-
যৌন সম্পর্কের বিষয়ে বাইবেল আমাদের কী জানায়?চিরকাল জীবন উপভোগ করুন!—ঈশ্বরের কাছ থেকে শিখুন
-
-
পাঠ ৪১
যৌন সম্পর্কের বিষয়ে বাইবেল আমাদের কী জানায়?
যৌন সম্পর্ক অথবা সেক্সের বিষয়ে কথা বলতে অনেক লোক খুব একটা স্বচ্ছন্দ বোধ করে না। কিন্তু, বাইবেলে এই বিষয়ে খোলাখুলিভাবে এবং সম্মানের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। আমরা যদি এটিতে দেওয়া পরামর্শ কাজে লাগাই, তা হলে আমাদের উপকার হবে। আর কেনই-বা হবে না, কারণ এই পরামর্শ কে দিয়েছেন, তা চিন্তা করুন। এটা আমাদের সৃষ্টিকর্তা যিহোবা দিয়েছেন এবং তাঁর চেয়ে ভালো পরামর্শ আর কেই-বা দিতে পারে! আমরা যদি তাঁর দেওয়া পরামর্শ কাজে লাগাই, তা হলে অল্প কিছু সময়ের জন্য নয় বরং চিরকাল জীবন উপভোগ করতে পারব এবং যিহোবার হৃদয়কেও আনন্দিত করতে পারব।
১. যৌন সম্পর্ককে যিহোবা কোন দৃষ্টিতে দেখে থাকেন?
যৌন সম্পর্ক হল একটা উপহারের মতো, যা যিহোবা মানুষকে দিয়েছেন। তিনি চান যেন একজন পুরুষ ও নারী বিয়ে করার পরই এই উপহার থেকে আনন্দ লাভ করে। স্বামী ও স্ত্রী এই উপহারের মাধ্যমে শুধুমাত্র যে সন্তানের জন্ম দিতে পারে এমন নয়, কিন্তু সেইসঙ্গে একে অন্যের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করতে পারে আর একে অন্যকে আনন্দ দিতে পারে। তাই, বাইবেল বলে: “তোমার যৌবনের স্ত্রীকে নিয়েই তুমি আনন্দ কর।” (হিতোপদেশ ৫:১৮, ১৯ কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারশন) যিহোবা আশা করেন, একজন খ্রিস্টান তার বিবাহিত সাথির প্রতি সবসময় অনুগত থাকবেন। আর সেইজন্য তিনি কখনো ব্যভিচার করবেন না অর্থাৎ অন্য কারো সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করবেন না।—পড়ুন, ইব্রীয় ১৩:৪.
২. যৌন অনৈতিকতা বলতে কী বোঝায়?
বাইবেল বলে, “যারা যৌন অনৈতিকতায় রত আছে . . . তারা ঈশ্বরের রাজ্য লাভ করবে না।” (১ করিন্থীয় ৬:৯, ১০) বাইবেলের লেখকেরা যৌন অনৈতিকতার বিষয়ে লেখার সময় গ্রিক শব্দ পরনিয়া ব্যবহার করেছিলেন। এই শব্দের সঙ্গে এইসমস্ত বিষয় জড়িত রয়েছে: (১) এমন দু-জন ব্যক্তির মধ্যে যৌন সম্পর্ক,a যাদের বিয়ে হয়নি, (২) সমকামিতা অর্থাৎ পুরুষের সঙ্গে পুরুষের এবং মহিলার সঙ্গে মহিলার যৌন সম্পর্ক, (৩) পশুদের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক। আমরা যখন ‘যৌন অনৈতিকতা থেকে পৃথক থাকি,’ তখন আমরা যিহোবার হৃদয়কে খুশি করি আর সেইসঙ্গে আমরাও উপকার লাভ করি।—১ থিষলনীকীয় ৪:৩.
