আপল্লো—খ্রীষ্টীয় সত্যের একজন বাক্পটু ঘোষক
তারা বহু বছর কিম্বা কিছু বছর ধরে খ্রীষ্টীয় মণ্ডলীর সদস্য হোক না কেন, সকল রাজ্য ঘোষণাকারীদের সুসমাচার প্রচারক হিসাবে উন্নতি করতে আগ্রহী হওয়া উচিত। এটি ঈশ্বরের বাক্য সম্বন্ধে আমাদের জ্ঞানের বৃদ্ধিকে এবং অন্যদের তা শিক্ষা দেওয়া সম্বন্ধে আমাদের সক্ষমতাকে ইঙ্গিত করে। কয়েকজনের জন্য এটির অর্থ হয়ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্মুখীন হওয়া, প্রতিবন্ধকতাকে কাটিয়ে ওঠা অথবা বৃদ্ধিরত কাজের জন্য তাদের প্রাপ্তিসাধ্য করা হতে পারে।
বাইবেল প্রাচীনকালের উৎসর্গীকৃত পুরুষ ও নারীদের একাধিক উদাহরণগুলিকে সন্নিবেশিত করে, যারা বিভিন্ন উপায়ে, প্রচুর আধ্যাত্মিক উন্নতি করতে সফল হয়েছিলেন এবং তাদের প্রচেষ্টার প্রতিদানস্বরূপ পুরস্কৃত হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন আপল্লো। যখন শাস্ত্র তার সাথে আমাদের পরিচয় করিয়ে দেয়, তখন তিনি এমন এক ব্যক্তি ছিলেন যার খ্রীষ্টীয় শিক্ষা সম্বন্ধে বোধগম্যতা ছিল অসম্পূর্ণ; কিন্তু মাত্র এর কিছু বছর পরই, তিনি প্রথম শতাব্দীর মণ্ডলীতে একজন ভ্রমণকারী প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করেছেন। কী তাকে এইরূপ উন্নতি করতে সক্ষম করেছিল? তিনি কিছু গুণাবলির অধিকারী ছিলেন, যা আমাদের সকলের পক্ষে অনুকরণ করা উত্তম হবে।
“শাস্ত্রে ক্ষমতাপন্ন”
প্রায় সা.শ. ৫২ সালে, বাইবেল লেখক লূকের বিবরণ অনুসারে, “আপল্লো নামক এক জন যিহূদী ইফিষে আসিলেন; তিনি জাতিতে আলেক্সান্দ্রীয়, একজন সুবক্তা, এবং শাস্ত্রে ক্ষমতাপন্ন ছিলেন। তিনি প্রভুর [“যিহোবার,” NW] পথের বিষয়ে শিক্ষা পাইয়াছিলেন, এবং আত্মাতে উত্তপ্ত হওয়াতে যীশুর বিষয়ে সূক্ষ্মরূপে কথা বলিতেন ও শিক্ষা দিতেন, কিন্তু কেবল যোহনের বাপ্তিস্ম জ্ঞাত ছিলেন। তিনি সমাজ-গৃহে সাহসপূর্ব্বক কথা কহিতে আরম্ভ করিলেন।”—প্রেরিত ১৮:২৪-২৬.
