জীবন ও পরিচর্যা সভার জন্য অধ্যয়ন পুস্তিকা-র রেফারেন্স
অক্টোবর ৭-১৩
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | যাকোব ৩-৫
“ঈশ্বরীয় প্রজ্ঞা প্রদর্শন করুন”
যিহোবার নিকটবর্তী হোন ২২১-২২২ অনু. ৯-১০
“যে প্রজ্ঞা উপর হইতে আইসে,” তা কি আপনার জীবনে সক্রিয়?
৯ “প্রথমে শুচি।” শুচি হওয়ার অর্থ শুধুমাত্র বাহ্যিকভাবেই নয়, কিন্তু ভিতরেও বিশুদ্ধ ও নিষ্কলঙ্ক থাকা। বাইবেল প্রজ্ঞাকে হৃদয়ের সঙ্গে সংযুক্ত করে কিন্তু স্বর্গীয় প্রজ্ঞা একজনের হৃদয়ে প্রবেশ করতে পারে না যদি তা মন্দ চিন্তা, আকাঙ্ক্ষা ও উদ্দেশ্যগুলোর দ্বারা কলুষিত হয়। (হিতোপদেশ ২:১০; মথি ১৫:১৯, ২০) কিন্তু, আমাদের হৃদয় যদি শুচি হয়—অর্থাৎ অসিদ্ধ মানুষদের পক্ষে যতটা সম্ভব—তা হলে আমরা ‘মন্দ হইতে দূরে যাইব, সদাচরণ করিব।’ (গীতসংহিতা ৩৭:২৭; হিতোপদেশ ৩:৭) এটা কি উপযুক্ত নয় যে, শুচিতা হল প্রজ্ঞার গুণগুলোর তালিকায় সবচেয়ে প্রথম গুণ? সর্বোপরি, যদি আমরা নৈতিক ও আধ্যাত্মিক দিক দিয়ে শুচি না হই, তা হলে কীভাবে আমরা উপর থেকে আসা প্রজ্ঞার অন্যান্য গুণ প্রকৃতই প্রতিফলিত করতে পারব?
১০ “পরে শান্তিপ্রিয়।” স্বর্গীয় প্রজ্ঞা আমাদের শান্তি অনুধাবন করতে প্রেরণা দেয়, যা ঈশ্বরের আত্মার একটা ফল। (গালাতীয় ৫:২২) ‘শান্তির যোগবন্ধন,’ যা যিহোবার লোকেদের একতাবদ্ধ করে, সেটা ছিন্ন করা এড়িয়ে চলার জন্য আমরা প্রাণপণ চেষ্টা করি। (ইফিষীয় ৪:৩) যখন শান্তি নষ্ট হয়ে যায়, তখন তা পুনর্স্থাপন করার জন্য আমরাও সর্বাত্মক চেষ্টা করি। এটা কেন গুরুত্বপূর্ণ? বাইবেল বলে: “শান্তিতে থাক; তাহাতে প্রেমের ও শান্তির ঈশ্বর তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে থাকিবেন।” (২ করিন্থীয় ১৩:১১) তাই, যতদিন পর্যন্ত আমরা শান্তিতে বাস করে চলব, ততদিন পর্যন্ত শান্তির ঈশ্বর আমাদের সঙ্গে থাকবেন। সহউপাসকদের সঙ্গে আমরা যেরকম আচরণ করি, যিহোবার সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের উপর সেটার এক সরাসরি প্রভাব রয়েছে। কীভাবে আমরা নিজেদের শান্তি স্থাপনকারী প্রমাণ করতে পারি? একটা উদাহরণ বিবেচনা করুন।
যিহোবার নিকটবর্তী হোন ২২৩-২২৪ অনু. ১২
“যে প্রজ্ঞা উপর হইতে আইসে,” তা কি আপনার জীবনে সক্রিয়?