গভীরভাবে গবেষণা করুন
কীভাবে আপনি যৌন অনৈতিকতা থেকে দূরে থাকতে পারেন? আপনার আচার-আচরণ শুদ্ধ রাখার ফলে আপনি কোন কোন উপকার লাভ করবেন? আসুন তা জানি।
৩. যৌন অনৈতিকতা থেকে পালিয়ে যান
যোষেফ ঈশ্বরের একজন বিশ্বস্ত সেবক ছিলেন। তার আচার-আচরণ শুদ্ধ রাখার জন্য তাকে অনেক লড়াই করতে হয়েছিল। আদিপুস্তক ৩৯:১-১২ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন:
কেন যোষেফ সেখান থেকে দ্রুত পালিয়ে গিয়েছিলেন?—৯ পদ দেখুন।
আপনার কি মনে হয় যে, যোষেফ সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন? কেন আপনি তা মনে করেন?
কীভাবে বর্তমানে যুবক-যুবতীরা যোষেফের মতো যৌন অনৈতিকতা থেকে পালিয়ে যেতে পারে? ভিডিওটা দেখুন।
যিহোবা চান যেন আমরা যৌন অনৈতিকতার প্রলোভন এলে, তা প্রত্যাখ্যান করি। ১ করিন্থীয় ৬:১৮ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন:
এমন কোন কোন পরিস্থিতি আসতে পারে, যেখানে একজন ব্যক্তি যৌন অনৈতিকতার ফাঁদে পড়তে পারেন?
কীভাবে আপনি যৌন অনৈতিকতার ফাঁদ থেকে পালিয়ে যেতে পারেন?
৪. আপনি প্রলোভন প্রতিরোধ করতে পারেন
আমরা প্রলোভন প্রতিরোধ করতে চাই এবং যৌন অনৈতিকতা থেকে পালিয়ে যেতে চাই। কিন্তু, কোন কারণে আমরা তা করতে ব্যর্থ হতে পারি? ভিডিওটা দেখুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন:
এই ভাই যখন বুঝতে পারেন যে, তিনি তার চিন্তাভাবনা এবং কাজের মাধ্যমে তার স্ত্রীর প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করে ফেলতে পারেন, তখন তিনি কোন পদক্ষেপ নিয়েছিলেন?
বিশ্বস্ত খ্রিস্টানদের জন্যও কখনো কখনো তাদের চিন্তাভাবনা শুদ্ধ রাখা কঠিন হতে পারে। আপনি কী করতে পারেন, যাতে আপনি খারাপ বিষয়গুলো নিয়ে ক্রমাগত চিন্তা করা এড়িয়ে চলতে পারেন? ফিলিপীয় ৪:৮ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন:
কোন বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের চিন্তা করা উচিত?
বাইবেল পড়া এবং যিহোবার সেবায় ব্যস্ত থাকার মাধ্যমে কীভাবে আপনি প্রলোভন প্রতিরোধ করতে পারেন আর পাপ করা থেকে দূরে থাকতে পারেন?
৫. যিহোবার মানগুলো মেনে চললে আমাদের উপকার হবে
যিহোবা জানেন, আমাদের জন্য কোনটা সবচেয়ে ভালো। তিনি আমাদের জানিয়েছেন, কীভাবে আমরা আমাদের আচার-আচরণ শুদ্ধ রাখতে পারি আর এর ফলে আমাদের কোন উপকার হবে। হিতোপদেশ ৭:৭-২৭ পদ পড়ুন অথবা ভিডিওটা দেখুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন।
সেই যুবক এমন কী করেছিল, যার ফলে সে প্রলোভনের কাছে হার মেনেছিল?—হিতোপদেশ ৭:৮, ৯ পদ দেখুন।
হিতোপদেশ ৭:২৩, ২৬ পদ আমাদের জানায়, যৌন অনৈতিকতার পরিণতি খুবই খারাপ হতে পারে। আমরা যদি আমাদের আচার-আচরণে শুদ্ধতা বজায় রাখি, তা হলে আমরা কোন সমস্যাগুলো এড়িয়ে চলতে পারব?
আমরা যদি চিরকাল জীবন উপভোগ করতে চাই, তা হলে কেন আমাদের আচার-আচরণে শুদ্ধতা বজায় রাখতে হবে?
