আধুনিক-দিনের এথেন্সে সমস্ত লোকেদের কাছে পৌঁছানো
যখন প্রেরিত পৌল সা.শ. ৫০ সালে এথেন্সে গিয়েছিলেন তখনও সেই শহরটি এক গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক কেন্দ্র ছিল, এমনকি যদিও অতীতের সেই ঐতিহ্যপূর্ণ মহিমা আর ছিল না। একটি ঐতিহাসিক গ্রন্থ মন্তব্য করে: “[এথেন্স] কিন্তু তখনও গ্রীসের আধ্যাত্মিকতা ও চিত্রকলার কেন্দ্র ছিল এবং সেইসঙ্গে সেই যুগের শিক্ষিত ও ক্ষমতাশীল লোকেদের পরিদর্শনের আকর্ষণীয় স্থান ছিল।”
সেখানে থাকাকালীন যিহূদী, পৌত্তলিক এথনীয় ও অন্যান্য বহু জায়গার মানুষদের কাছে প্রচার করার সম্ভবত পৌলের সুযোগ হয়েছিল। একজন সজাগ ও দক্ষ শিক্ষক হিসাবে, তিনি তার এক বক্তৃতায় বলেছিলেন যে ঈশ্বর “সকলকে জীবন ও শ্বাস” দিয়েছেন, আর তিনি “এক ব্যক্তি হইতে মনুষ্যদের সকল জাতিকে উৎপন্ন করিয়াছেন” আর “সর্ব্বস্থানের সকল মনুষ্যকে মনপরিবর্ত্তন করিতে আজ্ঞা দিতেছেন” কারণ তিনি “জগৎসংসারের” বিচার করবেন। (বাঁকা অক্ষরে মুদ্রণ আমাদের।)—প্রেরিত ১৭:২৫-৩১.
নানা ধরনের অঞ্চল
সাম্প্রতিক দশকগুলিতে এথেন্স আবার এমন এক শহর হয়ে উঠেছে যা সমস্ত দেশের লোকেদের আকর্ষণ করছে। বিদেশী কাজের জন্য ডিপ্লোম্যাট ও সামরিক ব্যক্তিবিশেষেরা এখানে এসেছেন। আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে যুবকযুবতীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসাবে এখানে বসতি করছে। আফ্রিকা, এশিয়া ও পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলি থেকে আসা বিদেশী কর্মীরা এখানে এসে জড় হয়েছে। বহু ফিলিপিনো ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে অন্যান্যেরা এসেছে এখানকার বাসিন্দা হিসাবে কাজ খুঁজতে। এছাড়াও ক্রমাগতভাবে প্রতিবেশী দেশগুলি এবং পৃথিবীর চারদিকের বিপর্যস্ত এলাকাগুলি থেকে উদ্বাস্তুদের আবির্ভাব ঘটে চলেছে।
এই পরিস্থিতি স্থানীয় রাজ্যের সুসমাচার প্রচারকদের কাছে একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অধিকাংশ অস্থায়ী বাসিন্দারা ইংরাজি বলে, কিন্তু কিছু লোক কেবলমাত্র তাদের মাতৃভাষা বলে থাকে। এই সব ব্যক্তিরা বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় পটভূমিকার প্রতিনিধিত্ব করে। দর্শনার্থীদের মধ্যে আপনি অনেক ব্যক্তিদের দেখতে পাবেন যারা নিজেদের খ্রীষ্টান, মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, অ্যানিমিস্ট, অজ্ঞেয়বাদী ও নাস্তিক বলে দাবি করে। বিভিন্ন পটভূমিকা থেকে আগত এই লোকেদের সাথে কথা বলার জন্য যিহোবার সাক্ষীদের নিজেদের ভূমিকাগুলিকে অবশ্যই খাপ খাইয়ে নিতে শিখতে হবে।
যেহেতু নবাগতদের মধ্যে অনেকেই অসুবিধার মুখোমুখি হয়েছে, অতএব প্রায়ই তাদের মনে প্রশ্ন থাকে যে জীবনের অর্থ কী আর ভবিষ্যতে কোন আশা আছে কি না। কিছু লোক বাইবেলকে খুব সম্মান করে এবং তাদের পক্ষে এটি যা বলে তা গ্রহণ করতে অসুবিধা হয় না। এই বিবিধ এলাকার অধিকাংশ লোকেরা হল নম্র, বিনয়ী এবং সত্যের জন্য ক্ষুধার্ত। নিজেদের পরিবার ও গৃহপরিবেশের থেকে অনেক দূরে থাকার দরুন তারা অপেক্ষাকৃতরূপে স্বাধীনভাবে সত্যের অনুসন্ধান করতে পারে।
