করিন্থীয়দের প্রতি দ্বিতীয় চিঠি
৭ অতএব, হে প্রিয় বন্ধুরা, যেহেতু আমাদের কাছে এইসমস্ত প্রতিজ্ঞা করা হয়েছে, তাই এসো আমরা দেহ ও মনের সমস্ত অশুচিতা থেকে নিজেদের শুচি করি এবং ঈশ্বরের প্রতি গভীর সম্মান দেখিয়ে আরও বেশি করে পবিত্র হই।
২ তোমাদের হৃদয়ে আমাদের স্থান দাও। আমরা কারো প্রতি অন্যায় করিনি, কারো ক্ষতি করিনি, নিজেদের স্বার্থের জন্য কারো সঙ্গে প্রতারণা করিনি। ৩ আমি তোমাদের দোষী সাব্যস্ত করার জন্য এই কথা বলছি না। কারণ আমি তোমাদের আগেই বলেছি, আমরা বাঁচি অথবা মরি, তোমরা আমাদের হৃদয়ে রয়েছ। ৪ আমি তোমাদের সঙ্গে আরও বেশি নির্দ্বিধায় কথা বলতে পারি। আমি তোমাদের নিয়ে অনেক গর্ব করি। আমি অনেক সান্ত্বনা লাভ করেছি; আমাদের সমস্ত কষ্টের মধ্যেও আমি অনেক আনন্দিত।
৫ ম্যাসিডোনিয়ায় পৌঁছানোর পর আমরা একটুও স্বস্তি পাইনি, বরং আমরা সবদিক দিয়েই কষ্ট পেয়েছি। লোকেরা আমাদের বিরোধিতা করেছিল আর সেইসঙ্গে আমরা মণ্ডলীগুলোর বিষয়েও উদ্বিগ্ন ছিলাম। ৬ কিন্তু ঈশ্বর, যিনি হতাশাগ্রস্ত লোকদের সান্ত্বনা দেন, তিনি তীতকে পাঠানোর মাধ্যমে আমাদের সান্ত্বনা দিয়েছেন; ৭ আর কেবল তাকে পাঠানোর মাধ্যমেই নয়, কিন্তু সেইসঙ্গে তোমাদের কারণে তীত যে-সান্ত্বনা লাভ করেছেন, সেটার মাধ্যমেও আমাদের সান্ত্বনা দিয়েছেন। তোমরা যে আমাকে দেখতে চাও এবং আমার ব্যাপারে তোমরা যে দুঃখিত ও উদ্বিগ্ন,* সেটা তীত আমাকে জানিয়েছেন আর এটা আমাকে আরও আনন্দিত করেছে।
৮ কারণ যদিও আমি আমার চিঠির মাধ্যমে তোমাদের দুঃখ দিয়েছি, কিন্তু সেটার জন্য আমি অনুশোচনা করি না। তোমাদের দুঃখ দিয়েছিলাম বলে প্রথমে আমি অনুশোচনা করেছিলাম (কারণ আমি বুঝতে পেরেছি, আমার আগের চিঠি তোমাদের দুঃখিত করেছে, তবে তা অল্প সময়ের জন্য), ৯ কিন্তু এখন আমি আনন্দ করি, তবে তোমরা দুঃখ পেয়েছিলে বলে নয়, বরং তোমাদের সেই দুঃখ অনুতপ্ত হতে পরিচালিত করেছিল বলে। কারণ তোমরা ঈশ্বরের ইচ্ছার সঙ্গে মিল রেখে দুঃখিত হয়েছিলে আর তাই আমাদের কারণে তোমরা কোনো ক্ষতি ভোগ করনি। ১০ কারণ ঈশ্বরের ইচ্ছার সঙ্গে মিল রেখে দুঃখিত হওয়া অনুতপ্ত হতে এবং পরিত্রাণ লাভ করার দিকে পরিচালিত করে আর এরজন্য অনুশোচনা করতে হয় না; কিন্তু জগতের লোকদের মতো দুঃখিত হওয়া মৃত্যুর দিকে পরিচালিত করে। ১১ এটা স্পষ্ট যে, তোমরা ঈশ্বরের ইচ্ছার সঙ্গে মিল রেখে দুঃখিত হয়েছিলে আর এই কারণে তোমরা যথাসাধ্য করেছিলে। তোমরা তোমাদের নামকে দুর্নামমুক্ত করেছিলে, নিজেদের ভুলের জন্য দুঃখিত হয়েছিলে, ঈশ্বরকে ভয় করেছিলে, অনুতপ্ত হতে চেয়েছিলে, হৃদয় থেকে ঈশ্বরকে সেবা করেছিলে এবং নিজেদের ভুল সংশোধন করেছিলে! এই ব্যাপারে সমস্ত দিক দিয়ে তোমরা যা সঠিক, তা-ই করেছিলে। ১২ আমি তোমাদের চিঠি লিখেছিলাম ঠিকই, কিন্তু তা সেই ব্যক্তির জন্য নয়, যে অন্যায় করেছে কিংবা সেই ব্যক্তির জন্যও নয়, যার প্রতি অন্যায় করা হয়েছে, বরং এইজন্য লিখেছি, যেন আমাদের কথা শোনার ব্যাপারে তোমাদের আন্তরিক প্রচেষ্টা নিজেদের মধ্যে এবং ঈশ্বরের সামনে দেখাতে পার। ১৩ এই কারণেই আমরা সান্ত্বনা লাভ করেছি।
কিন্তু, সান্ত্বনা লাভ করার পাশাপাশি, আমরা তীতের আনন্দ দেখে অনেক বেশি আনন্দিত হয়েছিলাম, কারণ তোমরা সকলে তাকে উৎসাহিত করেছিলে। ১৪ কারণ তার কাছে আমি যদি তোমাদের নিয়ে গর্ব করে থাকি, তা হলে সেটার জন্য আমাকে লজ্জায় পড়তে হয়নি; বরং তোমাদের কাছে বলা আমাদের সমস্ত কথা যেমন সত্য, তেমনই তীতের কাছে তোমাদের নিয়ে গর্ব করাও সত্য প্রমাণিত হয়েছে। ১৫ এ ছাড়া, তোমাদের সকলের বাধ্যতার বিষয়ে এবং তোমরা তাকে কতটা গভীর সম্মানের সঙ্গে গ্রহণ করেছিলে, তা স্মরণ করে, তোমাদের প্রতি তার কোমল স্নেহ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। ১৬ তোমাদের উপর আমার পূর্ণ আস্থা রয়েছে যে, তোমরা সমস্ত ব্যাপারে যা সঠিক, তা-ই করবে আর এই কারণেই আমি আনন্দ করি।