বাইবেল সমকামিতা সম্বন্ধে যা জানায়, তা থেকে কিছু লোক মনে করে যে, ঈশ্বর সমকামী ব্যক্তিদের ঘৃণা করেন। কিন্তু, এটা সত্য নয়। যিহোবা হলেন একজন প্রেমময় ঈশ্বর, তাই তিনি চান যেন প্রত্যেক ব্যক্তি চিরকাল জীবন উপভোগ করে। তবে, এই জীবন পাওয়ার জন্য আমাদের অবশ্যই তাঁর মান অনুযায়ী জীবনযাপন করতে হবে। ১ করিন্থীয় ৬:৯-১১ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন:
ঈশ্বরের দৃষ্টিতে কি শুধুমাত্র সমকামিতাই খারাপ বিষয়?
ঈশ্বরকে খুশি করার জন্য প্রত্যেককে নিজেদের জীবনে কিছু-না-কিছু পরিবর্তন করতে হয় আর এটা করার জন্য প্রচেষ্টার প্রয়োজন। কিন্তু, তা করার কি কোনো উপকারিতা রয়েছে? গীতসংহিতা ১৯:৮, ১১ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন:
আপনার কি মনে হয়, যিহোবার যে-নৈতিক মান রয়েছে, তা মেনে চলা সঠিক? কেন আপনি তা মনে করেন?
কেউ কেউ বলে থাকে: “দুজনের মধ্যে যদি প্রেমের সম্পর্ক থাকে, তা হলে তাদের মধ্যে যৌন সম্পর্ক করা কোনো ভুল নয়, সেটা যে-কেউ হোক না কেন।”
উত্তরে আপনি কী বলবেন?
সারাংশ
যৌন সম্পর্ক হল একটা উপহারের মতো, যা যিহোবা মানুষকে দিয়েছেন। তিনি চান শুধুমাত্র একজন স্বামী ও স্ত্রী যেন এই উপহার থেকে আনন্দ লাভ করে।
পুনরালোচনা
যৌন অনৈতিকতার মধ্যে কোন বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে?
যৌন অনৈতিকতা থেকে কীভাবে আমরা পালিয়ে যেতে পারি?
যিহোবার নৈতিক মানগুলো মেনে চললে আমাদের কোন কোন উপকার হবে?
আরও জানুন
বিয়ে না করে একজন পুরুষ ও নারী কি একসঙ্গে থাকতে পারে? এই বিষয়ে ঈশ্বর কী চিন্তা করেন, আসুন তা জানি।
“বিয়ে না করে একসঙ্গে থাকার বিষয়ে বাইবেল কী বলে?” (অনলাইন প্রবন্ধ)
বাইবেল সমকামিতাকে ঘৃণা করে, কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে, আমাদের সমকামী ব্যক্তিদের ঘৃণা করা উচিত। আসুন, এই বিষয়ে জানি।
যৌন সম্পর্কের বিষয়ে ঈশ্বরের আইন পালন করার ফলে কীভাবে আমরা সুরক্ষিত থাকতে পারি, আসুন তা জানি।
“মৌখিক যৌনতা বলতে কি সত্যিই যৌন সম্পর্ক করা বোঝায়?” (অনলাইন প্রবন্ধ)
“তারা আমাকে সম্মান করেছিল,” এই জীবনকাহিনিতে জানুন যে, কোন বিষয়টা একজন সমকামী ব্যক্তিকে তার জীবনধারা পরিবর্তন করতে এবং ঈশ্বরকে খুশি করতে অনুপ্রাণিত করেছিল।
“বাইবেল জীবনকে পরিবর্তন করে” (প্রহরীদুর্গ, এপ্রিল ১ ২০১১, ইংরেজি)
a যৌন মিলন ছাড়াও পরনিয়ার মধ্যে আরও অনেক ধরনের নোংরা কাজ জড়িত রয়েছে। যেমন, মুখের মাধ্যমে যৌনতা, মলদ্বারের মাধ্যমে যৌনতা এবং যৌন কামনা নিয়ে অন্য ব্যক্তির যৌনাঙ্গগুলোতে হাত বোলানো।
-
-
অবিবাহিত থাকা এবং বিয়ে করার বিষয়ে বাইবেল কী বলে?চিরকাল জীবন উপভোগ করুন!—ঈশ্বরের কাছ থেকে শিখুন
-
-
পাঠ ৪২
অবিবাহিত থাকা এবং বিয়ে করার বিষয়ে বাইবেল কী বলে?