এই এলাকাটিতে কাজ করার জন্য ১৯৮৬ সালে এথেন্সে প্রথম ইংরাজি মণ্ডলী সংগঠিত হয়। এর ফলে অভূতপূর্ব বৃদ্ধি হয়। গত পাঁচ বছরের মধ্যে ৮০ জন নতুন ব্যক্তি বাপ্তাইজিত হয়। এর ফলে এথেন্সে একটি আরবীয় মণ্ডলী, একটি পোলিশ মণ্ডলী স্থাপিত হয় এবং সাময়িকভাবে একটি ফরাসী দলও প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ইংরাজি মণ্ডলী থেকে কয়েকজন অন্যান্য মণ্ডলী ও দলগুলিকে সাহায্য করার জন্য, উত্তরে থিষলনীকীয়, ইরাকিলয়ন, ক্রিট্ ও পাইরিউস অর্থাৎ এথিনীয় বন্দরে যান। আপনি কি কয়েকজন বিদেশীদের সাথে পরিচিত হতে চান যারা এথেন্সে সত্য শিখেছে?
জাতিগুলি থেকে মনোরঞ্জন ব্যক্তিরা আসছে
থমাসের জন্ম হয় আসমারা, এরিট্রিয়াতে, আর তিনি একজন ধর্মনিষ্ঠ ক্যাথলিক হিসাবে বড় হয়ে ওঠেন। ১৫ বছর বয়সে তিনি মঠে যোগদান করেন। তিনি মঠের পুরোহিতকে জিজ্ঞাসা করেন: “এটা কি করে সম্ভব যে এক ঈশ্বরই হলেন তিন ঈশ্বর?” পুরোহিতটি উত্তর দেন: “কারণ আধ্যাত্মিক বিষয় সম্বন্ধে পোপ যা আমাদের বলেন তাই আমরা গ্রহণ করি। সর্বোপরি, এটা হল একটি রহস্য এবং বোঝার জন্য তোমার বয়স খুবই কম।” পাঁচ বছর মঠে থাকার পর থমাস বিভ্রান্ত ও গির্জার আচরণ ও শিক্ষার দ্বারা আশাহত হয়ে সেই স্থান ছেড়ে চলে আসেন। তবুও, সত্য ঈশ্বর সম্বন্ধে অনুসন্ধান করাকে তিনি বন্ধ করে দেননি।
এথেন্সে আসার কিছুদিন পর, একদিন তিনি তার দরজার সামনে প্রহরীদুর্গ এর একটি কপি দেখতে পান, সামনের পৃষ্ঠার উপর যেটির শিরোনাম ছিল “স্বাস্থ্য ও সুখ আপনার হতে পারে।” তিনি অনেকবার সেই প্রবন্ধটি পড়েন। সেই একই পত্রিকায় তিনি এও পড়েন যে আমাদের উচিত ঈশ্বরের রাজ্য ও তাঁর ধার্মিকতাকে প্রথম স্থান দেওয়া। (মথি ৬:৩৩) থমাস নতজানু হয়ে ঈশ্বরকে জিজ্ঞাসা করেন যে কিভাবে তা করতে হবে আর প্রতিজ্ঞা করেন যে: “যদি তুমি আমাকে দেখিয়ে দাও যে কী করে তোমার রাজ্যের অনুসন্ধান করতে হয়, তাহলে আমিও আমার জীবনের ছয় মাস ব্যয় করব এটা শিখতে যে কিভাবে তোমাকে সেবা করা যায়।” এই ঘটনাটি ঘটবার পর চতুর্থ সপ্তাহে দুজন সাক্ষী তার দরজার সামনে আসে। সঙ্গে সঙ্গে থমাস বাইবেল অধ্যয়ন করতে শুরু করেন এবং দশ মাস পর বাপ্তাইজিত হন। তিনি বলেন: “যিহোবা সত্যই আমার প্রার্থনার উত্তর দিয়েছিলেন আর তিনি আমাকে তাঁর একজন সাক্ষী হওয়ার সুযোগ দেন। এখন তাঁর এই প্রেম আমাকে উদ্বুদ্ধ করে তাঁর রাজ্য এবং ধার্মিকতাকে আমার জীবনে প্রথম স্থান দিতে।”
ঘরে ঘরে প্রচার করার সময় অপর দুজন সাক্ষী দরজার সামনে একটি বিদেশী নাম, বেলের ঠিক পাশে লেখা আছে দেখতে পান।
ইন্টারকমের মধ্য থেকে একটি স্ত্রীলোকের কণ্ঠস্বর ভেসে আসে “আপনারা কী চান?”
