জীবন ও পরিচর্যা সভার জন্য অধ্যয়ন পুস্তিকা-র রেফারেন্স
জুলাই ৫-১১
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | দ্বিতীয় বিবরণ ১১–১২
“যিহোবা কেমন উপাসনা চান?”
“তোমার ঈশ্বর প্রভুকে প্রেম করিবে”
৭ যিশু যখন বলেছিলেন আমাদের “সমস্ত অন্তঃকরণ” বা হৃদয় দিয়ে ঈশ্বরকে ভালোবাসতে হবে, তখন তিনি কী বুঝিয়েছিলেন? তিনি বুঝিয়েছিলেন যে, আমাদের সম্পূর্ণ রূপক হৃদয় দিয়ে যিহোবাকে ভালোবাসতে হবে। রূপক হৃদয় বলতে আমাদের আকাঙ্ক্ষা, আবেগ ও অনুভূতিকে বোঝায়। এ ছাড়া, আমাদের “সমস্ত প্রাণ” অর্থাৎ আমাদের জীবন বা সত্তা দিয়ে তাঁকে ভালোবাসতে হবে। সেইসঙ্গে আমাদের “সমস্ত মন” বা আমাদের সম্পূর্ণ বোধগম্যতা ব্যবহার করে ঈশ্বরকে ভালোবাসতে হবে। মূল বিষয়টা হল, আমাদের নিঃশর্তে যিহোবাকে পূর্ণরূপে ভালোবাসতে হবে।
অন্তর্দৃষ্টি-১ ৮৪ অনু. ৩, ইংরেজি
বেদি
ইজরায়েলীয়দের নির্দেশ দেওয়া হয়, যেন তারা তাদের চারপাশের সমস্ত পৌত্তলিক বেদি, স্তম্ভ ও আশেরামূর্তি ধ্বংস করে দেয়। (যাত্রা ৩৪:১৩; দ্বিতীয় ৭:৫, ৬; ১২:১-৩) তারা এইরকম কোনো ধরনের বেদি নির্মাণ করতে পারত না কিংবা নিজেদের সন্তানদের বলি হিসেবে উৎসর্গ করতে পারত না, যেমনটা কনানীয়েরা করে থাকত। (দ্বিতীয় ১২:৩০, ৩১; ১৬:২১) অনেক বেদি তৈরি করার পরিবর্তে তারা কেবল একটা বেদি তৈরি করতে পারত আর তা কেবল একমাত্র সত্য ঈশ্বরের উপাসনা করার উদ্দেশে। যিহোবা যেখানে বলতেন, কেবল সেখানেই তারা এই বেদি তৈরি করতে পারত। (দ্বিতীয় ১২:২-৬, ১৩, ১৪, ২৭; বাবিলের সঙ্গে তুলনা করুন, যেখানে কেবল ইশ্তার দেবীর উদ্দেশেই ১৮০টা বেদি ছিল।)
আধ্যাত্মিক রত্ন
অন্তর্দৃষ্টি-১ ৯২৫-৯২৬, ইংরেজি
গরিষীম পর্বত
কনানে প্রবেশ করার পর পরই, মোশির নির্দেশ অনুযায়ী ইজরায়েলের সমস্ত বংশ গরিষীম পর্বত এবং এবল পর্বতে একত্রিত হয়। তারা যদি যিহোবার বাধ্য হয়, তা হলে তারা কোন কোন আশীর্বাদ পাবে এবং যদি অবাধ্য হয়, তা হলে তাদের উপর কোন কোন অভিশাপ আসবে, সেই বিষয়ে তাদের সামনে পড়া হয়। শিমিয়োন, লেবি, যিহূদা, ইষাখর, যোষেফ ও বিন্যামীন বংশ গরিষীম পর্বতের সামনে দাঁড়ায়। লেবীয়েরা এবং নিয়ম সিন্দুক উপত্যকার মধ্যে থাকে আর বাকি ছয় বংশ এবল পর্বতের সামনে দাঁড়ায়। (দ্বিতীয় ১১:২৯, ৩০; ২৭:১১-১৩; যিহো ৮:২৮-৩৫)
জুলাই ১২-১৮
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | দ্বিতীয় বিবরণ ১৩–১৫
“কীভাবে ব্যবস্থায় দরিদ্রদের প্রতি যিহোবার চিন্তা প্রকাশ পায়?”
অন্তর্দৃষ্টি-২ ১১১০ অনু. ৩, ইংরেজি
দশমাংশ
প্রতি বছর আরেকটা উদ্দেশ্যে দশমাংশ আলাদা করে রাখা হত। সাধারণত লেবীয়দের সাহায্য করার জন্য দশমাংশ ব্যবহার করা হত। কিন্তু, এই ক্ষেত্রে মূলত ইজরায়েলীয় পরিবার জেরুসালেমে গিয়ে জাতীয় উৎসবে যোগ দেওয়ার জন্য দশমাংশ ব্যবহার করত। কোনো পরিবার যদি দূরে বাস করত অথবা তাদের পক্ষে এই দীর্ঘযাত্রায় সঙ্গে করে দশমাংশ (যেমন পশু ও শস্য) নিয়ে যাওয়া খুব কঠিন হত, তা হলে তারা সেগুলো বিক্রি করে টাকা নিয়ে যেতে পারত। একটা পরিবার যিরূশালেমে খাওয়া-দাওয়া করার এবং পবিত্র সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য সেই টাকা ব্যবহার করত। (দ্বিতীয় ১২:৪-৭, ১১, ১৭, ১৮; ১৪:২২-২৭) কিন্তু, প্রতি তৃতীয় ও ষষ্ঠ বছরের শেষে এই দশমাংশ জাতীয় সম্মেলনে খরচ করার পরিবর্তে তা লেবীয়, বিদেশি, বিধবা ও অনাথদের জন্য আলাদা করে রাখা হত।—দ্বিতীয় ১৪:২৮, ২৯; ২৬:১২.