কিছু সংস্কৃতিতে লোকেরা মনে করে, বিয়ে না করলে একজন ব্যক্তি সুখী হতে পারে না। কিন্তু, যারা বিয়ে করে তারা যে সবাই সুখী, এমন নয়। আবার যারা বিয়ে করে না, তারা যে সবাই অসুখী, সেটাও নয়। আসলে, সত্য বিষয়টা কী, তা বাইবেল আমাদের জানায়। এটি বলে, অবিবাহিত থাকা এবং বিয়ে করা, দুটোই ঈশ্বরের কাছ থেকে পাওয়া উপহার।
১. অবিবাহিত থাকার কিছু উপকার কী?
বাইবেল বলে: “যে বিয়ে করে, সে ভালো করে, কিন্তু যে বিয়ে না করে, সে আরও ভালো করে।” (পড়ুন, ১ করিন্থীয় ৭:৩২, ৩৩, ৩৮.) কীভাবে? একজন অবিবাহিত ব্যক্তির তার সাথির প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো পূরণ করার চিন্তা থাকে না আর সাধারণত তিনি স্বাধীন থাকেন। তাই, অবিবাহিত ব্যক্তিরা যিহোবার সেবায় আরও বেশি কিছু করতে পারে, যেমন, তারা সেই জায়গায় গিয়ে প্রচার করতে পারে, যেখানে বেশি প্রয়োজন রয়েছে। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, যিহোবার সঙ্গে তাদের সম্পর্ক মজবুত করার জন্য তারা বেশি সময় দিতে পারে।
২. একজন পুরুষ ও নারী যখন আইনত বিয়ে করে, তখন সেটার কোন কোন উপকারিতা রয়েছে?
অবিবাহিত থাকার যেমন একরকম উপকারিতা রয়েছে, ঠিক তেমনি বিয়ে করার আরেক রকমের উপকারিতা রয়েছে। বাইবেল বলে: “এক জন অপেক্ষা দুই জন ভাল।” (উপদেশক ৪:৯) এই কথাগুলো বিশেষ করে সেই স্বামী ও স্ত্রীর প্রতি প্রযোজ্য, যারা বিয়ের বিষয়ে বাইবেলে দেওয়া নীতি মেনে চলে। একজন পুরুষ ও নারী যদি আইনত বিয়ে না করে একসঙ্গে থাকতে শুরু করে, তা হলে এর কোনো নিশ্চয়তা নেই যে, তারা সারাজীবন একসঙ্গেই থাকবে। বিয়ে একজন পুরুষ ও নারীকে এক অটুট বন্ধনে বেঁধে রাখে। তাই, আইনত বিয়ে করলে স্বামী ও স্ত্রী সুরক্ষিত বোধ করে আর যখন তাদের সন্তান হয়, তখন সেও সুরক্ষিত বোধ করে।
৩. বিয়ের বিষয়ে যিহোবার দৃষ্টিভঙ্গি কী?
যিহোবা যখন প্রথম পুরুষ ও নারীর বিয়ে দিয়েছিলেন, তখন তিনি বলেছিলেন: “মনুষ্য আপন পিতা মাতাকে ত্যাগ করিয়া আপন স্ত্রীতে আসক্ত হইবে।” (আদিপুস্তক ২:২৪) এর অর্থ হল, যিহোবা চান একজন স্বামী ও স্ত্রী যেন সারাজীবন একে অন্যকে ভালোবাসে এবং তারা যেন কখনো একে অন্যকে ছেড়ে না দেয়। যিহোবা বিবাহবিচ্ছেদের অনুমতি শুধু তখনই দেন, যখন স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে কেউ একজন ব্যভিচার করে। আর এই পরিস্থিতিতে একজন নির্দোষ সাথি বিবাহবিচ্ছেদa করবে, কি করবে না, সেটা যিহোবা তার উপর ছেড়ে দিয়েছেন। (মথি ১৯:৯) যিহোবা খ্রিস্টানদের একের অধিক স্বামী অথবা স্ত্রী রাখার অনুমতি দেননি।—১ তীমথিয় ৩:২.