সাক্ষীদের একজন বলেন যে তারা ইংরাজি কথা বলে এমন লোকেদের খুঁজে বেড়াচ্ছেন যারা বাইবেল সম্বন্ধে আগ্রহী।
মহিলাটি জিজ্ঞাসা করেন “কোন্ ধর্মের লোক আপনারা?”
“আমরা যিহোবার সাক্ষী।”
“উত্তম! সবচাইতে উপরের তলাটিতে উঠে আসুন।”
তারা তাই করে, আর যে মুহূর্তে এলিভেটারের দরজা খুলে যায় তারা এক বিশাল চেহারার পুরুষকে দাঁড়িয়ে আছে দেখতে পান ও তার মুখে বিরূপ মনোভাবও লক্ষ্য করেন, কিন্তু ভিতর থেকে স্ত্রীলোকটি বলেন।
“এদের ঢুকতে দাও। আমি এদের সাথে কথা বলতে চাই।”
ঘটনাটি এমন দাঁড়ায় যে মহিলাটি তার স্বামীর খেলার দলটির সাথে সারা পৃথিবী ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন, আর ঠিক আগের দিন তিনি যিহোবার সাক্ষীদের খুঁজে পাওয়ার জন্য প্রার্থনা জানাচ্ছিলেন। অতএব সঙ্গে সঙ্গে বাইবেল অধ্যয়ন শুরু হয়। যেহেতু তারা অল্প সময়ের জন্য গ্রীসে থাকতে পারবেন, তাই সপ্তাহে তিনবার অধ্যয়নের ব্যবস্থা করা হয়, অনন্তকাল বইটি মাত্র দশ সপ্তাহে শেষ হয়।
পরবর্তী খেলার মরশুমে তাদের আবার গ্রীসে ফিরে আসতে হয়। স্ত্রীটি তার অধ্যয়ন আবার শুরু করেন এবং উত্তমরূপে উন্নতি করেন। কয়েক মাস পর তিনি অবাপ্তাইজিত প্রকাশক হিসাবে সাক্ষীদের সাথে প্রচার কাজে অংশ নিতে থাকেন এবং শীঘ্রই তার প্রথম বাইবেল অধ্যয়ন শুরু করেন। কার সাথে? তার স্বামীর সাথে, যিনি সাক্ষীদের ও তার স্ত্রীর পরিবর্তন দেখে খুবই মুগ্ধ হয়েছিলেন।
একজন প্রোটেস্টান্ট প্যাস্টারের ছেলে অ্যালেন দক্ষিণ আফ্রিকায় বড় হয়ে ওঠে। খুব ছোট বয়স থেকে সে নিশ্চিত ছিল যে বাইবেল হল ঈশ্বরের দ্বারা প্রকাশিত এক অনুপ্রাণিত পুস্তক। তার নিজের ধর্মে সন্তুষ্ট না হয়ে সে, দর্শন ও রাজনীতির প্রতি দৃষ্টি দেয়, কিন্তু এটি তাকে আরও বেশি অতৃপ্ত করে তোলে। এরপর সে গ্রীসে আসে, যেখানে তার শূন্যতাবোধ আরও বাড়তে থাকে। তার মনে হয় যে তার জীবনের কোন উদ্দেশ্য নেই এবং সে এমন এক রাস্তায় রয়েছে যা তাকে কোথাও নিয়ে যাবে না।
এক রাতে একটি ঘটনা ঘটে। “আমি নতজানু হয়ে ঈশ্বরের কাছে আমার হৃদয়ের কথা বলি,” অ্যালেন বর্ণনা দেয়। “আমার এই জীবনের জন্য, দুঃখের সাথে অশ্রুপাত করে আমি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি তাঁর সত্য অনুগামীদের কাছে আমাকে পরিচালিত করতে। আমি প্রতিজ্ঞা করি যে আমি তাঁর নির্দেশের আলোতে চলব।” এক সপ্তাহের মধ্যে সে একটি দোকানের মালিকের সাথে কথা বলার সুযোগ পায়, যে মহিলাটি একজন সাক্ষী ছিল। এই কথোপকথন অ্যালেনের