“যেমন স্বর্গে তেমনি পৃথিবীতেও”
“ক্যাথলিক ধর্ম শেষ চারটে বিষয়ের কথা বলে: মৃত্যু, বিচার, স্বর্গ, নরক।”—ক্যাথলিসিজম, জর্জ ব্রান্ট দ্বারা সম্পাদিত।
লক্ষ করুন যে, মানবজাতির জন্য সম্ভাব্য চারটে বিষয়ের তালিকায় পৃথিবী উহ্য রয়েছে। আর এটা কোনো আশ্চর্যের বিষয় নয় কারণ অন্য ধর্মগুলোর মতো ক্যাথলিক গির্জা দৃঢ়ভাবে এই ধারণাকে সমর্থন করে যে, একদিন এই পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে। ডিকশিঅনের ডি টেঅলঝি ক্যাটলিক “পৃথিবীর শেষ” এই শিরোনামের অধীনে বিষয়টাকে স্পষ্ট করে বলে: “ক্যাথলিক গির্জা বিশ্বাস করে ও শেখায় যে, বর্তমান পৃথিবী ঈশ্বর যেমনভাবে এটাকে সৃষ্টি করেছিলেন ও যেমনভাবে এটা অস্তিত্বে রয়েছে, অনন্তকাল ধরে থাকবে না।” এ ছাড়া, সম্প্রতি একটা ক্যাথলিক ক্যাটিকিজমও এই ধারণাকে তুলে ধরে: “আমাদের জগৎ . . . লুপ্ত হয়ে যাবেই।” কিন্তু আমাদের গ্রহ যদি লুপ্তই হয়ে যায়, তা হলে বাইবেলে বলা এক পার্থিব পরমদেশ সম্বন্ধীয় প্রতিজ্ঞাগুলোর বিষয়ে কী বলা যায়?
পৃথিবীতে ভবিষ্যৎ এক পরমদেশ সম্পর্কে বাইবেল স্পষ্টভাবে বলে। উদাহরণস্বরূপ, ভাববাদী যিশাইয় পৃথিবী ও এর অধিবাসীদের সম্বন্ধে এভাবে বর্ণনা করেছিলেন: “লোকেরা গৃহ নির্ম্মাণ করিয়া তাহার মধ্যে বসতি করিবে, দ্রাক্ষাক্ষেত্র প্রস্তুত করিয়া তাহার ফল ভোগ করিবে। তাহারা গৃহ নির্ম্মাণ করিলে অন্যে বাস করিবে না, তাহারা রোপণ করিলে অন্যে ভোগ করিবে না; বস্তুতঃ আমার প্রজাদের আয়ু বৃক্ষের আয়ুর তুল্য হইবে, এবং আমার মনোনীত লোকেরা দীর্ঘকাল আপন আপন হস্তের শ্রমফল ভোগ করিবে।” (যিশাইয় ৬৫:২১, ২২) যে-যিহুদিদের কাছে ঈশ্বর এই প্রতিজ্ঞাগুলো করেছিলেন, তারা নিশ্চিত ছিল যে তাদের দেশ—বস্তুত, সারা পৃথিবী—একদিন মানবজাতির অনন্তকালীন উপকারের জন্য পরমদেশে পরিণত হবে।
গীতসংহিতা ৩৭ অধ্যায় এই আশাকে নিশ্চিত করে। “মৃদুশীলেরা দেশের অধিকারী হইবে।” (গীতসংহিতা ৩৭:১১) এই পদটি প্রতিজ্ঞাত দেশে ইস্রায়েল জাতির সাময়িক পুনর্স্থাপনের কথা বলছে না। সেই একই গীত বলে: “ধার্ম্মিকেরা দেশের অধিকারী হইবে, তাহারা নিয়ত তথায় বাস করিবে।” (গীতসংহিতা ৩৭:২৯)a লক্ষ করুন এই গীত বলে যে, পৃথিবীতে ‘মৃদুশীলদের’ জন্য চিরস্থায়ী জীবন এক পুরস্কারস্বরূপ হবে। একটি ফরাসি বাইবেলে এই পদের ওপর করা একটা মন্তব্য বলে যে, ‘মৃদুশীল’ শব্দটি অনুবাদগুলোতে যেভাবে এসেছে তার চেয়েও এটির আরও ব্যাপক অর্থ রয়েছে; এটি সেই অসহায় ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করে, যারা ইয়াওয়ের জন্য দুর্দশাগ্রস্ত, বা তাড়িত হয়েছে, সেই নম্র হৃদয়ের ব্যক্তিরা, যারা ঈশ্বরের প্রতি বাধ্য।”
পৃথিবীতে অথবা স্বর্গে?