১২ “যুক্তিযুক্ত।” যুক্তিযুক্ত হওয়ার অর্থ কী? পণ্ডিত ব্যক্তিদের মতানুসারে, মূল যে-গ্রিক শব্দটাকে যাকোব ৩:১৭ পদে “যুক্তিযুক্ত” বলে অনুবাদ করা হয়েছে, তা অনুবাদ করা বেশ কঠিন। অনুবাদকরা এই ধরনের শব্দগুলো ব্যবহার করেছেন, যেমন “শান্ত,” “সহিষ্ণু” এবং “বিবেচক।” গ্রিক শব্দটার আক্ষরিক অর্থ হল, “মেনে নেওয়া।” কীভাবে আমরা দেখাতে পারি যে, উপর থেকে আসা প্রজ্ঞার এই দিকটা আমাদের মধ্যে সক্রিয়?
যিহোবার নিকটবর্তী হোন ২২৪-২২৫ অনু. ১৪-১৫
“যে প্রজ্ঞা উপর হইতে আইসে,” তা কি আপনার জীবনে সক্রিয়?
১৪ “সহজে অনুনীত।” যে-গ্রিক শব্দকে “সহজে অনুনীত” বলে অনুবাদ করা হয়েছে, তা খ্রিস্টীয় গ্রিক শাস্ত্রে আর কোথাও পাওয়া যায় না। একজন পণ্ডিত ব্যক্তির মতানুসারে, এই শব্দটা “প্রায়ই সামরিক শৃঙ্খলার জন্য ব্যবহৃত হয়।” এটা “সহজেই কিছু করতে রাজি হওয়া” এবং “বশীভূত” হওয়ার ধারণা প্রকাশ করে। যে-ব্যক্তি উপর থেকে আসা প্রজ্ঞার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হন, তিনি শাস্ত্র যা বলে সঙ্গে সঙ্গে সেটার বশীভূত হন। তিনি এমন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত নন, যিনি একবার সিদ্ধান্ত নিলে আর কোনো কিছুই তাকে তার মত পালটাতে প্রভাবিত করতে পারে না। এর পরিবর্তে, তাকে যখন স্পষ্ট শাস্ত্রীয় প্রমাণ দেখানো হয় যে তিনি কোনো ভুল পদক্ষেপ বা ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তখন তিনি খুব তাড়াতাড়ি পরিবর্তিত হওয়ার চেষ্টা করেন। অন্যদের কাছে কি আপনি এভাবে পরিচিত?
“করুণা ও উত্তম উত্তম ফলে পরিপূর্ণ”
১৫ “করুণা ও উত্তম উত্তম ফলে পরিপূর্ণ।” করুণা হল উপর থেকে আসা প্রজ্ঞার একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ, কারণ এই ধরনের প্রজ্ঞার বিষয় বলা হয় যে, ‘করুণায় পরিপূর্ণ।’ লক্ষ করুন যে, “করুণা” এবং ‘উত্তম উত্তম ফলের’ বিষয় একসঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে। এটা উপযুক্ত কারণ বাইবেলে করুণা প্রায়ই অন্যদের জন্য এক সক্রিয় চিন্তাকে ইঙ্গিত করে, এমন সমবেদনা যা দয়াপূর্ণ কাজের প্রচুর ফল উৎপন্ন করে। একটা তথ্যগ্রন্থ করুণাকে “কারও প্রতিকূল পরিস্থিতির জন্য দুঃখ অনুভব করা এবং এই বিষয়ে কিছু করতে চাওয়া” বলে সংজ্ঞায়িত করে। তাই, ঈশ্বরীয় প্রজ্ঞা নীরস, নিরাবেগ বা নিছক পুঁথিগত কোনো বিষয় নয়। এর পরিবর্তে, এটা উষ্ণ, আন্তরিক এবং অনুভূতিশীল। কীভাবে আমরা দেখাতে পারি যে আমরা করুণায় পরিপূর্ণ?
যিহোবার নিকটবর্তী হোন ২২৬-২২৭ অনু. ১৮-১৯
“যে প্রজ্ঞা উপর হইতে আইসে,” তা কি আপনার জীবনে সক্রিয়?