জীবনকে ঘুরিয়ে দেয়। “পরবর্তী দিনগুলিতে আমি দেখতে পেলাম যে আমার অতীতের প্রিয় বিশ্বাসগুলি ভেঙে চুরমার হয়ে যাচ্ছে: ত্রিত্ব, নরকাগ্নি, প্রাণের অমরত্ব—এসমস্ত একেবারেই বাইবেলের শিক্ষা নয়।” কিংডম হলে একটি সাক্ষী দম্পতি তার সাথে বাইবেল অধ্যয়ন করতে আগ্রহ প্রকাশ করে। সে তা গ্রহণ করে ও খুব দ্রুতগতিতে উন্নতি করে। “সত্য আমাকে আনন্দাশ্রু ফেলতে বাধ্য করায়,” অ্যালেন বলে, “আর এটি আমাকে স্বাধীন করে।” এক বছর পর সে বাপ্তিস্ম নেয়। আজকে সে একটি স্থানীয় মণ্ডলীতে পরিচারক দাস হিসাবে কাজ করতে পেরে অত্যন্ত আনন্দিত।
এলিজাবেথ আসে নাইজেরিয়া থেকে, যেখানে সে ঈশ্বরকে অনুসন্ধান করার জন্য অনেক গির্জায় যায়, কিন্তু তৃপ্তি পায় না। যে বিষয়টিকে সে সব চাইতে ভয় পেত তা হল নরকাগ্নিতে অনন্তকালীন যাতনা। যখন সে তার পরিবারের সাথে এথেন্সে আসে তখন দুজন সাক্ষীর সাথে তার ঘরে সাক্ষাৎ হয় ও বাইবেল অধ্যয়ন শুরু হয়। এটা জেনে এলিজাবেথ উল্লাসিত হয়ে ওঠে যে ঈশ্বর লোকেদের যাতনা দেন না, কিন্তু তিনি তাদের পরমদেশ পৃথিবীতে অনন্ত জীবন উপভোগ করার আশা দেন। সেই সময় তার চতুর্থ সন্তান গর্ভে ছিল এবং সে গর্ভপাত করার পরিকল্পনা করছিল। এরপর সে বাইবেল থেকে জীবনের পবিত্রতা সম্বন্ধে যিহোবার দৃষ্টিভঙ্গি জানতে পারে। এখন তার একটি সুন্দর মেয়ে আছে। এলিজাবেথ খুব দ্রুত উন্নতি করে ও বাপ্তাইজিত হয়। যদিও তার চারটি সন্তান আছে ও সে চাকুরি করে, কিন্তু তবুও প্রায় প্রতিটি মাসে সে সহায়ক অগ্রগামীর কাজ করতে সমর্থ হয়। সে আশীর্বাদপ্রাপ্ত হয় এই অর্থে যে তার স্বামী বাইবেল অধ্যয়ন শুরু করে। সে বলে: “অবশেষে আমি সত্য ঈশ্বরকে ও সত্য উপাসনা খুঁজে পেয়েছি, যিহোবা ও তাঁর প্রেমময় সংগঠনকে আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই।”
এই বিবিধ অঞ্চলে অনেকের সাথে রাস্তায় সাক্ষ্যদানের মাধ্যমে যোগাযাগ করা হয়েছে, কিন্তু তাদের উৎসাহকে জাগিয়ে তোলার জন্য খুবই অধ্যবসায়ের প্রয়োজন। এটা বিশেষকরে প্রযোজ্য একটি অল্পবয়সী মেয়ে স্যালের ক্ষেত্রে যে সিয়েরা লিওন থেকে এসেছে। একজন সাক্ষী তাকে একটি ট্র্যাক্ট দেয়, তার ঠিকানা নেয় এবং পরে তার সাথে দেখা করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করে। স্যালের উৎসাহ ছিল, বাইবেল অধ্যয়নও গ্রহণ করেছিল, কিন্তু কাজের চাপ ও অন্যান্য অসুবিধার দরুন, নিয়মিতভাবে তা পরিচালিত হতে পারত না। এরপর হঠাৎ করে নতুন ঠিকানা না দিয়েই সে সেই স্থানটি ছেড়ে অন্য কোথাও চলে যায়। মহিলা সাক্ষীটি বারে বারে পুরনো ঠিকানায় ফিরে যায় এবং অবশেষে স্যালে তার নতুন সেই সাক্ষীটিকে আমন্ত্রণ জানিয়ে বাড়িতে সংবাদ পাঠায়।