পর্বতেদত্ত উপদেশে যিশু একটা প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, যা আমাদেরকে উপরোক্ত পদটির কথা মনে করিয়ে দেয়: “ধন্য যাহারা মৃদুশীল, কারণ তাহারা দেশের অধিকারী হইবে।” (মথি ৫:৫) আবারও, পৃথিবী বিশ্বস্ত ব্যক্তিদের জন্য চিরস্থায়ী এক পুরস্কারস্বরূপ হতে যাচ্ছে। কিন্তু, যিশু তাঁর প্রেরিতদের কাছে এই বিষয়টা স্পষ্ট করেছিলেন যে, তিনি তাদের জন্য “[তাঁহার] পিতার বাটীতে” স্থান প্রস্তুত করছেন আর তাই তারা তাঁর সঙ্গে স্বর্গে থাকবে। (যোহন ১৪:১, ২; লূক ১২:৩২; ১ পিতর ১:৩, ৪) তা হলে, পার্থিব আশীর্বাদের প্রতিজ্ঞাগুলোকে আমাদের কীভাবে বোঝা উচিত? সেগুলো কি বর্তমান দিনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত আর সেগুলো কাদের প্রতি প্রযোজ্য?
বিভিন্ন বাইবেল পণ্ডিত বলে যে, যিশুর পর্বতেদত্ত উপদেশে এবং এমনকি গীতসংহিতা ৩৭ অধ্যায়ে উল্লেখিত ‘দেশ’ হল শুধুমাত্র এক প্রতীক। বিব্লে ডি গ্লের বইয়ে করা তার মন্তব্যে এফ. ভিগুরু এই পদগুলোতে “স্বর্গ ও গির্জার প্রতীককে” বুঝেছেন। ফরাসি বাইবেল গবেষক এম. লাগ্র্যাঁঝের কাছে এই আশীর্বাদটি “এমন প্রতিজ্ঞা নয় যে, মৃদুশীলেরা বর্তমান ব্যবস্থার বা আরও উন্নত কোনো ব্যবস্থার অধীনে এই পৃথিবী, যেটাতে তারা বাস করছে তার অধিকারী হবে কিন্তু এটা যেখানেই হোক না কেন, এটা হল স্বর্গরাজ্য।” আরেকজন বাইবেল গবেষকের মতে, এটা হল “স্বর্গের বিষয় উল্লেখ করতে গিয়ে পার্থিব মূল্যবোধগুলোর প্রতীকী ব্যবহার।” এমনকি অন্যদের মতে, “প্রতিজ্ঞাত দেশ কনানকে, আধ্যাত্মিক অর্থে বিবেচনা করা হয় এবং এটা ঊর্ধ্বস্থ মাতৃভূমি ঈশ্বরের রাজ্যকে চিত্রিত করে, যেটার অধিকারী হওয়ার বিষয়ে মৃদুশীল ব্যক্তিদের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে। গীতসংহিতা ৩৭ অধ্যায় এবং অন্যান্য জায়গায়ও এই চিত্রের অর্থ একই।” কিন্তু, ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞাগুলো থেকে ভৌত পৃথিবীর বিষয়টা কি আমাদের সঙ্গে সঙ্গে বাদ দিয়ে দেওয়া উচিত?
পৃথিবীর জন্য এক চিরস্থায়ী উদ্দেশ্য
শুরুতে পৃথিবী মানুষের জন্য ঈশ্বরের উদ্দেশ্যের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত ছিল। “স্বর্গ সদাপ্রভুরই স্বর্গ, কিন্তু তিনি পৃথিবী মনুষ্য-সন্তানদিগকে দিয়াছেন,” গীতরচক লিখেছিলেন। (গীতসংহিতা ১১৫:১৬) তাই, মানবজাতির জন্য ঈশ্বরের আদি উদ্দেশ্য পৃথিবীর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ছিল, স্বর্গের সঙ্গে নয়। যিহোবা প্রথম মানব দম্পতিকে পুরো পৃথিবী জুড়ে এদন উদ্যানকে বিস্তৃত করার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। (আদিপুস্তক ১:২৮) এই উদ্দেশ্য ক্ষণস্থায়ী ছিল না। যিহোবা তাঁর বাক্যে নিশ্চিত করেন যে, পৃথিবী চিরকাল থাকবে: “এক পুরুষ চলিয়া যায়, আর এক পুরুষ আইসে; কিন্তু পৃথিবী নিত্যস্থায়ী।”—উপদেশক ১:৪; ১ বংশাবলি ১৬:৩০; যিশাইয় ৪৫:১৮.
ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞাগুলো কখনো অপূর্ণ থাকবে না, কারণ তিনি হলেন পরাৎপর আর তাই সেগুলোর পরিপূর্ণতা সম্বন্ধে তিনি নিশ্চয়তা দেন। প্রাকৃতিক জলচক্রের উদাহরণ ব্যবহার করে বাইবেল ব্যাখ্যা করে যে, ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞাগুলোর পরিপূর্ণতা হল অবশ্যম্ভাবী: “বাস্তবিক যেমন বৃষ্টি বা হিম আকাশ হইতে নামিয়া আইসে, আর সেখানে ফিরিয়া যায় না, কিন্তু ভূমিকে আর্দ্র করিয়া ফলবতী ও অঙ্কুরিত করে, . . . আমার মুখনির্গত বাক্য [ঈশ্বরের বাক্য] তেমনি হইবে; তাহা নিষ্ফল হইয়া আমার কাছে ফিরিয়া আসিবে না, কিন্তু আমি যাহা ইচ্ছা করি [“আমি যেটার প্রতি আনন্দিত হয়েছি,” NW], তাহা সম্পন্ন করিবে, এবং যে জন্য তাহা প্রেরণ করি, সে বিষয়ে সিদ্ধার্থ হইবে।” (যিশাইয় ৫৫:১০, ১১) ঈশ্বর মানুষের কাছে প্রতিজ্ঞাগুলো করেন। সেই প্রতিজ্ঞাগুলো বাস্তবায়িত হওয়ার আগে একটা নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হতে পারে কিন্তু সেগুলো অপূর্ণ থাকে না। যা কিছু বলা হয়েছে সমস্তই সম্পাদন করে তাঁর কাছে “ফিরিয়া” যায়।
নিশ্চিতভাবেই, যিহোবা মানবজাতির জন্য পৃথিবীকে সৃষ্টি করার সময় “আনন্দিত” হয়েছিলেন। ষষ্ঠ সৃষ্টি দিনের শেষে, তিনি ঘোষণা করেছিলেন যে, সমস্তকিছুই ছিল “অতি উত্তম।” (আদিপুস্তক ১:৩১) পৃথিবীকে এক স্থায়ী পরমদেশে রূপান্তরিত করা সেই ঐশিক উদ্দেশ্যর এক অংশ, যা এখনও সম্পাদিত হয়নি। তা সত্ত্বেও, ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞাগুলো ‘নিষ্ফল হইয়া তাঁহার কাছে ফিরিয়া যাইবে না।’ পৃথিবীতে সিদ্ধ জীবনের সমস্ত প্রতিজ্ঞা, যেখানে মানুষ শান্তিতে ও নিরাপত্তায় চিরকাল বেঁচে থাকবে, সেগুলো পরিপূর্ণ হবে।—গীতসংহিতা ১৩৫:৬; যিশাইয় ৪৬:১০.
ঈশ্বরের উদ্দেশ্য সফল হবেই
আমাদের প্রথম পিতামাতা আদম ও হবার করা পাপ, সাময়িকভাবে ঈশ্বরের পৃথিবীকে পরমদেশ করার আদি উদ্দেশ্যকে বিঘ্নিত করেছিল। তাদের অবাধ্যতার পর, তাদেরকে সেই উদ্যান থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল। এর ফলে, তারা এক পরমদেশ পৃথিবীতে সিদ্ধ মানুষদের বসবাস করার ঐশিক উদ্দেশ্যের পরিপূর্ণতায় অংশ নেওয়ার বিশেষ সুযোগ হারিয়েছিল। তা সত্ত্বেও, ঈশ্বর তাঁর উদ্দেশ্য সম্পাদন করার ব্যবস্থা করেছেন। কীভাবে?—আদিপুস্তক ৩:১৭-১৯, ২৩.