অন্তর্দৃষ্টি-২ ৮৩৩, ইংরেজি
বিশ্রাম বছর
বিশ্রাম বছরে ঋণ ক্ষমা করে দেওয়া হত। এভাবে ইজরায়েলীয়েরা যিহোবার প্রতি সম্মান দেখাত। কেউ কেউ বলে, সেই ঋণ আসলে বাতিল করা হত না বরং একজন ঋণদাতা কোনো সহইব্রীয়কে ঋণের টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দিত না কারণ বিশ্রাম বছরে একজন কৃষকের কোনো আয় থাকত না। কিন্তু, একজন বিদেশিকে ঋণের টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া যেত। (দ্বিতীয় ১৫:১-৩) কোনো কোনো রব্বি বলে, দরিদ্রদের সেবার উদ্দেশ্যে যে-ঋণ দেওয়া হত, সেটা বাতিল করা হত কিন্তু ব্যাবসার উদ্দেশ্যে যে-ঋণ দেওয়া হত, সেটা বাতিল করা হত না।
অন্তর্দৃষ্টি-২ ৯৭৮ অনু. ৬, ইংরেজি
দাস
দাস ও প্রভুর সম্পর্কের বিষয়ে আইন। একজন ইব্রীয় দাসের সঙ্গে যেভাবে আচরণ করা হত, একজন বিদেশি দাসের সঙ্গে সেভাবে আচরণ করা হত না। একজন বিদেশি দাস তার প্রভুর অধিকার হিসেবে থাকতেন আর সেই অধিকার বাবা তারা ছেলেকে দিতে পারতেন। (লেবীয় ২৫:৪৪-৪৬) কিন্তু, একজন ইব্রীয় দাসকে তার দাসত্বের সপ্তম বছরে কিংবা যোবেল বছরে, যে-বছর আগে আসত, সেই বছরে মুক্ত করে দিতে হত। একজন ইব্রীয় দাসের সঙ্গে দাসের মতো নয়, বরং একজন বেতনভোগী কর্মীর মতো করে আচরণ করতে হত। (যাত্রা ২১:২; লেবীয় ২৫:১০; দ্বিতীয় ১৫:১২) একজন ইব্রীয় দাসকে মুক্ত করে দেওয়ার সময় প্রভুকে তার দাসকে উপহার দিতে হত, যাতে সেই দাস একজন স্বাধীন ব্যক্তি হিসেবে ভালোভাবে জীবন শুরু করতে পারেন। (দ্বিতীয় ১৫:১৩-১৫)
আধ্যাত্মিক রত্ন
পাঠক-পাঠিকাদের থেকে প্রশ্নসকল
যাত্রাপুস্তক ২৩:১৯ পদে বলা “ছাগবৎসকে তাহার মাতার দুগ্ধে পাক করিও না,” এই নিষেধাজ্ঞা থেকে আমরা কী শিখতে পারি?
মোশির ব্যবস্থার এই আদেশ, যা বাইবেলে তিন বার পাওয়া যায়, তা আমাদেরকে সঠিক বিষয়ের প্রতি যিহোবার দৃষ্টিভঙ্গি, তাঁর সমবেদনা এবং তাঁর কোমলতা সম্বন্ধে উপলব্ধি করতে সাহায্য করে। এ ছাড়া, এটা মিথ্যা উপাসনার প্রতি যিহোবার তীব্র ঘৃণাকেও তুলে ধরে।—যাত্রাপুস্তক ৩৪:২৬; দ্বিতীয় বিবরণ ১৪:২১.
কোনো ছাগবৎস অথবা অন্য পশুর বাচ্চাকে এর মায়ের দুধে রান্না করা, বিভিন্ন বিষয়ে যিহোবার দেওয়া প্রাকৃতিক নিয়মের বিপরীত কাজ হবে। ঈশ্বর, বাচ্চাকে পুষ্ট করতে ও এটাকে বৃদ্ধি পেতে সাহায্য করার জন্য মায়ের দুধ জুগিয়েছেন। একজন পণ্ডিত ব্যক্তির কথানুসারে, বাচ্চাকে এর নিজের মায়ের দুধে রান্না করা হলে তা “মা ও বাচ্চার মধ্যে ঈশ্বর যে-সম্পর্ক স্থাপন ও পবিত্র করেছেন, সেটার প্রতি অবজ্ঞা” প্রদর্শন করবে।
অধিকন্তু, কেউ কেউ ইঙ্গিত করে যে, একটা বাচ্চাকে এর মায়ের দুধে রান্না করা হয়তো এক পৌত্তলিক প্রথা, যা বৃষ্টি আনার জন্য সম্পাদন করা হতো। যদি তা-ই হয়ে থাকে, তা হলে এই নিষেধাজ্ঞা ইস্রায়েলীয়দেরকে তাদের চারপাশের জাতিগুলোর অর্থহীন ও নিষ্ঠুর ধর্মীয় অভ্যাসগুলো থেকে সুরক্ষা করেছিল। মোশির ব্যবস্থা ইস্রায়েলীয়দের সেই জাতিগুলোর মতো আচরণ না করতে সুনির্দিষ্টভাবে নিষেধ করেছিল।—লেবীয় পুস্তক ২০:২৩.
সবশেষে, এই নির্দিষ্ট আইনের মধ্যে আমরা যিহোবার কোমল সমবেদনা দেখতে পাই। প্রকৃতপক্ষে, পশুপাখির প্রতি নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে এবং প্রাকৃতিক নিয়মের বিপরীত কাজ করার বিরুদ্ধে সুরক্ষা প্রদান করতে, ব্যবস্থায় একই ধরনের বেশ কিছু আজ্ঞা রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ব্যবস্থায় এমন আজ্ঞাগুলো অন্তর্ভুক্ত ছিল, যেগুলো একটা পশুকে এর মায়ের সঙ্গে কমপক্ষে সাত দিন থাকার আগে উৎসর্গ করতে, একই দিনে মা ও এর বাচ্চাকে হত্যা করতে এবং একটা পাখির বাসা থেকে মা এবং এর ডিম অথবা ছানাগুলো, উভয়কেই ধরতে বা নিয়ে যেতে নিষেধ করে।—লেবীয় পুস্তক ২২:২৭, ২৮; দ্বিতীয় বিবরণ ২২:৬, ৭.
স্পষ্টতই, ব্যবস্থা কেবলমাত্র আদেশ ও নিষেধাজ্ঞার এক জটিল সমষ্টি ছিল না। অন্যান্য বিষয় ছাড়াও, এর নীতিগুলো আমাদের মধ্যে এমন এক উচ্চ নৈতিক বোধশক্তি গেঁথে দিতে সাহায্য করে, যা যিহোবার চমৎকার গুণাবলিকে সত্যিই প্রতিফলিত করে।—গীতসংহিতা ১৯:৭-১১.