অধ্যয়ন এখন নিয়মিতভাবে চলতে থাকে যদিও স্যালে তার গর্ভাবস্থার শেষ মাসে এসে পৌঁছেছিল। শিশুর জন্ম হওয়ার পর, স্যালে অবাপ্তাইজিত প্রকাশক হয়। কিন্তু এগুলি শুনতে যতটা সহজ মনে হয় ততটা ছিল না। সকাল ৬·৩০-তে তাকে আধ ঘন্টা বাসে করে শিশুটিকে নার্সারি স্কুলে পৌঁছে দিয়ে আরও এক ঘন্টা তাকে যাত্রা করতে হত কর্মস্থলে পৌঁছানোর জন্য। পরিষ্কারের কাজ করার পর সে তার ঘরে ফিরে আসত। সভার দিনগুলিতে অথবা যেদিন সে ক্ষেত্রের পরিচর্যায় বেরোয় সেদিন তাকে যাওয়া আসা নিয়ে দুবার এক ঘন্টা করে বাসে যেতে হয়, যদিও তার স্বামী বিরোধী ছিল। তার প্রতি প্রেম ও ধৈর্য দেখানোর সাথে সাথে সে উৎসর্গীকরণ ও বাপ্তিস্ম নেওয়া পর্যন্ত উন্নতি করতে পারে। তার স্বামীর সম্বন্ধে কী বলা যায়? সে খ্রীষ্টের মৃত্যুর স্মরণার্থক সভায় যোগদান করে ও বাইবেল অধ্যয়ন করার জন্য সম্মতি জানায়।
উত্তম ফলের দ্বারা আশীর্বাদপ্রাপ্ত
অধিকাংশ লোকেদের ক্ষেত্রে, এথেন্সে থাকা হল এক সাময়িক ব্যাপার। অনেকে তাদের দেশে ফিরে গিয়ে নিজেদের আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবদের কাছে সুসমাচার বলে থাকেন। অন্যেরা আবার বিভিন্ন পশ্চিমী দেশগুলিতে ফিরে যান এবং সেখানে যিহোবাকে সেবা করে চলেন। যারা গ্রীসে থাকে তারা তাদের নিজেদের দেশের লোক ও প্রবাসীদের কাজে সাক্ষ্যদানের ফলে উত্তম ফল পেয়ে থাকেন। অন্যান্য ক্ষেত্রে আবার সত্যের বীজ তখনই অঙ্কুরিত হয়ে ওঠে যখন দর্শনার্থীরা অন্যান্য দেশে চলে যান এবং সাক্ষীরা তাদের যোগাযোগ করেন।
এই সমস্তই প্রমাণ করে যে যিহোবা পক্ষপাতিত্ব করেন না। তিনি সমস্ত জাতির লোকেদের গ্রহণ করেন যারা তাঁকে ভয় করে ও তাঁর ধার্মিকতাকে ভালবাসে। (প্রেরিত ১০:৩৪, ৩৫) সেই মেষতুল্য ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে বস্তুগত সুবিধার জন্য দেশে যাওয়া অনেক বেশি আশীর্বাদ এনেছে যা তারা কখনও আশা করেনি—সত্য ঈশ্বর যিহোবার সম্বন্ধে জ্ঞান এবং এক ধার্মিক নতুন জগতে অনন্ত জীবন সম্বন্ধে তাঁর প্রতিশ্রুতি। হ্যাঁ, আধুনিক-দিনের এথেন্সে বিদেশী লোকেদের কাছে পৌঁছানোর জন্য যে প্রচেষ্টা তা অবশ্যই যিহোবা প্রচুরভাবে আশীর্বাদ করেছেন!
[Pictures on page 16]
বিভিন্ন দেশের লোকেরা এথেন্সে সুসমাচার শোনার সুযোগ পাচ্ছে