১৮ “ভেদাভেদবিহীন।” ঈশ্বরীয় প্রজ্ঞা জাতি সম্বন্ধে প্রতিকূল ধারণা ও জাতিগত গর্বকে স্থান দেয় না। যদি আমরা এই প্রজ্ঞার দ্বারা চালিত হই, তা হলে আমরা আমাদের হৃদয় থেকে যেকোনো ধরনের পক্ষানুরাগ দেখানোর প্রবণতা উপড়ে ফেলার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করব। (যাকোব ২:৯, NW) আমরা অন্যদের শিক্ষাগত পটভূমি, অর্থনৈতিক প্রতিপত্তি বা মণ্ডলীর দায়িত্বের উপর ভিত্তি করে তাদেরকে অন্যদের চেয়ে একটু বেশি প্রাধান্য দেব না; অথবা আমাদের সহউপাসকদের যত নীচু বলেই মনে হোক না কেন, আমরা কখনো তাদের নীচু করে দেখব না। যিহোবা যদি এই ব্যক্তিদের তাঁর প্রেমের পাত্র করতে পারেন, তা হলে আমাদের অবশ্যই তাদেরকে আমাদের ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য বলে দেখা উচিত।
১৯ “নিষ্কপট।” “কপট” শব্দের জন্য ব্যবহৃত গ্রিক শব্দটা “একজন অভিনেতা, যিনি কোনো চরিত্রে অভিনয় করেছেন,” তাকে ইঙ্গিত করতে পারে। প্রাচীনকালে গ্রিক ও রোমীয় অভিনেতা-অভিনেত্রীরা অভিনয় করার সময় বড়ো মুখোশ পরতো। তাই, ‘কপটের’ জন্য ব্যবহৃত গ্রিক শব্দটা একজনের ভান করা বা মিথ্যা অভিনয় করার প্রতি প্রযোজ্য হতে পারে। ঈশ্বরীয় প্রজ্ঞার এই দিকটা শুধু আমরা আমাদের সহউপাসকদের সঙ্গে কীভাবে আচরণ করি, সেটাতে নয় কিন্তু সেইসঙ্গে আমরা তাদের জন্য কেমন বোধ করি, তাতেও প্রভাব ফেলবে।
আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন
প্রহরীদুর্গ ০৮ ১১/১৫ ২০ অনু. ৬
যাকোব ও পিতরের চিঠির প্রধান বিষয়গুলো
৪:৫—যাকোব এখানে কোন শাস্ত্রপদ উদ্ধৃত করছেন? যাকোব কোনো নির্দিষ্ট পদ উদ্ধৃত করছেন না। কিন্তু, ঐশিকভাবে অনুপ্রাণিত এই কথাগুলো সম্ভবত এই ধরনের শাস্ত্রপদগুলোর সাধারণ ধারণার উপর ভিত্তি করে, যেমন আদিপুস্তক ৬:৫; ৮:২১; হিতোপদেশ ২১:১০; এবং গালাতীয় ৫:১৭.
প্রহরীদুর্গ ৯৭ ১১/১৫ ২০-২১ অনু. ৮
বিশ্বাস আমাদের দীর্ঘসহিষ্ণু ও প্রার্থনাপূর্ণ করে
৮ এক সহবিশ্বাসীর পরীবাদ করা পাপপূর্ণ। (যাকোব ৪:১১, ১২) তবুও কিছু জন, সম্ভবত তাদের নিজেদের আত্ম-ধার্মিক মনোভাবের ফলে অথবা তারা অন্যদের নীচু করে নিজেদের উচ্চান্বিত করতে চায় সেই কারণে সহখ্রিস্টানদের বিষয়ে সমালোচনামূলক। (গীতসংহিতা ৫০:২০; হিতোপদেশ ৩:২৯) যে গ্রিক পরিভাষাটা “পরীবাদ” হিসাবে অনুবাদ করা হয়েছে, তা শত্রুতাকে নির্দেশ করে এবং এক অতিরঞ্জিত অথবা মিথ্যা অভিযোগকে ইঙ্গিত করে। এটা এক ভাইকে প্রতিকূলভাবে বিচার করা বোঝায়। ‘পরীবাদ করা ও ঈশ্বরের ব্যবস্থার বিচার করা’ বিষয়টা কেমন? অধ্যাপক ও ফরীশীরা ‘ঈশ্বরের আজ্ঞা বিলক্ষণ অমান্য করেছিল’ এবং তাদের নিজস্ব মানদণ্ড দ্বারা বিচার করেছিল। (মার্ক ৭:১-১৩) অনুরূপভাবে, যদি আমরা একজন ভাইকে দোষী করি যাকে যিহোবা দোষী করেন না, তা হলে আমরা কি ‘ঈশ্বরের ব্যবস্থার বিচার’ করছি না আর পাপপূর্ণভাবে ইঙ্গিত করছি না যে এটি অপর্যাপ্ত? আর অন্যায়ভাবে আমাদের ভাইদের সমালোচনা করার দ্বারা আমরা প্রেমের ব্যবস্থাও পূর্ণ করছি না।—রোমীয় ১৩:৮-১০.