জুলাই ১৯-২৫
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | দ্বিতীয় বিবরণ ১৬–১৮
“ঈশ্বরের মান অনুযায়ী বিচার করার নীতি”
অন্তর্দৃষ্টি-১ ৩৪৩ অনু. ৫, ইংরেজি
অন্ধত্ব
দুর্নীতির কারণে ঘটা অবিচারকে অন্ধত্বের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। শাস্ত্রে প্রায়ই ঘুস দেওয়া-নেওয়া, উপহার ও ভেদাভেদের বিরুদ্ধে সাবধান করা হয়েছে। কারণ এই বিষয়গুলো একজন বিচারককে অন্ধ করে দিতে পারে এবং তাকে পক্ষপাতহীন মনোভাব দেখানোর ক্ষেত্রে বাধা দিতে পারে। ঘুষ বা “উৎকোচ জ্ঞানীদের চক্ষু অন্ধ করে।” (দ্বিতীয় ১৬:১৯) একজন বিচারক যত ন্যায়পরায়ণ বা জ্ঞানীই হোন না কেন, উপহার বা ঘুসের দ্বারা তিনি প্রভাবিত হতে পারেন, হোক তা ইচ্ছাকৃতভাবে কিংবা অনিচ্ছাকৃতভাবে। তবে, কেবল উপহারই নয় কিন্তু সেইসঙ্গে আবেগঅনুভূতিও একজন বিচারককে অন্ধ করে দিতে পারে। এই বিষয়টা ঈশ্বরের আইনে বলা আছে: “তুমি দরিদ্রের মুখাপেক্ষা [“পক্ষপাত,” জুবিলী বাইবেল] করিও না, ও ধনবানের সমাদর করিও না।” (লেবীয় ১৯:১৫)
অন্তর্দৃষ্টি-২ ৫১১ অনু. ৭, ইংরেজি
সংখ্যা
দুই। দুই সংখ্যাটা প্রায়ই আইন সংক্রান্ত ব্যাপারে দেখা যায়। কেবল একজন সাক্ষির চেয়ে বরং দু-জন সাক্ষির সাক্ষ্য আরও বেশি জোরালো। বিচারকদের সামনে কোনো একটা বিষয় নিশ্চিত করার জন্য দু-জন বা এমনকী তিন জন সাক্ষির প্রয়োজন হত। খ্রিস্টীয় মণ্ডলীতেও একই নীতি মেনে চলা হয়। (দ্বিতীয় ১৭:৬; ১৯:১৫; মথি ১৮:১৬; ২করি ১৩:১; ১তীম ৫:১৯; ইব্রীয় ১০:২৮)
অন্তর্দৃষ্টি-২ ৬৮৫ অনু. ৬, ইংরেজি
যাজক
যাজকেরা যে-নগরগুলোতে থাকতেন, বিচারকেরা সেখানে যেতে পারতেন এবং বিচার সংক্রান্ত বিষয়গুলোতে যাজকদের সাহায্য নিতে পারতেন। কোনো স্থানীয় আদালত যদি খুবই কঠিন একটা মামলার মীমাংসা করতে না পারত, তা হলে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে যাজকেরা বিচারকদের সাহায্য করতে পারতেন। (দ্বিতীয় ১৭:৮, ৯)
আধ্যাত্মিক রত্ন
অন্তর্দৃষ্টি-১ ৭৮৭, ইংরেজি
বের করে দেওয়া
একজন অপরাধীকে প্রথমে সাক্ষিদের পাথর ছুড়তে হত। (দ্বিতীয় ১৭:৭) এটা দেখাত যে, ঈশ্বরের আইন পালন করার এবং ইজরায়েলের মণ্ডলীকে বিশুদ্ধ রাখার বিষয়ে তারা কতটা উদ্যোগী। এ ছাড়া, এটা তাদের মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার এবং কোনো কিছু চিন্তা না করে অসতর্কতার সঙ্গে সাক্ষ্য দেওয়ার বিরুদ্ধে সাবধান থাকতে সাহায্য করত।
জুলাই ২৬-আগস্ট ১
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | দ্বিতীয় বিবরণ ১৯–২১
“মানুষের জীবন যিহোবার কাছে মূল্যবান”
যিহোবার ন্যায়বিচার ও করুণা অনুকরণ করুন
৪ যিহোবা ছ-টা আশ্রয় নগরের ব্যবস্থা এমন জায়গাগুলোতে করেছিলেন যেন সহজেই সেখানে পৌঁছানো যায়। তিনি ইস্রায়েলীয়দের যর্দন নদীর উভয় দিকেই তিনটে করে নগর বেছে নিতে বলেছিলেন। কেন? যাতে একজন পলাতক খুব দ্রুত ও সহজেই সেগুলোর মধ্যে কোনো একটা নগরে গিয়ে পৌঁছাতে পারতেন। (গণনা. ৩৫:১১-১৪) সেই নগরে যাওয়ার রাস্তাগুলোকে ভালো অবস্থায় রাখা হতো। (দ্বিতীয়. ১৯:৩) যিহুদি রীতি অনুসারে, রাস্তার পাশে বিভিন্ন চিহ্ন দেওয়া থাকত, যাতে পলাতকরা সহজেই সেই নগরগুলো খুঁজে পেতে পারত। যেহেতু ইস্রায়েলে আশ্রয় নগরের ব্যবস্থা ছিল, তাই একজন ইস্রায়েলীয় যদি দুর্ঘটনাবশত কাউকে হত্যা করতেন, তা হলে তাকে সুরক্ষা লাভ করার জন্য বিদেশে যেতে হতো না, যেখানে তিনি হয়তো মিথ্যা দেবতাদের উপাসনা করার জন্য প্রলুব্ধ হতে পারতেন।
যিহোবার ন্যায়বিচার ও করুণা অনুকরণ করুন
