“কিছু আলাদা করে রাখুন”
প্রথম শতাব্দীর খ্রীষ্টীয় মণ্ডলীতে বস্তুগত চাহিদা থাকায়, সেটার প্রতি মনোযোগ দেওয়ার দরকার ছিল। আর্থিক দিক সমৃদ্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রত্যেককে পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল তারা যেন সেই চাহিদা মেটানোর জন্য দান হিসেবে ‘কিছু আলাদা করে রাখেন।’ (NW) (১ করি. ১৬:১-৩) তাদের উদারতার জন্য, সকলেই ‘অনেক ধন্যবাদের দ্বারা ঈশ্বরের উদ্দেশে’ দান করে আনন্দিত হয়েছিল।—২ করি. ৯:১১, ১২.
আজকে সারা পৃথিবীতে যিহোবার লোকেদের কাজ বেড়েই চলেছে আর তাই আরও বেশি আর্থিক সাহায্যর দরকার। অতএব সেই চাহিদাগুলো মেটাতে সাহায্য করার জন্য আমাদেরও নিয়মিত ‘কিছু আলাদা করে রাখা’ উপযুক্ত। (২ করি. ৮:৩, ৪) গত বছর সোসাইটির ওপর অর্থ সংক্রান্ত বিধিনিষেধ আরোপ করার কথা শুনে অনেকেই একটু বেশি কিছু ‘আলাদা করে রাখার’ ব্যবস্থা করেছেন। এইরকম প্রচেষ্টাকে খুবই উপলব্ধি করা হয় আর তা যিহোবার আশীর্বাদ নিয়ে আসে।—মালাখি ৩:১০.
প্রচারের অথবা ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য প্রতিবার আমরা যখন পত্রিকা বা সাহিত্যাদি নিই, সেই সময় দান করার জন্য কিছু আলাদা করে রাখা হল এক ভাল অভ্যাস। মনে রাখবেন যে, আমাদের উদার দান, শুধু প্রকাশনাদি ছাপানো ও সেগুলো বিভিন্ন জায়গায় পাঠানোর খরচ মেটাতেই নয় কিন্তু সেইসঙ্গে পৃথিবীব্যাপী যে বিভিন্ন কাজ হয়, সেগুলো চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যও সোসাইটিকে সাহায্য করে। এতে অংশ নেওয়ার জন্য বাচ্চাদেরকে উৎসাহিত করা যেতে পারে। বাবামারা হাতখরচের জন্য তাদেরকে যে পয়সা দেন, সেখান থেকে ব্যক্তিগতভাবে তারা যখন সামান্য কিছু ‘আলাদা করে রাখতে’ পারে, তখন তা তাদেরকে অনেক আনন্দ দেয়।
কিন্তু, এটা ভুলে যাওয়া খুব সহজ। একটা মণ্ডলীতে প্রাচীনরা লক্ষ্য করেছিলেন যে, সোসাইটির কাছে যে পরিমাণ টাকা পাঠানো হয়েছে সেটা গত কয়েক বছরের চাইতে অনেক কম ছিল, অথচ মণ্ডলীর অবশিষ্ট টাকার পরিমাণ দিন-দিন ঠিকই বেড়ে চলেছিল। তাই তারা হিসেব করে দেখেছিলেন যে দেশের প্রত্যেক প্রকাশকের প্রতি মাসে কত টাকা পাঠানো দরকার, যাতে কাজের দেখাশোনার জন্য খরচ মেটানো যেতে পারে। ভাইয়েরা তাতে সাড়া দিয়েছিলেন এবং একমত হয়েছিলেন যে, শিক্ষামূলক কাজের জন্য মাসিক দান হিসেবে তাদের মণ্ডলী অন্তত সেই পরিমাণ অর্থ পাঠাবে আর যদি বাক্সগুলোতে কম টাকা আসে, তাহলে মণ্ডলীর ফাণ্ড থেকে সেটাকে পূরণ করা হবে।
আরেকটা মণ্ডলীতে লক্ষ্য করা গিয়েছিল যে, অনেক পত্রিকা অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে, ফলে মূল্যবান সম্পদগুলো নষ্ট হচ্ছে। লোকেদেরকে দান করার সুযোগের কথা কীভাবে জানানো যায়, সেই বিষয়ে প্রকাশকদের নির্দেশনা দিয়ে প্রাচীনরা স্থানীয় ফেরিঘাটে পত্রিকা বিতরণের বিশেষ ব্যবস্থা করেছিলেন। ফলে সেই মাসে মণ্ডলী ১৫,০০০রেরও বেশি টাকা পাঠাতে পেরেছিল।
আপনি ও আপনার পরিবার কি ‘কিছু আলাদা করে রাখার’ কথা ভেবে দেখেছেন? বিভিন্ন উপায়ে বস্তুগত দান দেওয়া যেতে পারে। (২০০১ সালের ১লা নভেম্বর প্রহরীদুর্গ এর ২৮-৯ পৃষ্ঠা দেখুন।) উপযুক্তভাবেই, আমরা এটাকে এক বিশেষ সুযোগ বলে মনে করি, যা সত্যিকারের সুখ নিয়ে আসে।—প্রেরিত ২০:৩৫.