রোমের পরে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগর ছিল মিশরের আলেক্সান্দ্রীয় এবং এটি যিহূদী ও গ্রীক উভয়ের জন্যই সেই সময়ে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ছিল। সম্ভবত, আপল্লো তার ইব্রীয় শাস্ত্রের নিখুঁত জ্ঞান ও বাক্পটুতা ঐ নগরের বৃহৎ যিহূদী গোষ্ঠীতে শিক্ষার ফলস্বরূপ অর্জন করেছিলেন। আপল্লো কোথায় যীশুর বিষয়ে শিখেছিলেন তা অনুমান করা আরও কঠিন। বিশেষজ্ঞ এফ. এফ. ব্রুস প্রস্তাব করেন, “তিনি স্পষ্টতই এক ভ্রমণকারী ছিলেন—সম্ভবত একজন ভ্রমণশীল ব্যবসায়ী, আর যে অসংখ্য স্থানগুলিতে তিনি পরিদর্শন করেছিলেন তার যে কোন একটিতে খ্রীষ্টীয় প্রচারকদের সাথে তার সাক্ষাৎ হয়েছিল।” যাইহোক না কেন, যেহেতু তিনি সূক্ষ্মভাবে যীশুর বিষয়ে কথা বলতেন এবং শিক্ষা দিতেন, সেহেতু এটি মনে হয় যে তিনি সা.শ. ৩৩ সালের পঞ্চাশত্তমীর আগে সাক্ষ্য পেয়েছিলেন, কারণ তিনি “কেবল যোহনের বাপ্তিস্ম জ্ঞাত ছিলেন।”
যীশুর অগ্রদূত হিসাবে, যোহন বাপ্তাইজক সমস্ত ইস্রায়েল জাতির নিকট শক্তিশালী সাক্ষ্য দিয়েছিলেন এবং অনেকেই অনুতাপের চিহ্নস্বরূপ তার কাছে বাপ্তিস্ম নিয়েছিলেন। (মার্ক ১:৫; লূক ৩:১৫, ১৬) অনেক ঐতিহাসিকদের মতে, রোমীয় সাম্রাজ্যের যিহূদী জনগণের মধ্যে, যীশুর সম্পর্কে অনেক লোকেদের জ্ঞান সীমিত ছিল কেবলমাত্র যা যর্দনের তীরে প্রচারিত হয়েছিল। ডব্লিউ. জে. কানিবার এবং জে. এস. হাউসান বলেন: “তাদের খ্রীষ্টতত্ত্ব সম্বন্ধীয় জ্ঞান সেই একই স্থানে অবস্থিত ছিল যা আমাদের প্রভুর পরিচর্যা প্রারম্ভের সময়ে ছিল। তারা খ্রীষ্টের মৃত্যুর সম্পূর্ণ অর্থ অজ্ঞাত ছিল; সম্ভবত তারা এমনকি তাঁর পুনরুত্থানের বাস্তবতা সম্পর্কেও জানত না।” এটি মনে হয় যে আপল্লোও সা.শ. ৩৩ সালে পঞ্চাশত্তমীর দিনে পবিত্র আত্মার অবতরণ সম্পর্কে অজ্ঞাত ছিলেন। তৎসত্ত্বেও, যীশুর সম্পর্কে তিনি কিছু সঠিক তথ্য অর্জন করেছিলেন আর তিনি তা নিজের কাছেই রেখে দেননি। প্রকৃতপক্ষে, তিনি যা জানতেন তা বলার জন্য সাহসের সাথে সুযোগগুলি খুঁজে নিতেন। কিন্তু, তার উদ্যোগ এবং উদ্দীপনা তখনও পর্যন্ত সঠিক জ্ঞান অনুযায়ী ছিল না।
উদ্যোগী কিন্তু নম্র
লূকের বর্ণনা আরও বলে: “আর প্রিষ্কিল্লা ও আক্বিলা তাঁহার উপদেশ শুনিয়া তাঁহাকে আপনাদের নিকটে আনিলেন, এবং ঈশ্বরের পথ আরও সূক্ষ্মরূপে বুঝাইয়া দিলেন।” (প্রেরিত ১৮:২৬) আক্বিলা এবং প্রিষ্কিল্লা অবশ্যই চিহ্নিত করতে পেরেছিলেন যে আপল্লোর বিশ্বাস অনেকটা তাদের বিশ্বাসের সমরূপ ছিল, কিন্তু বিজ্ঞতার সাথে তারা জনসাধারণের মধ্যে তার অসম্পূর্ণ জ্ঞানকে সংশোধন করতে উদ্যত হননি। আমরা সম্ভবত ধারণা করতে পারি যে তাকে সাহায্য