৯ আশ্রয় নগরের ব্যবস্থার পিছনে একটা যে-প্রধান কারণ ছিল, তা হল নির্দোষ ব্যক্তিদের হত্যা করার মাধ্যমে রক্তপাতের দোষে দোষী হওয়া থেকে ইস্রায়েলীয়দের সুরক্ষিত রাখা। (দ্বিতীয়. ১৯:১০) যিহোবা জীবনকে ভালোবাসেন এবং তিনি নরহত্যা ঘৃণা করেন। (হিতো. ৬:১৬, ১৭) একজন ন্যায়পরায়ণ ও পবিত্র ঈশ্বর হিসেবে তিনি এমনকী দুর্ঘটনাবশত করা কোনো হত্যাকেও উপেক্ষা করতে পারতেন না। এটা ঠিক যে, কোনো ব্যক্তি যদি দুর্ঘটনাবশত কাউকে হত্যা করতেন, তা হলে তিনি করুণা লাভ করতে পারতেন। কিন্তু, প্রথমে তাকে প্রাচীনদের কাছে নিজের পরিস্থিতি সম্বন্ধে ব্যাখ্যা করতে হতো। প্রাচীনরা বিচার করে যদি এই সিদ্ধান্তে আসতেন যে, মৃত্যুটা দুর্ঘটনাবশত ঘটেছিল, তা হলে সেই পলাতককে মহাযাজকের মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত আশ্রয় নগরে থাকতে হতো। এর অর্থ হতে পারত, সেই পলাতককে তার বাকি জীবন আশ্রয় নগরেই থাকতে হবে। এই ব্যবস্থা সমস্ত ইস্রায়েলীয়কে ভালোভাবে বুঝতে সাহায্য করেছিল যে, জীবন হল পবিত্র। জীবনের উৎস যিহোবাকে সম্মান করার জন্য তাদের এই বিষয়ে প্রাণপণ চেষ্টা করতে হতো, যাতে তারা অন্যদের জীবন বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া এড়াতে পারে।
অন্তর্দৃষ্টি-১ ৩৪৪, ইংরেজি
রক্ত
একজন ব্যক্তি যদি তার ভাইকে ঘৃণা করতেন এবং তার মৃত্যু চাইতেন অথবা তার ভাইয়ের “কর্ণেজপ [“নিন্দা,” বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারসন]” করতেন কিংবা তার বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দিতেন আর এভাবে তার ভাইয়ের জীবনকে ঝুঁকির মুখে ফেলতেন, তা হলে সেই ব্যক্তি রক্তপাতের দোষে দোষী হতেন।—লেবীয় ১৯:১৬; দ্বিতীয় ১৯:১৮-২১; ১যোহন ৩:১৫.
আধ্যাত্মিক রত্ন
অন্তর্দৃষ্টি-১ ৫১৮ অনু. ১, ইংরেজি
বিচার সংক্রান্ত আদালত
“দ্বার” বলতে একটা নগরের ভিতরে দ্বারের কাছে খোলা জায়গাকে বোঝায়। দ্বারের কাছে কোনো সাধারণ মামলার জন্য, যেমন হতে পারে জমি বিক্রি করা এবং এইরকম অন্যান্য বিষয়ের জন্য সহজেই সাক্ষি পাওয়া যেত, কারণ দিনের বেলা সেই দ্বার দিয়ে অনেক লোক আসা-যাওয়া করত। এ ছাড়া, যেহেতু লোকেরা চলাচল করত এমন জায়গায় আদালত ছিল, তাই বিচারকেরা ন্যায্যভাবে কোনো মামলার মীমাংসা করার ব্যাপারে আরও বেশি সতর্ক থাকতেন।
গস্ট ২-৮
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | দ্বিতীয় বিবরণ ২২–২৩
“কীভাবে ব্যবস্থায় জীবজন্তুর প্রতি যিহোবার চিন্তা প্রকাশ পায়?”
অন্তর্দৃষ্টি-১ ৩৭৫-৩৭৬, ইংরেজি
বোঝা
একজন ইজরায়েলীয় যদি এমন কোনো ব্যক্তির গাধাকে বোঝার ভারে পড়ে যেতে দেখেন, যিনি তাকে ঘৃণা করেন, তা হলে সেই ইজরায়েলীয় গাধাটাকে উপেক্ষা করে চলে যাবেন না। এর পরিবর্তে, সেই গাধাকে ভারমুক্ত করার জন্য তাকে তার সহইজরায়েলীয়কে সাহায্য করতে হবে। (যাত্রা ২৩:৫)
অন্তর্দৃষ্টি-১ ৬২১ অনু. ১, ইংরেজি
দ্বিতীয় বিবরণ
পাখির বাসায় বসে থাকা কোনো মা পাখিকে ইজরায়েলীয়েরা নিয়ে যেতে পারত না। মা পাখি সাধারণত তার বাচ্চাদের সুরক্ষা জোগানোর জন্য সেখানে বসে থাকে। মা পাখিকে নিয়ে যাওয়ার অর্থ হবে, সেটার নাজুক পরিস্থিতির অপব্যবহার করা। মা পাখিকে ছেড়ে দিতে হত, কিন্তু বাচ্চাগুলোকে তারা নিজেদের জন্য নিয়ে যেতে পারত। এতে মা পাখি ছাড়া পেয়ে আরও বাচ্চার জন্ম দিতে পারত। (দ্বিতীয় ২২:৬, ৭)
প্রহরীদুর্গ ০৩ ১০/১৫ ৩২ অনু. ১-২
“অসমভাবে যোঁয়ালিতে বদ্ধ হইও না”