এদনের পরিস্থিতিটা ছিল এমন একজন ব্যক্তির মতো, যিনি এক চমৎকার জমিতে একটা বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করেন। তিনি ভিত স্থাপন করামাত্র কেউ একজন এসে সেই ভিতটাকে ভেঙে দেন। তার প্রকল্পকে বাতিল করে দেওয়ার পরিবর্তে, ব্যক্তিটি তার বাড়ি তৈরির কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য পদক্ষেপ নেন। এমনকি যদিও তার এই অতিরিক্ত কাজের জন্য বাড়তি কিছু খরচও হয়, তবুও সেই প্রথম প্রকল্পটা শেষ করার বিষয়ে সন্দেহ করার কোনো যৌক্তিকতা থাকে না।
একইভাবে, ঈশ্বরও তাঁর উদ্দেশ্য সম্পাদন করার জন্য ব্যবস্থা করেছেন। আমাদের প্রথম পিতামাতা পাপ করার সঙ্গে সঙ্গে, তিনি তাদের বংশধরদের জন্য এক আশা—এক “বংশের”—বিষয়ে ঘোষণা করেছিলেন, যিনি কৃত ক্ষতিকে দূর করে দেবেন। এই ভবিষ্যদ্বাণীর পরিপূর্ণতাস্বরূপ, ঈশ্বরের পুত্র যিশু সেই বংশের প্রাথমিক অংশ হিসেবে প্রমাণিত হন, যিনি পৃথিবীতে এসেছিলেন এবং মানবজাতিকে পুনরায় ক্রয় করার জন্য তাঁর জীবনকে বলিরূপে উৎসর্গ করেছিলেন। পুনরুত্থিত হয়ে স্বর্গে ফিরে গিয়ে যিশু সেই রাজ্যের রাজা হন। মূলত, তিনিই হলেন মৃদুশীল ব্যক্তি, যিনি নির্বাচিত সেই বিশ্বস্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে পৃথিবীর অধিকারী হন, যারা এই রাজ্যের সহশাসক হওয়ার জন্য স্বর্গে পুনরুত্থিত হয়। (গীতসংহিতা ২:৬-৯) পরে, ঈশ্বরের আদি উদ্দেশ্য সম্পাদন করার ও এই পৃথিবীকে এক পরমদেশে রূপান্তরিত করার জন্য এই সরকার পৃথিবীর বিষয়গুলোতে হস্তক্ষেপ করবে। অগণিত কোটি কোটি মৃদুশীল ব্যক্তি “দেশের অধিকারী” হবে এই অর্থে যে, তারা যিশু খ্রিস্ট ও তাঁর সহশাসকদের দ্বারা এই রাজ্যের শাসন থেকে উপকৃত হবে।—আদিপুস্তক ৩:১৫; দানিয়েল ২:৪৪; প্রেরিত ২:৩২, ৩৩; প্রকাশিত বাক্য ২০:৫, ৬.
“যেমন স্বর্গে তেমনি পৃথিবীতেও”
স্বর্গীয় ও পার্থিব, দুটো গন্তব্যসহ এই পরিত্রাণের বিষয় প্রেরিত যোহনের দেখা এক দর্শনে উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি স্বর্গীয় সিংহাসনে রাজাদের দেখেছিলেন, যাদেরকে খ্রিস্টের বিশ্বস্ত শিষ্যদের মধ্যে থেকে মনোনীত করা হয়েছে। বাইবেল নির্দিষ্টভাবে খ্রিস্টের এই সহযোগীদের সম্পর্কে বলে যে, “তাহারা পৃথিবীর উপরে রাজত্ব করিবে।” (প্রকাশিত বাক্য ৫:৯, ১০) ঈশ্বরের উদ্দেশ্য সম্পাদন করার ক্ষেত্রে দুটো দিক বিবেচনা করুন—যিশু ও তাঁর সহদায়াদদের নিয়ে গঠিত স্বর্গীয় রাজ্যের নির্দেশনার অধীনে এক পুনর্স্থাপিত পৃথিবী। ঈশ্বরের আদি উদ্দেশ্যর সঙ্গে মিল রেখে এই সমস্ত ঐশিক ব্যবস্থা পার্থিব পরমদেশের চূড়ান্ত পুনর্স্থাপনকে সম্ভবপর করবে।
