যাকোবের চিঠি
৩ হে আমার ভাইয়েরা, তোমাদের মধ্যে অনেকে যেন শিক্ষক না হয়, কারণ তোমরা তো জান, অন্যদের চেয়ে আমাদের বিচার আরও কঠোরভাবে করা হবে। ২ কারণ আমরা সকলে বিভিন্ন সময় ভুল করে থাকি।* কেউ যদি কথায় ভুল না করে,* তা হলে সে একজন সিদ্ধ ব্যক্তি আর সে নিজের পুরো শরীরকেও বশে রাখতে* সক্ষম। ৩ ঘোড়াকে বশে রাখার জন্য আমরা যখন ঘোড়ার মুখে লাগাম দিই, তখন আমরা এর পুরো শরীরকেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। ৪ আবার জাহাজের কথা চিন্তা কর: যদিও সেটা বিশাল আকারের হয় আর প্রচণ্ড বাতাসের দ্বারা চালিত হয়, তবুও খুবই ছোটো একটা হাল দিয়ে নাবিক তার ইচ্ছামতো সেটাকে এদিক-ওদিক নিয়ে যায়।
৫ তেমনই জিভও শরীরের একটা ছোটো অঙ্গ অথচ এটা বড়ো বড়ো কথা বলে। আবার আগুনের একটা ছোটো ফুলকি কীভাবে বিরাট একটা বনকে পুড়িয়ে ছারখার করে দেয়! ৬ জিভও ঠিক আগুনের মতো। আমাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মধ্যে জিভ যেন মন্দতারই এক জগৎ, কারণ এটা পুরো দেহকে কলুষিত করে এবং একজন ব্যক্তির পুরো জীবনধারায় আগুন ধরিয়ে দেয় আর গিহেন্নার* আগুন দিয়েই এই আগুন ধরানো হয়। ৭ সমস্ত ধরনের বন্যপশু, পাখি, সরীসৃপ এবং সামুদ্রিক প্রাণীকে বশে আনা যায় আর মানুষ তাদের বশে নিয়েও এসেছে। ৮ কিন্তু, কোনো মানুষই জিভকে বশে আনতে পারে না। এটাকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না আর এটা ক্ষতিকর এবং এটা মারাত্মক বিষে পূর্ণ। ৯ জিভ দিয়েই আমরা আমাদের পিতা যিহোবার* প্রশংসা করি, আবার এই জিভ দিয়েই আমরা সেই মানুষদের অভিশাপ দিই, যাদের “ঈশ্বরের মতো করে” সৃষ্টি করা হয়েছে। ১০ একই মুখ থেকে প্রশংসা ও অভিশাপ বের হয়ে আসে।
হে আমার ভাইয়েরা, এমনটা হওয়া ঠিক নয়। ১১ একই জলের উৎস থেকে কি মিষ্টি ও তেতো, দু-রকম জল বের হতে পারে? ১২ হে আমার ভাইয়েরা, ডুমুর গাছে কি জলপাই ধরতে পারে কিংবা আঙুর গাছে কি ডুমুর ধরতে পারে? না। একইভাবে, নোনা জলের উৎস থেকেও মিষ্টি জল পাওয়া যায় না।
১৩ তোমাদের মধ্যে কি এমন কেউ আছে, যে বিজ্ঞ ও বুদ্ধিমান? যদি থাকে, তা হলে সে তার উত্তম আচরণের মাধ্যমে তা দেখাক এবং প্রকৃত প্রজ্ঞা থেকে আসা মৃদুতা সহকারে সমস্ত কিছু করুক। ১৪ কিন্তু, তোমাদের হৃদয়ে যদি প্রচণ্ড ঈর্ষা এবং ঝগড়াটে মনোভাব* থাকে, তা হলে তোমরা নিজেদের প্রজ্ঞা নিয়ে অহংকার কোরো না এবং সত্যের বিরুদ্ধে মিথ্যা বোলো না। ১৫ এই প্রজ্ঞা স্বর্গ থেকে আসে না, বরং এই জগৎ থেকে আসে অর্থাৎ যারা মাংসের এবং মন্দ স্বর্গদূতদের বশে চলে, তাদের কাছ থেকে আসে। ১৬ কারণ যেখানে ঈর্ষা এবং ঝগড়াটে মনোভাব* থাকে, সেখানে বিশৃঙ্খলা এবং সব ধরনের মন্দতাও থাকে।
১৭ কিন্তু, যে-প্রজ্ঞা স্বর্গ থেকে আসে, তা সবচেয়ে প্রথমে শুদ্ধ, পরে শান্তিপ্রবণ, যুক্তিবাদী,* বাধ্য হতে প্রস্তুত, করুণা এবং উত্তম ফলে পূর্ণ, পক্ষপাতহীন এবং নিষ্কপট। ১৮ যারা অন্যদের সঙ্গে উত্তম সম্পর্ক বজায় রাখে, তারা শান্তি স্থাপন করে আর এর ফলে তারা ধার্মিক কাজ করে।