এখানে আপনি যেমন দেখতে পাচ্ছেন যে, একটা উট ও ষাঁড় একসঙ্গে হাল বইছে আর এগুলোকে দেখে কষ্ট পাচ্ছে বলে মনে হয়। দুটো পশু যে-জোয়ালে বাঁধা রয়েছে, যা একই আকার ও শক্তির দুটো পশুর জন্য তৈরি, তা উভয়কেই কষ্ট দিচ্ছে। এই ধরনের ভারবাহী পশুদের কথা চিন্তা করে ঈশ্বর ইস্রায়েলীয়দের বলেছিলেন: “বলদে ও গর্দ্দভে একত্র যুড়িয়া চাস করিবে না।” (দ্বিতীয় বিবরণ ২২:১০) একটা ষাঁড় ও উটের বেলায়ও একই নীতি প্রযোজ্য।
সাধারণত একজন কৃষক তার পশুদের এই ধরনের কষ্ট দেবে না। কিন্তু তার যদি দুটো ষাঁড় না থাকে, তা হলে তিনি হয়তো তার যে-দুটো পশু রয়েছে, সেই দুটোকে জোয়ালে বাঁধবে। স্পষ্টত, ছবিতে দেওয়া উনিশ শতাব্দীর কৃষক সম্ভবত এটাই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। আকার ও ওজনে পার্থক্য থাকায় দুর্বল পশুকে একই গতিতে চলার জন্য কঠিন লড়াই করতে হতো এবং অধিকতর শক্তিশালী পশুকে বেশি ভার বহন করতে হতো।
আধ্যাত্মিক রত্ন
অন্তর্দৃষ্টি-১ ৬০০, ইংরেজি
ঋণ, ঋণী
একজন ইজরায়েলীয় কেবল তখনই ঋণ নিতে পারতেন, যখন তিনি আর্থিক সমস্যার মুখোমুখি হতেন। তাই, ঋণ নেওয়া একেবারেই ভালো ছিল না, কারণ এটা একজন ব্যক্তিকে ঋণদাতার দাস করে তুলত। (হিতো ২২:৭) ঈশ্বরের লোকদের আদেশ দেওয়া হয়েছিল, তারা যেন অভাবী ব্যক্তিদের ঋণ দেওয়ার সময় উদার ও নিঃস্বার্থ মনোভাব দেখায়। তারা যেন তাদের ভাইদের কাছ থেকে সুদ নেওয়ার চেষ্টা না করে। (যাত্রা ২২:২৫; দ্বিতীয় ১৫:৭, ৮; গীত ৩৭:২৬; ১১২:৫) তবে, বিদেশিদের কাছ থেকে সুদ নেওয়া যেত। (দ্বিতীয় ২৩:২০) যিহুদি সমালোচকেরা মনে করেন, এটা কেবল ব্যাবসায়িক ঋণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, অভাবী ব্যক্তিদের ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে নয়। সাধারণত বিদেশিরা ইজরায়েলে অস্থায়ীভাবে, প্রায়ই বণিক হিসেবে বাস করত আর তাদের কাছ থেকে সুদ নেওয়া যেত কারণ তারাও সুদের জন্য অন্যদের ঋণ দিত।
গস্ট ৯-১৫
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | দ্বিতীয় বিবরণ ২৪–২৬
“কীভাবে ব্যবস্থায় নারীদের প্রতি যিহোবার চিন্তা প্রকাশ পায়?”
অন্তর্দৃষ্টি-২ ১১৯৬ অনু. ৪, ইংরেজি
নারী
নতুন বিয়ে করেছে এমন একজন পুরুষকে বিয়ের প্রথম বছরে সৈন্যদলে যেতে হত না। এতে নতুন দম্পতি সন্তান জন্ম দেওয়ার সুযোগ পেতেন। একজন স্ত্রীর স্বামী যখন বাড়ি থেকে দূরে থাকতেন এবং বিশেষভাবে যুদ্ধে লড়াই করার সময়ে মারা যেতেন, তখন এই সন্তান থাকাতে স্ত্রী অনেক সান্ত্বনা পেতেন।—দ্বিতীয় ২০:৭; ২৪:৫.
অন্তর্দৃষ্টি-১ ৯৬৩ অনু. ২, ইংরেজি
পতিত শস্য কুড়োনো
দায়ূদ বলেছেন: “আমি . . . ধার্ম্মিককে পরিত্যক্ত দেখি নাই, তাহার বংশকে খাদ্য ভিক্ষা করিতে দেখি নাই।” (গীত ৩৭:২৫) ঈশ্বরের দেওয়া আইন অনুযায়ী দরিদ্র ব্যক্তিরা পড়ে থাকা শস্য কুড়োতে পারত। এই আইনের কারণে তাদের এবং তাদের ছেলে-মেয়েদের ভিক্ষা করতে হত না; এর পরিবর্তে তারা পরিশ্রম করে খাবার জোগাত এবং ক্ষুধার্ত থাকত না।
প্রহরীদুর্গ ১১ ৩/১ ২৩, ইংরেজি
আপনি কি জানতেন?
প্রাচীন ইজরায়েলে কোনো পুরুষ যদি মারা যেতেন এবং তার কোনো ছেলে না থাকত, তা হলে আশা করা হত যে, তার ভাই তার বিধবা স্ত্রীকে বিয়ে করবেন, যাতে তিনি মৃত ভাইয়ের বংশধারাকে টিকিয়ে রাখার জন্য বংশ উৎপন্ন করতে পারেন। (আদিপুস্তক ৩৮:৮) এই বিষয়টাকে পরে মোশির ব্যবস্থায় দেবরের কর্তব্য হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে অর্থাৎ একজন ব্যক্তিকে তার মৃত ভাইয়ের স্ত্রীকে বিয়ে করতে হবে। (দ্বিতীয় বিবরণ ২৫:৫, ৬) রূতের বিবরণ বইয়ে, বোয়সের ঘটনা দেখায়, একজন মৃত ব্যক্তির কোনো ভাই যদি জীবিত না থাকতেন, তা হলে সেই ব্যক্তির পরিবারের কোনো পুরুষ আত্মীয় এই কর্তব্য পালন করতে পারতেন।—রূৎ ১:৩, ৪; ২:১৯, ২০; ৪:১-৬.