অক্টোবর ১৪-২০
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | ১ পিতর ১-২
“তোমরা পবিত্র হইবে”
মুক্তির মূল্য—পিতার কাছ থেকে এক “সিদ্ধ বর”
৫ কীভাবে আমরা যিহোবার নামের প্রতি ভালোবাসা দেখাতে পারি? আমাদের আচরণের মাধ্যমে। যিহোবা চান যেন আমরা পবিত্র হই। (পড়ুন, ১ পিতর ১:১৫, ১৬.) এর অর্থ হচ্ছে, আমরা শুধুমাত্র তাঁকে উপাসনা করি এবং সর্বান্তঃকরণে তাঁর বাধ্য হই। এমনকী তাড়নার শিকার হলেও আমরা যিহোবার শিক্ষা অনুযায়ী জীবনযাপন করার জন্য যথাসাধ্য করি। যিহোবার মান অনুযায়ী জীবনযাপন করার মাধ্যমে আমরা তাঁর নামের গৌরব নিয়ে আসি। (মথি ৫:১৪-১৬) আমরা প্রমাণ করি, তাঁর আইন মঙ্গলজনক এবং শয়তান হল মিথ্যাবাদী। আমরা যেহেতু অসিদ্ধ, তাই আমরা পাপ করে ফেলি। কিন্তু পাপ করে ফেললে, আমরা অনুতপ্ত হই এবং যিহোবার নামের অসম্মান নিয়ে আসে এমন বিষয়গুলো না করার জন্য যথাসাধ্য করি।—গীত. ৭৯:৯.
‘ঈশ্বরের প্রেম’ অধ্যায় ৬ অনু. ৬
যেভাবে গঠনমূলক আমোদপ্রমোদ বাছাই করা যায়
৬ পৌল রোমের খ্রিস্টানদেরকে উপদেশ দিয়েছিলেন: “আপন আপন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ . . . পাপের কাছে সমর্পণ করিও না।” এ ছাড়া, পৌল তাদেরকে ‘দেহের ক্রিয়া সকল মৃত্যুসাৎ করিতে’ বলেছিলেন। (রোমীয় ৬:১২-১৪; ৮:১৩) এর আগে তার চিঠিতে, তিনি ‘দেহের’ এই ধরনের ‘ক্রিয়া সকলের’ কিছু উদাহরণ দিয়েছিলেন। পাপী মানবজাতি সম্বন্ধে আমরা পড়ি: ‘তাহাদের মুখ অভিশাপে পূর্ণ।’ “তাহাদের চরণ রক্তপাতের জন্য ত্বরান্বিত।” “ঈশ্বর-ভয় তাহাদের চক্ষুর অগোচর।” (রোমীয় ৩:১৩-১৮) একজন খ্রিস্টান যদি তার “অঙ্গপ্রত্যঙ্গ” অথবা দেহের কোনো অংশকে এই ধরনের পাপপূর্ণ অভ্যাসের জন্য ব্যবহার করেন, তা হলে তিনি তার দেহকে খুঁতযুক্ত করবেন। উদাহরণ স্বরূপ, একজন খ্রিস্টান যদি আজকে ইচ্ছাকৃতভাবে পর্নোগ্রাফির মতো নীতিহীন বিষয়বস্তু অথবা নিষ্ঠুর দৌরাত্ম্য দেখেন, তা হলে তিনি ‘[তাহার চোখকে] পাপের কাছে সমর্পণ করিতেছেন’ আর এভাবে তার সম্পূর্ণ দেহকে কলুষিত করছেন। তার প্রদত্ত যেকোনো উপাসনা এমন এক বলি হয়ে উঠবে, যা আর পবিত্র নয় এবং ঈশ্বরের কাছে অগ্রহণযোগ্য। (দ্বিতীয় বিবরণ ১৫:২১; ১ পিতর ১:১৪-১৬; ২ পিতর ৩:১১) গঠনমূলক নয় এমন আমোদপ্রমোদ বাছাই করার জন্য কী এক চরম মূল্যই না দিতে হয়!
আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন
প্রহরীদুর্গ ০৮ ১১/১৫ ২১ অনু. ১০
যাকোব ও পিতরের চিঠির প্রধান বিষয়গুলো
১:১০-১২. স্বর্গদূতেরা হেঁট হয়ে ঈশ্বরের সেই গভীর আধ্যাত্মিক সত্য বিষয়গুলো বোঝার আকাঙ্ক্ষা করেছিল, যেগুলো প্রাচীনকালের ভাববাদীরা অভিষিক্ত খ্রিস্টীয় মণ্ডলীর বিষয়ে লিখেছিল। কিন্তু, এই বিষয়গুলো কেবল তখনই স্পষ্ট হয়েছিল, যখন যিহোবা মণ্ডলীর মাধ্যমে তা জানাতে শুরু করেছিলেন। (ইফি. ৩:১০) আমাদের কি দূতদের উদাহরণ অনুসরণ করা এবং ‘ঈশ্বরের গভীর বিষয় সকল’ অনুসন্ধান করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করা উচিত নয়?—১ করি. ২:১০.
অন্তর্দৃষ্টি-২ ৫৬৫ অনু. ৩, ইংরেজি
অধ্যক্ষ
সর্বোচ্চ অধ্যক্ষ। যারা ‘মেষের ন্যায় ভ্রান্ত হইয়াছিল,’ তাদের বিষয়ে উল্লেখ করতে গিয়ে ১ পিতর ২:২৫ পদ স্পষ্টতই যিশাইয় ৫৩:৬ পদের কথাগুলো উদ্ধৃতি করে আর এরপর পিতর বলেন: “কিন্তু এখন তোমাদের প্রাণের পালক ও অধ্যক্ষের কাছে ফিরিয়া আসিয়াছ।” এখানে অধ্যক্ষ বলতে নিশ্চয়ই যিহোবা ঈশ্বরকে বোঝানো হয়েছে কারণ পিতর যাদের উদ্দেশে এই চিঠি লিখেছিলেন, তারা যিশু খ্রিস্টের কাছ থেকে দূরে সরে যায়নি বরং তাঁর মাধ্যমে তাদের মহান পালক যিহোবা ঈশ্বরের প্রতি ফিরিয়ে আনা হয়েছে, যিনি তাঁর লোকেদের পালন করেন। (গীত ২৩:১; ৮০:১; যির ২৩:৩; যিহি ৩৪:১২) এ ছাড়া, যিহোবা একজন অধ্যক্ষও, যিনি অনুসন্ধান করেন। (গীত ১৭:৩) এই অনুসন্ধান [গ্রিক, এপিস্কোপি] করাকে তাঁর কাছ থেকে আসা শাস্তিমূলক বিচার হিসেবেও দেখা যেতে পারে, ঠিক যেমনটা প্রথম শতাব্দীতে যিরূশালেমের ক্ষেত্রে ঘটেছিল। সে তার “তত্ত্বাবধানের [গ্রিক, এপিস্কোপেস] সময়” বুঝতে পারেনি। (লূক ১৯:৪৪) আবার এটা আশীর্বাদ ও উপকারও নিয়ে আসতে পারে, ঠিক যেমনটা তাদের প্রতি ঘটবে, যারা ঈশ্বরের “তত্ত্বাবধানের [গ্রিক, এপিস্কোপেস]” দিনে তাঁর গৌরব করে।—১পিতর ২:১২.