করার লক্ষ্যে, আপল্লোর সাথে তাদের অনেক বার ব্যক্তিগত আলোচনা হয়েছিল। “শাস্ত্রে ক্ষমতাপন্ন,” এক ব্যক্তি আপল্লো কিভাবে সাড়া দিয়েছিলেন? (প্রেরিত ১৮:২৪, কিংডম ইন্টারলিনিয়ার) খুব সম্ভবত, আক্বিল্লা এবং প্রিষ্কিল্লার সাথে দেখা হওয়ার কিছু সময় পূর্বে আপল্লো জনসাধারণের কাছে তার অসম্পূর্ণ বার্তা প্রচার করেছিলেন। একজন গর্বিত লোক খুব সহজেই যে কোন সংশোধন গ্রহণে অস্বীকার করতে পারে, কিন্তু আপল্লো নম্র ছিলেন এবং তার জ্ঞানকে সম্পূর্ণ করতে পেরে কৃতজ্ঞ ছিলেন।
আপল্লোর একই বিনয়ী আচরণ আরও স্পষ্ট প্রমাণিত হয় করিন্থীয় মণ্ডলীতে ইফিষীয় ভাইয়েদের কাছ থেকে আসা পরামর্শ সম্বলিত একটি চিঠি গ্রহণ করার ক্ষেত্রে তার ইচ্ছুক মনোভাবের মাধ্যমে। বিবরণটি আরও বলে: “পরে তিনি আখায়াতে যাইবার মানস করিলে ভ্রাতৃগণ উৎসাহ দিলেন, আর তাঁহাকে গ্রহণ করিতে শিষ্যদিগকে পত্র লিখিলেন।” (প্রেরিত ১৮:২৭; ১৯:১) আপল্লো নিজ কীর্তির উপর গ্রহণযোগ্যতা দাবি করেননি, কিন্তু নম্রভাবে খ্রীষ্টীয় মণ্ডলীর ব্যবস্থাকে অনুসরণ করেছিলেন।
করিন্থে
করিন্থে আপল্লোর পরিচর্যার প্রথমিক ফল চমৎকার ছিল। প্রেরিতের পুস্তকটি জানায়: “তাহাতে তিনি তথায় উপস্থিত হইয়া, যাহারা অনুগ্রহ দ্বারা বিশ্বাস করিয়াছিল, তাহাদের বিস্তর উপকার করিলেন। কারণ যীশুই যে খ্রীষ্ট, ইহা শাস্ত্রীয় বচন দ্বারা প্রমাণ করিয়া তিনি ক্ষমতার সহিত লোকসাধারণের সাক্ষাতে যিহূদিগণকে একেবারে নিরুত্তর করিলেন।”—প্রেরিত ১৮:২৭, ২৮.
আপল্লো নিজেকে মণ্ডলীর কাজে নিয়োজিত করেছিলেন ও তার প্রস্তুতি ও উদ্যোগের দ্বারা ভাইয়েদের উৎসাহিত করেছিলেন। তার সাফল্যের চাবিটি কী ছিল? আপল্লোর নিশ্চয়ই স্বাভাবিক সক্ষমতা ছিল এবং তিনি যিহূদীদের সাথে প্রকাশ্যে বিতর্ক বজায় রাখার ক্ষেত্রে সাহসী ছিলেন। কিন্তু আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল তিনি শাস্ত্র ব্যবহার করে যুক্তি করতেন।
যদিও করিন্থীয়দের মধ্যে আপল্লোর ক্ষমতাপন্ন প্রভাব ছিল, দুঃখজনকভাবে তার প্রচার অপ্রত্যাশিত নেতিবাচক ফল উৎপন্ন করে। কিভাবে তা ঘটে? পৌল এবং আপল্লো উভয়েই করিন্থে রাজ্যের সত্যের বীজ রোপন এবং সেচনের ক্ষেত্রে অনেক উত্তম কাজ করেছিলেন। আপল্লোর পৌঁছানোর মোটামুটি দুই বৎসর পূর্বে, পৌল প্রায় সা.শ. ৫০ সালে সেখানে প্রচার করেছিলেন। প্রায় সা.শ. ৫৫ সালে পৌল যখন করিন্থীয়দের উদ্দেশ্যে তার প্রথম চিঠিটি লেখেন, ইতিমধ্যেই দলাদলি বৃদ্ধি পেয়েছিল। কেউ কেউ আপল্লোকে তাদের নেতা মনে করছিল, যেখানে অন্যান্যেরা পৌল বা পিতরকে পছন্দ করত অথবা একমাত্র খ্রীষ্টকে সমর্থন করত। (১ করিন্থীয় ১:১০-১২) কেউ কেউ বলত: ‘আমি আপল্লোর।’ কেন?