যিশুর দিনেও এই প্রথা অনুসরণ করা হত আর এটা মার্ক ১২:২০-২২ পদে উল্লেখিত সদ্দূকীদের কথা থেকে বোঝা যায়। প্রথম শতাব্দীর যিহুদি ইতিহাসবেত্তা ফ্লেভিয়াস জোসিফাস বলেন, এই ব্যবস্থার ফলে কেবল পরিবারের নামই রক্ষা পেত না কিন্তু সেইসঙ্গে পরিবারের সম্পত্তি পরিবারের মধ্যেই থাকত আর এর মাধ্যমে বিধবারা উপকার পেত। সেই সময় একজন স্ত্রীর তার স্বামীর সম্পত্তি পাওয়ার অধিকার ছিল না। তবে, মৃত ব্যক্তির ভাইয়ের সঙ্গে বিয়ে হওয়ার ফলে যে-সন্তান জন্ম নিত, সে মৃত ব্যক্তির পৈত্রিক সম্পত্তি রক্ষা করতে পারত।
আধ্যাত্মিক রত্ন
প্রাচীন ইস্রায়েলে প্রেম ও ন্যায়বিচার (প্রথম অংশ)
৬ বিবাহিত দম্পতিরা একে অপরের সঙ্গে যেভাবে আচরণ করে, সেই বিষয়ে যিহোবা খুব ভালোভাবে জানেন। তিনি বিশেষভাবে চেয়েছিলেন যেন ইস্রায়েলীয় স্ত্রীদের সঙ্গে ভালোভাবে আচরণ করা হয়। যে-স্বামী ব্যবস্থার প্রতি সম্মান দেখাতেন, তিনি তার স্ত্রীকে ভালোবাসতেন এবং সামান্য কারণে স্ত্রীকে পরিত্যাগ বা তার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ করতেন না। (দ্বিতীয়. ২৪:১-৪; মথি ১৯:৩, ৮) কিন্তু, যদি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কোনো গুরুতর সমস্যা দেখা দিত এবং স্বামী বিবাহবিচ্ছেদ করতেন, তা হলে তাকে তার স্ত্রীকে ত্যাগপত্র দিতে হতো। এই ত্যাগপত্র স্ত্রীকে অনৈতিকতার মিথ্যা অপবাদ থেকে সুরক্ষিত রাখত। শুধু তা-ই নয়, সেই ত্যাগপত্র দেওয়ার আগে স্বামীকে নগরের প্রাচীনদের সঙ্গে আলোচনা করতে হতো। এর ফলে, প্রাচীনদের কাছে সেই দম্পতিকে সাহায্য করার সুযোগ থাকত, যাতে তারা তাদের বিয়েকে রক্ষা করতে পারে। যখন একজন ইস্রায়েলীয় পুরুষ স্বার্থপর কারণে বিবাহবিচ্ছেদ করতেন, তখন যিহোবা সবসময় হস্তক্ষেপ করতেন না। তা সত্ত্বেও, তিনি সেই স্ত্রীর চোখের জল লক্ষ করতেন এবং তার যন্ত্রণা অনুভব করতেন।—মালাখি ২:১৩-১৬.
গস্ট ১৬-২২
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | দ্বিতীয় বিবরণ ২৭–২৮
“এই সকল আশীর্ব্বাদ . . . তোমাকে আশ্রয় করিবে”
প্রহরীদুর্গ ১০ ১২/১৫ ১৯ অনু. ১৮
শ্বরের আত্মার দ্বারা পরিচালিত রাজার মাধ্যমে বিভিন্ন আশীর্বাদ লাভ করুন!
১৮ নিশ্চিতভাবেই কর্ণপাত করার অন্তর্ভুক্ত হল, ঈশ্বরের বাক্যে যা বলা হয়েছে এবং তিনি যে-আধ্যাত্মিক খাদ্য জোগান, সেগুলোকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা। (মথি ২৪:৪৫) এ ছাড়া, এর অর্থ হল ঈশ্বর ও তাঁর পুত্রের বাধ্য হওয়া। যিশু বলেছিলেন: “যাহারা আমাকে হে প্রভু, হে প্রভু বলে, তাহারা সকলেই যে স্বর্গ-রাজ্যে প্রবেশ করিতে পাইবে, এমন নয়, কিন্তু যে ব্যক্তি আমার স্বর্গস্থ পিতার ইচ্ছা পালন করে, সেই পাইবে।” (মথি ৭:২১) আর ঈশ্বরের প্রতি একজন ব্যক্তির কর্ণপাত করার অর্থ হল, ঈশ্বর ‘মনুষ্যদিগের নানা বর’ অর্থাৎ নিযুক্ত প্রাচীনদেরসহ খ্রিস্টীয় মণ্ডলীর যে-ব্যবস্থা করেছেন, সেটার প্রতি স্বেচ্ছায় বশীভূত হওয়া।—ইফি. ৪:৮.
যহোবার আশীর্বাদ কি আপনাকে ঢেকে দেবে?
২ দ্বিতীয় বিবরণ ২৮:২ পদে যে ইব্রীয় ক্রিয়াপদকে “শুনে চল” বলে অনুবাদ করা হয়েছে, তা সবসময় করে চলাকে বোঝায়। যিহোবার লোকেদের শুধু মাঝেমধ্যে তাঁর কথা শোনা উচিত নয়; তাদের সবসময় তা শুনে চলা দরকার। একমাত্র তাহলেই ঈশ্বরের আশীর্বাদ তাদেরকে ঢেকে দেবে। যে ইব্রীয় ক্রিয়াপদকে “ঢেকে দেবে” বলে অনুবাদ করা হয়েছে, সেটার অর্থ শিকারের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত, প্রায়ই যেটার মানে “নাগাল পাওয়া” অথবা “পৌঁছানো।
ন্তরিকভাবে যিহোবার আশীর্বাদ অন্বেষণ করুন
৪ কোন মনোভাব নিয়ে ইস্রায়েলীয়দের বাধ্য থাকতে হতো? ঈশ্বরের ব্যবস্থা বলেছিল যে, তাঁর লোকেরা যদি তাঁকে “আনন্দপূর্ব্বক প্রফুল্লচিত্তে” সেবা করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তিনি অসন্তুষ্ট হবেন। (পড়ুন, দ্বিতীয় বিবরণ ২৮:৪৫-৪৭.) যিহোবা নির্দিষ্ট আদেশগুলোর প্রতি নিছক কর্তব্যের খাতিরে বাধ্যতা, যেরকম বাধ্যতা পশুপাখি কিংবা ভূত বা মন্দদূতেরাও দেখাতে পারে, সেটার চেয়েও আরও বেশি কিছু পাওয়ার যোগ্য। (মার্ক ১:২৭; যাকোব ৩:৩) ঈশ্বরের প্রতি প্রকৃত বাধ্যতা হচ্ছে প্রেমের এক প্রকাশ। এর সঙ্গে আনন্দ জড়িত, যা এই বিশ্বাস থেকে উদ্ভূত যে, যিহোবার আজ্ঞাগুলো দুর্বহ নয় ও সেইসঙ্গে “যাহারা আন্তরিকভাবে তাঁহার অন্বেষণ করে, তিনি তাহাদের পুরস্কারদাতা।”—ইব্রীয় ১১:৬; ১ যোহন ৫:৩.