অক্টোবর ২১-২৭
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | ১ পিতর ৩-৫
“সকল বিষয়ের পরিণাম সন্নিকট”
“প্রার্থনার নিমিত্ত প্রবুদ্ধ থাক”
“রাতের যে-প্রহরটা জেগে থাকা সবচেয়ে কঠিন, সেটা হল ভোর বেলা,” আগে রাতে কাজ করতেন এমন একজন কর্মী বলেন। খুব সম্ভবত সেই ব্যক্তিরাও এর সঙ্গে একমত হবে, যাদের সারারাত জেগে থাকতে হয়। বর্তমান দিনের খ্রিস্টানরাও একইরকম প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হয় কারণ শয়তানের দুষ্ট বিধিব্যবস্থার দীর্ঘ রাত এখন ইতিহাসের সবচেয়ে অন্ধকারময় মুহূর্তে রয়েছে। (রোমীয় ১৩:১২) এই শেষ মুহূর্তে ঘুমিয়ে পড়া আমাদের জন্য কতই-না বিপদজনক হবে! আমাদের জন্য ‘সংযমশীল হওয়া’ এবং ‘প্রার্থনার নিমিত্ত প্রবুদ্ধ থাকিবার’ বিষয়ে শাস্ত্রীয় পরামর্শে মনোযোগ দেওয়া অপরিহার্য।—১ পিতর ৪:৭.
কীভাবে আধ্যাত্মিক দুর্বলতাগুলো চেনা ও দূর করা যায়
শেষে, প্রেরিত পিতরের প্রেমপূর্ণ পরামর্শ আমাদের মনে রাখা দরকার: “সকল বিষয়ের পরিণাম সন্নিকট; অতএব সংযমশীল হও, এবং প্রার্থনার নিমিত্ত প্রবুদ্ধ থাক। সর্ব্বাপেক্ষা পরস্পর একাগ্র ভাবে প্রেম কর; কেননা ‘প্রেম পাপরাশি আচ্ছাদন করে।’” (১ পিতর ৪:৭, ৮) আমাদের নিজেদের ও অন্যদের দুর্বলতাগুলো খুব সহজেই আমাদের চোখে পড়ে, আমাদের হৃদয়ে ও মনে বসে যায় আর তা আমাদের বাধা ও বিঘ্নের কারণ হতে পারে। শয়তান মানুষের এই দুর্বলতার কথাটা খুব ভাল করে জানে। তার একটা জঘন্য চাল হল বিভেদ জন্মানো আর জিত পাওয়া। সুতরাং, আমাদের অবশ্যই এই পাপগুলোকে একে অপরের জন্য গভীর প্রেম দিয়ে ঢেকে দেওয়া দরকার যাতে আমরা “দিয়াবলকে স্থান” না দিই।—ইফিষীয় ৪:২৫-২৭.
প্রহরীদুর্গ ১৮.০৩ ১৪-১৫ অনু. ২-৩
আতিথেয়তা দেখানো খুবই আনন্দদায়ক ও প্রয়োজনীয় এক বিষয়!
২ পিতর তার ভাই-বোনদের একটা যে-বিষয় করার জন্য জোরালো পরামর্শ দিয়েছিলেন, সেটা হল ‘পরস্পর অতিথি সেবা করা।’ (১ পিতর ৪:৯) “অতিথি সেবা” অভিব্যক্তিটার জন্য ব্যবহৃত গ্রিক শব্দের আক্ষরিক অর্থ হল “অচেনা লোকেদের প্রতি স্নেহ বা দয়া দেখানো।” কিন্তু, পিতর তার ভাই-বোনদের ‘পরস্পরের’ প্রতি আতিথেয়তা দেখানোর জন্য জোরালো পরামর্শ দিয়েছিলেন, যদিও তারা ইতিমধ্যেই একে অপরকে জানত এবং একসঙ্গে বিভিন্ন কাজ করত। কীভাবে আতিথেয়তা দেখানো তাদের সাহায্য করবে?
৩ এটা তাদের একে অপরের আরও ঘনিষ্ঠ করে তুলবে। আপনার বিষয়ে কী বলা যায়? আপনার কি সেই আনন্দপূর্ণ সময়ের কথা মনে আছে, যখন কেউ আপনাকে তার বাড়িতে নিমন্ত্রণ করেছিলেন? আর আপনি যখন কাউকে আপনার বাড়িতে নিমন্ত্রণ করেছিলেন, তখন সেটা আপনাদের আরও ঘনিষ্ঠ করে তুলেছিল। আমাদের ভাই-বোনদের জানার একটা ভালো উপায় হল তাদের প্রতি আতিথেয়তা দেখানো। পিতরের সময় বসবাসরত খ্রিস্টানদের চারপাশের পরিস্থিতি যখন খারাপ থেকে আরও খারাপ হচ্ছিল, তখন তাদের একে অপরের আরও ঘনিষ্ঠ হওয়ার প্রয়োজন দেখা দিয়েছিল। এই “শেষ কালে” আমাদেরও একই বিষয় করার প্রয়োজন রয়েছে।—২ তীম. ৩:১.
আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন
সত্য ‘শান্তি নয়, কিন্তু খড়্গ’ নিয়ে আসে
১৪ উত্তম আচরণ বজায় রাখুন। কেন এটা গুরুত্বপূর্ণ? যদিও মৃদুভাবে কথা বলা আমাদের আত্মীয়দের সঙ্গে শান্তি বজায় রাখতে সাহায্য করে, তবে আমাদের উত্তম আচরণ আরও বেশি প্রভাব ফেলতে পারে। (পড়ুন, ১ পিতর ৩:১, ২, ১৬.) আপনার উদাহরণের মাধ্যমে আপনার আত্মীয়দের দেখতে সাহায্য করুন যে, যিহোবার সাক্ষিরা উত্তম বৈবাহিক সম্পর্ক উপভোগ করে, তাদের সন্তানদের উত্তম যত্ন নেয়, বাইবেলের নীতি অনুযায়ী জীবনযাপন করে এবং এক উদ্দেশ্যপূর্ণ জীবন উপভোগ করে। এমনকী আমাদের আত্মীয়রা যদি কখনো সত্য গ্রহণ না-ও করে, তারপরও আমরা এটা জেনে আনন্দিত হব যে, আমাদের উত্তম আচরণ যিহোবাকে খুশি করে।
প্রহরীদুর্গ ০৮ ১১/১৫ ২১ অনু. ৮
যাকোব ও পিতরের চিঠির প্রধান বিষয়গুলো
৪:৬—সেই “মৃতগণ” কারা ছিল, যাদের কাছে “সুসমাচার প্রচারিত হইয়াছিল”? এরা ছিল সেই ব্যক্তি, যারা সুসমাচার শোনার আগে ‘তাহাদের অপরাধে ও পাপে মৃত’ ছিল অথবা যারা আধ্যাত্মিকভাবে মৃত ছিল। (ইফি. ২:১) কিন্তু, সুসমাচারে বিশ্বাস স্থাপন করার পর তারা আধ্যাত্মিকভাবে “জীবিত” হতে শুরু করেছিল।
অক্টোবর ২৮–নভেম্বর ৩
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | ২ পিতর ১-৩
‘ঈশ্বরের সেই দিনের আগমনের আকাঙ্ক্ষা করিও’
প্রহরীদুর্গ ০৬ ১২/১৫ ২৭ অনু. ১১
যিহোবা “ন্যায়বিচার করিবেন”
১১ কিন্তু, যিহোবা যে “শীঘ্রই” ন্যায়বিচার করবেন, যিশুর এই আশ্বাসকে আমাদের কীভাবে বোঝা উচিত? ঈশ্বরের বাক্য আমাদের দেখায় যে, ‘যদিও [ঈশ্বর] দীর্ঘসহিষ্ণু’ কিন্তু যখন নিরূপিত সময় আসবে, তখন তিনি দ্রুত ন্যায়বিচার নিয়ে আসবেন। (লূক ১৮:৭, ৮; ২ পিতর ৩:৯, ১০) নোহের সময়ে যখন জলপ্লাবন এসেছিল, তখন দুষ্টরা অবিলম্বে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। একইভাবে, লোটের দিনে যখন স্বর্গ থেকে অগ্নি বর্ষিত হয়েছিল, তখন দুষ্টরা বিনষ্ট হয়ে গিয়েছিল। যিশু বলেছিলেন: “মনুষ্যপুত্ত্র যে দিন প্রকাশিত হইবেন, সে দিনেও সেইরূপ হইবে।” (লূক ১৭:২৭-৩০) আবারও দুষ্টরা “আকস্মিক বিনাশ” ভোগ করবে। (১ থিষলনীকীয় ৫:২, ৩) বস্তুতপক্ষে, আমরা পূর্ণরূপে আস্থা রাখতে পারি যে, ন্যায়বিচার পূরণের জন্য যতদিন প্রয়োজন, শয়তানের জগৎকে যিহোবা তার চেয়ে একদিনও বেশি থাকতে দেবেন না।
