা সম্ভব। এই প্রত্যাশা হচ্ছে আরেকটা কারণ, যা আমাদের বুঝতে সাহায্য করে যে, কেন আমাদের ঈশ্বরকে প্রয়োজন।
এখন সময় ঈশ্বর সম্বন্ধে চিন্তা করার
এথেন্সের আরেয়পাগে বা মার্স হিলে প্রেরিত পৌল সেখানকার মুক্ত চিন্তার অধিকারী অধিবাসীদের কাছে ঈশ্বর সম্বন্ধে এই কথা বলেছিলেন: “তিনিই সব মানুষকে জীবন, প্রাণবায়ু আর অন্যন্য সব কিছু দান করেন। কারণ তাঁর শক্তিতেই আমরা জীবন কাটাই ও চলাফেরা করি এবং বেঁচেও আছি। আপনাদের কয়েকজন কবিও বলেছেন, ‘আমরাও তাঁর সন্তান।’”—প্রেরিত ১৭:২৫, ২৮, বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারশন।
পৌল এথেন্সের অধিবাসীদের যা বলেছিলেন, তা এখনও সত্য। আমাদের সৃষ্টিকর্তা আমাদেরকে বায়ু, খাদ্য এবং জল দিয়েছেন। যিহোবা আমাদের জীবনধারণের জন্য যে-উত্তম বিষয়গুলো জুগিয়েছেন, সেগুলো ছাড়া আমরা বেঁচে থাকতে পারব না। তবে, লোকেরা ঈশ্বর সম্বন্ধে চিন্তা করুক বা না-ই করুক, কেন তিনি সমস্ত লোকের জন্যই এই বিষয়গুলো জুগিয়ে যাচ্ছেন? পৌল কারণটা বলেছিলেন, “ঈশ্বর এই কাজ করেছেন যেন মানুষ হাতড়াতে হাতড়াতে তাঁকে পেয়ে যাবার আশায় তাঁর খোঁজ করে। কিন্তু আসলে তিনি আমাদের কারও কাছ থেকে দূরে নন।”—প্রেরিত ১৭:২৭, বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারশন।
আপনি কি এখন এবং চিরকাল জীবন উপভোগ করার জন্য আরও ভালোভাবে ঈশ্বর সম্বন্ধে অর্থাৎ তাঁর উদ্দেশ্য ও উপদেশ সম্বন্ধে আরও বেশি জানতে চান? যদি চান, তাহলে আমরা আপনাকে যে-ব্যক্তি আপনাকে এই পত্রিকা দিয়েছে তার সঙ্গে অথবা এই পত্রিকার প্রকাশকদের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য পরামর্শ দিচ্ছি। তারা আপনাকে সাহায্য করতে পেরে অনেক খুশি হবে। ▪ (w১৩-E ১২/০১)
a এই রাজ্য কীভাবে পৃথিবীতে ঈশ্বরের ইচ্ছা পরিপূর্ণ করবে, সেই সম্বন্ধে আরও জানার জন্য বাইবেল প্রকৃতপক্ষে কী শিক্ষা দেয়? বইয়ের ৮ অধ্যায় দেখুন। এই বই যিহোবার সাক্ষিরা প্রকাশ করেছে এবং অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে। www.jw.org ওয়েবসাইট থেকে বইটি ডাউনলোড করা যাবে।