আধ্যাত্মিক রত্ন
অন্তর্দৃষ্টি-১ ৩৬০, ইংরেজি
সীমানাচিহ্ন
সাধারণত ভূমি বা জমির মালিকদের জমিতে যা উৎপন্ন হত, সেটার দ্বারা তারা জীবনধারণ করত। কোনো প্রতিবেশীর জমির আলি বা সীমানাচিহ্ন যদি সরিয়ে দেওয়া হত, তা হলে এর অর্থ ছিল তার জীবনধারণের উপায় ছিনিয়ে নেওয়া। এটা ছিল চুরি করার সমান। (ইয়োব ২৪:২)
গস্ট ২৩-২৯
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | দ্বিতীয় বিবরণ ২৯–৩০
“আমাদের পক্ষে যিহোবার সেবা করা সম্ভব”
যহোবা আমাদের বেছে নেওয়ার এক সুযোগ দিয়েছেন
ঈশ্বর আমাদের কাছ থেকে কী চান, তা জানা আর তারপর সেগুলো পালন করা কি কঠিন? মোশি বলেন: “আমি অদ্য তোমাকে এই যে আজ্ঞা দিতেছি, তাহা তোমার বোধের অগম্য নয়, এবং দূরবর্ত্তীও নয়।” (১১ পদ) যিহোবা অসম্ভব কিছু আশা করেন না। তাঁর চাহিদাগুলো যুক্তিযুক্ত ও পূরণযোগ্য। এ ছাড়া, সেগুলো সম্বন্ধে জানা সম্ভব। ঈশ্বর আমাদের কাছ থেকে কী আশা করেন, তা জানার জন্য আমাদের “স্বর্গারোহণ” কিংবা ‘সমুদ্রপার’ করার প্রয়োজন নেই। (১২, ১৩ পদ) আমাদের কীভাবে জীবনযাপন করা উচিত, সেই বিষয়ে বাইবেল আমাদের স্পষ্টভাবে জানায়।—মীখা ৬:৮.
যহোবা আমাদের বেছে নেওয়ার এক সুযোগ দিয়েছেন
“প্রায়ই আমি অযথাই ভয় পেতাম যে, আমি যিহোবার প্রতি অবিশ্বস্ত হয়ে পড়ব।” এই কথাগুলো একজন খ্রিস্টান মহিলা বলেছিলেন, যিনি মনে করেছিলেন যে, তার ছেলেবেলার খারাপ অভিজ্ঞতাগুলোর কারণে তার জন্য ব্যর্থতা অনিবার্য। বিষয়টা কি সত্যিই এইরকম? আমরা কি আসলেই পরিস্থিতির অসহায় শিকার? না। যিহোবা ঈশ্বর আমাদেরকে স্বাধীন ইচ্ছা দান করেছেন, যাতে আমরা নিজেরাই বাছাই করতে পারি যে, আমরা কীভাবে জীবনযাপন করব। যিহোবা চান যেন আমরা সঠিক বাছাইগুলো করি এবং তাঁর বাক্য বাইবেল আমাদের জানায় যে, কীভাবে আমরা তা করতে পারি। মোশির কথাগুলো বিবেচনা করুন, যা দ্বিতীয় বিবরণ ৩০ অধ্যায়ে পাওয়া যায়।
যহোবা আমাদের বেছে নেওয়ার এক সুযোগ দিয়েছেন
আমরা কোন পথটা বেছে নিই, তাতে কি যিহোবার কিছু আসে যায়? অবশ্যই! ঈশ্বরের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে মোশি বলেছিলেন: “জীবন মনোনীত কর।” (১৯ পদ) তাহলে, কীভাবে আমরা জীবন বেছে নিই? মোশি ব্যাখ্যা করেছিলেন: “তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুকে প্রেম কর, তাঁহার রবে অবধান কর, ও তাঁহাতে আসক্ত হও।” (২০ পদ) আমরা যদি যিহোবাকে ভালোবাসি, তাহলে আমরা বাধ্যতার সঙ্গে তাঁর কথা শুনতে চাইব এবং যা-ই ঘটুক না কেন, তাঁর প্রতি আসক্ত থাকব। এই ধরনের এক পথ অনুসরণ করার মাধ্যমে আমরা জীবন—ঈশ্বরের আসন্ন নতুন জগতে অনন্তজীবনের প্রত্যাশাসহ এখন জীবনের সর্বোত্তম পথ—বেছে নিই।—২ পিতর ৩:১১-১৩; ১ যোহন ৫:৩.
আধ্যাত্মিক রত্ন
অন্তর্দৃষ্টি-১ ৬৬৫ অনু. ৩, ইংরেজি
কান
এটা এমন যেন তাদের কান কোনো কিছু দিয়ে বন্ধ ছিল, যা তাদের শুনতে বাধা দিত। যিহোবা তাদের কান খুলে দেননি। একজন ব্যক্তি যখন যিহোবাকে খুশি করতে চান, তখন যিহোবা তার কান খুলে দেন অথবা তাকে বিভিন্ন বিষয় বুঝতে সাহায্য করেন। কিন্তু, একজন ব্যক্তি যদি যিহোবার অবাধ্য হন, তা হলে যিহোবা তাকে শোনার ক্ষমতা দেন না। এই ব্যক্তি যিহোবার চিন্তাভাবনা বুঝতে পারেন না। (দ্বিতীয় ২৯:৪; রোমীয় ১১:৮)
গস্ট ৩০-সেপ্টেম্বর ৫
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | দ্বিতীয় বিবরণ ৩১–৩২
“বাইবেলের একটা গানের শব্দচিত্র থেকে শিখুন”
তোমার নাম ভয় করিতে আমার চিত্তকে একাগ্র কর”
৮ ইস্রায়েলীয়রা প্রতিজ্ঞাত দেশে প্রবেশ করার ঠিক আগে যিহোবা মোশিকে একটা গান শিখিয়েছিলেন। (দ্বিতীয়. ৩১:১৯) আর মোশিকে এই গানটা লোকেদের শেখাতে হতো। (পড়ুন, দ্বিতীয় বিবরণ ৩২:২, ৩.) আমরা যখন ২ ও ৩ পদ নিয়ে ধ্যান করি, তখন এটা স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে, যিহোবা চান না যেন তাঁর নাম গুপ্ত থাকে। তিনি মনে করেন না যে, তাঁর নাম এতটাই পবিত্র যেন আমরা এই নাম উচ্চারণ না করি। তিনি চান যেন সবাই তাঁর নাম সম্বন্ধে জানে! যিহোবা ও তাঁর গৌরবান্বিত নাম সম্বন্ধে মোশির কাছ থেকে শিখতে পারাটা ইস্রায়েলীয়দের জন্য কতই-না বিশেষ এক সুযোগ ছিল! ঠিক যেমন হালকা বৃষ্টির ফলে শাকসবজি পুষ্টি লাভ করে এবং সতেজ হয়ে ওঠে, একইভাবে মোশির দেওয়া শিক্ষা তাদের বিশ্বাসকে শক্তিশালী করেছিল এবং তারা সতেজতা লাভ করেছিল। কীভাবে আমরা লোকেদের শিক্ষা দিতে পারি, যাতে তারা সতেজ হয়?