প্রহরীদুর্গ ০৬ ১২/১৫ ১৯ অনু. ১৮
“যিহোবার মহাদিন নিকটবর্তী”
১৮ এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, প্রেরিত পিতর আমাদেরকে “ঈশ্বরের সেই দিনের আগমনের” আকাঙ্ক্ষা করতে উপদেশ দিয়েছেন! কীভাবে আমরা তা করতে পারি? একটা উপায় হল, ‘পবিত্র আচার ব্যবহার ও ভক্তির’ কাজগুলোতে জড়িত হওয়া। (২ পিতর ৩:১১, ১২) এই ধরনের কাজগুলোতে ব্যস্ত থাকা আমাদেরকে ‘যিহোবার দিনের’ আগমনের জন্য অধীর আগ্রহে প্রত্যাশা করতে সাহায্য করবে। যে-গ্রিক শব্দকে ‘আকাঙ্ক্ষা করা’ হিসেবে অনুবাদ করা হয়েছে, সেটার আক্ষরিক অর্থ হল ‘ত্বরান্বিত করা।’ আমরা আসলে যিহোবার দিনের আগমন পর্যন্ত যে-সময়টুকু রয়েছে, সেটাকে ত্বরান্বিত করতে পারি না। কিন্তু, সেই দিনের জন্য অপেক্ষা করার সময় আমরা যদি ঈশ্বরের সেবায় ব্যস্ত থাকি, তা হলে সময় অত্যন্ত দ্রুত কেটে যাচ্ছে বলে মনে হবে।—১ করিন্থীয় ১৫:৫৮.
আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন
প্রহরীদুর্গ ০৮ ১১/১৫ ২২ অনু. ২
যাকোব ও পিতরের চিঠির প্রধান বিষয়গুলো
১:১৬-১৯—“প্রভাতীয় তারা” কে, কখন তিনি উদিত হন আর কীভাবে আমরা জানতে পারি যে, এটা ঘটেছে? এই “প্রভাতীয় তারা” হলেন রাজ্যের ক্ষমতায় যিশু খ্রিস্ট। (প্রকা. ২২:১৬) ১৯১৪ সালে, এক নতুন দিনের সূচনা ঘোষণা করে যিশু সমস্ত সৃষ্টির কাছে মশীহ রাজা হিসেবে উদিত হয়েছেন। রূপান্তরের ঘটনাটা যিশুর গৌরব ও রাজ্যের ক্ষমতার এক পূর্ব দর্শন জুগিয়েছে, যা ঈশ্বরের ভবিষ্যদ্বাণীমূলক বাক্যের নির্ভরযোগ্যতার উপর জোর দেয়। (মার্ক ৯:১-৩) সেই বাক্যে মনোযোগ দেওয়া আমাদের হৃদয়কে আলোকিত করে আর এভাবে আমরা জানতে পেরেছি যে, প্রভাতীয় তারা উদিত হয়েছেন।
প্রহরীদুর্গ ০৮ ১১/১৫ ২২ অনু. ৪
যাকোব ও পিতরের চিঠির প্রধান বিষয়গুলো
৩:১৭—‘অগ্রে জানা’ বা অগ্রিম জ্ঞান বলতে পিতর কী বুঝিয়েছিলেন? পিতর এখানে তাকে এবং অন্যান্য বাইবেল লেখককে অনুপ্রাণিতভাবে দেওয়া ভবিষ্যতের ঘটনাবলি সম্বন্ধে অগ্রিম জ্ঞানের বিষয়ে উল্লেখ করছিলেন। যেহেতু এটা কোনো অসীম জ্ঞান ছিল না, তাই এই জ্ঞান লাভ করার ফলে প্রাথমিক খ্রিস্টানরা ভবিষ্যতের ঘটনাগুলো সম্বন্ধে বিস্তারিত জানতে পারেনি। তারা কেবলমাত্র যা আশা করা যেতে পারে, সেই বিষয়ে এক সাধারণ ধারণা পেয়েছিল।