গভীরভাবে গবেষণা করুন
আপনি অবিবাহিত অথবা বিবাহিত হোন, কীভাবে আপনি সুখী হতে পারেন? আর কীভাবে আপনি যিহোবার হৃদয়কে খুশি করতে পারেন? আসুন তা জানি।
৪. অবিবাহিত থাকা হল একটা উপহার, এটাকে ভালোভাবে কাজে লাগান
যিশু অবিবাহিত থাকাকে এক দান বা উপহার হিসেবে দেখেছিলেন। (মথি ১৯:১১, ১২) মথি ৪:২৩ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন:
যিশু অবিবাহিত ছিলেন। কীভাবে তিনি এই উপহারকে তাঁর পিতার সেবা করার এবং অন্যদের সাহায্য করার জন্য ব্যবহার করেছিলেন?
যিশুর মতো অবিবাহিত খ্রিস্টানেরাও জীবনে সুখী হতে পারে। ভিডিওটা দেখুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন।
কীভাবে অবিবাহিত ভাই-বোনেরা নিজেদের পরিস্থিতিকে ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারে?
আপনি কি জানেন?
একজন ব্যক্তি কোন বয়সে বিয়ে করবে, সেই বিষয়ে বাইবেল কিছু বলে না। কিন্তু, এটি আমাদের উৎসাহিত করে, যেন একজন ব্যক্তি “যৌবনের কচি বয়স পার” করার পরেই বিয়ে করার কথা চিন্তা করে। কারণ এই বয়সে যৌন আকাঙ্ক্ষা অনেক প্রবল থাকে আর তাই একজন তরুণ বা তরুণী সেই সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো অবস্থায় না-ও থাকতে পারে।—১ করিন্থীয় ৭:৩৬.
৫. ভেবে-চিন্তে জীবনসঙ্গী বাছাই করুন
জীবনের বড়ো বড়ো সিদ্ধান্তের মধ্যে একটা হল, আমরা কাকে বিয়ে করব। মথি ১৯:৪-৬, ৯ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন:
কেন একজন খ্রিস্টানের তাড়াহুড়ো করে বিয়ে করা উচিত নয়?
বাইবেল আমাদের জানায়, একজন জীবনসঙ্গীর মধ্যে কোন কোন গুণ থাকা প্রয়োজন। সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড়ো যে-গুণটা থাকতে হবে, তা হল, সে যেন যিহোবাকে ভালোবাসে।b ১ করিন্থীয় ৭:৩৯ এবং ২ করিন্থীয় ৬:১৪ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন:
কেন আমাদের কেবলমাত্র যিহোবার একজন উপাসককে বিয়ে করা উচিত?
আপনি যদি এমন কাউকে বিয়ে করেন, যিনি যিহোবাকে ভালোবাসেন না, তা হলে যিহোবার কেমন লাগবে?
৬. বিয়েকে যিহোবার মতো করে দেখুন
প্রাচীন কালে, কিছু ইজরায়েলীয় পুরুষ নিজেদের স্বার্থে তাদের স্ত্রীদের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ করেছিল। মালাখি ২:১৩, ১৪, ১৬ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন:
কেউ যখন ব্যভিচার ছাড়া অন্য কোনো কারণে বিবাহবিচ্ছেদ করে, তখন কেন যিহোবা এই বিষয়টাকে ঘৃণা করেন?
ভিডিওটা দেখুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন।
আপনার স্বামী অথবা স্ত্রী যদি যিহোবাকে সেবা না করে, তা হলে আপনি কী করতে পারেন, যাতে আপনাদের বিবাহিত জীবন সুখের হয়?