৯ আমরা যখন ঘরে ঘরে অথবা জনসাধারণ্যে সাক্ষ্য দিই, তখন ঈশ্বরের ব্যক্তিগত নাম যে যিহোবা, তা আমরা বাইবেল থেকে দেখাতে পারি। আমরা সুন্দর সুন্দর সাহিত্যাদি, চমৎকার ভিডিওগুলো এবং আমাদের ওয়েবসাইট থেকে বিভিন্ন বিষয়বস্তু পড়ার এবং তা দেখার জন্য তাদের প্রস্তাব দিতে পারি, যা যিহোবাকে গৌরব প্রদান করে। কর্মস্থলে, স্কুলে অথবা ভ্রমণ করার সময়ে আমাদের প্রিয় ঈশ্বর এবং তাঁর ব্যক্তিত্ব সম্বন্ধে কথা বলার জন্য আমরা হয়তো বিভিন্ন সুযোগ খুঁজে থাকি। আমরা যখন মানবজাতি ও পৃথিবীর জন্য যিহোবার প্রেমময় উদ্দেশ্য সম্বন্ধে লোকেদের বলি, তখন তারা হয়তো জীবনে প্রথম বারের মতো এটা উপলব্ধি করে যে, যিহোবা আমাদের কতটা ভালোবাসেন। আমরা যখন আমাদের প্রেমময় পিতা সম্বন্ধে অন্যদের কাছে সত্য জানাই, তখন আমরা ঈশ্বরের নামের পবিত্রীকরণে অবদান রাখি। আমরা লোকেদের এটা বুঝতে সাহায্য করি যে, তাদের ঈশ্বর সম্বন্ধে অনেক মিথ্যা শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। আমরা বাইবেল থেকে লোকেদের যা-শিক্ষা দিই, তা তাদের সবচেয়ে বেশি সতেজ করে।—যিশা. ৬৫:১৩, ১৪.
রীদুর্গ ০৯ ১০/১ ২০ অনু. ৪
বাইবেলে বর্ণিত শব্দচিত্রগুলো আপনি কি সেগুলোর অর্থ বুঝতে পারেন?
এ ছাড়া, বাইবেল যিহোবাকে জড় বস্তুর সঙ্গে তুলনা করে। তাঁকে “ইস্রায়েলের শৈল,” “উঁচু পাহাড়” এবং “দুর্গ” হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। (২ শমূয়েল ২৩:৩; গীতসংহিতা ১৮:২, বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারসন; দ্বিতীয় বিবরণ ৩২:৪) এখানে সাদৃশ্য কী? ঠিক যেমন একটা বড়ো শৈল খুব দৃঢ়ভাবে স্থাপিত এবং অনড়, তেমনই যিহোবা ঈশ্বর আপনার জন্য নিরাপত্তার দৃঢ় উৎস হিসেবে প্রমাণিত হতে পারেন।
পনার ছেলেমেয়েদেরকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার সময় যিহোবাকে অনুকরণ করুন
৭ ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে ব্যবহার করার সময় যিহোবা যে প্রেম দেখিয়েছিলেন, তা বিবেচনা করুন। নতুন জাতি ইস্রায়েলের প্রতি যিহোবার প্রেম সম্বন্ধে বর্ণনা করতে গিয়ে মোশি এক অপূর্ব উপমা ব্যবহার করেছিলেন। আমরা পড়ি “ঈগল যেমন আপন বাসা জাগাইয়া তুলে, আপন শাবকগণের উপরে পাখা দোলায়, পক্ষ বিস্তার করিয়া তাহাদিগকে তুলে, পালখের উপরে তাহাদিগকে বহন করে; তদ্রূপ সদাপ্রভু একাকী তাহাকে [যাকোবকে] লইয়া গেলেন।” (দ্বিতীয় বিবরণ ৩২:৯, ১১, ১২) মা ঈগল তার বাচ্চাদেরকে উড়তে শেখানোর জন্য “আপন বাসা জাগাইয়া তুলে” এবং পাখা ঝাপটিয়ে তার বাচ্চাদেরকে উড়তে বলে। একটা বাচ্চা পাখি যখন উঁচু পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত বাসা থেকে নিচের দিকে উড়ে আসে, তখন মা পাখি তার বাচ্চার “উপরে পাখা দোলায়।” বাচ্চা নিচে পড়ে ব্যথা পেতে পারে বলে মনে হলে, মা তাড়াতাড়ি নিচে ঝাঁপ দিয়ে তাকে ‘পালখের উপরে’ বহন নিয়ে যায়। একইভাবে যিহোবা প্রেমের সঙ্গে তাঁর নতুন জাতি ইস্রায়েলের যত্ন নিয়েছিলেন। তিনি লোকেদেরকে মোশির ব্যবস্থা দিয়েছিলেন। (গীতসংহিতা ৭৮:৫-৭) এরপর ঈশ্বর সেই জাতির ওপর সতর্ক দৃষ্টি রেখেছেন এবং তাঁর লোকেরা যখন সমস্যায় পড়েছে তিনি তাদেরকে সাহায্য করেছেন।
আধ্যাত্মিক রত্ন
প্রহরীদুর্গ ০৪ ৯/১৫ ২৭ অনু. ১১
দ্বতীয় বিবরণ বইয়ের প্রধান বিষয়গুলো
৩১:১২. মণ্ডলীর সভাগুলোতে অল্পবয়সীদের বড়দের সঙ্গে বসা উচিত এবং শোনার ও শেখার প্রচেষ্টা করা উচিত।