পৌল এবং আপল্লোর প্রচারিত বার্তা একই ছিল, কিন্তু তাদের ব্যক্তিত্ব আলাদা ছিল। তার নিজের স্বীকারোক্তি থেকে জানা যায়, পৌল “বক্তৃতায় সামান্য” ছিলেন; অন্যদিকে আপল্লো “সুবক্তা” ছিলেন। (২ করিন্থীয় ১০:১০; ১১:৬) তার সামর্থ্য ছিল যা করিন্থের যিহূদী গোষ্ঠীদের মধ্যে কিছু লোককে তার কথা শোনার জন্য তাকে সমর্থ করেছিল। তিনি ‘পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যিহূদীদের ভুল প্রমাণ করতে’ সফল হয়েছিলেন, যেখানে পৌল, অল্পদিন আগে, সমাজগৃহ ত্যাগ করেছিলেন।—প্রেরিত ১৮:১, ৪-৬.
কারও কারও ক্ষেত্রে আপল্লোর প্রতি ঝোঁকার কারণ কি এটিই ছিল? অনেক ভাষ্যকারের তত্ত্ব জানায় যে গ্রীকদের মধ্যে দর্শনভিত্তিক আলোচনার সহজাত তীব্র অনুভূতি হয়ত কিছু ব্যক্তিকে আপল্লোর অধিক উদ্দীপনামূলক উপস্থাপনাকে সমর্থন করতে পরিচালিত করে। জুযেপ্পে রিচোটি প্রস্তাব করেন যে “[আপল্লোর] শোভনীয় ভাষা এবং তার বাগাড়ম্বরপূর্ণ বর্ণনা তাকে অনেকের শ্রদ্ধা লাভ করতে সমর্থ করেছিল যারা বিনয়ী ও সংস্কৃতিহীন বক্তা পৌলের তুলনায় তাকে বেশি পছন্দ করত।” সত্যই, যদি নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তি ভাইয়েদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে ভুলভাবে এরূপ ব্যক্তিগত সমর্থনকে অনুমোদন করে, তাহলে এটি বোঝা সহজ যে পৌল কেন তীব্রভাবে “জ্ঞানবান্দের জ্ঞান” এর মহত্ত্বকে সমালোচনা করেছিলেন।—১ করিন্থীয় ১:১৭-২৫.
যাইহোক, এইরূপ সমালোচনা পৌল এবং আপল্লোর মধ্যে কোন সংঘর্ষকে ইঙ্গিত করে না। যদিও কেউ কেউ কল্পনাপ্রসূতভাবে ধারণা করত যে এই দুই জন প্রচারক করিন্থীয়দের অনুরাগ লাভ করার ক্ষেত্রে তিক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন, কিন্তু শাস্ত্র এরূপ কিছু বলে না। বিরোধী দলের নেতা হিসাবে নিজেকে স্থাপন করার চেয়ে বরঞ্চ, আপল্লো করিন্থ ত্যাগ করে ইফিষে ফিরে যান এবং পৌল যখন বিভক্ত মণ্ডলীর প্রতি প্রথম চিঠিটি লেখেন তখন তিনি তার সাথে ছিলেন।
তাদের মধ্যে কোন মতৈক্য বা প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল না; বরং, স্পষ্টত দু’জনে করিন্থের সমস্যাগুলি পারস্পরিক নির্ভরশীলতার সাথে সমাধান করতে সহযোগী ছিলেন। সম্ভবত করিন্থের কারও কারও সম্পর্কে পৌলের নিজস্ব সংশয় ছিল, কিন্তু নিঃসন্দেহে আপল্লোর সম্পর্কে ছিল না। এই দুই জনের কাজের মধ্যে সম্পূর্ণ একতা ছিল; তাদের শিক্ষা পরস্পরের পরিপূরক ছিল। পৌলের নিজ বাক্যগুলির উদ্ধৃতি থেকে জানা যায়: “আমি রোপণ করিলাম, আপল্লো জল সেচন করিলেন,” উভয়ই “ঈশ্বরেরই সহকার্য্যকারী” ছিলেন।—১ করিন্থীয় ৩:৬, ৯, ২১-২৩.