যিশু তাঁর আদর্শ প্রার্থনায় তাঁর শিষ্যদেরকে ঈশ্বরের ইচ্ছা “যেমন স্বর্গে তেমনই পৃথিবীতেও” পূর্ণ হওয়ার জন্য প্রার্থনা করতে আহ্বান জানিয়েছিলেন। (মথি ৬:৯, ১০) এই কথাগুলোর কি কোনো তাৎপর্য থাকবে যদি পৃথিবী লুপ্ত হয়ে যায় বা যদি এটা কেবলমাত্র স্বর্গের এক প্রতীক হয়? একইভাবে, সেগুলোর কি কোনো অর্থ থাকবে যদি সব ধার্মিক লোক স্বর্গে চলে যায়? সৃষ্টির বিবরণ থেকে শুরু করে প্রকাশিত বাক্যের দর্শন পর্যন্ত পুরো শাস্ত্রে ঈশ্বরের উদ্দেশ্য স্পষ্টরূপে প্রতীয়মান। ঈশ্বর যা উদ্দেশ্য করেছিলেন, পৃথিবী তা-ই হবে অর্থাৎ এক পরমদেশ। এটা হল সেই ইচ্ছা, যা সম্পাদন করার জন্য ঈশ্বর প্রতিজ্ঞা করেন। পৃথিবীর বিশ্বস্ত ব্যক্তিরা সেই ইচ্ছা পরিপূর্ণ হওয়ার জন্য প্রর্থনা করে থাকে।
পৃথিবীতে অনন্তজীবনই হল সেই সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বরের আদি উদ্দেশ্য, যাঁর “পরিবর্ত্তন নাই।” (মালাখি ৩:৬; যোহন ১৭:৩; যাকোব ১:১৭) এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে, প্রহরীদুর্গ পত্রিকা সেই ঐশিক উদ্দেশ্য সম্পাদনের এই দুটো দিককে বর্ণনা করে এসেছে। এটা আমাদের এক পার্থিব পুনর্স্থাপন সম্পর্কে শাস্ত্রে প্রাপ্ত প্রতিজ্ঞাগুলো বুঝতে সক্ষম করে। যিহোবার সাক্ষিদের সঙ্গে আলোচনা করার অথবা এই পত্রিকার প্রকাশকদের সঙ্গে যোগাযোগ করার দ্বারা আমরা আপনাকে এই বিষয়ে আরও পরীক্ষা করে দেখতে আমন্ত্রণ জানাই।
[পাদটীকা]
a যদিও বাইবেলের অনেক অনুবাদ, ইব্রীয় শব্দ ইরেটস্-কে ‘পৃথিবীর’ পরিবর্তে ‘দেশ’ হিসেবে অনুবাদ করে কিন্তু গীতসংহিতা ৩৭:১১, ২৯ পদের ইরেটস্ শব্দটিকে শুধুমাত্র ইস্রায়েল জাতিকে দত্ত দেশ বলে ভাবার কোনো কারণই নেই। উইলিয়াম উইলসনের দ্বারা প্রণীত ওল্ড টেস্টামেন্ট ওয়ার্ড স্টাডিস, ইরেটস্-কে “বৃহৎ অর্থে পৃথিবী” হিসেবে সংজ্ঞায়িত করে, “বাসযোগ্য এবং অবাসযোগ্য উভয় অংশ; সীমিত অর্থে ব্যবহৃত হলে এটি ভূত্বকের কিছু অংশ বা দেশকে বোঝায়।” তাই, সেই ইব্রীয় শব্দটির সর্বপ্রথম অর্থ হচ্ছে আমাদের গ্রহ অর্থাৎ এই পৃথিবী।—১৯৮৬ সালের ১লা জানুয়ারি প্রহরীদুর্গ (ইংরেজি) পত্রিকার ৩১ পৃষ্ঠা দেখুন।
[৪ পৃষ্ঠার চিত্র]
ভবিষ্যতে পৃথিবীতে পরমদেশ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার বিষয়ে বাইবেল স্পষ্টভাবে বলে
[৭ পৃষ্ঠার চিত্র]
যিশুর আদর্শ প্রার্থনার কি কোনো অর্থ থাকবে যদি পৃথিবী লুপ্তই হয়ে যায়?