৭. বিয়ের বিষয়ে যিহোবার মান মেনে চলুন
বিয়ের বিষয়ে যিহোবার মান মেনে চলার জন্য একজন ব্যক্তিকে কঠোর প্রচেষ্টা করতে হতে পারে।c তবে, তিনি যদি তা করেন, তা হলে যিহোবা তাকে আশীর্বাদ করবেন। ভিডিওটা দেখুন।
ইব্রীয় ১৩:৪ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন:
আপনার কি মনে হয়, বিয়ের বিষয়ে যিহোবার মান মেনে চলা কঠিন? কেন আপনি তা মনে করেন?
যিহোবা চান, একজন খ্রিস্টান যখন বিয়ে করেন কিংবা বিবাহবিচ্ছেদ করেন, তখন তা যেন আইনত বৈধ হয়। তীত ৩:১ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন:
আপনি যদি বিবাহিত হয়ে থাকেন, তা হলে আপনি কি নিশ্চিত যে, আপনার বিয়ে আইনত বৈধ?
কেউ কেউ জিজ্ঞেস করতে পারে: “একটা ছেলে এবং একটা মেয়ে একসঙ্গে থাকতেই পারে, বিয়ে করার কি কোনো প্রয়োজন আছে?”
উত্তরে আপনি কী বলবেন?
সারাংশ
অবিবাহিত থাকা এবং বিয়ে করা, এই দুটোই ঈশ্বরের কাছ থেকে পাওয়া উপহার। অবিবাহিত এবং বিবাহিত ব্যক্তিরা যদি যিহোবার ইচ্ছা অনুযায়ী জীবনযাপন করে, তা হলে তারা উভয়েই সুখী হবে।
পুনরালোচনা
একজন অবিবাহিত ব্যক্তি কীভাবে তার পরিস্থিতিকে কাজে লাগাতে পারে?
বাইবেল কেন আমাদের বলে, কেবলমাত্র একজন যিহোবার উপাসককে বিয়ে করা উচিত?
বাইবেলের কোন নীতির উপর ভিত্তি করে বিবাহবিচ্ছেদ করা যেতে পারে?
আরও জানুন
“প্রভুতেই” বিয়ে করার অর্থ কী?
কীভাবে আপনি বিবাহসাথি বাছাই এবং বিয়ে করার বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন? আসুন, এই বিষয়ে দুটো ছোটো ভিডিও দেখি।
একজন ভাই মনে করেন, তিনি যে-ত্যাগস্বীকার করেছেন, সেটার চেয়ে যিহোবার কাছ থেকে যে-আশীর্বাদ পেয়েছেন, তা অনেক বেশি। কেন তিনি এইরকম মনে করেন? আসুন তা জানি।
একজন ব্যক্তির তার জীবনসঙ্গীর কাছ থেকে আলাদা থাকা কিংবা বিবাহবিচ্ছেদ করার আগে, কোন বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তা করা উচিত?
“বিয়ে সম্বন্ধে ঈশ্বরের ব্যবস্থার প্রতি সম্মান দেখান” (প্রহরীদুর্গ, ডিসেম্বর, ২০১৮)
b কিছু সংস্কৃতিতে, বাবা-মায়েরা তাদের ছেলে-মেয়েদের জন্য জীবনসঙ্গী বাছাই করে। যে-বাবা ও মায়েরা তাদের ছেলে-মেয়েদের ভালোবাসে, তারা ছেলে-মেয়েদের জন্য জীবনসঙ্গী বাছাই করার সময় এটা দেখবে না যে, সেই ব্যক্তির কাছে কত টাকাপয়সা রয়েছে অথবা জাগতিক পদমর্যাদা কী রয়েছে বরং এটা দেখবে যে, সেই ব্যক্তি যিহোবাকে কতটা ভালোবাসে।
c আপনি যদি বিয়ে না করে কারো সাথে একসঙ্গে বাস করেন, তা হলে এই পরিস্থিতিতে আপনাকে ব্যক্তিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে, আপনি তাকে বিয়ে করবেন, না ছেড়ে দেবেন।
-