পৌলের মত, করিন্থীয়েরা আপল্লোকে খুব শ্রদ্ধা করত, তার কাছ থেকে আরেকটি পরিদর্শনের আকাঙ্ক্ষা করত। কিন্তু পৌল যখন আপল্লোকে করিন্থে ফিরে যেতে আমন্ত্রণ জানান, আলেক্সান্দ্রীয় অনিচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। পৌল বলেন: “আর আপল্লো ভ্রাতার বিষয়ে বলিতেছি; আমি তাঁহাকে অনেক বিনতি করিয়াছিলাম, যেন তিনি . . . তোমাদের কাছে যান; কিন্তু এখন যাইতে কোন প্রকারে তাঁহার ইচ্ছা হইল না; সুযোগ পাইলেই যাইবেন।” (১ করিন্থীয় ১৬:১২) আপল্লো সম্ভবত আবার দলাদলি হওয়ার আশঙ্কায় ফিরে যেতে অনিচ্ছুক ছিলেন অথবা হয়ত তিনি অন্য কোথায়ও ব্যস্ত ছিলেন।
শাস্ত্রে আপল্লোকে শেষ বার উল্লেখ করা হয়, যখন তিনি ক্রীতে এবং সম্ভবত তার চেয়েও দূরে ভ্রমণ করছিলেন। তীতকে, আপল্লো এবং তার ভ্রমণ সঙ্গী সীনার জন্য, তাদের যাত্রাপথে প্রয়োজনীয় সবকিছু সরবরাহের কথা বলে, পৌল আবার তার বন্ধু এবং সহকর্মীর প্রতি বিশেষ সম্মান দেখিয়েছিলেন। (তীত ৩:১৩) এই সময়ের মধ্যে, প্রায় দশ বৎসর খ্রীষ্টীয় প্রশিক্ষণের পর, আপল্লো মণ্ডলীর ভ্রমণ প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করার জন্য যথেষ্ট উন্নতি করেছিলেন।
ঈশ্বরীয় গুণাবলি যা আধ্যাত্মিক বৃদ্ধিকে সহজ করে
আধুনিক দিনের সকল সুসমাচারের প্রকাশকদের এবং সত্যই যারা আধ্যাত্মিক উন্নতি সাধনে ইচ্ছুক তাদের সকলের জন্য আলেক্সান্দ্রীয় প্রচারক এক উত্তম উদাহরণ স্থাপন করেছিলেন। আমরা হয়ত তার মত বাক্পটু নই, কিন্তু আমরা নিশ্চয়ই শাস্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে তার জ্ঞান এবং ক্ষমতার সমকক্ষ হওয়ার জন্য কঠোর প্রচেষ্টা করতে পারি, আর এইভাবে সত্যের আন্তরিক অনুসন্ধানকারীদের সাহায্য করতে পারি। তার উদ্যোগী কাজের উদাহরণ দ্বারা, আপল্লো “যাহারা . . . বিশ্বাস করিয়াছিল, তাহাদের বিস্তর উপকার করিলেন।” (প্রেরিত ১৮:২৭) আপল্লো নম্র, আত্মত্যাগী এবং অন্যান্যদের সেবা করার জন্য ইচ্ছুক ছিলেন। তিনি উত্তমভাবে বুঝতে পেরেছিলেন যে খ্রীষ্টীয় মণ্ডলীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা অথবা উচ্চাকাঙ্ক্ষার কোন স্থান নেই, কারণ আমরা সকলে “ঈশ্বরেরই সহকার্য্যকারী।”—১ করিন্থীয় ৩:৪-৯; লূক ১৭:১০.
আপল্লোর মত, আমরাও আধ্যাত্মিক উন্নতি করতে পারি। আমরা কি যিহোবা এবং তার সংগঠনের দ্বারা আরও পূর্ণরূপে ব্যবহৃত হওয়ার জন্য, নিজেদেরকে সেই অবস্থায় রেখে আমাদের পবিত্র পরিচর্যার উন্নতি অথবা তা প্রসারিত করতে ইচ্ছুক? তাহলে সেই ক্ষেত্রে আমরা হব উদ্যোগী ছাত্র এবং খ্রীষ্টীয় সত্যের ঘোষণাকারী।